
সাগরকন্যা কুয়াকাটায় পরিবেশবান্ধব ভ্রমণ বিষয়ে মাসব্যাপী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে কর্মশালা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় কুয়াকাটা বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সেমিনার কক্ষে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার দায়িত্বশীলদের দৈনিক দেশ রূপান্তর।
গতকাল কর্মশালায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ইকো ট্যুরিজম, জলবায়ু পরিবর্তন, কিশোরীদের উন্নয়ন বিষয়ক মতবিনিময় করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুয়াকাটা বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান ও ইকো ফ্রেন্ডলি ট্যুরিজম এর প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর আসিফ ইকবালসহ ট্যুরিস্ট পুলিশের একটি প্রতিনিধি দল।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান বলেন, ‘কুয়াকাটাকে পরিবেশবান্ধব রাখতে ভ্রমণকারীদের সচেতন করার পাশাপাশি এতে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ জরুরি। এতে শিক্ষার্থীরাও উপকৃত হবে। ফলে আজকের কর্মশালায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ আশার সঞ্চার করেছে। আশা করি এর মাধ্যমে কুয়াকাটায় আরও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বৃদ্ধি পাবে।
মেট্রোরেলের ‘মিরপুর-১০ স্টেশন’ যাত্রীদের চলাচলের জন্যে পুরোপুরি প্রস্তুত। আজ বুধবার সকাল ৮টা থেকে এই স্টেশন যাত্রী চলাচলের জন্যে উন্মুক্ত হবে। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএন ছিদ্দিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এই পর্যন্ত উত্তরা (দিয়াবাড়ী), আগারগাঁও, পল্লবী, উত্তরা সেন্টার স্টেশন চালু হওয়ায় পর পঞ্চম স্টেশন হিসেবে খুলছে এই মেট্রো স্টেশনটি। এই স্টেশন চালুর ফলে রাজধানীর বাণিজ্যিক এলাকায় যোগাযোগ আরও সহজ হবে।
গতকাল সরেজমিন মিরপুর ১০ স্টেশনে দেখা যায়, মেট্রোরেলের এই স্টেশনের জন্য শেষ মুহূর্তে কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে মেট্রোরেলের শ্রমিকরা। সেই সঙ্গে চলছে ধোয়ামোছার কাজ। এই স্টেশন বাণিজ্যিক স্টেশন হওয়ায় অন্যান্য স্টেশন থেকে আরও বেশি মনিটরিং করা হচ্ছে।
জানা যায়, মিরপুর ১০ স্টেশনটি মিরপুর এলাকার সবচেয়ে জনবহুল এলাকা। শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজনের এই এলাকায় বেশি যাতায়াত রয়েছে। মেট্রোরেল সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন এই স্টেশন থেকে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যাত্রী বহন করতে পারবে।
মিরপুর ১০ নাম্বার এলাকার বাসিন্দা মো. ফায়াজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, পাঁচ বছর ধরে এই এলাকায় থাকি। মেট্রোরেলের জন্য একসময় অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। সে ভোগান্তি এখন অনেকটাই কমেছে। স্টেশনটি চালু হচ্ছে। এখন খুব দ্রুত উত্তরা ও আগারগাঁও যাওয়া হবে।
এই এলাকার আরেক বাসিন্দা মো. হাসান বলেন, ‘এই স্টেশন চালু হওয়ার পর আগের থেকে আরও যানজট কমবে। অনেকেই মেট্রোরেলে চলাচল করবে। কিন্তু সময়টা আরও বাড়াতে হবে। তাহলে যাত্রীর সংখ্যা আরও বাড়বে।
এদিকে মিরপুর-১০ স্টেশনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্তব্যরত এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমাদের ধারণা, অন্য স্টেশনগুলোর তুলনায় মিরপুর-১০ স্টেশনে যাত্রীর চাপ বেশি থাকবে। এই চাপ সামলাতে যে জনবল প্রয়োজন সেটা এখানে প্রস্তুত রয়েছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, মেট্রোরেল প্রকল্পটি সরকার যোগাযোগব্যবস্থাকে আরও উন্নত করার জন্য করেছিল। কিন্তু সে সুফল সেভাবে পাওয়া যাচ্ছে না। এখন মিরপুর স্টেশনটি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি স্টেশন। তবে তার থেকে এখন বেশি প্রয়োজন ফার্মেগেট স্টেশন। এই স্টেশন উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মধ্যবর্তী একটি স্টেশন। এই স্টেশন চালু হলে উত্তরা থেকে অনেক যাত্রী ফার্মগেটের উদ্দেশে যাতায়াত করতে পারবে। যার ফলে পুরো সুফল না পেলেও অনেকটাই সুফল পাবে যাত্রীরা।
ডিএমটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এন ছিদ্দিক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আগামীকাল (আজ) আমাদের অপারেশন টিম মিরপুর-১০ স্টেশন খুলে দেবে। আমরা আগেই বলে আসছি, পর্যায়ক্রমে মেট্রোরেলের স্টেশনগুলো খুলে দেওয়া হবে। তা ছাড়া, এই স্টেশন বেশ জনবহুল এলাকা হওয়ায় সেভাবে পরিকল্পনা অনুযায়ী জনবল প্রস্তুত করা হয়েছে। তাই কোনো রকম ঘাটতি নেই বললেই চলে।’
আড়াইহাজারে একটি কেমিক্যাল কারখানায় অগ্নিকান্ড হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় ভুলতা-আড়াইহাজার আঞ্চলিক মহাসড়কের তিনগাঁও নামক স্থানে এইচপি কেমিক্যাল ফ্যাক্টরিতে অগ্নিকান্ড হয়। পরে তিন ঘণ্টা চেষ্টা করে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে ফ্যাক্টরিটি বন্ধ থাকা অবস্থায় হঠাৎ করে ভেতরে প্রচন্ড ধোঁয়া দেখতে পান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের আড়াইহাজার, রূপগঞ্জ এবং মাধবদীর ছয়টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করে। এতে করে আশপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় রাস্তাঘাট।
জানা গেছে, ফ্যাক্টরিটিতে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড তৈরির একটি কারখানা হওয়ায় এর ভেতরে শুধু ওই পদার্থ তৈরির সরঞ্জাম ও কেমিক্যাল ছিল। ফলে মুহূর্তেই আগুন পুরো কারখানায় ছড়িয়ে পড়ে। তবে গতকাল কারখানা বিশেষ ছুটি থাকায় ভেতরে কোনো শ্রমিক ছিলেন না।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের আড়াইহাজার অফিসের ইনচার্জ মো. শাহজাহান জানান, আগুনের ভয়াবহতা প্রকট। ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট আগুন নেভাতে আপ্রাণ চেষ্টা করে সাড়ে তিন ঘণ্টা পর বিকেল ৫টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে কেউ কিছু বলতে পারছেন না। কারখানা কেন ছুটি ছিল তা জানা যায়নি।
এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে এইচপি কেমিক্যালের কর্মকর্তা রওশন মল্লিক বলেন, আমরা প্রথমে ধোঁয়া দেখতে পেয়ে লোকজন জড়ো করি এবং বিভিন্ন স্থানে ফোন করে ফায়ার সার্ভিস ও থানা পুলিশকে অবগত করি। তবে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেননি।
আড়াইহাজার থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সোহাগ জানান, লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করায় এবং যেকোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ গাউছিয়া-আড়াইহাজার সড়ক বন্ধ করে দেয়। বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করে লোক ও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। কারখানাটি ইউনিয়ন গ্রুপ দ্বারা পরিচালিত বলে জানা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা হতে পারে।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইশতিয়াক আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, পরে তদন্ত করে কোনো অনিয়ম পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণগ্রহীতা সদস্য, সহকর্মী, অবসরপ্রাপ্ত সহকর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে গ্রামীণ ব্যাংক মেডিকেল সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংক মেডিকেল সেন্টার উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গ্রামীণ ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. একেএম সাইফুল মজিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিচালক মো. জসিম উদ্দীন, ৯ জন নির্বাচিত পরিচালক, প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মহাব্যবস্থাপকবৃন্দ। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোসলেহ উদ্দীন এবং উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ছাইদুজ্জামান ভূঞাসহ প্রধান কার্যালয়ের কমকর্তাবৃন্দ। বিজ্ঞপ্তি
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এসেছে। দলটি বলেছে, ‘দেশে যে অর্থনৈতিক সংকট বিদ্যমান সরকার তা স্বীকার করে না। কিন্তু আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ নিতে সরকার যে আবেদন করেছে তাতে বিরাজমান অর্থনৈতিক দুর্যোগের কথা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে। বলতে গেলে তারা এখন ব্যাংক থেকে ধার করে এবং আইএমএফের ঋণের ওপর ভর করেই চলছে।’
গতকাল মঙ্গলবার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির পক্ষে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আইএমএফ প্রস্তাবিত সংস্কারগুলো দেশের প্রয়োজনে অনেক আগেই নিজ উদ্যোগে বাস্তবায়ন করা উচিত ছিল। দেরিতে হলেও ব্যাংকিং ও রাজস্ব খাতসহ অন্যান্য সংস্কার আন্তরিকতার সঙ্গে অবিলম্বে সম্পাদন ও বাস্তবায়ন আবশ্যক। আইএমএফের শর্ত পূরণে সারের পর তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। এরই মধ্যে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দামও বৃদ্ধি করায় মানুষের ভোগান্তি কতটা বেড়েছে তা বলাই বাহুল্য।’
তিনি বলেন, ‘আইএমএফের ঋণে সংকট কাটবে না। ব্যাংকিং ও রাজস্ব খাতের সংস্কার এবং নীতি সংস্কার করে খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধার না করলে, শক্তভাবে দুর্নীতি ও অর্থ পাচার রোধে ব্যর্থ হলে যে সূত্র থেকেই ঋণের টাকা আসুক, নানা কৌশলে শেষ পর্যন্ত অলিগার্করাই বরং তা লুণ্ঠন করে নেবে।’ এ প্রসঙ্গে তিনি অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদের খেলাপি ঋণ নিয়ে বক্তব্য উদ্ধৃত করেন। ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, ‘কাগজে সই করলেই তো খেলাপি ঋণ কমে যাবে না। এর জন্য দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছার।’ ফখরুল বলেন, ‘বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে দেশের অবস্থা আজ এমন শোচনীয় অবস্থায় যেত না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট চলছে তা একটি জাতীয় সংকটে পরিণত হয়েছে।
নড়াইলের লোহাগড়ায় আট মাসের শিশুসন্তানকে গাছে ঝুলিয়ে নির্যাতন করেছেন মাদকাসক্ত বাবা। গত সোমবার উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল মঙ্গলবার শিশুটির মায়ের করা মামলায় বাবা মামুন শেখকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলার আরেক আসামি মামুনের দ্বিতীয় স্ত্রী মাহফুজা আক্তারকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ১৩ বছর আগে মামুন শেখের সঙ্গে কুলসুম বেগমের বিয়ে হয়। তাদের ঘরে দুটি ছেলে ও একটি মেয়ে রয়েছে। কিছুদিন আগে মামুন মাহফুজা আক্তার নামে আরেক নারীকে বিয়ে করেন। দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকে প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে মামুনের। প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণপোষণ প্রায় বন্ধ করে দেন তিনি। ভরণপোষণের দাবি করায় প্রায়ই নির্যাতনের শিকার হতেন কুলসুম। গত সোমবারও কুলসুমকে মারধর করেন মামুন। দ্বিতীয় স্ত্রী মাহফুজাও কুলসুমকে নির্যাতন করেন। বিতণ্ডার একপর্যায়ে বাড়ি থেকে চলে যান মাহফুজা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মামুন তার আট মাস বয়সী ছেলেকে বাড়ির পাশের আম গাছের ডালে উল্টো করে ঝুলিয়ে লাঠি দিয়ে মারধর শুরু করেন।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।