নারী-শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল
খুলনায় আটকা ৬১৯ মামলা
সুমন্ত চক্রবর্ত্তী, খুলনা | ২৩ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০
খুলনায় তিনটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল থাকলেও যথাসময়ে বিচারকাজ শেষ হচ্ছে না। ফলে বাড়ছে ধর্ষণ-নির্যাতনের মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলার জট। ট্রাইব্যুনাল থেকে সর্বশেষ রায় এসেছে, তাও এক বছর আগে। ১০ বছর আগে করা ধর্ষণ মামলার বিচারকাজ এখনো চলছে। গত বছর আসা ৮০টি মামলার বিচারকাজ শুরুই হয়নি। তিনটি ট্রাইব্যুনালে গড়ে দিনে ৫০টি মামলায় শুনানির দিন ধার্য হচ্ছে। সবমিলে খুলনার ট্রাইব্যুনালগুলোতে ৬১৯টি মামলা আটকে রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
এরই মধ্যে গত ১২ জুলাই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩-এর বিচারক মো. মহিদুজ্জামান বদলি হয়েছেন। এ ট্রাইব্যুনালে জামিন শুনানি ও আপসযোগ্য মামলা ছাড়া অন্য কোনো কার্যক্রম নেই। দীর্ঘদিন বিচারাধীন ১২১টি ধর্ষণ মামলা।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এ বর্তমানে ৩১০টি ধর্ষণ মামলা বিচারাধীন। প্রতি মাসেই নতুন নতুন মামলা যোগ হচ্ছে। অভিযোগপত্র দেওয়া হচ্ছে দেরি করে। ট্রাইব্যুনাল-২-এ বর্তমানে ১৫৯টি ধর্ষণ মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে নয়টি দলবদ্ধ ধর্ষণ। দৌলতপুরে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মোছা. হালিমাকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় মামলাও এ ট্রাইব্যুনালে। ২০০৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। এরপর থেকে এ পর্যন্ত ২৪ সাক্ষীর মধ্যে ছয়জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। কিন্তু বিচারকাজ শেষ হচ্ছে না। নতুন ৩৩টি মামলা যোগ হলেও তার বিচার কার্যক্রমই শুরু হয়নি।
ট্রাইব্যুনাল-১-এর পিপি অলোকা নন্দা দাশ বলেন, ‘সাক্ষী আসছে না। করোনা পরিস্থিতিতে কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দেয়। ফলে মামলার জট লেগে গেছে।’ ট্রাইব্যুনাল-২-এর পিপি জেসমিন পারভীন জলি বলেন, ‘গত বছরের জুন থেকে এ পর্যন্ত আসা মামলার বিচারকাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। এখানে ২০১১ সালের মামলারও বিচার শেষ হয়নি। তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযোগপত্র দিতে বিলম্ব করছেন। সাক্ষী না আসায় দীর্ঘদিন আটকে রয়েছে দৌলতপুরের শিশু হালিমা হত্যা মামলা।’
ট্রাইব্যুনাল-৩-এর পিপি মো. ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘২০১৯ সালের ডিসেম্বরে এ ট্রাইব্যুনালে সর্বশেষ রায় হয়। এতে নগরীর বাস্তুহারা কলোনির আফসানা মীম নামে এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাক্ষী হাজির করতে না পারায় ট্রাইব্যুনালে যথাসময়ে বিচার শেষ হচ্ছে না। তবে এখন সাক্ষী হাজির করা গেলে নতুন আইন অনুযায়ী ১৮০ দিনের মধ্যে বিচারকাজ শেষ করা সম্ভব হবে।’
শেয়ার করুন
সুমন্ত চক্রবর্ত্তী, খুলনা | ২৩ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০

খুলনায় তিনটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল থাকলেও যথাসময়ে বিচারকাজ শেষ হচ্ছে না। ফলে বাড়ছে ধর্ষণ-নির্যাতনের মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলার জট। ট্রাইব্যুনাল থেকে সর্বশেষ রায় এসেছে, তাও এক বছর আগে। ১০ বছর আগে করা ধর্ষণ মামলার বিচারকাজ এখনো চলছে। গত বছর আসা ৮০টি মামলার বিচারকাজ শুরুই হয়নি। তিনটি ট্রাইব্যুনালে গড়ে দিনে ৫০টি মামলায় শুনানির দিন ধার্য হচ্ছে। সবমিলে খুলনার ট্রাইব্যুনালগুলোতে ৬১৯টি মামলা আটকে রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
এরই মধ্যে গত ১২ জুলাই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩-এর বিচারক মো. মহিদুজ্জামান বদলি হয়েছেন। এ ট্রাইব্যুনালে জামিন শুনানি ও আপসযোগ্য মামলা ছাড়া অন্য কোনো কার্যক্রম নেই। দীর্ঘদিন বিচারাধীন ১২১টি ধর্ষণ মামলা।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এ বর্তমানে ৩১০টি ধর্ষণ মামলা বিচারাধীন। প্রতি মাসেই নতুন নতুন মামলা যোগ হচ্ছে। অভিযোগপত্র দেওয়া হচ্ছে দেরি করে। ট্রাইব্যুনাল-২-এ বর্তমানে ১৫৯টি ধর্ষণ মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে নয়টি দলবদ্ধ ধর্ষণ। দৌলতপুরে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মোছা. হালিমাকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় মামলাও এ ট্রাইব্যুনালে। ২০০৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। এরপর থেকে এ পর্যন্ত ২৪ সাক্ষীর মধ্যে ছয়জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। কিন্তু বিচারকাজ শেষ হচ্ছে না। নতুন ৩৩টি মামলা যোগ হলেও তার বিচার কার্যক্রমই শুরু হয়নি।
ট্রাইব্যুনাল-১-এর পিপি অলোকা নন্দা দাশ বলেন, ‘সাক্ষী আসছে না। করোনা পরিস্থিতিতে কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দেয়। ফলে মামলার জট লেগে গেছে।’ ট্রাইব্যুনাল-২-এর পিপি জেসমিন পারভীন জলি বলেন, ‘গত বছরের জুন থেকে এ পর্যন্ত আসা মামলার বিচারকাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। এখানে ২০১১ সালের মামলারও বিচার শেষ হয়নি। তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযোগপত্র দিতে বিলম্ব করছেন। সাক্ষী না আসায় দীর্ঘদিন আটকে রয়েছে দৌলতপুরের শিশু হালিমা হত্যা মামলা।’
ট্রাইব্যুনাল-৩-এর পিপি মো. ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘২০১৯ সালের ডিসেম্বরে এ ট্রাইব্যুনালে সর্বশেষ রায় হয়। এতে নগরীর বাস্তুহারা কলোনির আফসানা মীম নামে এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাক্ষী হাজির করতে না পারায় ট্রাইব্যুনালে যথাসময়ে বিচার শেষ হচ্ছে না। তবে এখন সাক্ষী হাজির করা গেলে নতুন আইন অনুযায়ী ১৮০ দিনের মধ্যে বিচারকাজ শেষ করা সম্ভব হবে।’