ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ বাংলাদেশে আছড়ে পড়ার আশঙ্কা কতটুকু
অনলাইন ডেস্ক | ৪ ডিসেম্বর, ২০২১ ১১:৫১
বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ ভারতের ওডিশা ও অন্ধ্র প্রদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে গতিপথ পরিবর্তন করে বাংলাদেশের দিকে আসে কিনা সে দিকে নজর রাখছেন আবহাওয়াবিদরা।
ইতিমধ্যে দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ঝড়টি এখনো সাগরে থাকলেও আজ বিকেলের দিকে একটি মোড় নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
‘সেটি হলে টার্ন নিয়ে হয়তো কিছুটা বাংলাদেশের দিকেও এগোতে পারে। ফলে ভারতের দিকে যাচ্ছে বলে মনে হলেও কিছুটা অনিশ্চয়তা আছে। এই কারণে আমরা এখনো গভীরভাবে ঝড়টি পর্যবেক্ষণ করছি। আজ রাতের দিকে আরও পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে।’
আরও বলেন, শনিবার বিকেলের মধ্যে ঝড়টির গতিপথ পরিষ্কার হয়ে যাবে। এটি ওডিশা, পশ্চিমবঙ্গের দিকেও এগোতে পারে, আবার গতিপথ পরিবর্তনও করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ বর্তমানে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপট্টনম থেকে আড়াইশো কিলোমিটার দূরে রয়েছে বলে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে।
বর্তমানে ঝড়টি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ১০৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।
ঝড়টি এখন ওডিশা উপকূল ধরে পুরীর দিকে এগোচ্ছে। তবে সেটি আস্তে আস্তে অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়ছে বলে আবহাওয়াবিদরা বলছেন।
তারা ধারণা করছেন, ওডিশা উপকূল ধরে ঝড়টি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে এগিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দিকে এগিয়ে যাবে। তখন সেটি আরও দুর্বল হয়ে পড়বে বলে তারা মনে করছেন।
কেন্দ্রে ঝড়টি ঘণ্টায় নয় কিলোমিটার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে কেন্দ্রের বাইরে বাতাসের গতিবেগ রয়েছে ৭০-৮০ কিলোমিটার।
স্যাটেলাইট তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়াবিদরা বলছেন, যে গতিতে ঝড়টি এগোচ্ছে, তাতে রবিবার পাঁচই মে দুপুরের পর নাগাদ ওডিশা বা পশ্চিমবঙ্গে উঠে আসতে পারে।
যেভাবে দেখা যাচ্ছে, এটা খুব প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে তারা বলছেন।
তবে ঝড়টি এখনো খানিকটা পূর্ব দিকে ঘুরছে। সেটা যদি আবার গভীর সাগরে চলে আসে, তাহলে সেটা আরও শক্তি সঞ্চার করতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
আবার ভূমিতে উঠে এলে তখন ঝড়টি ঘূর্ণিঝড় থেকে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।
ভূমিতে আঘাত করার পর তার প্রভাবে অন্তত দুই দিন ধরে ঝোড়ো হাওয়া এবং বৃষ্টিপাত হতে পারে।
আবহাওয়া দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে এখন দুই নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে এবং গভীর সাগরে বিচরণ না করার জন্য বলেছে আবহাওয়া বিভাগ।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এর মধ্যেই ভারত ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। আগামী দুই দিন এই বৃষ্টিপাত চলবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থার (ইএসসিএপি) তালিকা অনুযায়ী, এই ঝড়ের নামকরণ করেছে সৌদি আরব। আরবি শব্দ জাওয়াদ অর্থ উদার, দয়ালও কিংবা দানশীল।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
অনলাইন ডেস্ক | ৪ ডিসেম্বর, ২০২১ ১১:৫১

বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ ভারতের ওডিশা ও অন্ধ্র প্রদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে গতিপথ পরিবর্তন করে বাংলাদেশের দিকে আসে কিনা সে দিকে নজর রাখছেন আবহাওয়াবিদরা।
ইতিমধ্যে দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ঝড়টি এখনো সাগরে থাকলেও আজ বিকেলের দিকে একটি মোড় নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
‘সেটি হলে টার্ন নিয়ে হয়তো কিছুটা বাংলাদেশের দিকেও এগোতে পারে। ফলে ভারতের দিকে যাচ্ছে বলে মনে হলেও কিছুটা অনিশ্চয়তা আছে। এই কারণে আমরা এখনো গভীরভাবে ঝড়টি পর্যবেক্ষণ করছি। আজ রাতের দিকে আরও পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে।’
আরও বলেন, শনিবার বিকেলের মধ্যে ঝড়টির গতিপথ পরিষ্কার হয়ে যাবে। এটি ওডিশা, পশ্চিমবঙ্গের দিকেও এগোতে পারে, আবার গতিপথ পরিবর্তনও করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ বর্তমানে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপট্টনম থেকে আড়াইশো কিলোমিটার দূরে রয়েছে বলে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে।
বর্তমানে ঝড়টি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ১০৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।
ঝড়টি এখন ওডিশা উপকূল ধরে পুরীর দিকে এগোচ্ছে। তবে সেটি আস্তে আস্তে অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়ছে বলে আবহাওয়াবিদরা বলছেন।
তারা ধারণা করছেন, ওডিশা উপকূল ধরে ঝড়টি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে এগিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দিকে এগিয়ে যাবে। তখন সেটি আরও দুর্বল হয়ে পড়বে বলে তারা মনে করছেন।
কেন্দ্রে ঝড়টি ঘণ্টায় নয় কিলোমিটার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে কেন্দ্রের বাইরে বাতাসের গতিবেগ রয়েছে ৭০-৮০ কিলোমিটার।
স্যাটেলাইট তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়াবিদরা বলছেন, যে গতিতে ঝড়টি এগোচ্ছে, তাতে রবিবার পাঁচই মে দুপুরের পর নাগাদ ওডিশা বা পশ্চিমবঙ্গে উঠে আসতে পারে।
যেভাবে দেখা যাচ্ছে, এটা খুব প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে তারা বলছেন।
তবে ঝড়টি এখনো খানিকটা পূর্ব দিকে ঘুরছে। সেটা যদি আবার গভীর সাগরে চলে আসে, তাহলে সেটা আরও শক্তি সঞ্চার করতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
আবার ভূমিতে উঠে এলে তখন ঝড়টি ঘূর্ণিঝড় থেকে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।
ভূমিতে আঘাত করার পর তার প্রভাবে অন্তত দুই দিন ধরে ঝোড়ো হাওয়া এবং বৃষ্টিপাত হতে পারে।
আবহাওয়া দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে এখন দুই নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে এবং গভীর সাগরে বিচরণ না করার জন্য বলেছে আবহাওয়া বিভাগ।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এর মধ্যেই ভারত ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। আগামী দুই দিন এই বৃষ্টিপাত চলবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থার (ইএসসিএপি) তালিকা অনুযায়ী, এই ঝড়ের নামকরণ করেছে সৌদি আরব। আরবি শব্দ জাওয়াদ অর্থ উদার, দয়ালও কিংবা দানশীল।