২৬ দিন পর খুলল চমেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক
চট্টগ্রাম ব্যুরো | ২৮ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০
ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মারামারির জেরে বন্ধ হওয়ার ২৬ দিন পর গতকাল শনিবার খুলেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক)। সংঘাত ও সহিংসতার জেরে বন্ধ হওয়া প্রতিষ্ঠানটির প্রথম দিনে শান্তিপূর্ণভাবে ক্লাস চলেছে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও ছিল লক্ষণীয়। তবে মারামারির ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক এখনো পুরোপুরি কাটেনি। খোলেনি ছাত্রাবাসও।
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছাত্রলীগের দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে গত ২৯ অক্টোবর রাতে চমেকের প্রধান ছাত্রাবাসে মারামারি হয়।
এ ঘটনায় ৩১ অক্টোবর অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে মারামারির ঘটনায় দুই পক্ষের ৩১ জন ছাত্রকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তবে এ বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে ছাত্রলীগের এক পক্ষ গত বুধবার থেকে সক্রিয় রয়েছে। দুটি পক্ষেরই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের আবেদন জানানোর কথা। তবে প্রথম দিন কেউ আবেদন করেনি।
কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সাহেনা আক্তার বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে প্রথম দিন কেটেছে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও খুব ভালো ছিল। সব ক্লাস চলেছে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী ছাত্রলীগের পক্ষটির কলেজ খোলার প্রথম দিনই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারে আবেদন করার কথা ছিল। এ পক্ষের নেতা ও ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের (ইচিপ) সভাপতি কে এম তানভীর বলেন, ‘আমরা আবেদন প্রস্তুত করছি। দু-এক দিনের মধ্যে জমা দেব।’ তাদের পক্ষের ২৩ জনকে পক্ষপাতমূলকভাবে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বহিষ্কার করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
অন্যদিকে সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন চৌধুরীর অনুসারী ছাত্রলীগের অন্য পক্ষটিও তাদের আটজনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি তুলেছে। এই পক্ষের নেতা আল আমীন বলেন, ‘আমরা অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করে ছাত্রদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানাব। পাশাপাশি আসল দোষীদের শাস্তি দেওয়ার ব্যাপারে আবেদন জানাব।’
গত মঙ্গলবার একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে ক্যাম্পাসের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের ভার পুলিশের কাছে ন্যস্ত করা হয়।
যদিও ওই ঘটনার পরে নাছির ও নওফেল উভয়েই বলেছিলেন, চমেকে ব্যক্তিস্বার্থের সংঘাতকে রাজনৈতিক রূপ দেওয়া হয়েছে। আ জ ম নাছির উদ্দীন দেশ রূপান্তরকে বলেছিলন, ‘নিজ দলের মধ্যে কখনো সংঘাত কাম্য নয়। কিন্তু মাঝেমধ্যে উৎসাহীরা এসব করছে। অপরাধী যে-ই হোক, তাদের শাস্তির আওতায় আনা দরকার।’
অন্যদিকে শিক্ষা উপমন্ত্রী ও চমেক হাসপাতালের গভর্নিং বডির সভাপতি ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল দেশ রূপান্তরকে বলেছিলেন, মনে হচ্ছে এটি কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়। মেডিকেল ছাত্রদের মধ্যে দুই গ্রুপ প্রতিনিয়ত মারামারি করছে। এর মধ্যে একটি গ্রুপ আমার নাম ব্যবহার শুরু করেছে। কোনো পক্ষের প্রতি দয়া দেখানো উচিত নয়। আমি পুলিশ ও কলেজ কর্তৃৃপক্ষকে বলেছি, উভয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে।’
শেয়ার করুন
চট্টগ্রাম ব্যুরো | ২৮ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০

ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মারামারির জেরে বন্ধ হওয়ার ২৬ দিন পর গতকাল শনিবার খুলেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক)। সংঘাত ও সহিংসতার জেরে বন্ধ হওয়া প্রতিষ্ঠানটির প্রথম দিনে শান্তিপূর্ণভাবে ক্লাস চলেছে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও ছিল লক্ষণীয়। তবে মারামারির ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক এখনো পুরোপুরি কাটেনি। খোলেনি ছাত্রাবাসও।
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছাত্রলীগের দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে গত ২৯ অক্টোবর রাতে চমেকের প্রধান ছাত্রাবাসে মারামারি হয়।
এ ঘটনায় ৩১ অক্টোবর অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে মারামারির ঘটনায় দুই পক্ষের ৩১ জন ছাত্রকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তবে এ বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে ছাত্রলীগের এক পক্ষ গত বুধবার থেকে সক্রিয় রয়েছে। দুটি পক্ষেরই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের আবেদন জানানোর কথা। তবে প্রথম দিন কেউ আবেদন করেনি।
কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সাহেনা আক্তার বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে প্রথম দিন কেটেছে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও খুব ভালো ছিল। সব ক্লাস চলেছে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী ছাত্রলীগের পক্ষটির কলেজ খোলার প্রথম দিনই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারে আবেদন করার কথা ছিল। এ পক্ষের নেতা ও ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের (ইচিপ) সভাপতি কে এম তানভীর বলেন, ‘আমরা আবেদন প্রস্তুত করছি। দু-এক দিনের মধ্যে জমা দেব।’ তাদের পক্ষের ২৩ জনকে পক্ষপাতমূলকভাবে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বহিষ্কার করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
অন্যদিকে সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন চৌধুরীর অনুসারী ছাত্রলীগের অন্য পক্ষটিও তাদের আটজনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি তুলেছে। এই পক্ষের নেতা আল আমীন বলেন, ‘আমরা অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করে ছাত্রদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানাব। পাশাপাশি আসল দোষীদের শাস্তি দেওয়ার ব্যাপারে আবেদন জানাব।’
গত মঙ্গলবার একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে ক্যাম্পাসের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের ভার পুলিশের কাছে ন্যস্ত করা হয়।
যদিও ওই ঘটনার পরে নাছির ও নওফেল উভয়েই বলেছিলেন, চমেকে ব্যক্তিস্বার্থের সংঘাতকে রাজনৈতিক রূপ দেওয়া হয়েছে। আ জ ম নাছির উদ্দীন দেশ রূপান্তরকে বলেছিলন, ‘নিজ দলের মধ্যে কখনো সংঘাত কাম্য নয়। কিন্তু মাঝেমধ্যে উৎসাহীরা এসব করছে। অপরাধী যে-ই হোক, তাদের শাস্তির আওতায় আনা দরকার।’
অন্যদিকে শিক্ষা উপমন্ত্রী ও চমেক হাসপাতালের গভর্নিং বডির সভাপতি ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল দেশ রূপান্তরকে বলেছিলেন, মনে হচ্ছে এটি কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়। মেডিকেল ছাত্রদের মধ্যে দুই গ্রুপ প্রতিনিয়ত মারামারি করছে। এর মধ্যে একটি গ্রুপ আমার নাম ব্যবহার শুরু করেছে। কোনো পক্ষের প্রতি দয়া দেখানো উচিত নয়। আমি পুলিশ ও কলেজ কর্তৃৃপক্ষকে বলেছি, উভয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে।’