ঢাকা-১৪ আসন
জয় দেখছেন আ.লীগ বিএনপির দুই প্রার্থীই
মামুন আব্দুল্লাহ | ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
আজকের রাত পেরুলেই ভোট। টানা প্রচার শেষে এখন চূড়ান্ত পর্বের অপেক্ষা। সারা দেশের মতো ভোটের হাওয়ায় সরগরম ঢাকা-১৪ আসনও। এখানে সাত প্রার্থী ভোটের লড়াইয়ে থাকলেও বরাবরের মতো সবার দৃষ্টি নৌকা ও ধানের শীষে। রাজধানীর মিরপুরের দারুস সালাম, শাহ আলী, রূপনগর ও সাভারের একাংশ নিয়ে গঠিত এ আসনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী প্রধান দুই দলের প্রার্থী।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আসলামুল হক দেশ রূপান্তরকে বলেন, মানুষ বিএনপি তথা অগ্নিসন্ত্রাসকে প্রত্যাখ্যান করেছে। বিজয় এখন সময়ের ব্যাপার। বিপরীতে বিএনপি প্রার্থী সৈয়দ আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ক্ষমতাসীনরা প্রচারে বাধা দিলেও ভোটে বাধা দিতে পারবে না। মানুষ সচেতন, তারা ধানের শীষেই ভোট দেবে।
গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টায় শেষ হয়েছে ভোটের আনুষ্ঠানিক প্রচার। সরেজমিনে দেখা যায়, মিছিল-সমাবেশ বা মাইকে প্রচার না থাকলেও পোস্টার-ব্যানারে এখনো নৌকার প্রার্থী আসলামুল হকের একক আধিপত্য। তারপরও মানুষ ধানের শীষের প্রার্থীকে ভালোভাবেই চেনেন বলেই জানা গেল।
মিরপুর বাংলা কলেজের সামনে কথা হয় গাবতলীর যুবক হোসেন মনসুরের সঙ্গে। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আসলামুল হক টানা দু’বারের এমপি। গতবার তো ভোট প্রয়োজন হয়নি। এবারের নির্বাচনেও ধানের শীষকে কোণঠাসা করে রেখেছেন। মিটিং-মিছিল বা পোস্টারিং করতে বাধা দিয়েছেন। কিন্তু সাজুকে (সৈয়দ আবু বকর সিদ্দিক) মোটামুটি সবাই চেনে। ফলে সে ভালো ভোট পাবে।’
তবে ভোট নিয়ে আশঙ্কায় আরিফা বেগম। টোলারবাগের বাসিন্দা এই গৃহিণীর ভাষ্য, ‘ভালো ভোট হলে আসলাম এবার নাও পাস করতে পারে। ধানের শীষের পক্ষে একটা জোয়ার আছে। কিন্তু ভোট দিতে পারবে কি না, পারলেও ব্যালট বাক্স ডাকাতি হয়ে যেতে পারে। পরিবেশ অনেকটা এমনই।’
এই আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৮ হাজার ৪৪ জন। নৌকা, ধানের শীষ ছাড়াও রয়েছেন জাতীয় পার্টির মোস্তাকুর রহমান। টেলিভিশন প্রতীকে নির্বাচন করছেন বিএনএফের আনোয়ার হোসেন। ভোটের মাঠে আছেন ইসলামী আন্দোলনের আবু ইউসুফ (হাতপাখা), জাকের পার্টির জাকির হোসেন (গোলাপ ফুল), সিপিবির রিয়াজ উদ্দিন (কাস্তে)।
মিরপুর শাহ আলী মাজারের সামনে দেখা মিলল হাতপাখার এক সমর্থকের। আশরাফ মিয়া নামের এই ব্যক্তি মাজারের পাশে ব্যবসা করেন। তিনি বলেন, ‘পাস কে করবে জানি না। তবে আমি ভোট দেব হাতপাখায়।’ কেন দেবেন জানতে চাইলে বলেন, ‘হুজুর বলে দিয়েছেন। তাই ভোট দেব।’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও জয় ধরে রাখতে জোর প্রস্তুতি নিয়েছেন দুইবারের সংসদ সদস্য আসলামুল হক। সে তুলনায় বিএনপি প্রার্থী কিছুটা অগোছালো। মাজার রোডে কথা হয় দুই তরুণ ভোটারের সঙ্গে। তাদের একজন আপেল হোসেন বলেন, প্রথম ভোট দেব উন্নয়নের পক্ষে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে এটা জরুরি। ভিন্ন কথা বলেছেন আরেক তরুণ কামাল। তিনি বলেন, ভোট আমার অধিকার। গণতন্ত্র ও উন্নয়ন একসঙ্গে না চললে হয় না। ভোট দেব তরুণ প্রার্থীকে। যে যুব সমাজের পক্ষে কাজ করবে। এই হিসাবে ধানের শীষের প্রার্থীর বয়স অনেক কম। ফলে তরুণদের উচিত তার পক্ষে কাজ করা।
মিরপুর আর পল্লবী নিয়ে আগে ছিল ঢাকা-১১ আসন। ১৯৯১ সালে এখানে জয়লাভ করেন বিএনপির এসএ খালেক। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের কামাল আহমেদ মজুমদার পাস করলেও ২০০১ সালে পুনরায় জয় পান এসএ খালেক।
২০০৮ সালে সীমানা সংস্কার হয়ে গঠিত ঢাকা-১৪ আসনে ওই বছর আসলামুল হক জয় পান। ২০১৪ সালে ভোট ছাড়াই তিনি সংসদে যান।
শেয়ার করুন
মামুন আব্দুল্লাহ | ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

আজকের রাত পেরুলেই ভোট। টানা প্রচার শেষে এখন চূড়ান্ত পর্বের অপেক্ষা। সারা দেশের মতো ভোটের হাওয়ায় সরগরম ঢাকা-১৪ আসনও। এখানে সাত প্রার্থী ভোটের লড়াইয়ে থাকলেও বরাবরের মতো সবার দৃষ্টি নৌকা ও ধানের শীষে। রাজধানীর মিরপুরের দারুস সালাম, শাহ আলী, রূপনগর ও সাভারের একাংশ নিয়ে গঠিত এ আসনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী প্রধান দুই দলের প্রার্থী।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আসলামুল হক দেশ রূপান্তরকে বলেন, মানুষ বিএনপি তথা অগ্নিসন্ত্রাসকে প্রত্যাখ্যান করেছে। বিজয় এখন সময়ের ব্যাপার। বিপরীতে বিএনপি প্রার্থী সৈয়দ আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ক্ষমতাসীনরা প্রচারে বাধা দিলেও ভোটে বাধা দিতে পারবে না। মানুষ সচেতন, তারা ধানের শীষেই ভোট দেবে।
গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টায় শেষ হয়েছে ভোটের আনুষ্ঠানিক প্রচার। সরেজমিনে দেখা যায়, মিছিল-সমাবেশ বা মাইকে প্রচার না থাকলেও পোস্টার-ব্যানারে এখনো নৌকার প্রার্থী আসলামুল হকের একক আধিপত্য। তারপরও মানুষ ধানের শীষের প্রার্থীকে ভালোভাবেই চেনেন বলেই জানা গেল।
মিরপুর বাংলা কলেজের সামনে কথা হয় গাবতলীর যুবক হোসেন মনসুরের সঙ্গে। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আসলামুল হক টানা দু’বারের এমপি। গতবার তো ভোট প্রয়োজন হয়নি। এবারের নির্বাচনেও ধানের শীষকে কোণঠাসা করে রেখেছেন। মিটিং-মিছিল বা পোস্টারিং করতে বাধা দিয়েছেন। কিন্তু সাজুকে (সৈয়দ আবু বকর সিদ্দিক) মোটামুটি সবাই চেনে। ফলে সে ভালো ভোট পাবে।’
তবে ভোট নিয়ে আশঙ্কায় আরিফা বেগম। টোলারবাগের বাসিন্দা এই গৃহিণীর ভাষ্য, ‘ভালো ভোট হলে আসলাম এবার নাও পাস করতে পারে। ধানের শীষের পক্ষে একটা জোয়ার আছে। কিন্তু ভোট দিতে পারবে কি না, পারলেও ব্যালট বাক্স ডাকাতি হয়ে যেতে পারে। পরিবেশ অনেকটা এমনই।’
এই আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৮ হাজার ৪৪ জন। নৌকা, ধানের শীষ ছাড়াও রয়েছেন জাতীয় পার্টির মোস্তাকুর রহমান। টেলিভিশন প্রতীকে নির্বাচন করছেন বিএনএফের আনোয়ার হোসেন। ভোটের মাঠে আছেন ইসলামী আন্দোলনের আবু ইউসুফ (হাতপাখা), জাকের পার্টির জাকির হোসেন (গোলাপ ফুল), সিপিবির রিয়াজ উদ্দিন (কাস্তে)।
মিরপুর শাহ আলী মাজারের সামনে দেখা মিলল হাতপাখার এক সমর্থকের। আশরাফ মিয়া নামের এই ব্যক্তি মাজারের পাশে ব্যবসা করেন। তিনি বলেন, ‘পাস কে করবে জানি না। তবে আমি ভোট দেব হাতপাখায়।’ কেন দেবেন জানতে চাইলে বলেন, ‘হুজুর বলে দিয়েছেন। তাই ভোট দেব।’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও জয় ধরে রাখতে জোর প্রস্তুতি নিয়েছেন দুইবারের সংসদ সদস্য আসলামুল হক। সে তুলনায় বিএনপি প্রার্থী কিছুটা অগোছালো। মাজার রোডে কথা হয় দুই তরুণ ভোটারের সঙ্গে। তাদের একজন আপেল হোসেন বলেন, প্রথম ভোট দেব উন্নয়নের পক্ষে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে এটা জরুরি। ভিন্ন কথা বলেছেন আরেক তরুণ কামাল। তিনি বলেন, ভোট আমার অধিকার। গণতন্ত্র ও উন্নয়ন একসঙ্গে না চললে হয় না। ভোট দেব তরুণ প্রার্থীকে। যে যুব সমাজের পক্ষে কাজ করবে। এই হিসাবে ধানের শীষের প্রার্থীর বয়স অনেক কম। ফলে তরুণদের উচিত তার পক্ষে কাজ করা।
মিরপুর আর পল্লবী নিয়ে আগে ছিল ঢাকা-১১ আসন। ১৯৯১ সালে এখানে জয়লাভ করেন বিএনপির এসএ খালেক। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের কামাল আহমেদ মজুমদার পাস করলেও ২০০১ সালে পুনরায় জয় পান এসএ খালেক।
২০০৮ সালে সীমানা সংস্কার হয়ে গঠিত ঢাকা-১৪ আসনে ওই বছর আসলামুল হক জয় পান। ২০১৪ সালে ভোট ছাড়াই তিনি সংসদে যান।