পালিয়ে ভারতে যাওয়া বাংলাদেশি নারীদের করুণ দুর্দশা
অনলাইন ডেস্ক | ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ১২:৩৭
প্রতীকী ছবি।
দরিদ্রতা কিংবা পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া নারীরা এতটুকু ভালো নেই। আসামের নাগরিক তালিকা হওয়ার পর তাদের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। দেশটির সমাজকর্মী রিম্পল মেহতা তার একটি কলামে ওই নারীদের করুণ দুর্দশার কথা তুলে ধরেছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুতে শনিবার রিম্পলের লেখাটি প্রকাশিত হয়। তিনি বলছেন, নির্যাতিত নারীরা এখন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বন্দী অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
রিম্পল তার লেখায় তিনজন নারীর কথা বলেছেন। নিরাপত্তা এবং সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় নারীদের আসল নাম প্রকাশ না করে ছদ্মনাম ব্যবহার করেছেন। তিনি প্রতিবেদনে যে ছবি ব্যবহার করেছেন, সেগুলোও প্রতীকী।
শুরুতে ১৮ বছর বয়সী সালমার গল্প তুলে ধরেছেন। স্বামীর নির্মম নির্যাতনের কারণে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে তিনি ভারতে যান। সেখানে যাওয়ার আগে দেশটি সম্পর্কে কোনো ধারণাই তার ছিল না। বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় এখন বিদেশি হিসেবে আটক অবস্থায় আছেন।
লেখায় ২২ বছর বয়সী এক বিধবার কথা বলা হয়েছে। তার কাহিনি তুলে ধরতে নার্গিস নাম ব্যবহার করেছেন রিম্পল। একটি চাকরির আশায় নার্গিস ট্রেনে করে দালালের সঙ্গে ভারতে যান। কয়েক দিন বাদে দেশে ফিরতে চাইলে দালাল এভাবে জবাব দেয়, ‘এই পথে আসলে আর ফেরা যায় না!’
এই তরুণীর ঠাঁই হয়েছে কলকাতার একটি সংশোধন কেন্দ্রে। রিম্পল তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে একটি প্রশ্ন করেন নার্গিস, ‘দিদি, দালাল আমাকে কেন বলল এখান থেকে কোনোদিন ফেরা যায় না? আসলে কি যায় না?’
২২ বছরের আরেক তরুণী রেশমি দালালের থাবা থেকে পালিয়েও রেহাই পাননি। বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে যান।
রেশমি রিম্পলকে বলেন, ‘বিএসএফ আমাকে ধরে ফেলে। এক রাত তারা ক্যাম্পে রেখেছিল। পেটে লাথি মেরেছে। ধর্ষণ করেছে! আমি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলাম। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এসব প্রায় আড়াই বছর আগের কথা। এখনো শরীরের অনেক জায়গায় ব্যথা।’
রিম্পল তার লেখায় জানিয়েছেন, রেশমিদের মতো যারা পালিয়ে ভারতে গিয়েছেন তাদের অধিকাংশ সহিংস পরিবেশ থেকে মুক্তির আশায় সীমান্ত পাড়ি দেন। সেই আশা পূরণ তো হয়ইনি, বরং বিজেপি সরকারের এনআরসির কারণে ‘কড়াই থেকে আগুনে’ পড়ার উপক্রম হয়েছে।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
অনলাইন ডেস্ক | ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ১২:৩৭

দরিদ্রতা কিংবা পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া নারীরা এতটুকু ভালো নেই। আসামের নাগরিক তালিকা হওয়ার পর তাদের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। দেশটির সমাজকর্মী রিম্পল মেহতা তার একটি কলামে ওই নারীদের করুণ দুর্দশার কথা তুলে ধরেছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুতে শনিবার রিম্পলের লেখাটি প্রকাশিত হয়। তিনি বলছেন, নির্যাতিত নারীরা এখন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বন্দী অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
রিম্পল তার লেখায় তিনজন নারীর কথা বলেছেন। নিরাপত্তা এবং সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় নারীদের আসল নাম প্রকাশ না করে ছদ্মনাম ব্যবহার করেছেন। তিনি প্রতিবেদনে যে ছবি ব্যবহার করেছেন, সেগুলোও প্রতীকী।
শুরুতে ১৮ বছর বয়সী সালমার গল্প তুলে ধরেছেন। স্বামীর নির্মম নির্যাতনের কারণে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে তিনি ভারতে যান। সেখানে যাওয়ার আগে দেশটি সম্পর্কে কোনো ধারণাই তার ছিল না। বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় এখন বিদেশি হিসেবে আটক অবস্থায় আছেন।
লেখায় ২২ বছর বয়সী এক বিধবার কথা বলা হয়েছে। তার কাহিনি তুলে ধরতে নার্গিস নাম ব্যবহার করেছেন রিম্পল। একটি চাকরির আশায় নার্গিস ট্রেনে করে দালালের সঙ্গে ভারতে যান। কয়েক দিন বাদে দেশে ফিরতে চাইলে দালাল এভাবে জবাব দেয়, ‘এই পথে আসলে আর ফেরা যায় না!’
এই তরুণীর ঠাঁই হয়েছে কলকাতার একটি সংশোধন কেন্দ্রে। রিম্পল তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে একটি প্রশ্ন করেন নার্গিস, ‘দিদি, দালাল আমাকে কেন বলল এখান থেকে কোনোদিন ফেরা যায় না? আসলে কি যায় না?’
২২ বছরের আরেক তরুণী রেশমি দালালের থাবা থেকে পালিয়েও রেহাই পাননি। বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে যান।
রেশমি রিম্পলকে বলেন, ‘বিএসএফ আমাকে ধরে ফেলে। এক রাত তারা ক্যাম্পে রেখেছিল। পেটে লাথি মেরেছে। ধর্ষণ করেছে! আমি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলাম। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এসব প্রায় আড়াই বছর আগের কথা। এখনো শরীরের অনেক জায়গায় ব্যথা।’
রিম্পল তার লেখায় জানিয়েছেন, রেশমিদের মতো যারা পালিয়ে ভারতে গিয়েছেন তাদের অধিকাংশ সহিংস পরিবেশ থেকে মুক্তির আশায় সীমান্ত পাড়ি দেন। সেই আশা পূরণ তো হয়ইনি, বরং বিজেপি সরকারের এনআরসির কারণে ‘কড়াই থেকে আগুনে’ পড়ার উপক্রম হয়েছে।