দেশবরেণ্য শিল্পোদ্যোক্তা স্যামসন এইচ চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী রবিবার
পাবনা প্রতিনিধি | ৪ জানুয়ারি, ২০২০ ২০:৩৭
একুশে পদকপ্রাপ্ত, দেশবরেণ্য শিল্পোদ্যোক্তা ও স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা স্যামসন এইচ চৌধুরীর অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী রবিবার। ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
শূন্য থেকে শুরু করে সততা, নিয়মানুবর্তিতা আর কঠোর পরিশ্রমে স্যামসন এইউ চৌধুরী ছিলেন দেশের অন্যতম সফল ব্যবসায়ী। ১৯৫৮ সালে মাত্র ২০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে পাবনার আতাইকুলার ছোট্ট ওষুধের দোকান থেকে যে স্বপ্নযাত্রা শুরু করেছিলেন তিনি। দিনে দিনে স্বপ্নকে ছাড়িয়ে পরিণত হয়েছেন সফলতার দৃষ্টান্তে। দেশের বাজার ছাড়িয়ে স্কয়ারকে পরিণত করেছেন আন্তর্জাতিক ব্রান্ডে।
বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী স্যামসন এইউ চৌধুরী ১৯২৬ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার কাশিয়ানী থানাধীন আড়ুয়াকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন ইয়াকুব হোসেন চৌধুরী। স্যামসন চৌধুরী ভারতে পড়াশোনা শেষ করে ১৯৫২ সালে পাবনার আতাইকুলায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তার বাবা ছিলেন একটি ফার্মেসির মেডিকেল অফিসার।
ছোটবেলা থেকেই ব্যবসায় আগ্রহী স্যামসন এইচ চৌধুরী ছিলেন একজন স্বপ্নচারী মানুষ। প্রথমে নিজের বাবার নামের সঙ্গে মিল রেখে তৈরি করেন ‘ই-সনস’ নামক ওষুধ তৈরির কারখানা। পরে বাবার কাছ থেকে পুঁজি নিয়ে ১৯৫৮ সালে চার বন্ধু মিলে পাবনা শহরে শালগাড়িয়া এলাকায় গড়ে তোলেন স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস নামে ওষুধ কারখানা।
ব্যবসায়িক জীবনে কখনোই পণ্যের গুণগত মানের সঙ্গে আপস করেননি স্যামসন এইচ চৌধুরী। স্কয়ারের ওষুধ এখন রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দেশে।
ওষুধ শিল্পে বিপুল সাফল্যের পর ১৯৮৮ সালে ‘জীবন বাঁচাতে, জীবন সাজাতে’ এই স্লোগানে স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের মাধ্যমে শুরু করেন প্রসাধন সামগ্রীর ব্যবসা। ১৯৯৫ সালে স্কয়ার যুক্ত হয় টেক্সটাইল ব্যবসায়। ধারাবাহিক সফলতায় একে একে প্রতিষ্ঠা করেন স্কয়ার স্পিনিংস, স্কয়ার কনজিউমার প্রোডাক্টস, স্কয়ার ইনফরমেটিকস, স্কয়ার সারাহ নিড ফেব্রিকস, স্কয়ার হসপিটালস, স্কয়ার অ্যাগ্রো, স্কয়ার হারবাল অ্যান্ড নিউট্রিসিটিক্যাল, এইজিস সার্ভিসেস, মাছরাঙা প্রডাকশন, বর্ণালি প্রিন্টার্স লিমিটেড ও মিডিয়াকম ও মাছরাঙা টেলিভিশন। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থান হওয়া কর্মকর্তা কর্মচারী মিলিয়ে স্কয়ার এখন প্রায় ৫০ হাজার মানুষের এক সুবিশাল পরিবার।
এ ছাড়া আবাসন প্রতিষ্ঠান শেলটেক, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টে স্কয়ার গ্রুপের শেয়ার রয়েছে।
বরেণ্য শিল্পপতি স্যামসন এইচ চৌধুরী ব্যবসায়ীদের সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার পাশাপাশি নেতৃত্বও দিয়েছেন। জীবদ্দশায় ২০১৩ সালে সমাজসেবায় মরণোত্তর একুশে পদকসহ নানা সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন।
২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি সিঙ্গাপুরে তিনি পরলোকগমন করেন। তাকে পাবনা শহরের বৈকুণ্ঠপুরের বাসভবন এস্ট্রাসে সমাহিত করা হয়।
দেশবরেণ্য এই শিল্পপতির মৃত্যুদিবসে তার পরিবারের পক্ষ থেকে পাবনার এস্ট্রাস খামারবাড়িতে প্রার্থনা সভা এবং পাবনা প্রেসক্লাব, পাবনা সংবাদপত্র পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন স্মরণ সভার আয়োজন করেছে।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
পাবনা প্রতিনিধি | ৪ জানুয়ারি, ২০২০ ২০:৩৭

একুশে পদকপ্রাপ্ত, দেশবরেণ্য শিল্পোদ্যোক্তা ও স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা স্যামসন এইচ চৌধুরীর অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী রবিবার। ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
শূন্য থেকে শুরু করে সততা, নিয়মানুবর্তিতা আর কঠোর পরিশ্রমে স্যামসন এইউ চৌধুরী ছিলেন দেশের অন্যতম সফল ব্যবসায়ী। ১৯৫৮ সালে মাত্র ২০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে পাবনার আতাইকুলার ছোট্ট ওষুধের দোকান থেকে যে স্বপ্নযাত্রা শুরু করেছিলেন তিনি। দিনে দিনে স্বপ্নকে ছাড়িয়ে পরিণত হয়েছেন সফলতার দৃষ্টান্তে। দেশের বাজার ছাড়িয়ে স্কয়ারকে পরিণত করেছেন আন্তর্জাতিক ব্রান্ডে।
বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী স্যামসন এইউ চৌধুরী ১৯২৬ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার কাশিয়ানী থানাধীন আড়ুয়াকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন ইয়াকুব হোসেন চৌধুরী। স্যামসন চৌধুরী ভারতে পড়াশোনা শেষ করে ১৯৫২ সালে পাবনার আতাইকুলায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তার বাবা ছিলেন একটি ফার্মেসির মেডিকেল অফিসার।
ছোটবেলা থেকেই ব্যবসায় আগ্রহী স্যামসন এইচ চৌধুরী ছিলেন একজন স্বপ্নচারী মানুষ। প্রথমে নিজের বাবার নামের সঙ্গে মিল রেখে তৈরি করেন ‘ই-সনস’ নামক ওষুধ তৈরির কারখানা। পরে বাবার কাছ থেকে পুঁজি নিয়ে ১৯৫৮ সালে চার বন্ধু মিলে পাবনা শহরে শালগাড়িয়া এলাকায় গড়ে তোলেন স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস নামে ওষুধ কারখানা।
ব্যবসায়িক জীবনে কখনোই পণ্যের গুণগত মানের সঙ্গে আপস করেননি স্যামসন এইচ চৌধুরী। স্কয়ারের ওষুধ এখন রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দেশে।
ওষুধ শিল্পে বিপুল সাফল্যের পর ১৯৮৮ সালে ‘জীবন বাঁচাতে, জীবন সাজাতে’ এই স্লোগানে স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের মাধ্যমে শুরু করেন প্রসাধন সামগ্রীর ব্যবসা। ১৯৯৫ সালে স্কয়ার যুক্ত হয় টেক্সটাইল ব্যবসায়। ধারাবাহিক সফলতায় একে একে প্রতিষ্ঠা করেন স্কয়ার স্পিনিংস, স্কয়ার কনজিউমার প্রোডাক্টস, স্কয়ার ইনফরমেটিকস, স্কয়ার সারাহ নিড ফেব্রিকস, স্কয়ার হসপিটালস, স্কয়ার অ্যাগ্রো, স্কয়ার হারবাল অ্যান্ড নিউট্রিসিটিক্যাল, এইজিস সার্ভিসেস, মাছরাঙা প্রডাকশন, বর্ণালি প্রিন্টার্স লিমিটেড ও মিডিয়াকম ও মাছরাঙা টেলিভিশন। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থান হওয়া কর্মকর্তা কর্মচারী মিলিয়ে স্কয়ার এখন প্রায় ৫০ হাজার মানুষের এক সুবিশাল পরিবার।
এ ছাড়া আবাসন প্রতিষ্ঠান শেলটেক, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টে স্কয়ার গ্রুপের শেয়ার রয়েছে।
বরেণ্য শিল্পপতি স্যামসন এইচ চৌধুরী ব্যবসায়ীদের সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার পাশাপাশি নেতৃত্বও দিয়েছেন। জীবদ্দশায় ২০১৩ সালে সমাজসেবায় মরণোত্তর একুশে পদকসহ নানা সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন।
২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি সিঙ্গাপুরে তিনি পরলোকগমন করেন। তাকে পাবনা শহরের বৈকুণ্ঠপুরের বাসভবন এস্ট্রাসে সমাহিত করা হয়।
দেশবরেণ্য এই শিল্পপতির মৃত্যুদিবসে তার পরিবারের পক্ষ থেকে পাবনার এস্ট্রাস খামারবাড়িতে প্রার্থনা সভা এবং পাবনা প্রেসক্লাব, পাবনা সংবাদপত্র পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন স্মরণ সভার আয়োজন করেছে।