এক বিমান ফেরত পাঠাতেই খরচ ৩৪ কোটি টাকা !
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২১ জুলাই, ২০১৯ ২১:৪০
ভাড়া নেওয়ার সময় অসম চুক্তির কারণে মিসর থেকে আনা দুটি এয়ারক্রাফটের একটি ফেরত পাঠাতে বিমানের পাওনা পরিশোধসহ খরচ হয়েছে ৪ দশমিক ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৩৪ কোটি টাকারও বেশি। অন্য বিমানটিও ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
বিমানের গলার কাটা হিসেবে পরিচিত এই বিমান দুটির অসম চুক্তির বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ও দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনতে মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
রবিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির পঞ্চম বৈঠকে এই পরামর্শ দেওয়া হয়।
বৈঠকে বিমান জানায়, বিমানটি ফেরত পাঠানোর কারণে মাসে প্রায় ৫ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। কিন্তু কমিটি বিমানের এই বক্তব্যে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, পরবর্তীতে বিমান বড় কোনো চুক্তি করলে বা কোনো কিছু কিনলে কমিটিকে তা জানাতে হবে। এ ছাড়া বিগত ১০ বছরে বিমানের কি কি যন্ত্রাংশ ক্রয় করা হয়েছে তার পূর্ণাঙ্গ তালিকা পরবর্তী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করে কমিটি।
বিমান সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের মার্চে ইজিপ্ট এয়ার থেকে ৫ বছরের চুক্তিতে দুটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর লিজ নেয় বিমান বাংলাদেশ। এর একটি বিমানের বহরে যুক্ত হয় ওই বছরের মার্চে এবং অন্যটি একই বছরের মে মাসে। ১১ মাস পার করে অর্থাৎ ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ফ্লাইট পরিচালনার পর একটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। উড়োজাহাজটি সচল করতে ইজিপ্ট এয়ার থেকেই ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। দেড় বছরের মাথায় নষ্ট হয় বাকি ইঞ্জিনটিও। উড়োজাহাজটি সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকে আবারও ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে গ্রাউন্ডেড থাকে উড়োজাহাজ দুটি। গত ডিসেম্বরে নষ্ট হয় ভাড়ায় আনা ইঞ্জিনও। পরে ইঞ্জিন মেরামত করতে যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। এদিকে ভাড়া হিসেবে ১১ কোটি টাকা করে প্রতি মাসে গুনতে হয়েছে বিমানকে। এর মধ্যে একটি বিমান ১৬ জুলাই ফেরত পাঠাতে পেরেছে বিমান।
বৈঠকে বিমান জানায়, মুজিববর্ষ উপলক্ষে ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত প্রত্যেক মাসের ১৭ তারিখ অনলাইনে টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রথম ১৭ জনকে ১৭ শতাংশ মূল্য ছাড় দেওয়া হবে।
পর্যটন শিল্পকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করার জন্য একটি বিস্তর কর্মপরিকল্পনা হাতে নেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়। অন্যদিকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতকে আরও বেশি দৃষ্টিনন্দন করতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাসহ সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করতে মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দেওয়া হয়।
র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সভাপতিত্বে কমিটি সদস্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, মো. আসলামুল হক, তানভীর ইমাম, আনোয়ার হোসেন খান, সৈয়দা রুবিনা আক্তার বৈঠকে অংশ নেন।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২১ জুলাই, ২০১৯ ২১:৪০

ভাড়া নেওয়ার সময় অসম চুক্তির কারণে মিসর থেকে আনা দুটি এয়ারক্রাফটের একটি ফেরত পাঠাতে বিমানের পাওনা পরিশোধসহ খরচ হয়েছে ৪ দশমিক ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৩৪ কোটি টাকারও বেশি। অন্য বিমানটিও ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
বিমানের গলার কাটা হিসেবে পরিচিত এই বিমান দুটির অসম চুক্তির বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ও দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনতে মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
রবিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির পঞ্চম বৈঠকে এই পরামর্শ দেওয়া হয়।
বৈঠকে বিমান জানায়, বিমানটি ফেরত পাঠানোর কারণে মাসে প্রায় ৫ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। কিন্তু কমিটি বিমানের এই বক্তব্যে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, পরবর্তীতে বিমান বড় কোনো চুক্তি করলে বা কোনো কিছু কিনলে কমিটিকে তা জানাতে হবে। এ ছাড়া বিগত ১০ বছরে বিমানের কি কি যন্ত্রাংশ ক্রয় করা হয়েছে তার পূর্ণাঙ্গ তালিকা পরবর্তী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করে কমিটি।
বিমান সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের মার্চে ইজিপ্ট এয়ার থেকে ৫ বছরের চুক্তিতে দুটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর লিজ নেয় বিমান বাংলাদেশ। এর একটি বিমানের বহরে যুক্ত হয় ওই বছরের মার্চে এবং অন্যটি একই বছরের মে মাসে। ১১ মাস পার করে অর্থাৎ ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ফ্লাইট পরিচালনার পর একটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। উড়োজাহাজটি সচল করতে ইজিপ্ট এয়ার থেকেই ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। দেড় বছরের মাথায় নষ্ট হয় বাকি ইঞ্জিনটিও। উড়োজাহাজটি সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকে আবারও ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে গ্রাউন্ডেড থাকে উড়োজাহাজ দুটি। গত ডিসেম্বরে নষ্ট হয় ভাড়ায় আনা ইঞ্জিনও। পরে ইঞ্জিন মেরামত করতে যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। এদিকে ভাড়া হিসেবে ১১ কোটি টাকা করে প্রতি মাসে গুনতে হয়েছে বিমানকে। এর মধ্যে একটি বিমান ১৬ জুলাই ফেরত পাঠাতে পেরেছে বিমান।
বৈঠকে বিমান জানায়, মুজিববর্ষ উপলক্ষে ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত প্রত্যেক মাসের ১৭ তারিখ অনলাইনে টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রথম ১৭ জনকে ১৭ শতাংশ মূল্য ছাড় দেওয়া হবে।
পর্যটন শিল্পকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করার জন্য একটি বিস্তর কর্মপরিকল্পনা হাতে নেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়। অন্যদিকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতকে আরও বেশি দৃষ্টিনন্দন করতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাসহ সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করতে মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দেওয়া হয়।
র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সভাপতিত্বে কমিটি সদস্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, মো. আসলামুল হক, তানভীর ইমাম, আনোয়ার হোসেন খান, সৈয়দা রুবিনা আক্তার বৈঠকে অংশ নেন।