রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের কোনো বিকল্প নেই: অর্থমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২০ অক্টোবর, ২০১৯ ১৬:২৭
বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দ্রুততম সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গা নাগরিকদের ফেরত পাঠাতে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা চেয়েছেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলাম রবিবার গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান। শনিবার ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থী বিষয়ক একটা গোল টেবিল বৈঠকে অর্থমন্ত্রী এই সহায়তা চান।
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয় ব্যাংক সিটি ব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ও এইচএসবিসি ব্যাংকের সঙ্গে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শেফার, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমেদ, অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদারসহ সংশ্লিষ্টরা।
অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য আমরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। তাই তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এ ক্ষেত্রে কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই। আমরা বিশ্বাস করি বিশ্বব্যাংক বিশ্ববাসীর সঙ্গে আলাপ করে একটা পজিটিভ সিদ্ধান্ত নেবে। ইতিমধ্যে মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের তাদের নিয়ে যাওয়ার চুক্তি হয়েছে, কিন্তু সেখানে কোন টাইম লাইন দেওয়া হয়নি। আশা করি দ্রুত টাইম লাইন আসবে।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নাগরিকদের বাংলাদেশে মানবিক কারণে আশ্রয় দেওয়া হলেও এখন তার উচ্চমূল্য দিতে হচ্ছে। কক্সবাজারসহ ওই এলাকার পুরো পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। এতে আমাদের সামাজিক ও জলবায়ুগত চ্যালেঞ্জ বাড়ছে। আমাদের সামাজিক বন্ধনসহ যে সব ক্ষতি হচ্ছে তা ডলার বা টাকার অঙ্কে পরিমাপ করা সম্ভব নয়। তাই রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হবে, এটাই আমাদের প্রধান চাওয়া।
মুস্তফা কামাল আরও বলেন, এ জন্য বিশ্বব্যাংক বা অন্য কোনো উন্নয়ন সহযোগীর এ খাতে আর্থিক সহায়তার বিষয়টি আমরা ভাবছি না। আমরা ভাবছি তাদের প্রত্যাবর্তন ছাড়া কোনো বিকল্প নাই। আশা করি বিশ্বব্যাংক সবার সঙ্গে আলোচনা করে আমাদের কে একটা সুন্দর সমাধানের পথ দেখাবে। এই বিষয়ে বিশ্বের সবাই আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছে। এতে চীন, ভারত ও জাপান প্রত্যেকে একেকটি বড় ফ্যাক্টর। ফলে তাদেরকে বাদ দিয়ে কিছু করা যাবে না। তারা সব আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
বিশ্বের দুটি শীর্ষ স্থানীয় ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক দুটি বাংলাদেশে পুঁজিবাজার ও বন্ড মার্কেটে বিনিয়োগ বাড়াতে চায়। এই সংক্রান্ত দুটি প্রস্তাব আলাদা আলাদাভাবে বিশ্বব্যাংকের সভায় অর্থমন্ত্রীর নিকট প্রস্তাব করা হয়েছে। এইচএসবিসি মালয়েশিয়ায় জনপ্রিয় সুকুব বন্ড ইস্যু করতে চায়। বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে পাবলিক ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ইসলামি ব্যাংকিং পদ্ধতি চালু নাই। তবে সেটা বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোতে চালু রয়েছে। এই জন্য তাদের প্রস্তাব গুলো যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বৈদেশিক উৎস থেকে নেওয়া ঋণগুলো এখন থেকে টাকায় পরিশোধের জন্য প্রস্তাব এসেছে। এ ক্ষেত্রে এই দুটি ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধ করার প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়েছে। তবে এই ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কেননা ডলারের বিপরীতে টাকার মান সব সময় উঠানামা করে। এ ক্ষেত্রে টাকার মূল্যমান নির্দিষ্ট রেখে ডলারের বিপরীতে নেওয়া ঋণ বাংলাদেশি টাকায় পরিশোধ করা হলে বাংলাদেশ লাভবান হবে।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২০ অক্টোবর, ২০১৯ ১৬:২৭

বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দ্রুততম সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গা নাগরিকদের ফেরত পাঠাতে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা চেয়েছেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলাম রবিবার গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান। শনিবার ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থী বিষয়ক একটা গোল টেবিল বৈঠকে অর্থমন্ত্রী এই সহায়তা চান।
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয় ব্যাংক সিটি ব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ও এইচএসবিসি ব্যাংকের সঙ্গে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শেফার, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমেদ, অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদারসহ সংশ্লিষ্টরা।
অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য আমরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। তাই তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এ ক্ষেত্রে কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই। আমরা বিশ্বাস করি বিশ্বব্যাংক বিশ্ববাসীর সঙ্গে আলাপ করে একটা পজিটিভ সিদ্ধান্ত নেবে। ইতিমধ্যে মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের তাদের নিয়ে যাওয়ার চুক্তি হয়েছে, কিন্তু সেখানে কোন টাইম লাইন দেওয়া হয়নি। আশা করি দ্রুত টাইম লাইন আসবে।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নাগরিকদের বাংলাদেশে মানবিক কারণে আশ্রয় দেওয়া হলেও এখন তার উচ্চমূল্য দিতে হচ্ছে। কক্সবাজারসহ ওই এলাকার পুরো পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। এতে আমাদের সামাজিক ও জলবায়ুগত চ্যালেঞ্জ বাড়ছে। আমাদের সামাজিক বন্ধনসহ যে সব ক্ষতি হচ্ছে তা ডলার বা টাকার অঙ্কে পরিমাপ করা সম্ভব নয়। তাই রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হবে, এটাই আমাদের প্রধান চাওয়া।
মুস্তফা কামাল আরও বলেন, এ জন্য বিশ্বব্যাংক বা অন্য কোনো উন্নয়ন সহযোগীর এ খাতে আর্থিক সহায়তার বিষয়টি আমরা ভাবছি না। আমরা ভাবছি তাদের প্রত্যাবর্তন ছাড়া কোনো বিকল্প নাই। আশা করি বিশ্বব্যাংক সবার সঙ্গে আলোচনা করে আমাদের কে একটা সুন্দর সমাধানের পথ দেখাবে। এই বিষয়ে বিশ্বের সবাই আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছে। এতে চীন, ভারত ও জাপান প্রত্যেকে একেকটি বড় ফ্যাক্টর। ফলে তাদেরকে বাদ দিয়ে কিছু করা যাবে না। তারা সব আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
বিশ্বের দুটি শীর্ষ স্থানীয় ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক দুটি বাংলাদেশে পুঁজিবাজার ও বন্ড মার্কেটে বিনিয়োগ বাড়াতে চায়। এই সংক্রান্ত দুটি প্রস্তাব আলাদা আলাদাভাবে বিশ্বব্যাংকের সভায় অর্থমন্ত্রীর নিকট প্রস্তাব করা হয়েছে। এইচএসবিসি মালয়েশিয়ায় জনপ্রিয় সুকুব বন্ড ইস্যু করতে চায়। বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে পাবলিক ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ইসলামি ব্যাংকিং পদ্ধতি চালু নাই। তবে সেটা বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোতে চালু রয়েছে। এই জন্য তাদের প্রস্তাব গুলো যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বৈদেশিক উৎস থেকে নেওয়া ঋণগুলো এখন থেকে টাকায় পরিশোধের জন্য প্রস্তাব এসেছে। এ ক্ষেত্রে এই দুটি ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধ করার প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়েছে। তবে এই ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কেননা ডলারের বিপরীতে টাকার মান সব সময় উঠানামা করে। এ ক্ষেত্রে টাকার মূল্যমান নির্দিষ্ট রেখে ডলারের বিপরীতে নেওয়া ঋণ বাংলাদেশি টাকায় পরিশোধ করা হলে বাংলাদেশ লাভবান হবে।