মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্বাভাবিক দর প্রস্তাব: ব্যবস্থার আশ্বাস স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২ অক্টোবর, ২০১৯ ১৮:২৫
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বিভিন্ন সরঞ্জাম কিনতে অস্বাভাবিক দর প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বল জানিয়ছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এই প্রস্তাবনাকে ‘অবাস্তব’ উল্লেখ করে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, এরকম অবাস্তব প্রস্তাব ‘ভুলে’ হয়েছে।
বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) এক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী বৈজ্ঞানিক সেমিনারের অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত হয় ‘নিরন্তর গবেষণা: উন্নততর চিকিৎসা ও শিক্ষার সোপান’ শীর্ষক আলোচনাসভা।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রকল্পের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছিল পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে।
দেশের দ্বিতীয় এ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় (ডিপিপি) ৭৫০ টাকার বালিশ ক্রয়ে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ২৭ হাজার ৭২০ টাকা, আর বালিশের কাভারের দাম ধরা হয়েছে ২৮ হাজার টাকা, যার বাজার মূল্য ৫০০ টাকা। এমন আরও অনেক অসঙ্গতি রয়েছে ডিপিপিতে। এর মধ্যে মাত্র ২০ টাকার হ্যান্ড গ্লাভসের দাম ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা, আর ১৫ টাকার টেস্ট টিউবের দাম ধরা হয়েছে ৫৬ হাজার টাকা। যাচাই করা হয়নি প্রকল্পের সম্ভাব্যতাও।
সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনে এ প্রকল্পের মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয়েছে। সভায় এসব অস্বাভাবিক ব্যয় প্রস্তাব নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে ব্যাখ্যাও চাওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন ডিপিপি প্রস্তুতকারীদের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশও করেছে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রেরিত এরকম অবাস্তব প্রস্তাব ভুলে হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য গবেষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বাংলাদেশ এ খাতে এখনো পিছিয়ে রয়েছে। কেননা আমাদের বাজেটে গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করা হয় না। কিন্তু আগামী বাজেটে আমি নিজ দায়িত্বে গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করবো বলে আশ্বাস দিচ্ছি।
তিনি বলেন, সম্প্রতি আমি সরকারি কাজে যে কয়টি দেশ ভ্রমণ করেছি তার মধ্যে হাঙ্গেরির সঙ্গে আমাদের স্বাস্থ্য খাতের একটি গবেষণার চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটা হলে বিএসএমএমইউ’র সঙ্গে হাঙ্গেরির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তি হবে। তাছাড়া হাঙ্গেরি আমাদের দেশের ১০ জন এমবিবিএস পাশ শিক্ষার্থীকে উচ্চশিক্ষার্থে স্কলারশিপ দেবে।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন সারাদেশে শুদ্ধি অভিযান চালাচ্ছেন। যে কারণে ক্যাসিনোগুলো নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, আমাদের ৮টা বিভাগীয় ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণের প্রকল্প একনেকে পাস হয়েছে। দ্রুত এর নির্মাণকাজ শুরু হবে। এছাড়া আরও ৮টা বিভাগীয় কিডনি হাসপাতাল নির্মাণে প্রকল্প যত দ্রুত সম্ভব একনেকে পাস হবে।
বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএমআরসি ও কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়ক ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন, কলাম লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. সাহানা আক্তার, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. আতিকুর রহমান প্রমুখ।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২ অক্টোবর, ২০১৯ ১৮:২৫

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বিভিন্ন সরঞ্জাম কিনতে অস্বাভাবিক দর প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বল জানিয়ছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এই প্রস্তাবনাকে ‘অবাস্তব’ উল্লেখ করে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, এরকম অবাস্তব প্রস্তাব ‘ভুলে’ হয়েছে।
বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) এক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী বৈজ্ঞানিক সেমিনারের অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত হয় ‘নিরন্তর গবেষণা: উন্নততর চিকিৎসা ও শিক্ষার সোপান’ শীর্ষক আলোচনাসভা।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রকল্পের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছিল পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে।
দেশের দ্বিতীয় এ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় (ডিপিপি) ৭৫০ টাকার বালিশ ক্রয়ে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ২৭ হাজার ৭২০ টাকা, আর বালিশের কাভারের দাম ধরা হয়েছে ২৮ হাজার টাকা, যার বাজার মূল্য ৫০০ টাকা। এমন আরও অনেক অসঙ্গতি রয়েছে ডিপিপিতে। এর মধ্যে মাত্র ২০ টাকার হ্যান্ড গ্লাভসের দাম ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা, আর ১৫ টাকার টেস্ট টিউবের দাম ধরা হয়েছে ৫৬ হাজার টাকা। যাচাই করা হয়নি প্রকল্পের সম্ভাব্যতাও। সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনে এ প্রকল্পের মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয়েছে। সভায় এসব অস্বাভাবিক ব্যয় প্রস্তাব নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে ব্যাখ্যাও চাওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন ডিপিপি প্রস্তুতকারীদের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশও করেছে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রেরিত এরকম অবাস্তব প্রস্তাব ভুলে হয়েছে। তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য গবেষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বাংলাদেশ এ খাতে এখনো পিছিয়ে রয়েছে। কেননা আমাদের বাজেটে গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করা হয় না। কিন্তু আগামী বাজেটে আমি নিজ দায়িত্বে গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করবো বলে আশ্বাস দিচ্ছি।
তিনি বলেন, সম্প্রতি আমি সরকারি কাজে যে কয়টি দেশ ভ্রমণ করেছি তার মধ্যে হাঙ্গেরির সঙ্গে আমাদের স্বাস্থ্য খাতের একটি গবেষণার চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটা হলে বিএসএমএমইউ’র সঙ্গে হাঙ্গেরির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তি হবে। তাছাড়া হাঙ্গেরি আমাদের দেশের ১০ জন এমবিবিএস পাশ শিক্ষার্থীকে উচ্চশিক্ষার্থে স্কলারশিপ দেবে।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন সারাদেশে শুদ্ধি অভিযান চালাচ্ছেন। যে কারণে ক্যাসিনোগুলো নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, আমাদের ৮টা বিভাগীয় ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণের প্রকল্প একনেকে পাস হয়েছে। দ্রুত এর নির্মাণকাজ শুরু হবে। এছাড়া আরও ৮টা বিভাগীয় কিডনি হাসপাতাল নির্মাণে প্রকল্প যত দ্রুত সম্ভব একনেকে পাস হবে।
বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএমআরসি ও কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়ক ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন, কলাম লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. সাহানা আক্তার, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. আতিকুর রহমান প্রমুখ।