
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মামুন এমরান খান হত্যা মামলার অন্যতম আসামি দুবাইয়ের আলোচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে ইন্টারপোল রেড নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। সেটি ইন্টারপোল গ্রহণও করেছে বলে জানান তিনি।
এমন খবরে পলাতক আসামি আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বাংলাদেশের উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন।
আরাভ ফেসবুক পোস্টে লেখেন, খোলা চিঠি বাংলাদেশ, আসসালামু আলাইকুম। আমি আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন এবং সর্বদাই আমার দোয়া থাকবে আপনাদের ওপর। আপনারা যেভাবে আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন, আমি বাঁচি আর না বাঁচি এ কথা আমার মনে থাকবে।
জানি না আমার জীবনে আমি জেনে না জেনে যে ভুলগুলো করেছি, আপনারা যারা আমার পাড়া-প্রতিবেশী এবং আমাকে যারা চিনেন, যাদের সঙ্গে আমার কোনো অন্যায় হয়ে থাকলে তারা আমাকে মাফ করে দিবেন।
তিনি আরও লেখেন, দেশবাসীর কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমি যদি কোনো ভুল করে থাকি আপনারা আমাকে মাফ করে দিবেন। আমি জানি না কাল আমার সঙ্গে কী হবে। কিন্তু আমি চাই ন্যায় বিচার, সেটা হয়তোবা সম্ভব না। যাইহোক, আল্লাহ একজন আছে। এই বিচার আমি আল্লাহর কাছে ছেড়ে দিলাম।
প্রসঙ্গত, এসবির পরিদর্শক মামুন হত্যা মামলার পলাতক আসামি আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম। হত্যা মামলা মাথায় নিয়ে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে দুবাইয়ে পাড়ি জমানো আরাভ এখন কোটি কোটি টাকার মালিক। বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করে দুবাইয়ে ‘আরাভ জুয়েলার্স’ নামে একটি গোল্ড শোরুমের সম্প্রতি উদ্বোধন করেছেন তিনি। এছাড়াও রয়েছে বাড়ি-গাড়ি।
আরাভের বিরুদ্ধে ডিএসএলআর ক্যামেরা ছিনতাইয়ের একটি মামলা রয়েছে। মামলাটি ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন।
জলাশয়ের ওপর স্থাপিত সোলার প্যানেল থেকে সূর্যের আলোর সাহায্যে উৎপাদিত হচ্ছে বিদ্যুৎ। এর নিচে পানিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে নানা প্রজাতির চাষ। কৃষি জমির ক্ষতি না করে নির্মিত দেশের প্রথম ভাসমান এ সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদন শুরু হয়েছে।
জ্বালানি সংকটের এ সময়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পরিবেশবান্ধব সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ছে। কিন্তু অকৃষি জমির স্বল্পতা ও কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে নবায়নযোগ্য এ জ্বালানির প্রসার হচ্ছে খুব ধীর গতিতে। এ পদ্ধতিতে কৃষি জমি নষ্ট না করে তুলনামূলক কম খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার ব্যাপক হারে বাড়বে বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
এ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ মঙ্গলবার নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে লিখেছেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের বুলনপুরে বাংলাদেশের সর্বপ্রথম ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মোট উৎপাদন ক্ষমতা ২.৩০ মেগাওয়াট। প্রকল্পটির ফলে একই জলাশয় থেকে মিলবে মাছ এবং বিদ্যুৎ।
‘আগামী কয়েক মাস আমরা উক্ত জলাশয়ে মাছের বৃদ্ধি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করব। পরিবেশগত ভারসাম্য অটুট থাকলে পরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন জলাধারে আমরা আরো বড় পরিসরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেব। যুগান্তকারী এই প্রকল্পটির সঙ্গে যুক্ত সবাইকে অভিনন্দন।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে বুলনপুরে অবস্থিত নবাব অটোরাইস মিল মালিকের জলাশয়ে নিজস্ব অর্থায়নে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ করেছে জুলস পাওয়ার লিমিটেড। এর আগে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটি কক্সবাজারে ২০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে, যা জাতীয় গ্রিডে যুক্ত রয়েছে। তখন তাদের সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পটি দেশের সবচেয়ে বড় কেন্দ্র ছিল।
জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট মোহাম্মদ নাহিদুজ্জামান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ওপেক্স মডেলের আওতায় অনগ্রিড এই সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মিত হয়েছে। এই মডেলে ক্রেতাকে কোনো ধরনের অর্থ বিনিয়োগ করতে হয় না। আমাদের প্রতিষ্ঠান নিজস্ব অর্থায়নে কেন্দ্রটি নির্মাণ করার পর এখান থেকে উৎপাদিত প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ৮ টাকা ১০ পয়সা দরে কিনবেন অটোরাইস মিল কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে মিল মালিক বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি নেসকোর কাছ থেকে ১০ টাকা ৬০ পয়সা দরে বিদ্যুৎ কিনছেন। অর্থাৎ প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের জন্য তার আড়াই টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। পাশাপাশি যখন মিলটি বন্ধ কিংবা আংশিক উৎপাদনে থাকবে, তখন এ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত সৌর বিদ্যুৎ নেট মিটারিং সিস্টেমের আওতায় নেসকোর কাছে বিক্রিও করতে পারবেন।’
তিনি জানান, সোমবার দুপুরের দিকে এই কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়।
তিনি বলেন, ‘গ্রিড বিদ্যুতের মতো এখানে এনার্জি মিটার স্থাপন করা হয়েছে। প্রতি মাসে উৎপাদিত বিদ্যুতের ইউনিট হিসেবে তিনি বিল পরিশোধ করবেন। এভাবে ১২ বছর ধরে বিল পরিশোধের পর পুরো কেন্দ্রটি বিনা মূল্যে ওই ক্রেতার কাছে হস্তান্তর করা হবে। এরপর তিনি প্রায় ১৫ বছর এই কেন্দ্র থেকে বিনা মূল্যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে সামান্য কিছু রক্ষণাবেক্ষণের খরচ লাগবে।’
নাহিদ জানান, ‘পানিতে সৌর প্যানেল ভাসানোর জন্য ফুড গ্রেডের প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়েছে। যাতে এটি পানি কিংবা মাছের কোনো ক্ষতি না করে। আগামী ২০ বছর এর গুণগতমান অক্ষুণ্ন থাকবে। পানিতে সৌর প্যানেলগুলো এমনভাবে বসানো হয়েছে যেন মাছের স্বাভাবিক জীবনচক্রে ব্যাঘাত না ঘটে। তারপরও আমরা এক বছর পর্যবেক্ষণ করব। এরপর একই ক্রেতার আরো ৪২টি পুকুর রয়েছে যেখানে এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা রয়েছে।’
যারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থন করে এবং সেই লক্ষ্যে কাজ করে তাদের যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
মঙ্গলবার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের জনগণ যা চায়, আমরা যুক্তরাষ্ট্র তাই চাই। আমি কোনো দ্বিমত দেখছি না।
ঢাকায় এক অনুষ্ঠানের পর নতুন ভিসা নীতি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত হাস এসব বলেন।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র চ্যালেঞ্জের চেয়ে ইতিবাচক বিষয়গুলো দেখছে। বাণিজ্য, নিরাপত্তা সম্পর্ক, জনগণের মধ্যে বন্ধন, স্বাস্থ্যসেবা এবং আসন্ন নির্বাচন নিয়ে ভালো সংলাপের বিষয়ে আমাদের একটি শক্তিশালী অংশীদারিত্ব রয়েছে।’
হাস বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুস্পষ্ট অঙ্গীকার করেছেন।
এডওয়ার্ড এম কেনেডি সেন্টারে ‘রুটস অব ফ্রেন্ডশিপ: ৫০ ইয়ারস অব ইউএস-বাংলাদেশ রিলেশনস’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে রাষ্ট্রদূত বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন তার ঘোষণায় বলেছেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমের।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
খবর: ইউএনবি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত অনিবন্ধিত দল জামায়াতে ইসলামী। তাই কর্মসূচি পালন করতে হলে তাদের অবশ্যই পুলিশের অনুমতি নিতে হবে।
মঙ্গলবার দুপুর দুপুরে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিবি) মিলনায়তনে সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা ঈদ পুনর্মিলনী ২০২৩’ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এসব বলেন তিনি।
জামায়াতে ইসলামীর চার নেতাকে আটকের পর ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পুলিশের কাছে তাদের গোপন বৈঠকের তথ্য থাকায় চার নেতাকে আটক করা হয়। তবে এ বিষয়ে পরবর্তীতে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হওয়ায় ছেড়ে দেয় পুলিশ।
তবে জামায়াতের সেই গোপন বৈঠকে নাশকতার কোনো পরিকল্পনা পুলিশ জানতে পেরেছে কি না সেই তথ্য জানেন না স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, জামায়াতের মতো অনিবন্ধিত দলকে কর্মসূচি পালন করতে হলে অবশ্যই পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে।
কেরানীগঞ্জে বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে বিএনপির সমাবেশে কোনো বাধা দেয়নি পুলিশ। তারপরও তারা সমাবেশে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে উসকানিমূলক স্লোগান দেওয়ায় সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর করে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সভা-সমাবেশসহ রাজনৈতিক কর্মসূচিতে কোন বাধা দেওয়া হচ্ছে না দাবি করে তিনি বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে বিরোধী দলগুলো উসকানি দিয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে।
সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ নিয়ে গবেষণা আরও জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) বোর্ড অব গভর্নরসের ৪২তম সভায় মৎস্যবিজ্ঞানী ও গবেষকদের মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে সমুদ্র বিজয়ের ফলে সুনীল অর্থনীতি নিয়ে গবেষণা পরিচালনার নতুন দিগন্ত উন্মোচন হয়েছে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট সমুদ্রের প্রচলিত ও অপ্রচলিত মৎস্যসম্পদ নিয়ে গবেষণা পরিচালনা করছে। এর পরিধি আরও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করতে হবে। সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার জন্য বর্তমান সরকার কক্সবাজারে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সামুদ্রিক মৎস্য প্রযুক্তি কেন্দ্রে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত গবেষণাগার স্থাপন করেছে। গবেষণাগারে সামুদ্রিক মাছের পাশাপাশি অপ্রচলিত মৎস্য সম্পদ তথা ওয়েস্টার, কাঁকড়া, গ্রীন মাসেলস ও সীউইড নিয়ে গবেষণা করা হচ্ছে। এসব গবেষণা ফলাফল মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, দেশের অর্থনীতিতে সুন্দরবনের মৎস্যসম্পদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সুন্দরবন সামুদ্রিক মাছের প্রজনন ও নার্সারি ক্ষেত্র হিসেবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানকার মাছের বৈচিত্র্য সুরক্ষা, মজুদ ও আহরণ মাত্রা নিরূপণে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট পরিচালিত গবেষণা আরও জোরদার করতে হবে। গবেষণার মাধ্যমে সুন্দরবনের মাছের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা কৌশল উদ্ভাবন করতে হবে।
গলদা চিংড়ির মানসম্মত পোনা উৎপাদনে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা অত্যন্ত সময়োপযোগী উল্লেখ করে চিংড়ি ও দেশীয় প্রজাতির মাছ সুরক্ষায় এই ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী ও গবেষকদের অব্যাহত ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
বিএফআরআই-এর বোর্ড অব গভর্নেরসের ভাইস চেয়ারম্যান ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, বোর্ড সদস্য ও পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য এ কে এম ফজলুল হক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল কাইয়ূম, যুগ্ম সচিব ড. আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ ছবুর ও মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, বোর্ড সদস্য সচিব ও বিএফআরআই-এর মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ, বোর্ড সদস্য ও মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, বোর্ড সদস্য ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল আউয়াল, বোর্ড সদস্য আফজালুর রহমান বাবু, বোর্ড সদস্য ও মৎস্য ও মৎস্য পণ্য রপ্তানিকারক সৈয়দ আবু আফসার এবং বিএফআরআই-এর পরিচালক (গবেষণা ও পরিকল্পনা) ড. মো. জুলফিকার আলী সভায় অংশগ্রহণ করেন।
দেশে আবারও বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু শনাক্ত হয়ে আরও ৮৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে এই সময়ে কারও মৃত্যু হয়নি।
মঙ্গলবার (৩০ মে) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। সোমবার ৭২ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন।
নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ৬১ জন ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে এবং ২৩ জন ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ২৪৬ জন ডেঙ্গু রোগী আছেন। ঢাকার ৫৩টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ২০৭ জন এবং অন্যান্য বিভাগে ৩৯ জন ভর্তি রয়েছেন।চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৯২৭ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ হাজার ২৯৬ জন এবং ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন ৬৩১ জন।
চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ হাজার ৬৬৮ জন। চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।