করোনা ছড়িয়েছে ২১ জেলায়, ‘এপিসেন্টার’ নারায়ণগঞ্জ
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১০ এপ্রিল, ২০২০ ১৪:০২
সংক্রমণ শুরুর এক মাস পরে এসে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। ইতোমধ্যে ছড়িয়েছে ২১ জেলায়। এর মধ্যে বেশি রোগী ঢাকা শহর এবং পার্শ্ববর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জ।
বিবিসি বাংলা বলছে, কঠোরভাবে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে না পারলে এ ভাইরাস নিয়ে বাংলাদেশকে বিপজ্জনক পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হতে পারে।
এ পরিস্থিতিতে দেশে লকডাউন আরও কঠোর করা এবং সাধারণ ছুটি বাড়ানোরও প্রয়োজনীয়তা তৈরি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার একদিনে সহস্রাধিক মানুষকে পরীক্ষা করে ১১২ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। গত সপ্তাহের ৬ দিনে ২৬৯ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হন দেশে।
এ পর্যায়ে সংক্রমণ ঢাকাসহ দেশের অন্তত ২১টি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানাচ্ছে রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট-আইইডিসিআর।
এছাড়া চারটি জেলায় একাধিক ক্লাস্টারে কমিউনিটি সংক্রমণ রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি কমিউনিটি সংক্রমণ হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলায়।
আইইডিসিআর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ এখন ক্লাস্টারের চেয়ে বেশি কিছু। এটি এখন বাংলাদেশে সংক্রমণের এপিকসেন্টারে পরিণত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকার মধ্যে টোলারবাগসহ পুরো মিরপুরেই আমরা রোগী পাচ্ছি। এছাড়া ওয়ারি, বাসাবো এলাকায় সংক্রমণ পাচ্ছি বেশি। তবে ক্লাস্টারগুলোর মধ্যে গাইবান্ধায় সংক্রমণ বাড়েনি। কিন্তু মাদারীপুরে কয়েকজন রোগী সেরে ওঠার পর আবার সংক্রমিত হওয়াটা চিন্তার বিষয়।’
জাতিসংঘ এইচআইভি/এইডস সেকশনের প্রধান কর্মকর্তা ও বৈশ্বিক সমন্বয়ক ডা. মনিকা বেগ বাংলাদেশের বর্তমান সংক্রমণের অবস্থা বিশ্লেষণ করে বলেন, ‘আমরা এখন একদম উঠছি ওপরে। খুব তাড়াতাড়ি। আমার মনে হয় না যে, এটা আর ক্লাস্টারের মধ্যে থাকছে।’
তিনি বলেন, ‘এটা হয়তো আরও আরও বিস্তৃতি লাভ করছে। আমার কাছে মনে হয়, আমরা এখন ওই পর্যায়ে আছি যেখানে আমাদের কেইস বাড়তেই থাকবে। এখন এটা নিয়ন্ত্রণে আনার একমাত্র রাস্তা হচ্ছে এখন বাড়িতে থাকা, প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং টেস্টিং বাড়ানো।’
ডা. মনিকা বেগ মনে করেন, বেশি বেশি টেস্ট করে আক্রান্ত সবাইকে খুঁজে বের করে আলাদা করতে হবে। না হলে চিকিৎসা ব্যবস্থা বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে।
বাংলাদেশে পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক পরিচালক ডা. বেনজির আহমেদ বলেন, ‘অন্যান্য দেশগুলোতে যেভাবে বাড়ার ধরনটা ছিল বাংলাদেশেও মনে হয় সেই বৃদ্ধির ধরনটাতে প্রবেশ করলো।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যেহেতু ভালোমতো কোয়ারেন্টাইনটা করতে পারেনি। এমনকি আমরা যে লকডাউনের কথা বলছি বা সোশ্যাল ডিসটেন্সিংয় সেখানেও যেহেতু বেশকিছু ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। সুতরাং সামনে আমাদের একটা বড়সড় আউটব্রেক হতে থাকলে এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না।’
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১০ এপ্রিল, ২০২০ ১৪:০২

সংক্রমণ শুরুর এক মাস পরে এসে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। ইতোমধ্যে ছড়িয়েছে ২১ জেলায়। এর মধ্যে বেশি রোগী ঢাকা শহর এবং পার্শ্ববর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জ।
বিবিসি বাংলা বলছে, কঠোরভাবে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে না পারলে এ ভাইরাস নিয়ে বাংলাদেশকে বিপজ্জনক পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হতে পারে।
এ পরিস্থিতিতে দেশে লকডাউন আরও কঠোর করা এবং সাধারণ ছুটি বাড়ানোরও প্রয়োজনীয়তা তৈরি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার একদিনে সহস্রাধিক মানুষকে পরীক্ষা করে ১১২ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। গত সপ্তাহের ৬ দিনে ২৬৯ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হন দেশে।
এ পর্যায়ে সংক্রমণ ঢাকাসহ দেশের অন্তত ২১টি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানাচ্ছে রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট-আইইডিসিআর।
এছাড়া চারটি জেলায় একাধিক ক্লাস্টারে কমিউনিটি সংক্রমণ রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি কমিউনিটি সংক্রমণ হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলায়।
আইইডিসিআর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ এখন ক্লাস্টারের চেয়ে বেশি কিছু। এটি এখন বাংলাদেশে সংক্রমণের এপিকসেন্টারে পরিণত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকার মধ্যে টোলারবাগসহ পুরো মিরপুরেই আমরা রোগী পাচ্ছি। এছাড়া ওয়ারি, বাসাবো এলাকায় সংক্রমণ পাচ্ছি বেশি। তবে ক্লাস্টারগুলোর মধ্যে গাইবান্ধায় সংক্রমণ বাড়েনি। কিন্তু মাদারীপুরে কয়েকজন রোগী সেরে ওঠার পর আবার সংক্রমিত হওয়াটা চিন্তার বিষয়।’
জাতিসংঘ এইচআইভি/এইডস সেকশনের প্রধান কর্মকর্তা ও বৈশ্বিক সমন্বয়ক ডা. মনিকা বেগ বাংলাদেশের বর্তমান সংক্রমণের অবস্থা বিশ্লেষণ করে বলেন, ‘আমরা এখন একদম উঠছি ওপরে। খুব তাড়াতাড়ি। আমার মনে হয় না যে, এটা আর ক্লাস্টারের মধ্যে থাকছে।’
তিনি বলেন, ‘এটা হয়তো আরও আরও বিস্তৃতি লাভ করছে। আমার কাছে মনে হয়, আমরা এখন ওই পর্যায়ে আছি যেখানে আমাদের কেইস বাড়তেই থাকবে। এখন এটা নিয়ন্ত্রণে আনার একমাত্র রাস্তা হচ্ছে এখন বাড়িতে থাকা, প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং টেস্টিং বাড়ানো।’
ডা. মনিকা বেগ মনে করেন, বেশি বেশি টেস্ট করে আক্রান্ত সবাইকে খুঁজে বের করে আলাদা করতে হবে। না হলে চিকিৎসা ব্যবস্থা বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে।
বাংলাদেশে পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক পরিচালক ডা. বেনজির আহমেদ বলেন, ‘অন্যান্য দেশগুলোতে যেভাবে বাড়ার ধরনটা ছিল বাংলাদেশেও মনে হয় সেই বৃদ্ধির ধরনটাতে প্রবেশ করলো।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যেহেতু ভালোমতো কোয়ারেন্টাইনটা করতে পারেনি। এমনকি আমরা যে লকডাউনের কথা বলছি বা সোশ্যাল ডিসটেন্সিংয় সেখানেও যেহেতু বেশকিছু ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। সুতরাং সামনে আমাদের একটা বড়সড় আউটব্রেক হতে থাকলে এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না।’