প্রধানমন্ত্রী বিকেলে চীন যাচ্ছেন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১ জুলাই, ২০১৯ ০৯:৩৮
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের আমন্ত্রণে পাঁচ দিনের সরকারি সফরে আজ বিকেলে চীনের দালিয়ানের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। প্রায় পাঁচ বছর আগে ২০১৪ সালে বেইজিং সফর করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং ঢাকায় আসেন। এর মধ্যে দুই দেশে উচ্চপর্যায়ের সফর হয়েছে মাত্র দুটি।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর এই সফর রোহিঙ্গা ইস্যুর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক যেকোনো চাপের চেয়ে চীনের সুনজর যথেষ্ট। তারা বলেন, চীনই এ বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে পারে।
সাবেক কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ওয়ালিউর রহমান বলেন, “চীন আমাদের সঙ্গে যেভাবে কথা বলেছে তাতে এটি সফল হবে বলে আমরা আশাবাদী। চীন হয়তো মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য বলতে পারে কিংবা বলতে পারে তোমরা জাতিসংঘে আস, আমরা ভেটো দেব না।”
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট (বিজি১৭২০) সোমবার বিকেলে দালিয়ানের উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে।
সফরকালে তিনি বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দেবেন এবং বেইজিংয়ে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংও প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।
সোমবার চীনের দালিয়ানে তিন দিনব্যাপী ‘ডব্লিইএফ অ্যানুয়েল মিটিং অব দ্যা নিউ চ্যাম্পিয়নস-২০১৯’ শুরু হবে। যা ডব্লিউইএফ সামার দাভোস নামেও পরিচিত।
২ জুলাই (মঙ্গলবার) সকালে প্রধানমন্ত্রী দালিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে অনুষ্ঠেয় ডব্লিউইএফ সামার দাভোস সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দেবেন।
শেখ হাসিনা দালিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী চেয়ারম্যান ক্লস শোয়াবের কার্যালয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং বিকেলে ‘কো-অপারেশন ইন দ্যা প্যাসিফিক রিম’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশ নেবেন।
বিকেলে দালিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে শোয়াবের দপ্তরে অনুষ্ঠেয় ‘কো-অপারেশন ইন দ্যা প্যাসিফিক রিম’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী।
আগামী ৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রী চীন সরকারের সরবরাহকৃত একটি বিশেষ ভাড়া করা বিমানে স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় বেইজিংয়ের উদ্দেশে দালিয়ান ত্যাগ করবেন। একই দিন বিমানটি স্থানীয় সময় বেলা ১২টা ২৫ মিনিটে বেইজিং ক্যাপিটাল ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে পৌঁছবে।
বিকেলে তিনি বেইজিংয়ের লিজেনডাল হোটেলে প্রবাসী বাংলাদেশীদের এক সংবর্ধনা ও নৈশভোজে যোগ দিবেন।
৪ জুলাই সকালে শেখ হাসিনা স্বাগত অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং গ্রেট হল অব দ্য পিপলে বীরদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
পরে তিনি চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের সঙ্গে একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন এবং গ্রেট হল অব দ্য পিপলে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
প্রধানমন্ত্রী গ্রেট হল অব দ্য পিপলে চীনের প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত এক ভোজসভায় অংশ নেবেন।
একই দিন বিকেলে শেখ হাসিনার সিসিপিআইটিতে চীনা ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে একটি বিজনেস গোল টেবিল বৈঠকে অংশ নিবেন।
৫ জুলাই সকালে প্রধানমন্ত্রীর চাইনিজ থিংক ট্যাংক ‘পাঙ্গোয়াল ইনস্টিটিউশন’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ব্যক্তব্য রাখার কথা রয়েছে।
চীনের বিভিন্ন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাগণ শেখ হাসিনার সঙ্গে তার হোটেল স্যুটে দেখা করার কথা রয়েছে এবং এনপিসি’র চেয়ারম্যান লি ঝাংশুর সাথে প্রধানমন্ত্রীর একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
চীন সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় ৬ জুলাই সকাল ১১টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবেন এবং একই দিন বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টা ৩৫ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (এইচএসআইএ) পৌঁছবেন।
‘ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম’স অ্যানুয়াল মিটিং অব দ্য নিউ চ্যাম্পিয়নস ২০১৯-এ অংশ নিতে ডালিয়ানে আগামী সপ্তাহে বিভিন্ন দেশ থেকে ১ হাজার ৮শ’র বেশি প্রতিনিধি অংশ নেবেন। এদের মধ্যে সরকার প্রধান, রাষ্ট্র প্রধান, ব্যবসায়ী নেতা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ ও বিভিন্ন অঙ্গনের শিল্পীরাও থাকবেন।
সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বিশ্বের পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ, আঞ্চলিক প্রতিযোগিতা, অর্থনৈতিক বৈষম্য ও কারিগরি সংকটের সঙ্গে কিভাবে খাপ খাওয়ানো যায় তার একটি নতুন কৌশলগত উপায় সম্পর্কে নিজ নিজ মতামত ব্যক্ত করবেন।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) সুইজারল্যান্ডের জেনেভা ভিত্তিক একটি সংগঠন এবং ১৯৭১ সালে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এর জন্ম। এটি ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে সুইস ফেডারেল সরকারের আইনে অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার স্বীকৃতি পায়।
ডব্লিউইএফ’র লক্ষ্যে বলা হয়েছে এটি বিশ্বের রাষ্ট্রসমূহকে ব্যবসায়িক, রাজনৈতিক, প্রাতিষ্ঠানিক এবং সমাজের অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে বৈশ্বিক, আঞ্চলিক এবং শিল্প খাতকে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় নিয়ে গঠিত হয়েছে।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১ জুলাই, ২০১৯ ০৯:৩৮

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের আমন্ত্রণে পাঁচ দিনের সরকারি সফরে আজ বিকেলে চীনের দালিয়ানের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। প্রায় পাঁচ বছর আগে ২০১৪ সালে বেইজিং সফর করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং ঢাকায় আসেন। এর মধ্যে দুই দেশে উচ্চপর্যায়ের সফর হয়েছে মাত্র দুটি।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর এই সফর রোহিঙ্গা ইস্যুর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক যেকোনো চাপের চেয়ে চীনের সুনজর যথেষ্ট। তারা বলেন, চীনই এ বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে পারে।
সাবেক কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ওয়ালিউর রহমান বলেন, “চীন আমাদের সঙ্গে যেভাবে কথা বলেছে তাতে এটি সফল হবে বলে আমরা আশাবাদী। চীন হয়তো মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য বলতে পারে কিংবা বলতে পারে তোমরা জাতিসংঘে আস, আমরা ভেটো দেব না।”
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট (বিজি১৭২০) সোমবার বিকেলে দালিয়ানের উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে।
সফরকালে তিনি বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দেবেন এবং বেইজিংয়ে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংও প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।
সোমবার চীনের দালিয়ানে তিন দিনব্যাপী ‘ডব্লিইএফ অ্যানুয়েল মিটিং অব দ্যা নিউ চ্যাম্পিয়নস-২০১৯’ শুরু হবে। যা ডব্লিউইএফ সামার দাভোস নামেও পরিচিত।
২ জুলাই (মঙ্গলবার) সকালে প্রধানমন্ত্রী দালিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে অনুষ্ঠেয় ডব্লিউইএফ সামার দাভোস সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দেবেন।
শেখ হাসিনা দালিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী চেয়ারম্যান ক্লস শোয়াবের কার্যালয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং বিকেলে ‘কো-অপারেশন ইন দ্যা প্যাসিফিক রিম’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশ নেবেন।
বিকেলে দালিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে শোয়াবের দপ্তরে অনুষ্ঠেয় ‘কো-অপারেশন ইন দ্যা প্যাসিফিক রিম’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী।
আগামী ৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রী চীন সরকারের সরবরাহকৃত একটি বিশেষ ভাড়া করা বিমানে স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় বেইজিংয়ের উদ্দেশে দালিয়ান ত্যাগ করবেন। একই দিন বিমানটি স্থানীয় সময় বেলা ১২টা ২৫ মিনিটে বেইজিং ক্যাপিটাল ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে পৌঁছবে।
বিকেলে তিনি বেইজিংয়ের লিজেনডাল হোটেলে প্রবাসী বাংলাদেশীদের এক সংবর্ধনা ও নৈশভোজে যোগ দিবেন।
৪ জুলাই সকালে শেখ হাসিনা স্বাগত অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং গ্রেট হল অব দ্য পিপলে বীরদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
পরে তিনি চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের সঙ্গে একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন এবং গ্রেট হল অব দ্য পিপলে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
প্রধানমন্ত্রী গ্রেট হল অব দ্য পিপলে চীনের প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত এক ভোজসভায় অংশ নেবেন।
একই দিন বিকেলে শেখ হাসিনার সিসিপিআইটিতে চীনা ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে একটি বিজনেস গোল টেবিল বৈঠকে অংশ নিবেন।
৫ জুলাই সকালে প্রধানমন্ত্রীর চাইনিজ থিংক ট্যাংক ‘পাঙ্গোয়াল ইনস্টিটিউশন’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ব্যক্তব্য রাখার কথা রয়েছে।
চীনের বিভিন্ন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাগণ শেখ হাসিনার সঙ্গে তার হোটেল স্যুটে দেখা করার কথা রয়েছে এবং এনপিসি’র চেয়ারম্যান লি ঝাংশুর সাথে প্রধানমন্ত্রীর একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
চীন সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় ৬ জুলাই সকাল ১১টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবেন এবং একই দিন বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টা ৩৫ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (এইচএসআইএ) পৌঁছবেন।
‘ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম’স অ্যানুয়াল মিটিং অব দ্য নিউ চ্যাম্পিয়নস ২০১৯-এ অংশ নিতে ডালিয়ানে আগামী সপ্তাহে বিভিন্ন দেশ থেকে ১ হাজার ৮শ’র বেশি প্রতিনিধি অংশ নেবেন। এদের মধ্যে সরকার প্রধান, রাষ্ট্র প্রধান, ব্যবসায়ী নেতা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ ও বিভিন্ন অঙ্গনের শিল্পীরাও থাকবেন।
সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বিশ্বের পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ, আঞ্চলিক প্রতিযোগিতা, অর্থনৈতিক বৈষম্য ও কারিগরি সংকটের সঙ্গে কিভাবে খাপ খাওয়ানো যায় তার একটি নতুন কৌশলগত উপায় সম্পর্কে নিজ নিজ মতামত ব্যক্ত করবেন।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) সুইজারল্যান্ডের জেনেভা ভিত্তিক একটি সংগঠন এবং ১৯৭১ সালে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এর জন্ম। এটি ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে সুইস ফেডারেল সরকারের আইনে অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার স্বীকৃতি পায়।
ডব্লিউইএফ’র লক্ষ্যে বলা হয়েছে এটি বিশ্বের রাষ্ট্রসমূহকে ব্যবসায়িক, রাজনৈতিক, প্রাতিষ্ঠানিক এবং সমাজের অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে বৈশ্বিক, আঞ্চলিক এবং শিল্প খাতকে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় নিয়ে গঠিত হয়েছে।