অবৈধ সাইনবোর্ডে ম্লান সৌন্দর্য
আতাউর রহমান সানী, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) | ২৩ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচলে জমে উঠেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। শেষ সময়ে প্রতিদিনই ভিড় বাড়ছে। কেনাকাটার বাইরেও মেলার স্থায়ী প্যাভিলিয়নের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন দর্শনার্থীরা। কিন্তু দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মেলার বাইরে বিপুলসংখ্যক সাইনবোর্ড, ব্যানার, পেস্টুন ও পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে অবৈধভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের প্রচারণা চালাচ্ছে। এতে দৃষ্টিনন্দন প্যাভিলিয়ন ছাড়াও মেলায় প্রবেশের প্রধান ফটকের সৌন্দর্য অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করছেন দর্শনার্থীরা।
এ বিষয়ে ইপিবি সচিব ও বাণিজ্যমেলার পরিচালক ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘মেলা এলাকায় কোনো ধরনের ব্যানার-ফেস্টুন, সাইনবোর্ড লাগানোর অনুমতি আমরা দিইনি। রাতে বিভিন্ন কোম্পানি ও স্কুল-কলেজের বিজ্ঞাপনে এসব করা হয়। কয়েক দিন আগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আমরা অবৈধ ব্যানার-ফেস্টুন ও সাইনবোর্ড অপসারণ করেছি। আবারও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে রাজউকের জমিতে সাইনবোর্ড দিয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই।’
সংশ্লিষ্টরা জানায়, ১৯৯৫ সাল থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা রাজধানীর আগারগাঁওয়ে হতো। এরপর সরকারি সিদ্ধান্তে রূপগঞ্জের পূর্বাচল উপশহরে প্রায় ২০ একর জমিতে ২০১৭ সাল থেকে তিন বছরে স্থায়ী প্যাভিলিয়ন নির্মাণ করা হয়। বঙ্গবন্ধু চায়না-বাংলাদেশ এক্সিবিশন সেন্টার নামে পরিচিত বাণিজ্যমেলার এ নির্মাণকাজে ব্যয় হয়েছে ৭৭৩ কোটি টাকা। ১ জানুয়ারি এখানে প্রথমবারের মতো মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগ্রহ নিয়ে মেলায় আসছেন দর্শনার্থীরা। ভেতরে তাদের বসে বিশ্রামের জন্য ইপিবি কর্র্তৃপক্ষ বেঞ্চ দিয়েছে। মেলার বাইরের চারপাশের দেয়ালে সৌন্দর্যবর্ধনে ইপিবি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজির রহমানের ছবিসহ বিভিন্ন ঐহিত্য তুলে ধরেছে। তবে মেলার বাইরে চারপাশের প্রচারের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও স্কুল-কলেজের মালিকরা স্থানীয় প্রভাবশালীদের মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে বিজ্ঞাপন প্রচারের ব্যবস্থা করেছেন। এ জন্য অবৈধভাবে টানানো হয়েছে হরেক রকমের ব্যানার, ফেস্টুন ও সাইনবোর্ড। সব মিলিয়ে মেলার বাইরে ঘিঞ্জি পরিবেশ তৈরি হয়েছে। মেলা থেকে একটু সামনেই বড় বড় সাইনবোর্ডের কারণে ঢাকা পড়ছে প্রবেশপথের দৃষ্টিনন্দন ফটক। এ ছাড়া মেলার চারপাশের দেয়ালে অবৈধভাবে পূর্বাচল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, এএইচ অটো টব, ছায়াকুঞ্জ আবাসন ধানসিঁড়ি রেস্তোরাঁ, পূর্বাচল মেরিন সিটি, সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি, কেপিএস জেনারেল হাসপাতালসহ শতাধিক ব্যানার টাঙানো হয়েছে। রয়েছে রাজনৈতিক ব্যানারও।
মেলায় আসা কয়েকজন দর্শনার্থী জানান, এবার পূর্বাচলে বাণিজ্যমেলার প্রবেথপথ খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। তবে মেলার বাইরে টাঙানো ব্যানার-ফেস্টুনে সৌন্দর্যহানি ঘটেছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড, ব্যানার-ফেস্টুনই সবার নজর কাড়ছে। দর্শনার্থী সাইদুর রহমান বলেন, ‘বন্ধুরা মিলে বাণিজ্যমেলায় এসেছিলাম। মেলায় প্রবেশের সময় সারি সারি বিশাল সাইনবোর্ড। এগুলোর কারণে মেলার ফটকই ঠিকঠাক দেখা যায় না। আয়োজকদের এ বিষয়ে নজর দেওয়া দরকার।’
শেয়ার করুন
আতাউর রহমান সানী, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) | ২৩ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচলে জমে উঠেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। শেষ সময়ে প্রতিদিনই ভিড় বাড়ছে। কেনাকাটার বাইরেও মেলার স্থায়ী প্যাভিলিয়নের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন দর্শনার্থীরা। কিন্তু দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মেলার বাইরে বিপুলসংখ্যক সাইনবোর্ড, ব্যানার, পেস্টুন ও পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে অবৈধভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের প্রচারণা চালাচ্ছে। এতে দৃষ্টিনন্দন প্যাভিলিয়ন ছাড়াও মেলায় প্রবেশের প্রধান ফটকের সৌন্দর্য অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করছেন দর্শনার্থীরা।
এ বিষয়ে ইপিবি সচিব ও বাণিজ্যমেলার পরিচালক ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘মেলা এলাকায় কোনো ধরনের ব্যানার-ফেস্টুন, সাইনবোর্ড লাগানোর অনুমতি আমরা দিইনি। রাতে বিভিন্ন কোম্পানি ও স্কুল-কলেজের বিজ্ঞাপনে এসব করা হয়। কয়েক দিন আগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আমরা অবৈধ ব্যানার-ফেস্টুন ও সাইনবোর্ড অপসারণ করেছি। আবারও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে রাজউকের জমিতে সাইনবোর্ড দিয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই।’
সংশ্লিষ্টরা জানায়, ১৯৯৫ সাল থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা রাজধানীর আগারগাঁওয়ে হতো। এরপর সরকারি সিদ্ধান্তে রূপগঞ্জের পূর্বাচল উপশহরে প্রায় ২০ একর জমিতে ২০১৭ সাল থেকে তিন বছরে স্থায়ী প্যাভিলিয়ন নির্মাণ করা হয়। বঙ্গবন্ধু চায়না-বাংলাদেশ এক্সিবিশন সেন্টার নামে পরিচিত বাণিজ্যমেলার এ নির্মাণকাজে ব্যয় হয়েছে ৭৭৩ কোটি টাকা। ১ জানুয়ারি এখানে প্রথমবারের মতো মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগ্রহ নিয়ে মেলায় আসছেন দর্শনার্থীরা। ভেতরে তাদের বসে বিশ্রামের জন্য ইপিবি কর্র্তৃপক্ষ বেঞ্চ দিয়েছে। মেলার বাইরের চারপাশের দেয়ালে সৌন্দর্যবর্ধনে ইপিবি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজির রহমানের ছবিসহ বিভিন্ন ঐহিত্য তুলে ধরেছে। তবে মেলার বাইরে চারপাশের প্রচারের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও স্কুল-কলেজের মালিকরা স্থানীয় প্রভাবশালীদের মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে বিজ্ঞাপন প্রচারের ব্যবস্থা করেছেন। এ জন্য অবৈধভাবে টানানো হয়েছে হরেক রকমের ব্যানার, ফেস্টুন ও সাইনবোর্ড। সব মিলিয়ে মেলার বাইরে ঘিঞ্জি পরিবেশ তৈরি হয়েছে। মেলা থেকে একটু সামনেই বড় বড় সাইনবোর্ডের কারণে ঢাকা পড়ছে প্রবেশপথের দৃষ্টিনন্দন ফটক। এ ছাড়া মেলার চারপাশের দেয়ালে অবৈধভাবে পূর্বাচল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, এএইচ অটো টব, ছায়াকুঞ্জ আবাসন ধানসিঁড়ি রেস্তোরাঁ, পূর্বাচল মেরিন সিটি, সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি, কেপিএস জেনারেল হাসপাতালসহ শতাধিক ব্যানার টাঙানো হয়েছে। রয়েছে রাজনৈতিক ব্যানারও।
মেলায় আসা কয়েকজন দর্শনার্থী জানান, এবার পূর্বাচলে বাণিজ্যমেলার প্রবেথপথ খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। তবে মেলার বাইরে টাঙানো ব্যানার-ফেস্টুনে সৌন্দর্যহানি ঘটেছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড, ব্যানার-ফেস্টুনই সবার নজর কাড়ছে। দর্শনার্থী সাইদুর রহমান বলেন, ‘বন্ধুরা মিলে বাণিজ্যমেলায় এসেছিলাম। মেলায় প্রবেশের সময় সারি সারি বিশাল সাইনবোর্ড। এগুলোর কারণে মেলার ফটকই ঠিকঠাক দেখা যায় না। আয়োজকদের এ বিষয়ে নজর দেওয়া দরকার।’