আটক ভারতীয় জেলে কারাগারে
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী | ১৮ অক্টোবর, ২০১৯ ১৭:৫২
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় পদ্মা নদীতে ইলিশ শিকারে এসে আটক ভারতীয় জেলে প্রণব মণ্ডলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পক্ষ থেকে চারঘাট থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলা প্রণবের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও অবৈধ কারেন্ট জাল দিয়ে বেআইনিভাবে মাছ শিকারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আসামি প্রণবের বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গী থানার ছিড়াচর গ্রামে।
তাকে আটকের জের ধরে বৃহস্পতিবার বিজিবি এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সমিত কুমার কুণ্ডু জানান, চারঘাট বিজিবি ক্যাম্পের হাবিলদার হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে ভারতীয় নাগরিক প্রনব মন্ডলকে আসামি করে বিনা পাসপোর্টে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ও বাংলাদেশ সরকারের মা ইলিশ সংরক্ষণ আইন অমান্য করে পদ্মায় ইলিশ ধরার অপরাধে দুটি ধারায় মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে তাকে জুডিশিয়াল আদালত-২ এ পাঠানো হয়। আদালতের বিচারক শাহনাজ পারভিন শুনানি শেষে তাকে দুপুরেই রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে তাকে কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে চারঘাট উপজেলা সদরের বিপরীতে পদ্মা ও তার শাখা বড়াল নদের মোহনা শাহরিয়ার খাল নামক এলাকায় বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এলাকাটি ভারতের চর পাইকমারি সীমান্ত থেকে ৫০০ মিটার বাংলাদেশের ভেতরে।
এ ঘটনার পর বিকালে বিজিবি ও বিএসএফের ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে রাতে বিজিবির রাজশাহী-১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ফেরদৌস জিয়াউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, বিএসএফের পক্ষ থেকে কাছে দাবি করা হয়েছে গোলাগুলিতে তাদের একজন সদস্য নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরো একজন। তবে বিজিবি তা নিশ্চিত নয়।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি জানান, মা ইলিশ সংরক্ষণ কর্মসূচির আওতায় মৎস্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে পদ্মা নদীতে অভিযানে যায় বিজিবি। এ সময় মাছ ধরার সময় তিনজন জেলেকে আটকের চেষ্টা করা হলে দুজন পালিয়ে যান। তবে প্রণবকে জালসহ আটক করে নদীর এপারে নিয়ে আসা হয়। ঘটনার কিছুক্ষণ পর ১১৭ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কাগমারী ক্যাম্প থেকে চার সদস্যের একটি টহল দল স্পিড বোট নিয়ে অনুমতি ছাড়া শূন্য লাইন অতিক্রম করে অবৈধভাবে বাংলাদেশের ৬০০ থেকে ৬৫০ গজ ভেতরে নদীর এপারে বিজিবি টহল দলের কাছে আসে এবং আটক ভারতীয় নাগরিককে ছেড়ে দিতে বলে। বিজিবি টহল দল পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিককে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হবে বলে তাদের জানায়। কিন্তু বিএসএফ সদস্যরা ভারতীয় নাগরিককে বিজিবির কাছ থেকে নিয়ে মারধর করেন। তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করা হয়। এতে বিজিবি সদস্যরা বাধা দিলে বিএসএফ সদস্যরা বিজিবিকে লক্ষ্য করে আনুমানিক ৬ থেকে ৮ রাউন্ড ফায়ার করে। আত্মরক্ষার জন্য বিজিবির টহল দল ফাঁকা ফায়ার করে। তখন বিএসএফ সদস্যরা ফায়ার করতে করতে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে চলে যান।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী | ১৮ অক্টোবর, ২০১৯ ১৭:৫২

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় পদ্মা নদীতে ইলিশ শিকারে এসে আটক ভারতীয় জেলে প্রণব মণ্ডলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পক্ষ থেকে চারঘাট থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলা প্রণবের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও অবৈধ কারেন্ট জাল দিয়ে বেআইনিভাবে মাছ শিকারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আসামি প্রণবের বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গী থানার ছিড়াচর গ্রামে।
তাকে আটকের জের ধরে বৃহস্পতিবার বিজিবি এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সমিত কুমার কুণ্ডু জানান, চারঘাট বিজিবি ক্যাম্পের হাবিলদার হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে ভারতীয় নাগরিক প্রনব মন্ডলকে আসামি করে বিনা পাসপোর্টে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ও বাংলাদেশ সরকারের মা ইলিশ সংরক্ষণ আইন অমান্য করে পদ্মায় ইলিশ ধরার অপরাধে দুটি ধারায় মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে তাকে জুডিশিয়াল আদালত-২ এ পাঠানো হয়। আদালতের বিচারক শাহনাজ পারভিন শুনানি শেষে তাকে দুপুরেই রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে তাকে কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে চারঘাট উপজেলা সদরের বিপরীতে পদ্মা ও তার শাখা বড়াল নদের মোহনা শাহরিয়ার খাল নামক এলাকায় বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এলাকাটি ভারতের চর পাইকমারি সীমান্ত থেকে ৫০০ মিটার বাংলাদেশের ভেতরে।
এ ঘটনার পর বিকালে বিজিবি ও বিএসএফের ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে রাতে বিজিবির রাজশাহী-১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ফেরদৌস জিয়াউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, বিএসএফের পক্ষ থেকে কাছে দাবি করা হয়েছে গোলাগুলিতে তাদের একজন সদস্য নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরো একজন। তবে বিজিবি তা নিশ্চিত নয়।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি জানান, মা ইলিশ সংরক্ষণ কর্মসূচির আওতায় মৎস্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে পদ্মা নদীতে অভিযানে যায় বিজিবি। এ সময় মাছ ধরার সময় তিনজন জেলেকে আটকের চেষ্টা করা হলে দুজন পালিয়ে যান। তবে প্রণবকে জালসহ আটক করে নদীর এপারে নিয়ে আসা হয়। ঘটনার কিছুক্ষণ পর ১১৭ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কাগমারী ক্যাম্প থেকে চার সদস্যের একটি টহল দল স্পিড বোট নিয়ে অনুমতি ছাড়া শূন্য লাইন অতিক্রম করে অবৈধভাবে বাংলাদেশের ৬০০ থেকে ৬৫০ গজ ভেতরে নদীর এপারে বিজিবি টহল দলের কাছে আসে এবং আটক ভারতীয় নাগরিককে ছেড়ে দিতে বলে। বিজিবি টহল দল পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিককে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হবে বলে তাদের জানায়। কিন্তু বিএসএফ সদস্যরা ভারতীয় নাগরিককে বিজিবির কাছ থেকে নিয়ে মারধর করেন। তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করা হয়। এতে বিজিবি সদস্যরা বাধা দিলে বিএসএফ সদস্যরা বিজিবিকে লক্ষ্য করে আনুমানিক ৬ থেকে ৮ রাউন্ড ফায়ার করে। আত্মরক্ষার জন্য বিজিবির টহল দল ফাঁকা ফায়ার করে। তখন বিএসএফ সদস্যরা ফায়ার করতে করতে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে চলে যান।