সমালোচনার মুখে হাসপাতালের তথ্য সংগ্রহে দেয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৪ জানুয়ারি, ২০২০ ২১:২৬
সমালোচনার মুখে হাসপাতালগুলোতে সাংবাদিকদের প্রবেশ ও তথ্য সংগ্রহ বিষয়ে দেওয়া নির্দেশনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে।
এর আগে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশিকার বিষয়ে উদ্বেগ ও হতাশা প্রকাশ করে গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠায় দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
পরে আগের নির্দেশনা প্রত্যাহার করে নতুন আরেকটি নির্দেশনা জারি করে মন্ত্রণালয়। এতে হাসপাতালের তথ্য প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত বিষয় বাদ দিয়ে দর্শনার্থী ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বলা হয়েছে।
গত ১২ জানুয়ারি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সেবা বিভাগ থেকে জারি করা এক নির্দেশে বলা হয়, গবেষণা, জরিপ, অন্য কোনো তথ্য বা সংবাদ সংগ্রহের জন্য তথ্য সংগ্রহকারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন। সংগৃহীত তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন। বিনা অনুমতিতে হাসপাতালের অভ্যন্তরের রোগী বা স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের কোনো স্থির বা ভিডিওচিত্র ধারণ করতে পারবেন না। সংগৃহীত তথ্য প্রকাশের আগেই বস্তুনিষ্ঠতা বিষয়ে কর্তৃপক্ষের অনুমতি গ্রহণ করতে হবে।
টিআইবির বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নির্দেশনা অনুযায়ী সকল সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে গবেষণা, জরিপ ও অন্য কোনো উদ্দেশ্যে তথ্য বা সংবাদ সংগ্রহে অনুমতি গ্রহণের বাধ্যবাধকতা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে এটাকে তথ্য যাচাই করার মতো হাস্যকর যুক্তি হিসেবে উল্লিখিত হলেও প্রকৃত অর্থে তা সংঘটিত বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্যই এ ধরনের নির্দেশনা জারি করা হয়েছে বলে মনে করা অমূলক নয়।
এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. আবু রায়হান মিঞার স্বাক্ষরিত নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘দেশের সব সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে মানসম্মত চিকিৎসা দেওয়া সরকারের লক্ষ্য। নিরাপদ চিকিৎসার জন্য রোগীর সঙ্গে আসা দর্শনার্থীদের নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। কেননা, তাদের স্বাস্থ্যবিষয়ক অজ্ঞতা এবং রোগ-জীবাণুর সংক্রমণ রোধে করণীয় বিষয়ে জ্ঞানের অভাবে অধিকাংশ সময়ই কাঙ্ক্ষিত পরিবেশ বা পরিস্থিতির অবনতি হয়। এ অবস্থায় দেশের সব সরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষকে নির্দেশক্রমে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করা হলো।’
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রত্যেক হাসপাতালে দর্শনার্থী পাস চালু করতে হবে এবং প্রতিটি পাসের জন্য নিরাপত্তা জামানত চালু করা যেতে পারে। রোগীর অসুস্থতা বিবেচনায় একজন রোগীকে সহায়তা করার জন্য সর্বোচ্চ দুইজন দর্শনার্থীকে পাস দেওয়া যেতে পারে। হাসপাতাল ত্যাগের আগেই পাস ফেরত দিয়ে দর্শনার্থী নিরাপত্তা জামানত ফেরত নিতে পারবেন।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, হাসপাতালের সব চিকিৎসক, নার্সসহ কর্মচারীরা বৈধ পরিচয়পত্র দৃশ্যমানভাবে বহন করবেন। আগত দর্শনার্থীদের জন্য পাস ইস্যু করার সময় নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, পরিদর্শনের কারণ ইত্যাদি তথ্য-সংবলিত রেজিস্ট্রার সংরক্ষণ করা যেতে পারে। দর্শনার্থী বিষয়ক নিয়মাবলি রোগী বা রোগীর সাহায্যকারীকে অবহিত করতে হবে। এছাড়া দর্শনার্থী বিষয়ক নিয়মাবলি সহজে দৃষ্টিগোচর হয় এমন জায়গায় রাখতে হবে।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৪ জানুয়ারি, ২০২০ ২১:২৬

সমালোচনার মুখে হাসপাতালগুলোতে সাংবাদিকদের প্রবেশ ও তথ্য সংগ্রহ বিষয়ে দেওয়া নির্দেশনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে।
এর আগে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশিকার বিষয়ে উদ্বেগ ও হতাশা প্রকাশ করে গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠায় দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
পরে আগের নির্দেশনা প্রত্যাহার করে নতুন আরেকটি নির্দেশনা জারি করে মন্ত্রণালয়। এতে হাসপাতালের তথ্য প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত বিষয় বাদ দিয়ে দর্শনার্থী ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বলা হয়েছে।
গত ১২ জানুয়ারি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সেবা বিভাগ থেকে জারি করা এক নির্দেশে বলা হয়, গবেষণা, জরিপ, অন্য কোনো তথ্য বা সংবাদ সংগ্রহের জন্য তথ্য সংগ্রহকারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন। সংগৃহীত তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন। বিনা অনুমতিতে হাসপাতালের অভ্যন্তরের রোগী বা স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের কোনো স্থির বা ভিডিওচিত্র ধারণ করতে পারবেন না। সংগৃহীত তথ্য প্রকাশের আগেই বস্তুনিষ্ঠতা বিষয়ে কর্তৃপক্ষের অনুমতি গ্রহণ করতে হবে।
টিআইবির বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নির্দেশনা অনুযায়ী সকল সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে গবেষণা, জরিপ ও অন্য কোনো উদ্দেশ্যে তথ্য বা সংবাদ সংগ্রহে অনুমতি গ্রহণের বাধ্যবাধকতা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে এটাকে তথ্য যাচাই করার মতো হাস্যকর যুক্তি হিসেবে উল্লিখিত হলেও প্রকৃত অর্থে তা সংঘটিত বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্যই এ ধরনের নির্দেশনা জারি করা হয়েছে বলে মনে করা অমূলক নয়।
এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. আবু রায়হান মিঞার স্বাক্ষরিত নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘দেশের সব সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে মানসম্মত চিকিৎসা দেওয়া সরকারের লক্ষ্য। নিরাপদ চিকিৎসার জন্য রোগীর সঙ্গে আসা দর্শনার্থীদের নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। কেননা, তাদের স্বাস্থ্যবিষয়ক অজ্ঞতা এবং রোগ-জীবাণুর সংক্রমণ রোধে করণীয় বিষয়ে জ্ঞানের অভাবে অধিকাংশ সময়ই কাঙ্ক্ষিত পরিবেশ বা পরিস্থিতির অবনতি হয়। এ অবস্থায় দেশের সব সরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষকে নির্দেশক্রমে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করা হলো।’
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রত্যেক হাসপাতালে দর্শনার্থী পাস চালু করতে হবে এবং প্রতিটি পাসের জন্য নিরাপত্তা জামানত চালু করা যেতে পারে। রোগীর অসুস্থতা বিবেচনায় একজন রোগীকে সহায়তা করার জন্য সর্বোচ্চ দুইজন দর্শনার্থীকে পাস দেওয়া যেতে পারে। হাসপাতাল ত্যাগের আগেই পাস ফেরত দিয়ে দর্শনার্থী নিরাপত্তা জামানত ফেরত নিতে পারবেন।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, হাসপাতালের সব চিকিৎসক, নার্সসহ কর্মচারীরা বৈধ পরিচয়পত্র দৃশ্যমানভাবে বহন করবেন। আগত দর্শনার্থীদের জন্য পাস ইস্যু করার সময় নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, পরিদর্শনের কারণ ইত্যাদি তথ্য-সংবলিত রেজিস্ট্রার সংরক্ষণ করা যেতে পারে। দর্শনার্থী বিষয়ক নিয়মাবলি রোগী বা রোগীর সাহায্যকারীকে অবহিত করতে হবে। এছাড়া দর্শনার্থী বিষয়ক নিয়মাবলি সহজে দৃষ্টিগোচর হয় এমন জায়গায় রাখতে হবে।