রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষার দায়িত্ব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের: অ্যামনেস্টি
অনলাইন ডেস্ক | ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০৯:১০
কক্সবাজারের উখিয়ায় শরণার্থীশিবিরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শিশু। ছবি: এএফপি
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষার দায়িত্ব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে গ্রহণ করতে হবে- বলেছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
সংস্থাটির এক বিবৃতির উল্লেখ করে বিবিসি জানায়, দুই বছরেরও বেশি সময় আগে কক্সবাজারের শরণার্থীশিবিরে আশ্রয় নেওয়া ৫ লাখ শিশুই এখনো ক্লাসরুম পর্যন্ত পায়নি।
বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, তাদের মধ্যে পাঁচ বছর থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুকিশোর রয়েছে দুই লাখ ১৫ হাজারের বেশি। আর ১২ বছর থেকে ১৭ বছর বয়সীদের সংখ্যা সোয়া এক লাখ।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার আয়োজিত প্রথম আন্তর্জাতিক শরণার্থী ফোরাম অনুষ্ঠিত হবে ১৬ ডিসেম্বর। এর আগে এই বিবৃতি দিল অ্যামনেস্টি।
রোহিঙ্গা শিশুদের যেহেতু খুব শিগগিরই নিজেদের দেশে ফিরতে পারার সম্ভাবনা নেই তাই তাদের ভবিষ্যতের বিষয়টি চিন্তা করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে শিক্ষার বিষয়ে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান সংস্থার দক্ষিণ এশিয়া ক্যাম্পেইনার সাদ হাম্মাদি।
তিনি বলেন, “রোহিঙ্গা শিশুরা যেখানে রয়েছে, সেখানে শিক্ষার সুযোগ বঞ্চিত হয়ে নিজেদের ভবিষ্যৎ হারিয়ে যেতে দেখবে। এর ফলে ক্রমে তারা হারিয়ে যাওয়া একটি জনগোষ্ঠীতে পরিণত হতে পারে।”
শরণার্থীশিবিরের ১৩১১টি রোহিঙ্গা পরিবারের এক-তৃতীয়াংশেই অন্তত একজন প্রাথমিক বা মাধ্যমিক স্কুলগামী বয়সী শিশু রয়েছে, যে স্কুলে যায় না। অক্টোবরে ইন্টার সেকশন কো-অর্ডিনেশন গ্রুপের চালানো এক জরিপে এই তথ্য উঠে আসে।
সাদ হাম্মাদি বলেন, “শরণার্থীদের শিক্ষা গ্রহণের ওপর যেসব বিধিনিষেধ বর্তমানে রয়েছে তা উঠিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে নিজেদের পদক্ষেপ শুরু করতে পারে।”
এ মাসের শুরুতে ক্যাম্পের বাইরের স্কুলে রোহিঙ্গা শিশুদের পড়ালেখা করার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয় ওয়াশিংটন ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পক্ষ থেকেও।
পাশাপাশি রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে বিভিন্ন সাহায্য সংস্থাকে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করে তারা।
এদিকে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতির জবাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বিবিসিকে জানান, নতুন ক্যাম্পগুলোতে ইতিমধ্যেই এক হাজার স্কুল পরিচালিত হচ্ছে এবং আরেকটি প্রকল্পের আওতায় আরও ৫০০ স্কুলের কার্যক্রম শুরু করা হবে শিগগিরই।
এ ছাড়া শরণার্থী ক্যাম্পে জাতিসংঘ ও বেসরকারি সংস্থা পরিচালিত বেশ কয়েকটি প্রাথমিক স্কুল ও মাদ্রাসা ছাড়াও কুতুপালং ও নয়াপাড়া ক্যাম্পে দুটি সরকারি স্কুল রয়েছে যেখানে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়া যায়।
তবে প্রাথমিক পঞ্চম শ্রেণি ও অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ যেন শেষ না হয়ে যায় তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে কয়েক মাস আগে জানায় দাতব্য সংস্থা সেইভ দ্য চিলড্রেন।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
অনলাইন ডেস্ক | ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০৯:১০

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষার দায়িত্ব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে গ্রহণ করতে হবে- বলেছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
সংস্থাটির এক বিবৃতির উল্লেখ করে বিবিসি জানায়, দুই বছরেরও বেশি সময় আগে কক্সবাজারের শরণার্থীশিবিরে আশ্রয় নেওয়া ৫ লাখ শিশুই এখনো ক্লাসরুম পর্যন্ত পায়নি।
বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, তাদের মধ্যে পাঁচ বছর থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুকিশোর রয়েছে দুই লাখ ১৫ হাজারের বেশি। আর ১২ বছর থেকে ১৭ বছর বয়সীদের সংখ্যা সোয়া এক লাখ।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার আয়োজিত প্রথম আন্তর্জাতিক শরণার্থী ফোরাম অনুষ্ঠিত হবে ১৬ ডিসেম্বর। এর আগে এই বিবৃতি দিল অ্যামনেস্টি।
রোহিঙ্গা শিশুদের যেহেতু খুব শিগগিরই নিজেদের দেশে ফিরতে পারার সম্ভাবনা নেই তাই তাদের ভবিষ্যতের বিষয়টি চিন্তা করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে শিক্ষার বিষয়ে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান সংস্থার দক্ষিণ এশিয়া ক্যাম্পেইনার সাদ হাম্মাদি।
তিনি বলেন, “রোহিঙ্গা শিশুরা যেখানে রয়েছে, সেখানে শিক্ষার সুযোগ বঞ্চিত হয়ে নিজেদের ভবিষ্যৎ হারিয়ে যেতে দেখবে। এর ফলে ক্রমে তারা হারিয়ে যাওয়া একটি জনগোষ্ঠীতে পরিণত হতে পারে।”
শরণার্থীশিবিরের ১৩১১টি রোহিঙ্গা পরিবারের এক-তৃতীয়াংশেই অন্তত একজন প্রাথমিক বা মাধ্যমিক স্কুলগামী বয়সী শিশু রয়েছে, যে স্কুলে যায় না। অক্টোবরে ইন্টার সেকশন কো-অর্ডিনেশন গ্রুপের চালানো এক জরিপে এই তথ্য উঠে আসে।
সাদ হাম্মাদি বলেন, “শরণার্থীদের শিক্ষা গ্রহণের ওপর যেসব বিধিনিষেধ বর্তমানে রয়েছে তা উঠিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে নিজেদের পদক্ষেপ শুরু করতে পারে।”
এ মাসের শুরুতে ক্যাম্পের বাইরের স্কুলে রোহিঙ্গা শিশুদের পড়ালেখা করার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয় ওয়াশিংটন ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পক্ষ থেকেও।
পাশাপাশি রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে বিভিন্ন সাহায্য সংস্থাকে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করে তারা।
এদিকে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতির জবাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বিবিসিকে জানান, নতুন ক্যাম্পগুলোতে ইতিমধ্যেই এক হাজার স্কুল পরিচালিত হচ্ছে এবং আরেকটি প্রকল্পের আওতায় আরও ৫০০ স্কুলের কার্যক্রম শুরু করা হবে শিগগিরই।
এ ছাড়া শরণার্থী ক্যাম্পে জাতিসংঘ ও বেসরকারি সংস্থা পরিচালিত বেশ কয়েকটি প্রাথমিক স্কুল ও মাদ্রাসা ছাড়াও কুতুপালং ও নয়াপাড়া ক্যাম্পে দুটি সরকারি স্কুল রয়েছে যেখানে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়া যায়।
তবে প্রাথমিক পঞ্চম শ্রেণি ও অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ যেন শেষ না হয়ে যায় তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে কয়েক মাস আগে জানায় দাতব্য সংস্থা সেইভ দ্য চিলড্রেন।