স্ত্রী-সন্তান হত্যায় ফাঁসির আসামি এক যুগ পর গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৬ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০
স্ত্রী ও তিন বছরের মেয়েকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি জাকির হোসেনকে ১২ বছর পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২০০৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে স্ত্রী নিপা আক্তার (২২) ও তিন বছরের মেয়ে জ্যোতিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন জাকির হোসেন (৪০)। সেই ঘটনায় হওয়া মামলায় গ্রেপ্তারের পর জামিনে বেরিয়ে প্রায় ১২ বছর আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। গত বৃহস্পতিবার রাতে সাভারের শাহীবাগ এলাকা থেকে তাকে আটক করেছে র্যাব। গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের অস্থায়ী মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৪ অধিনায়ক (সিও) ডিআইজি মোজাম্মেল হক।
তিনি আরও জানান, স্ত্রী-সন্তান হত্যায় পাঁচ বছর জেল খেটে জামিনে বের হয়ে আত্মগোপনে চলে যান জাকির। ২০১৩ সালে ফের বিয়ে করে সাভারের জিনজিরা এলাকায় বসবাস করছিলেন। গ্রেপ্তার এড়াতে রাজধানীর আরামবাগ, ফকিরাপুল, হাজারীবাগ, খিলগাঁও, ঢাকার সাভার এবং চট্টগ্রামে থেকেছেন। প্রতিনিয়ত পরিবর্তন করেছেন পেশা। কখনো গার্মেন্টসে চাকরি, কখনোবা স্পাইরাল বাইন্ডিং কর্মী আবার কখনো ঝুট ব্যবসাও করেছেন। এ ছাড়া বাউলের ছদ্মবেশেও ঘুরে বেড়িয়েছেন।
জাকিরকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য, মামলার নথি এবং তদন্তের বিবরণ তুলে ধরে র্যাব কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক বলেন, ২০০০ সালে জাকির হোসেন মানিকগঞ্জের দৌলতপুর থানার জিয়নপুরের মো. আবু হানিফের মেয়ে নিপা আক্তারকে বিয়ে করেন। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে নগদ অর্থ, গয়না ও আসবাব বরপক্ষকে দেওয়া হয়। তবে বিয়ের পর আরও যৌতুকের দাবিতে নিপাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকেন জাকির। জাকির-নিপা দম্পতির ঘরে জ্যোতি নামে এক কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। মেয়ের বয়স যখন তিন বছর, তখন পুনরায় গর্ভধারণ করেন নিপা আক্তার। সে সময় জানতে পারেন তার স্বামী অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়েছেন। এ নিয়ে স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য-কলহ চরমে ওঠে। জাকির নিপাকে তালাকের ভয় দেখানো শুরু করেন। এমনকি গোপনে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকেন। ২০০৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে জাকির ঘুমন্ত নিপাকে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এ ঘটনা দেখতে পাওয়ায় নিজের মেয়ে জ্যোতিকেও শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে যান জাকির। ২৭ ফেব্রুয়ারি নিপার বাবা আবু হানিফ দৌলতপুর থানায় জাকির হোসেনসহ তার বাবা নইম উদ্দিন শেখ, মা মালেকা বানু এবং ভাবি তাহমিনাসহ চারজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় জাকির পাঁচ বছর কারাভোগ শেষে জামিনে বেরিয়ে ২০১০ সালে আত্মগোপনে চলে যান।
পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জাকির হোসেনসহ নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। সেই মামলায় জাকিরকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৬ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০

স্ত্রী ও তিন বছরের মেয়েকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি জাকির হোসেনকে ১২ বছর পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২০০৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে স্ত্রী নিপা আক্তার (২২) ও তিন বছরের মেয়ে জ্যোতিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন জাকির হোসেন (৪০)। সেই ঘটনায় হওয়া মামলায় গ্রেপ্তারের পর জামিনে বেরিয়ে প্রায় ১২ বছর আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। গত বৃহস্পতিবার রাতে সাভারের শাহীবাগ এলাকা থেকে তাকে আটক করেছে র্যাব। গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের অস্থায়ী মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৪ অধিনায়ক (সিও) ডিআইজি মোজাম্মেল হক।
তিনি আরও জানান, স্ত্রী-সন্তান হত্যায় পাঁচ বছর জেল খেটে জামিনে বের হয়ে আত্মগোপনে চলে যান জাকির। ২০১৩ সালে ফের বিয়ে করে সাভারের জিনজিরা এলাকায় বসবাস করছিলেন। গ্রেপ্তার এড়াতে রাজধানীর আরামবাগ, ফকিরাপুল, হাজারীবাগ, খিলগাঁও, ঢাকার সাভার এবং চট্টগ্রামে থেকেছেন। প্রতিনিয়ত পরিবর্তন করেছেন পেশা। কখনো গার্মেন্টসে চাকরি, কখনোবা স্পাইরাল বাইন্ডিং কর্মী আবার কখনো ঝুট ব্যবসাও করেছেন। এ ছাড়া বাউলের ছদ্মবেশেও ঘুরে বেড়িয়েছেন।
জাকিরকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য, মামলার নথি এবং তদন্তের বিবরণ তুলে ধরে র্যাব কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক বলেন, ২০০০ সালে জাকির হোসেন মানিকগঞ্জের দৌলতপুর থানার জিয়নপুরের মো. আবু হানিফের মেয়ে নিপা আক্তারকে বিয়ে করেন। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে নগদ অর্থ, গয়না ও আসবাব বরপক্ষকে দেওয়া হয়। তবে বিয়ের পর আরও যৌতুকের দাবিতে নিপাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকেন জাকির। জাকির-নিপা দম্পতির ঘরে জ্যোতি নামে এক কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। মেয়ের বয়স যখন তিন বছর, তখন পুনরায় গর্ভধারণ করেন নিপা আক্তার। সে সময় জানতে পারেন তার স্বামী অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়েছেন। এ নিয়ে স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য-কলহ চরমে ওঠে। জাকির নিপাকে তালাকের ভয় দেখানো শুরু করেন। এমনকি গোপনে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকেন। ২০০৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে জাকির ঘুমন্ত নিপাকে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এ ঘটনা দেখতে পাওয়ায় নিজের মেয়ে জ্যোতিকেও শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে যান জাকির। ২৭ ফেব্রুয়ারি নিপার বাবা আবু হানিফ দৌলতপুর থানায় জাকির হোসেনসহ তার বাবা নইম উদ্দিন শেখ, মা মালেকা বানু এবং ভাবি তাহমিনাসহ চারজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় জাকির পাঁচ বছর কারাভোগ শেষে জামিনে বেরিয়ে ২০১০ সালে আত্মগোপনে চলে যান।
পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জাকির হোসেনসহ নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। সেই মামলায় জাকিরকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত।