
রাজধানীর ধানমন্ডিতে দুই সপ্তাহ আগে ছিনতাইকারীর আক্রমণে নিহত হন একজন নারী উদ্যোক্তা। এই ঘটনার রেশ না কাটতেই আবারও ওই এলাকায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। এভাবে ধানমন্ডি এলাকায় আক্রমণাত্মক ছিনতাই চক্রের কবলে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। ধারালো অস্ত্রধারী ছিনতাইকারীরা মানিব্যাগ- মোবাইল ফোনের জন্য প্রাণ নিতে দ্বিধাবোধ করছে না। ফলে এই এলাকায় বসবাসরত ও নানা প্রয়োজনে আসা-যাওয়া করা মানুষজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে ধানমন্ডি এলাকায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী শামসুর রহমান (২০) গুরুতর আহত হন। তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া দেশ রূপান্তরকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আহত শামসুর রহমানের অবস্থা আশঙ্কাজনক। জরুরি বিভাগে তার চিকিৎসা চলছে। জানা গেছে, শামসুর রহমান পরিবারের সঙ্গে মিরপুর ২ নম্বর সেকশন এলাকায় থাকেন। বৃহস্পতিবার রাতে বাসায় ফেরার পথে ধানমন্ডি এলাকায় ছিনতাইকারীরা শামসুর রহমানকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। এ সময় তার কাছে থাকা একটি ফোন ছিনিয়ে নেয় তারা। আহত অবস্থায় রাস্তায় এক রিকশাচালক তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে খবর পেয়ে সেখান থেকে পরিবারের লোকজন তাকে রাতে ঢাকা মেডিকেল নিয়ে যান। শামসুরের মা শামসুন্নাহার বেগম দেশ রূপান্তরকে জানান, শামসুর রহমান আশুলিয়ায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পাবলিক হেলথ বিভাগের প্রথমবর্ষের ছাত্র। ধানমন্ডির সিটি কলেজের পাশে কম্পিউটার কোর্স করেন।
সেখান থেকে বাসায় ফেরার পথে ধানমন্ডি এলাকার কোনো স্থানে ছিনতাইকারীরা তাকে ছুরিকাঘাত করে তার ব্যবহৃত মোবাইলফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এর আগে ২৫ আগস্ট সকালে ধানমন্ডির সাত মসজিদ সড়কে স্বামীর সঙ্গে রিকশায় থাকা অবস্থায় মোটরসাইকেল আরোহী ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে নিহত হয়েছেন নারী উদ্যোক্তা সৈয়দ আমিনা হক (৫৮)। জানা গেছে, ওই দিন সকালে স্বামীর সঙ্গে ধানমন্ডি ২ নম্বর সড়কে যোগব্যায়াম করতে যান আমিনা হক। সেখান থেকে রিকশায় বাসায় ফিরছিলেন। এ সময় পেছন থেকে মোটরসাইকেল আরোহী দুই ছিনতাইকারী আমিনার হাতে থাকা ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান দেন।
তখন রিকশা থেকে পড়ে গুরুতর জখম হন তিনি। তার বুকের পাঁজরের পাঁচটি হাড় ভেঙে যায়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আমিনা। ধানমন্ডি এলাকার ছিনতাইয়ের বিষয়ে জানতে ধানমন্ডি থানার ওসি পারভেজ ইসলামের সঙ্গে মোবাইলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি সাড়া দেননি। এদিকে রাজধানীতে চুরি ছিনতাই নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, অপরাধপ্রবণতা এলাকাভিত্তিক কমবেশি হয় শ্রেণি, অর্থ ও শিক্ষা ব্যবস্থার ফলে। অপরাধের সঙ্গে এলাকার নিবিড় সংযোগ আছে। যে এলাকায় ভাসমান জনসংখ্যা বেশি, ঘনবসতিপূর্ণ এবং অপরাধ ঘটিয়ে পালানোর অবাধ সুযোগ আছে, সেখানে অপরাধ বেশি হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের মামলার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে তেজগাঁও, রমনা ও মতিঝিল বিভাগে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘটছে তেজগাঁও বিভাগ এলাকায়। এর পরে রয়েছে রমনা ও মতিঝিল বিভাগ এলাকা
পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুরে প্রথমবারের মতো পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি ইউরেনিয়াম আসাকে কেন্দ্র করে তার নিরাপত্তায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। চলতি মাসের শেষ দিকে বা আগামী মাসে রাশিয়া থেকে ইউরেনিয়াম আসার কথা রয়েছে। ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) নজরদারিতে শেষ হয়েছে জ্বালানি আমদানি, পরিবহন ও সংরক্ষণের সব প্রস্তুতি।
প্রকল্প কর্মকর্তারা জানান, প্রায় এক দশক ধরে অবকাঠামো নির্মাণ শেষে রূপপুরে দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে এখন পুরোদমে চলছে প্রথম ইউনিটের প্রি-কমিশনিং বা প্রাক-চালুকরণের কাজ। এই ধাপে পরমাণু জ্বালানি ইউরেনিয়াম প্রবেশ করানো হবে চুল্লিতে। প্রথম ইউনিটে জ্বালানি মজুদ ও অপসারণে স্থাপিত হয়েছে রাশিয়া থেকে আনা ২২৫ টন ওজনের এই বিশেষায়িত ট্রেসেল ক্রেন।
ইতিমধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের জন্য রাশিয়ায় প্রথম ব্যাচের ফ্রেশ ইউরেনিয়াম ফুয়েল উৎপাদন ও প্রটোকল চুক্তি শেষে বাংলাদেশে পাঠানোর সব প্রস্তুতি শেষ করেছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা রোসাটমের সহযোগী প্রতিষ্ঠান টেভেল। বিশেষ বিমানে ঢাকায় পৌঁছার পর আইএইএর তত্ত্বাবধানে কড়া নিরাপত্তায় সড়কপথে তা নেওয়া হবে প্রকল্প এলাকায়। সংশ্লিষ্টদের চাহিদা অনুযায়ী নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে চূড়ান্ত মহড়া করেছে সেনাবাহিনী। সবুজসংকেত দিয়েছেন আইএইএর প্রতিনিধিরাও।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর বলেন, সেপ্টেম্বরের শেষ প্রান্তিকে জ্বালানির চালানটি বিমানযোগে বাংলাদেশে পৌঁছানোর কথা। তারপর কঠোর নিরাপত্তায় বিশেষ যানবাহনে বিমানবন্দর থেকে প্রায় ২৭০ কিলোমিটার দূরে প্রকল্পস্থলে নিয়ে যাওয়া হবে। ইউরেনিয়াম রড নিয়ে বিমানটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সড়কপথে প্রকল্পস্থলে তেজস্ক্রিয় জ্বালানি পরিবহনের জন্য একটি নিরাপত্তা প্রটোকল তৈরি করবে। জ্বালানিটি একটি বিশেষ ৪০ চাকার লরিতে
থাকবে এবং সশস্ত্র বাহিনী, ফায়ার ব্রিগেড এবং স্বাস্থ্যসেবা কর্মী এবং অ্যাম্বুলেন্সের যানবাহন দ্বারা এসকর্ট করা হবে। নিরাপত্তাব্যবস্থা এবং সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে যোগাযোগ করা হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, অব্যবহৃত পারমাণবিক জ্বালানি পরিবহনে দুর্ঘটনার কোনো ঘটনা এ পর্যন্ত ঘটেনি।
বাংলাদেশ অ্যাটমিক এনার্জি রেগুলেটরি অথরিটির একজন কর্মকর্তা বলেন, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার সুরক্ষা মিশন বাংলাদেশে নিরাপত্তার মান বজায় রাখতে এবং পারমাণবিক জ্বালানি পরিবহনে মানবসম্পদ প্রশিক্ষণের জন্য কাজ করছে।
নিউক্লিয়ার রেগুলেটরি অবকাঠামো উন্নয়নের প্রকল্প পরিচালক সত্যজিৎ ঘোষ বলেন, আইএইএর সুরক্ষা বিভাগের পরিচালক মিহারু কিরিউকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল গত ২৮ আগস্ট রূপপুর প্ল্যান্ট পরিদর্শন করেছে। ‘আমরা ইতিমধ্যে এ বিষয়ে আইএইএতে একাধিক স্ব-মূল্যায়ন প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। আইএইএ টিম রূপপুর পরিদর্শন করে পারমাণবিক জ্বালানির নিরাপদ পরিবহন এবং পরিচালনা নিশ্চিত করার জন্য আমরা যে সতর্কতা অবলম্বন করেছি তাতে সন্তুষ্ট হয়েছে।
প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা জানান, ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিটের দৈনিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট। জ্বালানি আমদানির পর ২০২৪ সালেই শুরু হবে এর প্রথম ইউনিটের পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন।
বিদ্যুতায়িত হয়ে হাসপাতালে নিয়মিত চিকিৎসা নিতে আসা সেই বানর মারা গেছে। গতকাল শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) মারা যায় গুরুতর আহত এই প্রাণীটি। এর আগে চিকিৎসায় অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও গত বৃহস্পতিবার থেকে বানরটি হঠাৎ খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দিলে অবস্থার অবনতি হতে থাকে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা দীপান্বিতা ভট্টাচার্য বলেন, ‘গত চার সেপ্টেম্বর বানরটিকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ অধিদপ্তরে আনার পর প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য এটিকে ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে যেহেতু প্রাণী রাখার কোনো স্থান নেই তাই এটিকে চিকিৎসা দেওয়ার পর আবার আমাদের কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। এখানে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী বানরটির চিকিৎসা চলছিল। চিকিৎসা দেওয়ার পর ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর বানরটিকে অনেকটা সুস্থ দেখা যায়। বানরটি স্বাভাবিকভাবে হাঁটাহাঁটি ও খাওয়াদাওয়া করে। কিন্তু ৭ তারিখ থেকে বানরটি হঠাৎ খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দেয়। তখনই আমরা এটিকে আবারও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যাই। সেখানে বানরটিকে স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে অনেক চেষ্টা করেও এটিকে মুখে কিছু খাওয়ানো যাচ্ছিল না। জোর করে কিছুটা খাওয়ানোর চেষ্টা করলে বানরটি বমি করে দেয়। এরপর ক্রমান্বয়ে অবস্থার অবনতি হতে থাকে। অবশেষে আজ (গতকাল) দুপুরে বানরটির মৃত্যু হয়।’
এলাকাবাসী জানায়, বানরটিকে গত বেশ কিছুদিন ধরে সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। এ সময় এলাকাবাসী কলা, বাদাম ও বিভিন্ন ধরনের ফল, সবজি খেতে দিলেও বানরটি খাওয়ার প্রতি কোনো আগ্রহ দেখাচ্ছিল না। এটিকে আগে থেকেই কিছুটা দুর্বল ও অসুস্থ মনে হচ্ছিল। শারীরিক কোনো অসুবিধার কারণে চিকিৎসার আশায় প্রাণীটি লোকালয়ে চলে আসে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। পরে বৈদ্যুতিক খুঁটির ওপর থেকে নিচে পড়ে মারাত্মক আহত হয়।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার পাঁচ দিনের ইন্দোনেশিয়া সফর শেষে গতকাল শুক্রবার বিকেলে সিঙ্গাপুরে পৌঁছেছেন। তিনি ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় তিন দিনব্যাপী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোটের (আসিয়ান) ৪৩তম শীর্ষ সম্মেলন এবং ১৮তম ‘ইস্ট এশিয়া’ সম্মেলনে যোগ দেন।
রাষ্ট্রপতি ও তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানাকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বেলা ২টা ১২ মিনিটে (সিঙ্গাপুর সময়) পৌঁছায়। সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের হাইকমিশনার তৌহিদুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ হাইকমিশনের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানান।
সিঙ্গাপুরে রাষ্ট্রপ্রধান ও তার স্ত্রীর স্বাস্থ্যপরীক্ষা হবে।
এর আগে বেলা ১১টায় (জাকার্তা সময়) ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী সুকর্নো-হাত্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়েন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন। বিমানবন্দরে রাষ্ট্রপতিকে ইন্দোনেশিয়ার জ্বালানি ও খনিজসম্পদমন্ত্রী আরিফিন তাসরিফ এবং ইন্দোনেশিয়ায় বাংলাদেশ মিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিদায় জানান।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ৪ সেপ্টেম্বর জাকার্তায় পৌঁছান। তিনি ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর সভাপতিত্বে ৫-৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপী ৪৩তম আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানাসহ ৫ সেপ্টেম্বর সকালে সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডারবিষয়ক বাংলাদেশের জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনও সেখানে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ছিলেন।
৪৩তম আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুধু আসিয়ান ১০টি দেশের সাংগঠনিক নেতারাই উপস্থিত ছিলেন না, বিশে^র কয়েকজন রাষ্ট্রীয় নেতা, রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান, অংশীদার দেশগুলোর প্রতিনিধিরাও এতে অংশ নিয়েছেন।
নওগাঁর আত্রাইয়ে সাহেবগঞ্জে ২০০৪ সালে সহকর্মী রতন মিয়াকে হত্যা করে আব্দুল হামিদ নামে এক ব্যক্তি। এরপর পালিয়ে গিয়ে নিজের নাম বদলে ফেলেন। নাম-পরিচয় পরিবর্তন করে নরসিংদীতে বিয়ে করেন। হত্যাকা-ে মামলা হয়। সেই মামলায় ২০১০ সালের ১৯ মে আব্দুল হামিদের মৃত্যুদ-ের রায় ঘোষণা দেয় আদালত। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। ২০ বছর আত্মগোপনে থাকার পর গত বৃহস্পতিবার সাভারে অভিযান চালিয়ে হামিদকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৪।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে র্যাব-৪ সিপিসি-২-এর কোম্পানি কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান।
র্যাব জানায়, আব্দুল হামিদ ২০০৪ সালের ১৬ মে নওগাঁর আত্রাই থানার সাহেবগঞ্জ এলাকার নিজ বাড়িতে অবস্থানকালে সহকর্মী রতনকে মাথায় আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই মারা যায় রতন। খবর পেয়ে আত্রাই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আব্দুল হামিদ ও তার অন্য সহযোগীরা ঘটনাস্থল থেকে সুকৌশলে পালিয়ে যায়। পরে নিহতের ছোট ভাই রিপন মিয়া বাদী হয়ে নওগাঁর আত্রাই থানায় আসামির বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার পর থেকেই হত্যাকারী আব্দুল হামিদ আত্মগোপন করে। দীর্ঘদিন আসামির অনুপস্থিতিতে নওগাঁর অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত আসামির বিরুদ্ধে দায়ের করা হত্যা মামলার বিচারকাজ চালিয়ে যায়। দীর্ঘ বিচার শেষে বিজ্ঞ আদালত ২০১০ সালের ১৯ মে আব্দুল হামিদের বিরুদ্ধে করা হত্যা মামলায় তাকে মৃত্যুদ-ে দ-িত করার রায় ঘোষণা করে।
র্যাব-৪ সিপিসি-২-এর কোম্পানি কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান বলেন, গ্রেপ্তার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলার পর থেকে সে পালিয়ে প্রথমে রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, ঢাকা, নরসিংদী পরে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলায় ও সর্বশেষ ঢাকার সাভার এলাকায় আত্মগোপন করে নিজের নাম, পিতার নাম ও ঠিকানা পরিবর্তন করে বসবাস করে আসছিল। এর মধ্যে গ্রেপ্তার আসামি নরসিংদী জেলার রায়পুর থানা এলাকায় পরিচয় গোপন করে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়। আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।
গাজীপুুরে র্যাব ও বিটিআরসি যৌথভাবে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে অবৈধ ৬টি নেটওয়ার্ক রিপিটার বুস্টারসহ বেশ কিছু সরঞ্জাম জব্দ করেছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-১ পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. ইয়াসির আরাফাত হোসেন।
তিনি জানান, গত মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা তিন দিন র্যাব-১ ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) যৌথভাবে গাজীপুর জেলা সদর, শ্রীপুর উপজেলা, জয়দেবপুর থানা এবং ময়মনসিংহের ভালুকা থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানে শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তার একটি বিপণিবিতানের একটি টাওয়ার, শহিদুল্লাহ্ কমপ্লেক্সের দুটি টাওয়ার, শ্রীপুর রোডের একটি টাওয়ার, সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকার একটি টাওয়ার, ম-ল গ্রুপের একটি টাওয়ার, মহানগরের সালনা বাজার এলাকার একটি টাওয়ার, মুন্সীপাড়া এলাকার রফিক ভবনের একটি টাওয়ার, হাক্কানী হাউজিং সোসাইটির একটি টাওয়ার, জৈনা বাজার এলাকার একটি টাওয়ার, হোতাপাড়া এলাকার একটি টাওয়ার ও ভালুকার স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালিয়ে ২টি ইনডোর রিপিটার বুস্টার, ৪টি আউটডোর রিপিটার বুস্টার, ৭৬টি ছোট-বড় বিভিন্ন অ্যান্টেনা, ৫২টি সুইচ এবং তিনটি ইনডোর রিপিটার অ্যান্টেনা জব্দ করা হয়। জব্দকৃত সরঞ্জামগুলোর আনুমানিক মূল্য ৬০ লাখ টাকা।
বিটিআরসির সহকারী পরিচালক শাহাদাত হোসেন, উপসহকারী পরিচালক (এসএম) সরফুদ্দিন চৌধুরী, র্যাব-১ পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. ইয়াসির আরাফাত হোসেন (সেবা), স্কোয়াড কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রতন কুমার দাশগুপ্ত অভিযানে নেতৃত্ব দেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নিতে চায় তার পরিবার। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। এদিকে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছেন জার্মান বিএনপি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর বিএনপি নেতারা।
তারা বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জার্মানিতে নেওয়ার কথা ছিল উন্নত চিকিৎসার জন্য। কিন্তু সে সময় শেষ পর্যন্ত তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়। এবার চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে আনার কথা শুনছি। জার্মানিতে খালেদা জিয়ার যে চিকিৎসা দরকার তার আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা জার্মানিতে রয়েছে। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি যদি চেয়ারপারসনকে জার্মানিতে আনা হয় তাহলে আমরা তার জন্য কিছু করার সুযোগ পাব। জার্মানিতে তার ভালো চিকিৎসা হবে।’
এর অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল জার্মান দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) জান রল্ফ জানোস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন। জবাবে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জানোস্কি বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া যে ধরনের সমস্যায় ভুগছেন তার সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা বিশ্বের যে কয়েকটি দেশে সম্ভব জার্মানি তার অন্যতম। বাংলাদেশ সরকার অনুমতি দিলে জার্মানিতে তার সুচিকিৎসা হতে পারে।’
গত ৯ আগস্ট খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত দেড় মাসের বেশি সময় ধরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় খালেদা জিয়া ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে অনেক দিন ধরে তার লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়ে আসছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, লিভার সিরোসিসের কারণে খালেদা জিয়ার হৃদ্যন্ত্র ও কিডনির জটিলতা বেড়েছে। তিনি হাসপাতালে কখনো কিছুটা ভালো থাকছেন, পরক্ষণেই তার স্বাস্থ্যের পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। ফলে তাকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘লিভার সমস্যার কারণে ম্যাডামের শ্বাস কষ্ট হয়। ইতোমধ্যে তাকে দুইবার করোনারী কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রাখা হয়েছিল। লিভার প্রতিস্থাপন করতে পারলে শ্বাসকষ্টটা হতো না।’
এদিকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতির লক্ষণ না থাকায় তার পরিবার ও বিএনপির পক্ষ থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি এখন সামনে এসেছে।
খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নেওয়া হতে পারে এমন খবরে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও খোঁজখবর নিচ্ছেন জার্মান বিএনপি নেতারা।
জার্মান বিএনপির সভাপতি আকুল মিয়া বৃহস্পতিবার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘জার্মানিতে ম্যাডামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আনা হতে পারে বলে জানতে পেরেছি। আমরা খুবই খুশি। কারণ জার্মানিতে আসলে আমরা তার চিকিৎসার বিষয়ে আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করতে পারব। চেয়ারপারসনের যে চিকিৎসা দরকার তা সকল ব্যবস্থা জার্মানিতে রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ম্যাডামের মুক্তি, তার উন্নত চিকিৎসা ও গণতন্ত্র ফেরাতে দেশে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে জার্মানিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছি। আগামী ৯ অক্টোবর আমাদের কর্মসূচি রয়েছে। জার্মান বিএনপির উদ্যোগে রোডমার্চ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করব জার্মান পার্লামেন্টের সামনে। ’
আকুল মিয়া বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যখন বিদেশে নেওয়ার আলোচনা চলছিল তখনও জার্মানিতে নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়েছিল। সে সময় তারেক রহমানের সেবা করতে না পারলেও চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সেবা করতে পারব বলে আশা করছি। তার চিকিৎসা জার্মানিতে করতে পারলে আমরা ধন্য হবো।’
গত ২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার খালেদা জিয়ার ছোট ভাই সাঈদ ইস্কান্দার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করেছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনি মতামত জানতে চেয়ে আবেদনের কপি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে করা আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। খালেদা জিয়ার ভাইয়ের আবেদনটি অল্প সময়ের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।’
বাংলাদেশের কিছু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ক্ষমতাসীন দলের সদস্য ও রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র বলে জানিয়েছেন ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর আজ শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় বাধাদানকারী ব্যক্তিদের ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপের পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করার ঘোষণা পর তিনি এ তথ্য জানান। তবে কতজনের ওপর এই বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, তা তিনি জানাননি ।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার বলেছেন, ‘আমরা যখন এই ভিসা নীতি ঘোষণা করেছি, তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্র সরকার ঘটনাবলির ওপর গভীর দৃষ্টি রাখছে। সতর্কতার সঙ্গে তথ্য-প্রমাণ পর্যালোচনার পর আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ক্ষমতাসীন দলের সদস্য ও রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছি।’
মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্রকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় আসা ব্যক্তিদের নাম যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ করবে কি না। জবাবে তিনি বলেন, ‘না, এসব ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় আসা ব্যক্তিদের নাম আমরা প্রকাশ করব না।’ কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আইনে ভিসা রেকর্ড গোপনীয়।
ব্রায়ান শিলার এই কথা বলার ঘণ্টাখানেক আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারের ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আজ (শুক্রবার) স্টেট ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত থাকা বাংলাদেশি ব্যক্তিদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করার পদক্ষেপ নিচ্ছে। এ ব্যক্তিদের মধ্যে আইন প্রয়োগকারী, ক্ষমতাসীন দল এবং রাজনৈতিক বিরোধী দলের সদস্য রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয় তার সমর্থনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারে। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে প্রমাণিত অতিরিক্ত ব্যক্তিরাও ভবিষ্যতে এই নীতির অধীনে মার্কিন ভিসার জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারে। এর মধ্যে বর্তমান এবং প্রাক্তন বাংলাদেশী কর্মকর্তা, বিরোধী ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা পরিষেবার সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আমাদের আজকের পদক্ষেপগুলি শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাংলাদেশের লক্ষ্যকে সমর্থন করার জন্য এবং বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চায় তাদের সমর্থন করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে।’
মে মাসে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের স্বার্থে ভিসানীতির ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ্যান্থনি ব্লিংকেন ওই ঘোষণা দেন।
গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত অভিযোগে দেশের কিছু ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়টি নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পাল্টা বক্তব্য দিতেও শুরু করেছে। এতে বিরোধীপক্ষেরই ঝুঁকি দেখছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এই সবপক্ষই চাপে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ অবস্থান নিয়ে রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অন্যকে ঘায়েল করার চেষ্টা হলেও মূলত নির্বাচনী রাজনীতিতে এক ধরনের পরিবর্তন আসবে। একপক্ষ নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিলেও সেই পথ থেকে তাদেরও সরতে হবে। আবার সরকারপক্ষ যেনতেন নির্বাচন করে ক্ষমতায় বসে যাবে সেই সুযোগও থাকছে না। যে যাই বলুক নির্বাচনী রাজনীতিতে সামনের দিনগুলোতে এ পরিবর্তন আসতেই হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সবপক্ষের জন্য। তাদের অবস্থানে বিএনপি উৎফুল্ল হয়ে যাবে, আর আওয়ামী লীগ ধরাশায়ী হয়ে যাবে ব্যাপারটা এমন নয়। বরং এতে এক ধরনের সমাধানের পথ খুলে যেতে পারে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ না দিলেও জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হবে এমন আভাস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
কিন্তু গত বছর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে আসছে। তাদের একাধিক প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফর করে সরকার ও বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছে। সুষ্ঠু নির্বাচনে সমর্থনের কথা জানিয়ে গত ২৪ মে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। যার প্রয়োগের কথা জানানো হলো গত শুক্রবার।
এর আগে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তা ও র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ভিসানীতি প্রয়োগের প্রক্রিয়া শুরুর মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার অনড় অবস্থানের বিষয়টি আবার জানাল। দেশটির এ অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দেখছে দুভাবে। একটি হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখা। দ্বিতীয়টি হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করা বিএনপিকে নির্বাচনে আনা। এর বাইরে অন্য কোনো বিরূপ প্রভাব দেখছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, সরকার এত দিন যেটা চেয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র সেটাই আশা করছে।
তবে বিএনপি ভিসানীতির জন্য সরকারকে দায়ী করেছে এবং সেটা তাদের নেতাকর্মীদের এক দফা আন্দোলনে আরও উজ্জীবিত করবে, এমন দাবি করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কারণে আগামী নির্বাচন যেনতেনভাবে হয়ে যাবে সেটি ভাবার কোনো সুযোগ নেই। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রস্তুতি সবাইকে নিতে হবে। এর বাইরে কোনো রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠী, বাহিনী ও সরকারি কর্মকর্তা যেই হোক শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে প্রভাবিত করা বা একপেশে করার চিন্তা বা পদক্ষেপ গ্রহণ করে এগিয়ে যেতে চাইলে, পড়তে হবে ভিসানীতির আওতায়। যুক্তরাষ্ট্রের অনড় অবস্থান এখন পর্যন্ত সেটাই ইঙ্গিত করে।’
সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করে এক দফা দিয়ে আন্দোলনে আছে বিএনপি। অন্যদিকে সরকারি দল আওয়ামী লীগ বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন করার জন্য এক দফা ঘোষণা করেছে। তারাও শান্তি-সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকারও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। সেটা নিশ্চিত করতে তারা অঙ্গীকারবদ্ধ। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগ এটাও বলে আসছে, তাদের সরকারের চাওয়া আর যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া একই।
নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দুভাবে দেখলেও দলটির বিভিন্ন পর্যায়ে নানা রকম কানাঘুষা রয়েছে। ভেতরে-ভেতরে ‘ভেঙে পড়লেও’ ওপরে শক্ত মনোভাব ধরে রাখার চেষ্টা করছেন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কথা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তারা বেশ বিরক্তি প্রকাশ করেন। তারা বলেন, সরকার ও আওয়ামী লীগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নতুন কিছু নয়। দুপক্ষের অবস্থান একই বলেও দাবি করেন ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা।
সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নির্বাচনে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে আমেরিকার যে অবস্থান তাতে বিএনপিরই ক্ষতি, কারণ তারা ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন হতে দেবে না।’ তিনি বলেন, সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা ও আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় সরকার। সেখানে সব দল নির্বাচনে আসুক সেই আহ্বানও জানানো হয়েছে।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত এবং সহযোগিতা করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই ব্যক্তিদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা রয়েছেন। শান্তিপূর্ণ উপায়ে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা জোরালোভাবে দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র তো বিএনপির দাবি সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেনি। যুক্তরাষ্ট্রের যে অবস্থান সেখানে তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে এসব বলা হয়নি। ফলে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করায় আওয়ামী লীগ বা সরকার কেন বেকায়দায় পড়বে? আমরা মনে করি, বিএনপিই তো বেকায়দায় রয়েছে। কারণ, তাদের দাবি অসাংবিধানিক। আর অসাংবিধানিক উপায় অবলম্বন করছে। তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের এই অনড় অবস্থান বিএনপির বিরুদ্ধে গেছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খানের দাবি, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে শঙ্কিত বিএনপি। তারা তো বিএনপির একটা দাবির কথাও বলে নাই।’ সরকার বা আওয়ামী লীগ ভীত ও শঙ্কিত নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের উচিত বিএনপির প্রতিক্রিয়া জানা।’
আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ বলেন, ‘আমরা যেমন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই, আমেরিকারও একই রকম চাওয়া।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়। যুক্তরাষ্ট্র যে এমন কিছু করবে এটা প্রত্যাশিতই ছিল। এটা সিম্পল ব্যাপার আমাদের জন্য।’
ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় বিরোধী দল আছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যে বক্তব্য এসেছে সে সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিবৃতিতে কোন বিরোধী দলের কথা বলা হয়েছে তা স্পষ্ট করা হয়নি। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। তবে আজকে দেশে গণতন্ত্রের যে সংকট তার জন্য সরকার এককভাবে দায়ী। তা ছাড়া এর আগে বাইডেন প্রশাসন তাদের দেশে যে গণতন্ত্রের সম্মেলন করেছে তাতে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি।’
ভিসানীতি প্রয়োগের জন্য সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ বিগত দুটি বিতর্কিত সংসদ নির্বাচন করার পর আবারও আগামী নির্বাচন একতরফা করতে যে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সে কারণে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। এর দায় সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগকে নিতে হবে। আজকে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ আগের ঘোষণার ধারাবাহিকতা। প্রথমদিকে নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতি বাংলাদেশের রাজনীতিতে, সাধারণ মানুষের ভেতর যে বড় ধাক্কা মনে হয়েছিল, ঘোষণা আসার পর সেটা মনে হয়নি। তবে কোনো একটা সমীকরণ থেকেই যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এর প্রভাব কত দূর যাবে সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনে কী বার্তা যাবে সেটা পরিষ্কার নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা তাদের বৈশি^ক চর্চারই অংশ। মূল কথা হলো, এটা সবার জন্যই চাপ।’
বিশ্বকাপের দল ঘোষণা নিয়ে চলছে নানা নাটকীয়তা। রাতটা পোহালেই বাংলাদেশ দল উড়াল দেবে ভারতের গোয়াহাটিতে। তবে এখনও ঘোষণা করা হয়নি দল। বিসিবি জানিয়েছে, নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে চলমান তৃতীয় ওয়ানডের ম্যাচ শেষেই জানানো হবে বিশ্বকাপের দল।
প্রচুর আলোচনা ও জল্পনা–কল্পনার পর আজ বিশ্বকাপে নিজেদের স্কোয়াড ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিসিবির ফেসবুক পেজে আজ দুপুর ১টা ২৮ মিনিটে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। সেখানে দেখা যায় বিসিবির লোগোসংবলিত বক্সে করে গুরুত্বপুর্ণ কিছু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভিডিও–র শেষে প্রশ্ন করা হয়েছে, বলুন তো ভেতরে কি?
বিকেল ৫টা ৪৩ মিনিটে আরেকটি পোস্টে জানানো হয় সন্ধ্যা পৌণে ৬টায় ঘোষণা করা হবে দল। কিন্তু ৫টা ৪০ মিনিটে আরেকটি পোস্টে জানানো হয় তৃতীয় ওয়ানডের শেষেই দল ঘোষনা করা হবে।
তার নাম শেখ মোহাম্মদ আসলাম। একসময় সুইডেন ছিলেন বলে পরিচিত হয়ে ওঠেন স্ইুডেন আসলাম নামে। তেজগাঁও এলাকার এই শীর্ষ সন্ত্রাসী একসময় ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড বা অপরাধ জগৎ কাঁপাতেন। ২৭ বছর ধরে আছেন কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে। হত্যাসহ ১৭ মামলার একটি ছাড়া বাকিগুলোতে জামিন পেয়েছেন তিনি। কিন্তু বহু দিনের পুরনো প্রতিপক্ষের হাতে প্রাণ হারানোর শঙ্কায় জামিনের জন্য আবেদন করছেন না তিনি।
মোহাম্মদপুর এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলালও জামিনের আবেদন করছেন না। প্রায় ২০ বছর ধরে কারাগারে থাকা হেলালের বিরুদ্ধে আছে অন্তত এক ডজন মামলা। বেশিরভাগ মামলায় জামিন হয়ে গেছে। এই দুজনের মতোই কারা হাজতে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীরা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছেন না। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে কেউ সাক্ষ্যও দিতে আসেন না আদালতে। তারা বছরের পর বছর ধরে কারাগারে থাকলেও সমস্যা হচ্ছে না। অনেকেই অসুস্থ না হয়েও বছরের পর বছর হাসপাতালে আরামে
থাকছেন। বাইরে থাকা তাদের সহযোগীদের সঙ্গেও যোগাযোগ থাকছে। এই সহযোগীরাই তাদের হয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ করছেন।
পুলিশের তালিকায় ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম আছে যাদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। অবশ্য এই তালিকায় সুইডেন আসলাম নেই। তালিকা করা হয় ২০০১ সালের ২৬ ডিসেম্বর। এদের মধ্যে ১৩ জন বিদেশে আত্মগোপন করে আছেন। কারাগারে আছেন ৬ জন, মারা গেছেন ৩ জন। একজনের কোনো হদিস নেই।
এই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আটজনকে ১ লাখ টাকা এবং ১৫ জনকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়। এর মধ্যে পিচ্চি হান্নান র্যাবের ক্রসফায়ার, গণপিটুনিতে আলাউদ্দিন ও কামাল পাশা ওরফে পাশা কারাগারে মারা গেছেন। কালা জাহাঙ্গীর বেঁচে আছেন নাকি আত্মগোপনে, কেউ বলতে পারছেন না। পিচ্চি হেলাল, টিটন, ফ্রিডম সোহেল ও কিলার আব্বাস কারাগারে আছেন। খোরশেদ আলম ওরফে রাশু কিছুদিন আগে ছাড়া পেলেও কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আবার আটক করেছে। মশিউর রহমান কচি, সুব্রত বাইন, আমিন রসুল সাগর. ইমাম হোসেন, প্রকাশ কুমার বিশ্বাস, মোল্লা মাসুদ, শামীম আহমেদ, হারিস আহমেদ, তানভিরুল ইসলাম জয়, জাব্বার মুন্না, জাফর আহমেদ, কামরুল হাসান হান্নান ওরফে ছোট হান্নান দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তাদের ধরতে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি করা আছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে আসার চেষ্টা করছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তাদের ব্যবহার করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি আন্ডারওয়ার্ল্ডে একে অপরকে ঘায়েল করার চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে গাড়ি থামিয়ে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ভাগ্যক্রমে তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও গুলিবিদ্ধ এক পথচারী সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে আছেন। এ ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন জড়িত বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আন্ডারওয়ার্ল্ড উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোও। দেশের বাইরে থাকা সন্ত্রাসীরা নিজেদের সহযোগীদের মাধ্যমে নতুন করে আধিপত্য বিস্তারের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এমনকি কারাগারে থাকা সন্ত্রাসীরাও সহযোগীদের নানা বিষয়ে বার্তা দিচ্ছে। এর মধ্যে কেউ কেউ রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত হতে চাইছে। যে কারণে সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে পুলিশ সদর দপ্তর সব কটি ইউনিট, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার এসপিদের বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের সদর দপ্তরে আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসীদের বিষয়ে নতুন করে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কারাগার কর্তৃপক্ষকেও হাজতি ও বন্দি সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, যেসব সন্ত্রাসী দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আটক আছে, তাদের একটি তালিকা করেছে একটি সংস্থা। এ বিষয়ে বলা হয়েছে, আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও তারা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছে না। তারা কারাগারকেই নিরাপদ মনে করছে।
কারা সূত্র জানায়, শীর্ষ সন্ত্রাসী সুইডেন আসলাম একটি মামলায় জামিন না নেওয়ায় কারাগারে আছেন। বাকি সব মামলার জামিন হয়ে গেছে। ২৭ বছরের কারাজীবনে তার দুইবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। বেশিরভাগ সময় কেটে যাচ্ছে হাসপাতালে থেকেই। হুইলচেয়ারে করে চলাফেরা করেন সব সময়। মোবাইল ফোনে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ করেন সহযোগীদের সঙ্গে। তার স্ত্রী আয়েশা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।
সুইডেন আসলামের বিষয়ে তার এক আত্মীয় দেশ রূপান্তরকে বলেন, এলাকায় তার যখন একক আধিপত্য ছিল, তখন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল। তারাই এখন তার বিরুদ্ধে। সুইডেন আসলাম বের হয়ে এলে প্রতিপক্ষরাই তাকে মেরে ফেলবে, এমন শঙ্কা আছে। এসব দিক বিবেচনা করেই তিনি বের হতে চাইছেন না। কারাগারেই তিনি ভালো আছেন।
জানা গেছে, সুইডেন আসলামের বিরুদ্ধে মামলাগুলোতে কোনো সাক্ষীও পাওয়া যায় না। ১৯৮৬ সালে তিনি অপরাধ জগতে যুক্ত হন। ওই বছর পূর্ব রাজাবাজারে স্কুলের সামনে কিশোর শাকিলকে গুলি করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। তারপর থেকে তার বিরুদ্ধে একের পর এক হত্যাকা-সহ নানা অপরাধের তথ্য বের হয়ে আসে। এরই মধ্যে নিজেকে রক্ষা করতে সুইডেন চলে যান। বছর পাঁচেক ওই দেশে থেকে আবার ফিরে আসেন দেশে। তারপর সুইডেন শব্দটি নামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। ১৯৯৭ সালের ২৩ মার্চ গালিব খুন হন। এ ঘটনায় আসলামসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ১৯৯৮ সালের ৮ এপ্রিল অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২৪ সাক্ষীর মধ্যে পুলিশ চারজনকে আদালতে হাজির করতে পেরেছে। বাকিরা আর আসেননি এবং এই মামলায় তিনি জামিনও নেননি।
দীর্ঘদিন কারাগারে থাকলেও আসলাম মোবাইল ফোনে সহযোগীদের সঙ্গে কথা বলতে পারছেন। স্ত্রী আয়েশা আকতার নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। বলা চলে রাজার হালেই আছেন তিনি।
মিরপুর ও কাফরুল এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী কিলার আব্বাস ২২ বছর ধরে কারাগারে আটক আছেন। তার বিরুদ্ধে থাকা ১১টি মামলার জামিন হয়েছে। একটি মামলার জামিন হতে বাকি আছে। তা ছাড়া কমিশনার নিউটন হত্যা মামলায় ফাঁসির আদেশ হলেও উচ্চ আদালতে খালাস পেয়েছেন তিনি। আরেকটি মামলার শুনানি চলছে উচ্চ আদালতে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কিলার আব্বাসের এক সহযোগী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ভাইয়ের সঙ্গে মাঝেমধ্যে কাশিমপুর কারাগারে গিয়ে দেখা করে আসি। দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনি কারাগার থেকে বের হতে চাচ্ছেন না। জামিন চাইলে তিনি জামিন পেয়ে যাবেন। কিন্তু ভাই তা করবেন না। কারণ প্রতিপক্ষ সক্রিয় আছে। তার প্রাণ শঙ্কা আছে। আমরা ইচ্ছা করলে যেকোনো সময় জামিন নিয়ে ভাইকে বের করে আনতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরেক সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলালেরও প্রায় সব মামলার জামিন হয়ে গেছে। শুধু একটা মামলার জামিন বাকি আছে। তিনি যখন কারাগারে, তখন বিএনপি তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করেছিল। অথচ হেলাল বিএনপির রাজনীতি করেন। জেলে বসেই মোহাম্মদপুর, আদাবর ও ধানম-ি, মিরপুর এলাকার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছেন। মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড দখল ও চাঁদাবাজি চালাচ্ছেন। তার সঙ্গে মিরপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদতের ভালো যোগাযোগ। মোবাইল ফোনে নিয়মিত কথা বলেন তারা। তার আরেক সহযোগী হাবিবুর রহমান তাজ ১৩ বছর ধরে কারাগারে আটক আছেন। মামলার সাক্ষীদের হাজির করতে পারছে না রাষ্ট্রপক্ষ। ইচ্ছে করে জামিনও নিচ্ছেন না তাজ। গ্রেপ্তারের আগে দীর্ঘদিন ভারত পালিয়ে ছিলেন। ২০০৮ সালে ভারতে গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েক মাস পর তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে রাজধানীর কাফরুলে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি ইসমাইল হোসেনকে হত্যা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তা ছাড়া কলেজছাত্র কামরুল ইসলাম ওরফে মোমিন হত্যার সঙ্গেও জড়িত তাজ। মতিঝিল থানার সাবেক ওসি এ কে এম রফিকুল ইসলামের আশ্রয়-প্রশয়ে থাকতেন তিনি। কয়েক বছর আগে ওসি রফিক মারা যান।’
মতিঝিলে একটি গোয়েন্দা সংস্থার দুই কর্মকর্তাকে হত্যা করে আলোচনায় আসে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী ঈদুল। প্রায় ১৫ বছর ধরে কাশিমপুর কারাগারে আটক আছেন তিনি। একবার পঙ্গু হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে আটক করে ফেলে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে আটটি মামলা থাকলেও দুটি মামলা বাদে সব কটিতে জামিন পেয়েছেন। বাকি মামলাগুলোতে ইচ্ছা করে জামিন নিচ্ছেন না বলে তার এক স্বজন জানিয়েছেন।
সেভেন স্টার গ্রুপের একসময়ের সদস্য ফ্রিডম সোহেল ধানম-ি ৩২ নম্বরে গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজার আসামি। সাজা কমিয়ে কারাগারেই থাকার চেষ্টা করছেন সোহেল। তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা আছে। ৯টি মামলায় জামিন পেয়েছেন। একটি মামলায় সাজা হয়েছে। আরেকটি মামলায় জামিন নিচ্ছেন না।
তার সহযোগী পুরস্কারঘোষিত সন্ত্রাসী রাশু কিছুদিন আগে কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আটক করে। তার এক স্বজন দেশ রূপান্তরকে জানান, মাস দুয়েক আগে সর্বশেষ মামলায় জামিন হয় রাশুর। তার কোনো ইচ্ছা ছিল না কারাগার থেকে বের হওয়ার। আর এ কারণে ইচ্ছা করেই একটি সংস্থাকে কারাগার থেকে বের হওয়ার তথ্য দিয়ে আবার গ্রেপ্তার হন। কারণ তিনি বের হলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে মেরে ফেলবে এমন আশঙ্কা ছিল। আরেক সন্ত্রাসী লম্বু সেলিম একটি মামলা বাদে সব মামলায় জামিনে আছেন। ভারতের কলকাতা থেকে তাকে পুশব্যাক করা হয়েছিল। প্রায় আট বছর ধরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। বেশিরভাগ সময় হাসপাতালে থাকেন। নিরাপত্তাহীনতার কারণে জেল থেকে বের হচ্ছেন না তিনি।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, সন্ত্রাসীদের কর্মকা- রোধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নানা কৌশলে কাজ করছে। তারা সরগরম হলেও কাজ হবে না। যারা দেশের বাইরে আছে, তাদের চিহ্নিত করে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ধরার চেষ্টা চলছে। যারা দেশে আছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনতে পুলিশ-র্যাব কাজ করছে। তবে আন্ডারওয়ার্ল্ডের কেউ বিশ্ঙ্খৃলা তৈরি করতে পারবে না। তিনি বলেন, ‘কোনো সন্ত্রাসী জামিন না নিলে এটা আমাদের করার কিছু নেই। তবে তাদের বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি হয়, সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।’
পুলিশ সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি, চোরাকারবারিসহ ভিন্ন ধরনের অপরাধীরা দুবাই, মালয়েশিয়া, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আত্মগোপন করে আছেন। তাদের সহযোগীরা বাংলাদেশে অবস্থান করে অপরাধমূলক কর্মকা- চালিয়ে আসছেন। তাদের নির্দেশে হত্যাকান্ডের মতো ঘটনাও ঘটাচ্ছেন তারা। মতিঝিলে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যাকান্ডের পেছনে বিদেশ কানেকশন।
২০০৩ সালে মালিবাগের সানরাইজ হোটেলে ডিবি পুলিশের দুই সদস্যকে হত্যার পর পালিয়ে যাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান দুবাইয়ে আত্মগোপন করে আছেন। টিপু হত্যাকান্ডের পর তিনি আলোচনায় এসেছিলেন। দুবাইয়ে থাকলেও ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে সবচেয়ে বেশি প্রভাব তার। জিসানের সহযোগী জাফর আহমেদ মানিক ওরফে ফ্রিডম মানিক ভারতে পালিয়ে আছেন। কিন্তু দেশে তার দখলবাজি, টেন্ডারবাণিজ্য ও চাঁদাবাজিতে নিয়ন্ত্রণ এখনো আছে। মোল্লা মাসুদ ও সুব্রত বাইন ভারতে থেকে সক্রিয় আছেন। তানভীর ইসলাম জয়ও সক্রিয় আছেন। কলকাতা, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ঘুরে তার অবস্থান এখন থাইল্যান্ডে। সেখানে বসেই তিনি কলকাঠি নাড়ছেন।