কেমন ছিল হাজার বছর আগের এসি
জাহিদ রুমান | ৪ অক্টোবর, ২০১৮ ১৮:২৯
প্রাকৃতিক এসি
তীব্র গরম বা ঠান্ডা থেকে বাঁচতে আধুনিককালে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বা এসির বহুল ব্যবহার দেখা যায়। ঘরের তাপমাত্রা আরামদায়ক রাখতে হাজার বছর আগেও ছিল এমন প্রযুক্তি। তখন মানুষ ব্যবহার করেছে এক ধরনের প্রাকৃতিক এসি। এজন্য ঘরের ছাদের ওপর বসানো হয়েছে চিমনির মতো একটি বায়ুধারক। এর মাধ্যমে মূলত বাতাস চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে তাপের হ্রাসবৃদ্ধি ঘটানো যায়। ইরানের অনেক প্রাচীন মরু শহরে এখনও এই ব্যবস্থা চালু আছে।
এই প্রাকৃতিক এসি একদিকে যেমন ঠান্ডা বাতাস ধারণ করে ঘরে পাঠিয়ে দেয়, একইসঙ্গে ভেতরের গরম হাওয়া ওপরে নিয়ে বাইরে বের করে দেয়। বাতাস না থাকলেও এটি সৌর চিমনির মতো কাজ করে। গরম বাতাস চাপ দিয়ে টাওয়ারের বাইরে পাঠিয়ে দেয়। ফলে বাইরের চেয়ে ভেতরে ঠান্ডা থাকে।
গবেষণায় দেখা গেছে, এই পদ্ধতিতে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা কমানো যায়। প্রাচীন পারস্য ও মিশর থেকে শুরু করে ব্যাবিলন ও আরব সভ্যতায় মানুষকে প্রকৃতির রুক্ষতার সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে। তাই নির্মাণ করতে হয়েছে এর সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার উপযোগী স্থাপত্য ও প্রাকৃতিক বায়ু চলাচল ব্যবস্থা। এরই ফলাফল এই প্রাকৃতিক এসি। এমন ব্যবস্থা মধ্যপ্রাচ্য ও মিশর ছাড়া ভারত-পাকিস্তানেও দেখা যেত।
নতুন প্রযুক্তির বিকাশে সময়ের সঙ্গে এর ব্যবহার কমে এসেছে। বর্তমানে টিকে থাকা সবচেয়ে প্রাচীন বায়ুধারকটি রয়েছে ইরানে, যা ১৪ শতকে নির্মিত। ইরান নাকি মিশর কোথায় এ ব্যবস্থার উৎপত্তি তা নিয়ে ইতিহাসবিদরা দ্বিধাবিভক্ত। মিশরের লোক্সো শহরে পাওয়া শিল্পকর্মে ফারাও নেবামানের প্রাসাদ চূড়ায় ত্রিভুজাকার স্থাপনা দেখা যায়। তাই দেশটির প্রত্নতাত্ত্বিকদের দাবি, এমন বায়ুধারকের স্রষ্টা মিশর।
অন্যদিকে ৪০০০ খ্রিস্টপূর্বে পারস্যে নির্মিত অগ্নিমন্দিরের ধ্বংসাবশেষে পাওয়া চিমনির মতো স্থাপনা থেকে ইরানের স্থপতিদের ভাষ্য, তাদের হাতেই এই ব্যবস্থার উৎপত্তি। বেশিরভাগ বায়ুধারক আয়তকার হলেও চতুর্ভুজ, ষড়ভুজ বা অষ্টভুজ আকারেরও দেখা যায়। সূত্র: বিবিসি।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
জাহিদ রুমান | ৪ অক্টোবর, ২০১৮ ১৮:২৯

তীব্র গরম বা ঠান্ডা থেকে বাঁচতে আধুনিককালে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বা এসির বহুল ব্যবহার দেখা যায়। ঘরের তাপমাত্রা আরামদায়ক রাখতে হাজার বছর আগেও ছিল এমন প্রযুক্তি। তখন মানুষ ব্যবহার করেছে এক ধরনের প্রাকৃতিক এসি। এজন্য ঘরের ছাদের ওপর বসানো হয়েছে চিমনির মতো একটি বায়ুধারক। এর মাধ্যমে মূলত বাতাস চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে তাপের হ্রাসবৃদ্ধি ঘটানো যায়। ইরানের অনেক প্রাচীন মরু শহরে এখনও এই ব্যবস্থা চালু আছে।
এই প্রাকৃতিক এসি একদিকে যেমন ঠান্ডা বাতাস ধারণ করে ঘরে পাঠিয়ে দেয়, একইসঙ্গে ভেতরের গরম হাওয়া ওপরে নিয়ে বাইরে বের করে দেয়। বাতাস না থাকলেও এটি সৌর চিমনির মতো কাজ করে। গরম বাতাস চাপ দিয়ে টাওয়ারের বাইরে পাঠিয়ে দেয়। ফলে বাইরের চেয়ে ভেতরে ঠান্ডা থাকে।
গবেষণায় দেখা গেছে, এই পদ্ধতিতে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা কমানো যায়। প্রাচীন পারস্য ও মিশর থেকে শুরু করে ব্যাবিলন ও আরব সভ্যতায় মানুষকে প্রকৃতির রুক্ষতার সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে। তাই নির্মাণ করতে হয়েছে এর সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার উপযোগী স্থাপত্য ও প্রাকৃতিক বায়ু চলাচল ব্যবস্থা। এরই ফলাফল এই প্রাকৃতিক এসি। এমন ব্যবস্থা মধ্যপ্রাচ্য ও মিশর ছাড়া ভারত-পাকিস্তানেও দেখা যেত।
নতুন প্রযুক্তির বিকাশে সময়ের সঙ্গে এর ব্যবহার কমে এসেছে। বর্তমানে টিকে থাকা সবচেয়ে প্রাচীন বায়ুধারকটি রয়েছে ইরানে, যা ১৪ শতকে নির্মিত। ইরান নাকি মিশর কোথায় এ ব্যবস্থার উৎপত্তি তা নিয়ে ইতিহাসবিদরা দ্বিধাবিভক্ত। মিশরের লোক্সো শহরে পাওয়া শিল্পকর্মে ফারাও নেবামানের প্রাসাদ চূড়ায় ত্রিভুজাকার স্থাপনা দেখা যায়। তাই দেশটির প্রত্নতাত্ত্বিকদের দাবি, এমন বায়ুধারকের স্রষ্টা মিশর।
অন্যদিকে ৪০০০ খ্রিস্টপূর্বে পারস্যে নির্মিত অগ্নিমন্দিরের ধ্বংসাবশেষে পাওয়া চিমনির মতো স্থাপনা থেকে ইরানের স্থপতিদের ভাষ্য, তাদের হাতেই এই ব্যবস্থার উৎপত্তি। বেশিরভাগ বায়ুধারক আয়তকার হলেও চতুর্ভুজ, ষড়ভুজ বা অষ্টভুজ আকারেরও দেখা যায়। সূত্র: বিবিসি।