আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৯ ২৩:৪৯
শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তার দোসর রাজাকার আল-বদর, আল-শামস মিলিতভাবে বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। বুদ্ধিজীবীদের হত্যার ঠিক দুই দিন পর ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বাধীন বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।
দিবসটি উপলক্ষে জাতীয়ভাবে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
একাত্তরে ত্রিশ লাখ শহীদের মধ্যে বুদ্ধিজীবীদের বেছে বেছে হত্যার ঘটনা বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। তারা শহীদ হন এক সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে। হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী তাদের পরাজয় আসন্ন জেনে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে বুদ্ধিজীবী নিধনের এই পরিকল্পনা করে। তালিকাভুক্ত বুদ্ধিজীবীদের চোখ বেঁধে নিয়ে হত্যা করে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে আল-বদর বাহিনী অনেক বুদ্ধিজীবীকে ধরে নিয়ে মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে স্থাপিত আল-বদর ঘাঁটিতে নির্যাতনের পর রায়েরবাজার বধ্যভূমি ও মিরপুর কবরস্থানে নিয়ে হত্যা করে। স্থান দুটি এখন বধ্যভূমি হিসেবে সংরক্ষিত।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে রয়েছেন- অধ্যাপক মুনির চৌধুরী, ডা. আলিম চৌধুরী, অধ্যাপক মুনিরুজ্জামান, ড. ফজলে রাব্বী, সিরাজ উদ্দিন হোসেন, শহীদুল্লাহ কায়সার, অধ্যাপক জিসি দেব, জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, সাংবাদিক খন্দকার আবু তাহের, নিজামউদ্দিন আহমেদ, এসএ মান্নান (লাডু ভাই), এ এন এম গোলাম মোস্তফা, সৈয়দ নাজমুল হক, সেলিনা পারভিনসহ আরও অনেকে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে দেশের সকল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি টিভি চ্যানেল দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে।
বিভিন্ন সংগঠনের কর্মসূচি:
আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে আছে সকালে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে, বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী সংগঠনের কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ। সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে, বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী সংগঠনের কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ। সকাল ৮টায় বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন। ৮টা ৪৫ মিনিটে রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ।
দিবসটি উপলক্ষে শনিবার বিকেল ৩টায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবস উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি পালন করছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। আগারগাঁও এর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রাঙ্গণ এবং মিরপুরের জল্লাদখানা বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠে এসব কর্মসূচি পালিত হবে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- আবৃত্তি, নাটক, বুদ্ধিজীবীদের রচনা থেকে পাঠ ও শহীদের সন্তানদের স্মৃতিচারণ।
বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রায়েরবাজারের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। এছাড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর মঞ্চে নাটক, আবৃত্তি, নৃত্যসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করবে সংগঠনটি।
দিবসটিতে নানা আয়োজন রেখেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। সকাল সাড়ে আটটায় রায়ের বাজার বধ্যভূমি ও মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পরিবেশিত হবে কবিতা পাঠ, আবৃত্তি ও সংগীতানুষ্ঠান। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার আয়োজনে রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৯ ২৩:৪৯

শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তার দোসর রাজাকার আল-বদর, আল-শামস মিলিতভাবে বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। বুদ্ধিজীবীদের হত্যার ঠিক দুই দিন পর ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বাধীন বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।
দিবসটি উপলক্ষে জাতীয়ভাবে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
একাত্তরে ত্রিশ লাখ শহীদের মধ্যে বুদ্ধিজীবীদের বেছে বেছে হত্যার ঘটনা বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। তারা শহীদ হন এক সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে। হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী তাদের পরাজয় আসন্ন জেনে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে বুদ্ধিজীবী নিধনের এই পরিকল্পনা করে। তালিকাভুক্ত বুদ্ধিজীবীদের চোখ বেঁধে নিয়ে হত্যা করে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে আল-বদর বাহিনী অনেক বুদ্ধিজীবীকে ধরে নিয়ে মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে স্থাপিত আল-বদর ঘাঁটিতে নির্যাতনের পর রায়েরবাজার বধ্যভূমি ও মিরপুর কবরস্থানে নিয়ে হত্যা করে। স্থান দুটি এখন বধ্যভূমি হিসেবে সংরক্ষিত।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে রয়েছেন- অধ্যাপক মুনির চৌধুরী, ডা. আলিম চৌধুরী, অধ্যাপক মুনিরুজ্জামান, ড. ফজলে রাব্বী, সিরাজ উদ্দিন হোসেন, শহীদুল্লাহ কায়সার, অধ্যাপক জিসি দেব, জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, সাংবাদিক খন্দকার আবু তাহের, নিজামউদ্দিন আহমেদ, এসএ মান্নান (লাডু ভাই), এ এন এম গোলাম মোস্তফা, সৈয়দ নাজমুল হক, সেলিনা পারভিনসহ আরও অনেকে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে দেশের সকল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি টিভি চ্যানেল দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে।
বিভিন্ন সংগঠনের কর্মসূচি:
আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে আছে সকালে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে, বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী সংগঠনের কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ। সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে, বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী সংগঠনের কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ। সকাল ৮টায় বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন। ৮টা ৪৫ মিনিটে রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ।
দিবসটি উপলক্ষে শনিবার বিকেল ৩টায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবস উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি পালন করছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। আগারগাঁও এর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রাঙ্গণ এবং মিরপুরের জল্লাদখানা বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠে এসব কর্মসূচি পালিত হবে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- আবৃত্তি, নাটক, বুদ্ধিজীবীদের রচনা থেকে পাঠ ও শহীদের সন্তানদের স্মৃতিচারণ।
বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রায়েরবাজারের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। এছাড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর মঞ্চে নাটক, আবৃত্তি, নৃত্যসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করবে সংগঠনটি।
দিবসটিতে নানা আয়োজন রেখেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। সকাল সাড়ে আটটায় রায়ের বাজার বধ্যভূমি ও মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পরিবেশিত হবে কবিতা পাঠ, আবৃত্তি ও সংগীতানুষ্ঠান। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার আয়োজনে রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।