রোগীর সঙ্গে চিকিৎসকের খারাপ ব্যবহারের সমালোচনা রাষ্ট্রপতির
অনলাইন ডেস্ক | ১ ডিসেম্বর, ২০১৯ ২৩:২৯
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ রোগীদের সঙ্গে কিছু বাংলাদেশী চিকিৎসকের খারাপ ব্যবহারের সমালোচনা করেছেন।
বিশেষত যারা তাদের (রোগীদের) ভারতে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে বাধ্য করছেন সেসব চিকিৎসকের সমালোচনা করে বলেন, ‘যদি রাজশাহী, খুলনা, যশোর এবং অন্যান্য কিছু অঞ্চলের বাসিন্দারা অসুস্থ হয়ে পড়েন, তারা কলকাতার হাসপাতালে চলে যান’।
তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘কেন এটি প্রায়ই ঘটে চলেছে? এটি কেবল আমাদের চিকিৎসক, তাদের সহায়তাকারী এবং নার্সদের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ এবং মনোভাবের অভাবের কারণে। কলকাতা হাসপাতালে প্রায় ৮০ শতাংশ রোগী বাংলাদেশ থেকে যায়। মনে হয় আপনি যেন সেখানে বাংলাদেশেই আছেন। আমাদের এ থেকে মুক্তি পেতে হবে।’
রাষ্ট্রপতি রাজনীতিবিদ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ দেশের মানুষকে এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য ঐক্য প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান।
তিনি ফলের সঙ্গে ফরমালিন ও খাবারে ভেজাল মিশ্রণকারী অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আন্দেলন জোরদার করার জন্য রাজনীতিবিদ, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আহ্বান জানিয়েছেন।
রবিবার রাষ্ট্রপতি এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) এর চ্যান্সেলর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় এসব বলেন।
তিনি ছাত্রছাত্রীদের খাদ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে যথাযথ ভূমিকা রাখতে বলেছেন, যা ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করছে।
রাষ্ট্রপতি কটাক্ষ করে বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে খাদ্য ভেজালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি’।
তিনি বলেন, ‘আমি আজ অবধি ৮০ থেকে ৮৫টি দেশ ঘুরেছি। অন্য দেশগুলোতে, এমনকি প্রতিবেশী দেশ ভারত ও নেপালেও খাবারে এই জাতীয় ভেজাল ও ফরমালিনের ব্যবহার দেখিনি।’
রাষ্ট্রপতি ফলের সঙ্গে ফরমালিন মিশ্রণের বিরূপ প্রভাব-এর বিরুদ্ধে জোরালো প্রচার চালিয়ে যেতে শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, অন্যথায় একটি জাতি হিসেবে ‘আমরা পঙ্গু হয়ে যাব এবং ধ্বংসও হব।’
বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে আবদুল হামিদ বলেন, শিক্ষার্থীদের ফরমালিনের খারাপ প্রভাব থেকে নিজেকে বাঁচাতে হবে। আর এ জাতীয় ক্ষতিকারক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জনগণকে জাগ্রত করতে হবে এবং অসাধু ব্যবসায়ীদেরও উপযুক্ত শিক্ষা দিতে হবে।
আবদুল হামিদ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের শিক্ষা ও দেশ এবং মানবজাতির কল্যাণ সাধনের লক্ষ্যে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
তিনি উপযুক্ত ও সঠিক প্রযুক্তির উদ্ভাবনে মনোনিবেশ করার দিকেও জোর দিতে বলেন, যার মাধ্যমে মানুষ নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে।
তিনি বলেন, ‘দেশের উচ্চশিক্ষাকে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে যান, যাতে অন্যরা আমাদের অনুসরণ করতে পারে।’
রাষ্ট্রপতি স্নাতক এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের প্রতি ২০২০ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে দেশের মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে অবদান রাখার আহ্বান জানান।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ২,৫৮৬ জন প্রকৌশল শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়।
সমাবর্তন বক্তা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া টেক অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক সাইফুর রহমান বক্তব্য রাখেন এবং রুয়েটের উপাচার্য রফিকুল ইসলাম শেখ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
খবর বাসস।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
অনলাইন ডেস্ক | ১ ডিসেম্বর, ২০১৯ ২৩:২৯

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ রোগীদের সঙ্গে কিছু বাংলাদেশী চিকিৎসকের খারাপ ব্যবহারের সমালোচনা করেছেন।
বিশেষত যারা তাদের (রোগীদের) ভারতে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে বাধ্য করছেন সেসব চিকিৎসকের সমালোচনা করে বলেন, ‘যদি রাজশাহী, খুলনা, যশোর এবং অন্যান্য কিছু অঞ্চলের বাসিন্দারা অসুস্থ হয়ে পড়েন, তারা কলকাতার হাসপাতালে চলে যান’।
তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘কেন এটি প্রায়ই ঘটে চলেছে? এটি কেবল আমাদের চিকিৎসক, তাদের সহায়তাকারী এবং নার্সদের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ এবং মনোভাবের অভাবের কারণে। কলকাতা হাসপাতালে প্রায় ৮০ শতাংশ রোগী বাংলাদেশ থেকে যায়। মনে হয় আপনি যেন সেখানে বাংলাদেশেই আছেন। আমাদের এ থেকে মুক্তি পেতে হবে।’
রাষ্ট্রপতি রাজনীতিবিদ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ দেশের মানুষকে এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য ঐক্য প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান।
তিনি ফলের সঙ্গে ফরমালিন ও খাবারে ভেজাল মিশ্রণকারী অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আন্দেলন জোরদার করার জন্য রাজনীতিবিদ, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আহ্বান জানিয়েছেন।
রবিবার রাষ্ট্রপতি এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) এর চ্যান্সেলর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় এসব বলেন।
তিনি ছাত্রছাত্রীদের খাদ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে যথাযথ ভূমিকা রাখতে বলেছেন, যা ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করছে।
রাষ্ট্রপতি কটাক্ষ করে বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে খাদ্য ভেজালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি’।
তিনি বলেন, ‘আমি আজ অবধি ৮০ থেকে ৮৫টি দেশ ঘুরেছি। অন্য দেশগুলোতে, এমনকি প্রতিবেশী দেশ ভারত ও নেপালেও খাবারে এই জাতীয় ভেজাল ও ফরমালিনের ব্যবহার দেখিনি।’
রাষ্ট্রপতি ফলের সঙ্গে ফরমালিন মিশ্রণের বিরূপ প্রভাব-এর বিরুদ্ধে জোরালো প্রচার চালিয়ে যেতে শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, অন্যথায় একটি জাতি হিসেবে ‘আমরা পঙ্গু হয়ে যাব এবং ধ্বংসও হব।’
বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে আবদুল হামিদ বলেন, শিক্ষার্থীদের ফরমালিনের খারাপ প্রভাব থেকে নিজেকে বাঁচাতে হবে। আর এ জাতীয় ক্ষতিকারক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জনগণকে জাগ্রত করতে হবে এবং অসাধু ব্যবসায়ীদেরও উপযুক্ত শিক্ষা দিতে হবে।
আবদুল হামিদ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের শিক্ষা ও দেশ এবং মানবজাতির কল্যাণ সাধনের লক্ষ্যে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
তিনি উপযুক্ত ও সঠিক প্রযুক্তির উদ্ভাবনে মনোনিবেশ করার দিকেও জোর দিতে বলেন, যার মাধ্যমে মানুষ নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে।
তিনি বলেন, ‘দেশের উচ্চশিক্ষাকে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে যান, যাতে অন্যরা আমাদের অনুসরণ করতে পারে।’
রাষ্ট্রপতি স্নাতক এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের প্রতি ২০২০ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে দেশের মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে অবদান রাখার আহ্বান জানান।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ২,৫৮৬ জন প্রকৌশল শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়।
সমাবর্তন বক্তা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া টেক অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক সাইফুর রহমান বক্তব্য রাখেন এবং রুয়েটের উপাচার্য রফিকুল ইসলাম শেখ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
খবর বাসস।