দেশপ্রেম, দায়িত্ববোধ ও শৃঙ্খলা সৈনিক জীবনের পাথেয়: প্রধানমন্ত্রী
অনলাইন ডেস্ক | ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:৩২
দেশপ্রেম, দায়িত্ববোধ ও শৃঙ্খলা সৈনিক জীবনের পাথেয় আখ্যায়িত করে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর নবীন সৈনিকদের দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ব্রতী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার যশোরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী অ্যাকাডেমিতে ‘৭৬তম বাফা কোর্স’ ও ‘ডিই-২০১৮’ কোর্স সমাপনী উপলক্ষে আয়োজিত ‘রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ-২০১৯’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন তিনি। বাসস
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ থেকে আপনাদের ওপর ন্যস্ত হচ্ছে দেশমাতৃকার মহান স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালনে আপনাদের সজাগ ও সদা প্রস্তুত থাকতে হবে। সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে হলেও দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য আপনারা শপথ গ্রহণ করেছেন। কাজেই এটা হবে আপনাদের জীবনের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রধান ও প্রথম ব্রত।’
এ সময় ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বাংলাদেশ মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে ‘পাসিং আউট’ ক্যাডেটদের উদ্দেশে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন সেই বক্তব্যের কিছু অংশের উদ্ধৃত করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মনে রাখবেন সততা, একাগ্রতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে বিমানবাহিনীর ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। আমি আশা করি, অকৃত্রিম দেশপ্রেমের প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে এবং সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে বাংলার আকাশ মুক্ত রাখার যে শপথ আজ আপনারা নিলেন, তার বাস্তবায়ন আপনারা সব সময় করে যাবেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান ও সামরিক কৌশলগত দিক, অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিধি ও সম্ভাবনার প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে জাতির পিতা একটি আধুনিক, শক্তিশালী ও পেশাদার বিমানবাহিনী গঠনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। জাতির পিতার দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ সিদ্ধান্তে স্বাধীনতার পরপরই বিমানবাহিনীতে সংযোজিত হয় সে সময়কার অত্যাধুনিক ‘মিগ-২১’ সুপারসনিক ফাইটার বিমানসহ পরিবহন বিমান, হেলিকপ্টার, এয়ার ডিফেন্স রাডার।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তার সরকার একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আঞ্চলিক ও ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বিমানবাহিনীকে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের সক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যে এর উত্তরোত্তর উন্নতি সাধন করে যাচ্ছে। জাতির পিতার প্রতিরক্ষা নীতির আলোকে আমরা সশস্ত্র বাহিনীর জন্য দীর্ঘমেয়াদি ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ প্রণয়ন করি, যা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’ যুদ্ধবিমানসহ বিভিন্ন ধরনের বিমান, রাডার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতির সুষ্ঠু, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী রক্ষণাবেক্ষণ এবং ওভারহোলিংয়ের লক্ষ্যে নির্মিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু অ্যারোনটিক্যাল সেন্টার।
আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় বিমানবাহিনীর সদস্যদের সার্বিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ সুবিধাদির উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্ব প্রদান করে যাচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ক্যাডেটদের মৌলিক প্রশিক্ষণ ও প্রাতিষ্ঠানিক মানোন্নয়নের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণের মেয়াদকাল বৃদ্ধি এবং ডিজিটাল ককপিট সংবলিত কমব্যাট প্রশিক্ষণ বিমান এবং পরিবহন প্রশিক্ষণ বিমানসহ হেলিকপ্টার সিমুলেটর স্থাপন করা হয়েছে।
বিমানবাহিনী অ্যাকাডেমির জন্য অত্যাধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স নির্মাণের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটি প্রশিক্ষিত ও আধুনিক বিমানবাহিনী গঠনে এ উদ্যোগ যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করবে বলে আমি আশা রাখি।’
১০৪ জন অফিসার ক্যাডেট এদিন কমিশন লাভ করেন। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ক্যাডেটদের মাঝে ফ্লাইং ব্যাজ, বিভিন্ন সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ট্রফি এবং সম্মানসূচক তরবারি প্রদান করেন। মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সাংসদ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, রাজনৈতিক নেতা, বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
অনলাইন ডেস্ক | ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:৩২

দেশপ্রেম, দায়িত্ববোধ ও শৃঙ্খলা সৈনিক জীবনের পাথেয় আখ্যায়িত করে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর নবীন সৈনিকদের দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ব্রতী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার যশোরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী অ্যাকাডেমিতে ‘৭৬তম বাফা কোর্স’ ও ‘ডিই-২০১৮’ কোর্স সমাপনী উপলক্ষে আয়োজিত ‘রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ-২০১৯’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন তিনি। বাসস
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ থেকে আপনাদের ওপর ন্যস্ত হচ্ছে দেশমাতৃকার মহান স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালনে আপনাদের সজাগ ও সদা প্রস্তুত থাকতে হবে। সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে হলেও দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য আপনারা শপথ গ্রহণ করেছেন। কাজেই এটা হবে আপনাদের জীবনের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রধান ও প্রথম ব্রত।’
এ সময় ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বাংলাদেশ মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে ‘পাসিং আউট’ ক্যাডেটদের উদ্দেশে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন সেই বক্তব্যের কিছু অংশের উদ্ধৃত করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মনে রাখবেন সততা, একাগ্রতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে বিমানবাহিনীর ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। আমি আশা করি, অকৃত্রিম দেশপ্রেমের প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে এবং সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে বাংলার আকাশ মুক্ত রাখার যে শপথ আজ আপনারা নিলেন, তার বাস্তবায়ন আপনারা সব সময় করে যাবেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান ও সামরিক কৌশলগত দিক, অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিধি ও সম্ভাবনার প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে জাতির পিতা একটি আধুনিক, শক্তিশালী ও পেশাদার বিমানবাহিনী গঠনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। জাতির পিতার দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ সিদ্ধান্তে স্বাধীনতার পরপরই বিমানবাহিনীতে সংযোজিত হয় সে সময়কার অত্যাধুনিক ‘মিগ-২১’ সুপারসনিক ফাইটার বিমানসহ পরিবহন বিমান, হেলিকপ্টার, এয়ার ডিফেন্স রাডার।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তার সরকার একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আঞ্চলিক ও ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বিমানবাহিনীকে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের সক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যে এর উত্তরোত্তর উন্নতি সাধন করে যাচ্ছে। জাতির পিতার প্রতিরক্ষা নীতির আলোকে আমরা সশস্ত্র বাহিনীর জন্য দীর্ঘমেয়াদি ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ প্রণয়ন করি, যা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’ যুদ্ধবিমানসহ বিভিন্ন ধরনের বিমান, রাডার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতির সুষ্ঠু, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী রক্ষণাবেক্ষণ এবং ওভারহোলিংয়ের লক্ষ্যে নির্মিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু অ্যারোনটিক্যাল সেন্টার।
আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় বিমানবাহিনীর সদস্যদের সার্বিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ সুবিধাদির উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্ব প্রদান করে যাচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ক্যাডেটদের মৌলিক প্রশিক্ষণ ও প্রাতিষ্ঠানিক মানোন্নয়নের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণের মেয়াদকাল বৃদ্ধি এবং ডিজিটাল ককপিট সংবলিত কমব্যাট প্রশিক্ষণ বিমান এবং পরিবহন প্রশিক্ষণ বিমানসহ হেলিকপ্টার সিমুলেটর স্থাপন করা হয়েছে।
বিমানবাহিনী অ্যাকাডেমির জন্য অত্যাধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স নির্মাণের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটি প্রশিক্ষিত ও আধুনিক বিমানবাহিনী গঠনে এ উদ্যোগ যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করবে বলে আমি আশা রাখি।’
১০৪ জন অফিসার ক্যাডেট এদিন কমিশন লাভ করেন। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ক্যাডেটদের মাঝে ফ্লাইং ব্যাজ, বিভিন্ন সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ট্রফি এবং সম্মানসূচক তরবারি প্রদান করেন। মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সাংসদ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, রাজনৈতিক নেতা, বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।