আবাসিক এলাকায় ‘অবৈধ’ বিনোদন পার্ক
নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা | ২৭ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০
খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কেডিএ) ময়ূরী আবাসিক এলাকায় অনুমোদন ছাড়াই চলছে বিনোদন পার্ক। দর্শনার্থীদের থেকে প্রবেশ মূল্যের নামে বেইআইনিভাবে আদায় করা হচ্ছে অর্থ। কর্র্তৃপক্ষ পার্কের অনুমোদন না দিলেও কেডিএ কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের নামে ‘ময়ূরী আবাসিক এলাকা বিনোদন পার্কে’ ব্যবসা এখন রমরমা। তবে আবাসিক এলাকায় এভাবে বিনোদন কেন্দ্রের নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টির সমালোচনা করেছেন অনেকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কোনো প্রকার অনুমোদন ছাড়াই চলছে এ বিনোদন ব্যবসা। নির্ধারিত টিকিটের বিনিময়ে প্রতিদিন ভিড় করছে শত শত দর্শনার্থী। প্রতি মাসে আয় হচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
কেডিএর তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ সালে মহানগরীর পশ্চিম প্রান্তে সিটি বাইপাসসংলগ্ন আহসানাবাদ মৌজায় ৯০ একর জমির ওপর ‘ময়ূরী’ নামে আবাসিক এলাকা নির্মাণ উদ্যোগ নেয় খুলনা উন্নয়ন কর্র্তৃপক্ষ। সম্প্রতি আবাসিক এলাকাটির অবকাঠামো নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয়েছে। সেখানে আছে ৬৫৩টি প্লট। এর মধ্যে তিন কাঠার ৩৮৪টি ও পাঁচ কাঠার ২৬৯টি। প্রসপেক্টাস অনুযায়ী ইতিমধ্যে লটারির মাধ্যমে এসব প্লট বরাদ্দও দেওয়া হয়েছে। তিন কাঠা প্লটের প্রতি কাঠা জমির মূল্য ৯ লাখ টাকা এবং পাঁচ কাঠা প্লটের মূল্য প্রতি কাঠা ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে পরিশোধ করে প্লট গ্রহণ করেছেন গ্রাহকরা। কিন্তু এখনো কোনো ভবন নির্মাণ হয়নি।
সরেজমিন দেখা গেছে, আবাসিকে নির্মিত হয়েছে চওড়া চওড়া অভ্যন্তরীণ সড়ক। সড়কের পাশে কোথাও কোথাও রয়েছে টাইলস বসানো সিটিং অ্যারেঞ্জমেন্ট। লম্বা দুটি লেক ডিঙ্গিয়ে এপার-ওপার যেতে নির্মাণ করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন সেতু। এছাড়া শিশুদের বিনোদনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে বড় বড় ছাতা ও রাইডারসংবলিত আলাদা পার্ক। সন্ধ্যায় রং-বেরঙের বৈদ্যুতিক আলো এলাকাটি মনোমুগ্ধকর পরিবেশ তৈরি করছে। এ পরিবেশে প্রতিদিনই সময় কাটাতে আসছে শত শত মানুষ। আর দর্শনার্থীর ভিড় দেখে লোভ সামলাতে পারেনি আবাসিক প্রকল্পের কর্র্তৃপক্ষ। তারা সুযোগটি লুফে নিতে গত ৫ নভেম্বর থেকে সেখানে চালু করেছে কেডিএ ময়ূরী আবাসিক এলাকা বিনোদন পার্ক। এ পার্কে প্রবেশ মূল্য ৫ টাকা, শিশু পার্কে ১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া পার্কিং গ্যারেজে সাইকেল রাখতে ১০, মোটরসাইকেল ১৫ ও প্রাইভেট কার ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) খুলনার সম্পাদক কুদরত-ই-খুদা বলেন, ‘মূয়রী আবাসিক এলাকার মালিক গ্রহীতারা এবং এটা একটি সংরক্ষিত এলাকা। এটাকে পুঁজি করে বিনোদন পার্ক বানানো বা লিজ দেওয়া সম্পূর্ণ বেআইনি।’
এ বিষয়ে কেডিএর পরিচালক (স্টেট) মো. বদিউজ্জামান বলেন, ‘সম্পত্তি শাখার দায়িত্ব সম্পত্তি দেখাশোনা করা। এটি তার বিষয় নয়। আর ময়ূরী আবাসিক এলাকা তাকে এখনো বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি।’
তবে কেডিএ কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মো. মামুনুল আবেদীন বলেন, ‘প্রকল্প শেষ হতে পাঁচ-ছয় মাস বাকি রয়েছে। কিন্তু আবাসিক এলাকাটি উন্মুক্ত ছিল, যার কারণে লোকজন ঢুকে পরিবেশ ও রাইড নষ্ট করছিল। তাই নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত পর্যন্ত এ ধরনের বিনোদন পার্ক চালু করা হয়েছে।’
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা | ২৭ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০

খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কেডিএ) ময়ূরী আবাসিক এলাকায় অনুমোদন ছাড়াই চলছে বিনোদন পার্ক। দর্শনার্থীদের থেকে প্রবেশ মূল্যের নামে বেইআইনিভাবে আদায় করা হচ্ছে অর্থ। কর্র্তৃপক্ষ পার্কের অনুমোদন না দিলেও কেডিএ কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের নামে ‘ময়ূরী আবাসিক এলাকা বিনোদন পার্কে’ ব্যবসা এখন রমরমা। তবে আবাসিক এলাকায় এভাবে বিনোদন কেন্দ্রের নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টির সমালোচনা করেছেন অনেকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কোনো প্রকার অনুমোদন ছাড়াই চলছে এ বিনোদন ব্যবসা। নির্ধারিত টিকিটের বিনিময়ে প্রতিদিন ভিড় করছে শত শত দর্শনার্থী। প্রতি মাসে আয় হচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
কেডিএর তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ সালে মহানগরীর পশ্চিম প্রান্তে সিটি বাইপাসসংলগ্ন আহসানাবাদ মৌজায় ৯০ একর জমির ওপর ‘ময়ূরী’ নামে আবাসিক এলাকা নির্মাণ উদ্যোগ নেয় খুলনা উন্নয়ন কর্র্তৃপক্ষ। সম্প্রতি আবাসিক এলাকাটির অবকাঠামো নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয়েছে। সেখানে আছে ৬৫৩টি প্লট। এর মধ্যে তিন কাঠার ৩৮৪টি ও পাঁচ কাঠার ২৬৯টি। প্রসপেক্টাস অনুযায়ী ইতিমধ্যে লটারির মাধ্যমে এসব প্লট বরাদ্দও দেওয়া হয়েছে। তিন কাঠা প্লটের প্রতি কাঠা জমির মূল্য ৯ লাখ টাকা এবং পাঁচ কাঠা প্লটের মূল্য প্রতি কাঠা ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে পরিশোধ করে প্লট গ্রহণ করেছেন গ্রাহকরা। কিন্তু এখনো কোনো ভবন নির্মাণ হয়নি।
সরেজমিন দেখা গেছে, আবাসিকে নির্মিত হয়েছে চওড়া চওড়া অভ্যন্তরীণ সড়ক। সড়কের পাশে কোথাও কোথাও রয়েছে টাইলস বসানো সিটিং অ্যারেঞ্জমেন্ট। লম্বা দুটি লেক ডিঙ্গিয়ে এপার-ওপার যেতে নির্মাণ করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন সেতু। এছাড়া শিশুদের বিনোদনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে বড় বড় ছাতা ও রাইডারসংবলিত আলাদা পার্ক। সন্ধ্যায় রং-বেরঙের বৈদ্যুতিক আলো এলাকাটি মনোমুগ্ধকর পরিবেশ তৈরি করছে। এ পরিবেশে প্রতিদিনই সময় কাটাতে আসছে শত শত মানুষ। আর দর্শনার্থীর ভিড় দেখে লোভ সামলাতে পারেনি আবাসিক প্রকল্পের কর্র্তৃপক্ষ। তারা সুযোগটি লুফে নিতে গত ৫ নভেম্বর থেকে সেখানে চালু করেছে কেডিএ ময়ূরী আবাসিক এলাকা বিনোদন পার্ক। এ পার্কে প্রবেশ মূল্য ৫ টাকা, শিশু পার্কে ১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া পার্কিং গ্যারেজে সাইকেল রাখতে ১০, মোটরসাইকেল ১৫ ও প্রাইভেট কার ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) খুলনার সম্পাদক কুদরত-ই-খুদা বলেন, ‘মূয়রী আবাসিক এলাকার মালিক গ্রহীতারা এবং এটা একটি সংরক্ষিত এলাকা। এটাকে পুঁজি করে বিনোদন পার্ক বানানো বা লিজ দেওয়া সম্পূর্ণ বেআইনি।’
এ বিষয়ে কেডিএর পরিচালক (স্টেট) মো. বদিউজ্জামান বলেন, ‘সম্পত্তি শাখার দায়িত্ব সম্পত্তি দেখাশোনা করা। এটি তার বিষয় নয়। আর ময়ূরী আবাসিক এলাকা তাকে এখনো বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি।’
তবে কেডিএ কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মো. মামুনুল আবেদীন বলেন, ‘প্রকল্প শেষ হতে পাঁচ-ছয় মাস বাকি রয়েছে। কিন্তু আবাসিক এলাকাটি উন্মুক্ত ছিল, যার কারণে লোকজন ঢুকে পরিবেশ ও রাইড নষ্ট করছিল। তাই নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত পর্যন্ত এ ধরনের বিনোদন পার্ক চালু করা হয়েছে।’