দিল্লি থেকে দেশে ফেরা ২৩ বাংলাদেশি করোনা আক্রান্ত নন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৪ মার্চ, ২০২০ ১৭:১৫
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে (রোগ সংক্রমণ রোধে পৃথক রাখার ব্যবস্থা) থাকার পর স্বাস্থ্য ছাড়পত্র নিয়ে শনিবার বিকালে দেশে ফিরেছেন ২৩ বাংলাদেশি। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় তারা কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নন বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক সহায়তায় তাদের বহনকারী ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট শনিবার বেলা ২টা ৫৬ মিনিটে ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
এয়ারলাইন্সের অনলাইন ফ্লাইট ইনফরমেশন আপডেট এ তথ্য নিশ্চিত করে। ওই বাংলাদেশিদের পরে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রবাসীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বিতভাবে অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে বাংলাদেশ।
এক কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানান, বেলা ১১টা ৫৮ মিনিটে (নয়াদিল্লির স্থানীয় সময়) ফ্লাইটটি বিমানবন্দর ত্যাগ করে। ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইমরান ও ডেপুটি হাইকমিশনার এটিএম রকিবুল হক ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাদের বিদায় জানান।
ইমরান বলেন, বাংলাদেশিরা ক্যাম্পে কোয়ারেন্টাইনে থাকাকালে ওই ক্যাম্প কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশ দূতাবাস সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছিল।
বৃহস্পতিবার বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এবং এক শিশুসহ একটি পরিবারের ওই বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে এবং এর মধ্যে কেউই করোনাভাইরাস আক্রান্ত হননি।
এর আগে ২৩ সদস্যের ওই দলে থাকা এক শিক্ষার্থী ফোনে বলেন, ‘আমরা শুক্রবার স্বাস্থ্য ছাড়পত্র পাব এবং শনিবার ঢাকায় ফিরতে পারব বলে আশা করছি।’
ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনকে তিনি জানান, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ বিমানে বেশ কয়েকজন ভারতীয় নাগরিকের সঙ্গে করোনাভাইরাসের কেন্দ্রস্থল চীনের উহান থেকে তাদের সরিয়ে নেয়া হয়েছিল।
অপর এক শিক্ষার্থী ইউএনবিকে বলেন, ‘ভারতীয় বিমান বাহিনী এবং ভারত সরকার যে অভূতপূর্ব কাজ করেছে সে জন্য আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই।’
দলের পক্ষ থেকে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকায় সবার জন্যই বেদনাদায়ক এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। তবে বেইজিংয়ের ভারতীয় দূতাবাস স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাহায্য করেছে এবং তাদের সরিয়ে নিতে সম্মতি জানায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই শিক্ষার্থী চীনের প্রশংসা করে বলেন, ‘আমাদের সুরক্ষিত রাখতে এবং আমাদের স্বাস্থ্যের অবস্থা নিশ্চিত করতে তাদের প্রচেষ্টা নিঃস্বার্থ ছিল। নিজেদের নাগরিকদের মতো বিদেশি নাগরিকদেরও তারা দায়িত্বশীল ও সংবেদনশীলতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করেছে। আমরা সবসময় আপনাদের এই সহায়তা মনে রাখব।’
এ ছাড়া ভারতীয় কর্মকর্তাদের পেশাদারিত্ব সবাইকে মুগ্ধ করেছে উল্লেখ করে, তাদের ইতিবাচক মনোভাব এবং ধৈর্য সহকারে সব সমস্যা সমাধানে দক্ষতার প্রশংসা করেছেন বাংলাদেশি নাগরিকরা।
এ দিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং স্থানীয় আরো তিনটি বিমান সংস্থা নয়াদিল্লির সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ভারতে তাদের সকল ফ্লাইট স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে।
তবে বাংলাদেশি নাগরিকদের শনিবার সুষ্ঠুভাবে ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে বলে জানান দেশে ফেরত আসার জন্য অপেক্ষায় থাকা এক শিক্ষার্থী।
খবর: ইউএনবি।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৪ মার্চ, ২০২০ ১৭:১৫

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে (রোগ সংক্রমণ রোধে পৃথক রাখার ব্যবস্থা) থাকার পর স্বাস্থ্য ছাড়পত্র নিয়ে শনিবার বিকালে দেশে ফিরেছেন ২৩ বাংলাদেশি। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় তারা কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নন বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক সহায়তায় তাদের বহনকারী ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট শনিবার বেলা ২টা ৫৬ মিনিটে ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
এয়ারলাইন্সের অনলাইন ফ্লাইট ইনফরমেশন আপডেট এ তথ্য নিশ্চিত করে। ওই বাংলাদেশিদের পরে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রবাসীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বিতভাবে অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে বাংলাদেশ।
এক কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানান, বেলা ১১টা ৫৮ মিনিটে (নয়াদিল্লির স্থানীয় সময়) ফ্লাইটটি বিমানবন্দর ত্যাগ করে। ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইমরান ও ডেপুটি হাইকমিশনার এটিএম রকিবুল হক ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাদের বিদায় জানান।
ইমরান বলেন, বাংলাদেশিরা ক্যাম্পে কোয়ারেন্টাইনে থাকাকালে ওই ক্যাম্প কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশ দূতাবাস সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছিল।
বৃহস্পতিবার বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এবং এক শিশুসহ একটি পরিবারের ওই বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে এবং এর মধ্যে কেউই করোনাভাইরাস আক্রান্ত হননি।
এর আগে ২৩ সদস্যের ওই দলে থাকা এক শিক্ষার্থী ফোনে বলেন, ‘আমরা শুক্রবার স্বাস্থ্য ছাড়পত্র পাব এবং শনিবার ঢাকায় ফিরতে পারব বলে আশা করছি।’
ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনকে তিনি জানান, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ বিমানে বেশ কয়েকজন ভারতীয় নাগরিকের সঙ্গে করোনাভাইরাসের কেন্দ্রস্থল চীনের উহান থেকে তাদের সরিয়ে নেয়া হয়েছিল। অপর এক শিক্ষার্থী ইউএনবিকে বলেন, ‘ভারতীয় বিমান বাহিনী এবং ভারত সরকার যে অভূতপূর্ব কাজ করেছে সে জন্য আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই।’
দলের পক্ষ থেকে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকায় সবার জন্যই বেদনাদায়ক এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। তবে বেইজিংয়ের ভারতীয় দূতাবাস স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাহায্য করেছে এবং তাদের সরিয়ে নিতে সম্মতি জানায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই শিক্ষার্থী চীনের প্রশংসা করে বলেন, ‘আমাদের সুরক্ষিত রাখতে এবং আমাদের স্বাস্থ্যের অবস্থা নিশ্চিত করতে তাদের প্রচেষ্টা নিঃস্বার্থ ছিল। নিজেদের নাগরিকদের মতো বিদেশি নাগরিকদেরও তারা দায়িত্বশীল ও সংবেদনশীলতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করেছে। আমরা সবসময় আপনাদের এই সহায়তা মনে রাখব।’
এ ছাড়া ভারতীয় কর্মকর্তাদের পেশাদারিত্ব সবাইকে মুগ্ধ করেছে উল্লেখ করে, তাদের ইতিবাচক মনোভাব এবং ধৈর্য সহকারে সব সমস্যা সমাধানে দক্ষতার প্রশংসা করেছেন বাংলাদেশি নাগরিকরা।
এ দিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং স্থানীয় আরো তিনটি বিমান সংস্থা নয়াদিল্লির সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ভারতে তাদের সকল ফ্লাইট স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে।
তবে বাংলাদেশি নাগরিকদের শনিবার সুষ্ঠুভাবে ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে বলে জানান দেশে ফেরত আসার জন্য অপেক্ষায় থাকা এক শিক্ষার্থী।
খবর: ইউএনবি।