দেশের শাসনব্যবস্থা বিকেন্দ্রীকরণ হবে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
বিশেষ প্রতিনিধি | ১০ জুলাই, ২০১৯ ১৯:৩৭
ফাইল ছবি।
২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ সময়ের মধ্যে দেশের শাসনব্যবস্থা বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে।
বুধবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এতে সভাপতিত্ব করেন।
শাসনব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি ব্যয়ের সিংহভাগ বাস্তবায়িত হবে স্থানীয় পর্যায়ে। স্থানীয় প্রশাসন এ দায়িত্ব পালন করবে। স্থানীয় প্রশাসন ও কেন্দ্রের সুস্পষ্ট সমন্বয়ের মাধ্যমে পরিকল্পনা হবে।
বর্তমানে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে মন্তব্য তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগ ক্রমাগত বাড়ছে, রফতানি ও প্রবাসী আয়ে উচ্চ প্রবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্য বজায় আছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বাজেট ঘাটতির পরিমাণ জিডিপির ৫ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। আশা করা যায়, বিদ্যমান পরিবেশে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন সামনের দিনগুলোয় আরো বেগবান হবে। বাংলাদেশ শিগগিরই উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, জাতিসংঘের ‘বিশ্ব অর্থনীতির অবস্থা ও সম্ভাবনা, ২০১৯ প্রতিবেদনে শীর্ষ প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশের তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে। জাতিসংঘের এ প্রতিবেদনে ২০১৮ সালে সবচেয়ে দ্রুত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। এছাড়া ‘আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক, এপ্রিল ২০১৯’ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী তিনটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। এ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৩ শতাংশ, যা বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ও ভারতের প্রবৃদ্ধির সমান। এ তালিকায় ৭ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে প্রথম স্থানে রয়েছে রুয়ান্ডা, যার পরেই বাংলাদেশের অবস্থান।
নওগাঁ-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. শহিদুজ্জামান সরকারের তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে দেশের বেকারত্ব দূর করতে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি জানান, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার পাঁচ বছর মেয়াদে ১২ দশমিক ৯ মিলিয়ন অতিরিক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, যার মধ্যে প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য ২ মিলিয়ন কর্মসংস্থানও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ সময়ে ৯৯ লাখ শ্রমিক কাজে যোগ দেবে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বিদেশে শ্রমিক পাঠানো হয়েছে ৮ লাখ ৮০ হাজার। শ্রমিকদের বৈদেশিক কর্মসংস্থনের অংশ ২০৩০ সালের মধ্যে ৩৫ থেকে ৫০ শতাংশে উন্নীত হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে প্রতি বছর প্রায় ২০ লাখ তরুণ-তরুণী কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে দেশের শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে। এই বিশাল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং কাজ। আমরা গত ১০ বছরে দেশের বিভিন্ন ইপিজেডে ৩ লাখ ৫ হাজার ২৪২ জন লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকারের মেয়াদে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৬৫ হাজার ৫৪৬টি পদ সৃজনের সম্মতি দিয়েছে। এর মধ্যে ৫৯ হাজার ৬০৫টি পদের ছাড়পত্র দিয়েছে।
গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের প্রশ্নের জবাবে জাপান সফরের অর্জনের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সুশাসন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, নীতির ধারাবাহিকতা ও বর্তমান সরকারের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন জাপানের ব্যবসায়ীরা।’
তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
বিশেষ প্রতিনিধি | ১০ জুলাই, ২০১৯ ১৯:৩৭

২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ সময়ের মধ্যে দেশের শাসনব্যবস্থা বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে।
বুধবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এতে সভাপতিত্ব করেন।
শাসনব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি ব্যয়ের সিংহভাগ বাস্তবায়িত হবে স্থানীয় পর্যায়ে। স্থানীয় প্রশাসন এ দায়িত্ব পালন করবে। স্থানীয় প্রশাসন ও কেন্দ্রের সুস্পষ্ট সমন্বয়ের মাধ্যমে পরিকল্পনা হবে।
বর্তমানে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে মন্তব্য তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগ ক্রমাগত বাড়ছে, রফতানি ও প্রবাসী আয়ে উচ্চ প্রবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্য বজায় আছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বাজেট ঘাটতির পরিমাণ জিডিপির ৫ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। আশা করা যায়, বিদ্যমান পরিবেশে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন সামনের দিনগুলোয় আরো বেগবান হবে। বাংলাদেশ শিগগিরই উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, জাতিসংঘের ‘বিশ্ব অর্থনীতির অবস্থা ও সম্ভাবনা, ২০১৯ প্রতিবেদনে শীর্ষ প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশের তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে। জাতিসংঘের এ প্রতিবেদনে ২০১৮ সালে সবচেয়ে দ্রুত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। এছাড়া ‘আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক, এপ্রিল ২০১৯’ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী তিনটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। এ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৩ শতাংশ, যা বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ও ভারতের প্রবৃদ্ধির সমান। এ তালিকায় ৭ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে প্রথম স্থানে রয়েছে রুয়ান্ডা, যার পরেই বাংলাদেশের অবস্থান।
নওগাঁ-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. শহিদুজ্জামান সরকারের তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে দেশের বেকারত্ব দূর করতে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি জানান, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার পাঁচ বছর মেয়াদে ১২ দশমিক ৯ মিলিয়ন অতিরিক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, যার মধ্যে প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য ২ মিলিয়ন কর্মসংস্থানও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ সময়ে ৯৯ লাখ শ্রমিক কাজে যোগ দেবে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বিদেশে শ্রমিক পাঠানো হয়েছে ৮ লাখ ৮০ হাজার। শ্রমিকদের বৈদেশিক কর্মসংস্থনের অংশ ২০৩০ সালের মধ্যে ৩৫ থেকে ৫০ শতাংশে উন্নীত হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে প্রতি বছর প্রায় ২০ লাখ তরুণ-তরুণী কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে দেশের শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে। এই বিশাল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং কাজ। আমরা গত ১০ বছরে দেশের বিভিন্ন ইপিজেডে ৩ লাখ ৫ হাজার ২৪২ জন লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকারের মেয়াদে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৬৫ হাজার ৫৪৬টি পদ সৃজনের সম্মতি দিয়েছে। এর মধ্যে ৫৯ হাজার ৬০৫টি পদের ছাড়পত্র দিয়েছে।
গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের প্রশ্নের জবাবে জাপান সফরের অর্জনের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সুশাসন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, নীতির ধারাবাহিকতা ও বর্তমান সরকারের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন জাপানের ব্যবসায়ীরা।’
তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান।