পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে
এসেছে : সংসদে শিল্পমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৩ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:১০
ফাইল ফটো
পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে বলে দাবি করেছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বিএনপির সাংসদ জাহিদুর রহমানের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতে হঠাৎ বন্যার কারণে আমাদের পেঁয়াজের বাজার গরম হয়ে যায়। এ সময় ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিও বন্ধ করে দেয়। তবে আমরা অতিসত্বর তা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছি।’
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির পক্ষে সম্পূরক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এদিন বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠিত হয়।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘এই সিজনটি একটি লিন সিজন। এ সময় একটা সংকট থাকে। আমাদের নতুন পেঁয়াজ এখনো ওঠেনি। কিছুদিনের মধ্যে নতুন পেঁয়াজ উঠবে। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় মিয়ানমার ও তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ আমদানির ব্যবস্থা করেছি। ভারত থেকেও আমদানি চালু হয়েছে। পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল, নিয়ন্ত্রণের মধ্যে এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘এছাড়া জেলা-উপজেলা পর্যায়ে মোবাইল কোর্ট চালু আছে। কোথাও যেন বেশি দামে কেনাবেচা না হয়, সেজন্য কাজ করছে তারা। ভোক্তা অধিকারসহ আমাদের সংস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে।’
এর আগে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাংসদ আনোয়ার হোসেন খানের তারকাচিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে (লিখিত) বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৪ লাখ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে উৎপন্ন হয় ২৩ দশমিক ৩১ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ সংগ্রহকালীন ও সংরক্ষণকালীন ক্ষতি বাদ দিলে উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৬ দশমিক ৩১ লাখ মেট্রিক টন। ভারত থেকে আমদানি করে পেঁয়াজের ঘাটতি পূরণ করা হয়। কিন্তু ভারতের মহারাষ্ট্রে বন্যার কারণে পেঁয়াজের ফলনে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে ভারত পেঁয়াজের রপ্তানিমূল্য প্রতি মেট্রিক টন ২৫০ থেকে ৩০০ ডলারের পরিবর্তে ৮৫০ ডলার নির্ধারণ করে। পরে ভারতের স্থানীয় বাজারে অস্বাভাবিক হারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এতে বাংলাদেশের পেঁয়াজের বাজারে ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রিসহ মনিটরিং ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ অন্যান্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিএনপির গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, সার্কভুক্ত সাতটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশগুলোয় রপ্তানি হয় ১ হাজার ৪০৮ দশমিক ২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ সময় আমদানি হয় ৮ হাজার ৩৯৬ দশমিক ৭২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ঘাটতি ৬ হাজার ৯৮৮ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
মন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী সার্কভুক্ত দেশের মধ্যে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ৭ হাজার ৭৪৮ দশমিক ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। পাকিস্তানের সঙ্গে ৪৭১ দশমিক ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ভুটানের সঙ্গে ২৭ দশমিক ৯০ মার্কিন ডলার, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ১৬ দশমিক ২০ মার্কিন ডলার, মালদ্বীপের সঙ্গে ১২ দশমিক ৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং আফগানিস্তানের সঙ্গে ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিএনপির জাহিদুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, দেশের রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৩ শতাংশ তৈরি পোশাক শিল্প থেকে অর্জিত হয়।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৩ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:১০

পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে বলে দাবি করেছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বিএনপির সাংসদ জাহিদুর রহমানের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতে হঠাৎ বন্যার কারণে আমাদের পেঁয়াজের বাজার গরম হয়ে যায়। এ সময় ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিও বন্ধ করে দেয়। তবে আমরা অতিসত্বর তা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছি।’
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির পক্ষে সম্পূরক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এদিন বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠিত হয়।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘এই সিজনটি একটি লিন সিজন। এ সময় একটা সংকট থাকে। আমাদের নতুন পেঁয়াজ এখনো ওঠেনি। কিছুদিনের মধ্যে নতুন পেঁয়াজ উঠবে। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় মিয়ানমার ও তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ আমদানির ব্যবস্থা করেছি। ভারত থেকেও আমদানি চালু হয়েছে। পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল, নিয়ন্ত্রণের মধ্যে এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘এছাড়া জেলা-উপজেলা পর্যায়ে মোবাইল কোর্ট চালু আছে। কোথাও যেন বেশি দামে কেনাবেচা না হয়, সেজন্য কাজ করছে তারা। ভোক্তা অধিকারসহ আমাদের সংস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে।’
এর আগে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাংসদ আনোয়ার হোসেন খানের তারকাচিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে (লিখিত) বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৪ লাখ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে উৎপন্ন হয় ২৩ দশমিক ৩১ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ সংগ্রহকালীন ও সংরক্ষণকালীন ক্ষতি বাদ দিলে উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৬ দশমিক ৩১ লাখ মেট্রিক টন। ভারত থেকে আমদানি করে পেঁয়াজের ঘাটতি পূরণ করা হয়। কিন্তু ভারতের মহারাষ্ট্রে বন্যার কারণে পেঁয়াজের ফলনে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে ভারত পেঁয়াজের রপ্তানিমূল্য প্রতি মেট্রিক টন ২৫০ থেকে ৩০০ ডলারের পরিবর্তে ৮৫০ ডলার নির্ধারণ করে। পরে ভারতের স্থানীয় বাজারে অস্বাভাবিক হারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এতে বাংলাদেশের পেঁয়াজের বাজারে ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রিসহ মনিটরিং ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ অন্যান্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিএনপির গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, সার্কভুক্ত সাতটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশগুলোয় রপ্তানি হয় ১ হাজার ৪০৮ দশমিক ২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ সময় আমদানি হয় ৮ হাজার ৩৯৬ দশমিক ৭২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ঘাটতি ৬ হাজার ৯৮৮ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
মন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী সার্কভুক্ত দেশের মধ্যে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ৭ হাজার ৭৪৮ দশমিক ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। পাকিস্তানের সঙ্গে ৪৭১ দশমিক ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ভুটানের সঙ্গে ২৭ দশমিক ৯০ মার্কিন ডলার, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ১৬ দশমিক ২০ মার্কিন ডলার, মালদ্বীপের সঙ্গে ১২ দশমিক ৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং আফগানিস্তানের সঙ্গে ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিএনপির জাহিদুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, দেশের রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৩ শতাংশ তৈরি পোশাক শিল্প থেকে অর্জিত হয়।