তাজমহল ঘিরে যেসব গল্প-জনশ্রুতি
অনলাইন ডেস্ক | ১৫ মে, ২০২২ ১৫:২০
তাজমহল শুধু ভারত নয়, সারা বিশ্বের মধ্যেই পর্যটনের অন্যতম প্রধান একটি আকর্ষণ।
আগ্রায় যমুনা নদীর তীরে অসামান্য সুন্দর এই সৌধটি তৈরি হয়েছিল সপ্তদশ শতাব্দীতে। মোগল সম্রাট শাহজাহান তার মৃত স্ত্রী মমতাজের স্মৃতি ধরে রাখতে তাজমহল তৈরি করেছিলেন।
ইট, লাল রংয়ের পাথর এবং সাদা মার্বেলের তৈরি এই সৌধটি জুড়ে সূক্ষ্ম কারুকার্য আর শিল্পকলা সারা পৃথিবীর মানুষকে মুগ্ধ করেছে।
অন্য অনেক পুরনো সৌধের মত তাজমহলকে ঘিরেও অনেক গল্প, জনশ্রুতি রয়েছে।
যেমন, কথিত রয়েছে যে শাহজাহান মূল তাজমহলের ঠিক উল্টোদিকে একটি "কালোরঙা তাজমহল" বানাতে চেয়েছিলেন। এমন বিশ্বাস রয়েছে তাজমহলের স্থপতি ছিলেন একজন ইউরোপীয়।
অনেক পশ্চিমা বুদ্ধিজীবী বিভিন্ন সময় বলেছেন যে মুসলিম সমাজে নারীদের যে নিচু অবস্থান ছিল তাতে এটা অসম্ভব যে শাহজাহান তার মৃত স্ত্রীর স্মৃতির প্রতি সম্মান দেখাতে তাজমহল তৈরি করেছিলেন।
তাজমহলে ঢোকার দরজার কাছে এমন অনেক অতি উৎসাহী গাইড রয়েছেন যারা পর্যটকদের গল্প বলেন তাজমহলের কাজ শেষ হওয়ার পর কিভাবে শাহজাহান প্রধান স্থপতি এবং আরো অনেক কর্মী এবং কারু শিল্পীকে হত্যা করেছিলেন।
ভারতে, অনেকদিন ধরে একটি কল্পকথা চলে আসছে যে তাজ আসলে একটি হিন্দু মন্দির ছিল। দেবতা শিবের নামে মন্দিরটি তৈরি হয়েছিল।
পি এন ওক - যিনি ১৯৬৪ সালে ভারতের ইতিহাস নতুন করে রচনার জন্য একটি ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন - তার এই বইতে লিখেছেন, তাজমহল সন্দেহাতীতভাবেই একটি শিব মন্দির ছিল।
২০১৭ সালে বিজেপির এক নেতা সাংগিত সোম বলেন তাজমহল ভারতের ইতিহাসের "একটি কলঙ্ক" কারণ, তার মতে, "বিশ্বাসঘাতকরা ছিল এর নির্মাতা।"
এ সপ্তাহেই বিজেপির একজন এমপি দিয়া কুমারি বলেন, শাহজাহান হিন্দু একটি রাজপরিবারের জমি দখল করে তাজমহল বানিয়েছিলেন।
ইতিহাসবিদ রানা সাফাভি বলেন, গত এক দশকে এসব কল্পকথা আর গুজবের তত্ত্ব নতুন করে কট্টর হিন্দুদের একটি অংশের মধ্যে প্রাণ পেয়েছে। "কট্টরপন্থী এই অংশটি ভুয়া খবর, ভুয়া ইতিহাস এবং হিন্দুদের ওপর কল্পিত নিপীড়ন অবিচারের তত্ত্বে মশগুল।"
মোগল স্থাপত্যের শীর্ষ বিশেষজ্ঞ ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এশিয়ান আর্টস বিভাগের অধ্যাপক এবা কোচ লিখেছেন, তাজমহলকে নিয়ে যতটা পাণ্ডিত্যপূর্ণ গবেষণা হয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশি হয়েছে কল্পকথার চর্চা। -বিবিসি বাংলা
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
অনলাইন ডেস্ক | ১৫ মে, ২০২২ ১৫:২০

তাজমহল শুধু ভারত নয়, সারা বিশ্বের মধ্যেই পর্যটনের অন্যতম প্রধান একটি আকর্ষণ।
আগ্রায় যমুনা নদীর তীরে অসামান্য সুন্দর এই সৌধটি তৈরি হয়েছিল সপ্তদশ শতাব্দীতে। মোগল সম্রাট শাহজাহান তার মৃত স্ত্রী মমতাজের স্মৃতি ধরে রাখতে তাজমহল তৈরি করেছিলেন।
ইট, লাল রংয়ের পাথর এবং সাদা মার্বেলের তৈরি এই সৌধটি জুড়ে সূক্ষ্ম কারুকার্য আর শিল্পকলা সারা পৃথিবীর মানুষকে মুগ্ধ করেছে।
অন্য অনেক পুরনো সৌধের মত তাজমহলকে ঘিরেও অনেক গল্প, জনশ্রুতি রয়েছে।
যেমন, কথিত রয়েছে যে শাহজাহান মূল তাজমহলের ঠিক উল্টোদিকে একটি "কালোরঙা তাজমহল" বানাতে চেয়েছিলেন। এমন বিশ্বাস রয়েছে তাজমহলের স্থপতি ছিলেন একজন ইউরোপীয়।
অনেক পশ্চিমা বুদ্ধিজীবী বিভিন্ন সময় বলেছেন যে মুসলিম সমাজে নারীদের যে নিচু অবস্থান ছিল তাতে এটা অসম্ভব যে শাহজাহান তার মৃত স্ত্রীর স্মৃতির প্রতি সম্মান দেখাতে তাজমহল তৈরি করেছিলেন।
তাজমহলে ঢোকার দরজার কাছে এমন অনেক অতি উৎসাহী গাইড রয়েছেন যারা পর্যটকদের গল্প বলেন তাজমহলের কাজ শেষ হওয়ার পর কিভাবে শাহজাহান প্রধান স্থপতি এবং আরো অনেক কর্মী এবং কারু শিল্পীকে হত্যা করেছিলেন।
ভারতে, অনেকদিন ধরে একটি কল্পকথা চলে আসছে যে তাজ আসলে একটি হিন্দু মন্দির ছিল। দেবতা শিবের নামে মন্দিরটি তৈরি হয়েছিল।
পি এন ওক - যিনি ১৯৬৪ সালে ভারতের ইতিহাস নতুন করে রচনার জন্য একটি ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন - তার এই বইতে লিখেছেন, তাজমহল সন্দেহাতীতভাবেই একটি শিব মন্দির ছিল।
২০১৭ সালে বিজেপির এক নেতা সাংগিত সোম বলেন তাজমহল ভারতের ইতিহাসের "একটি কলঙ্ক" কারণ, তার মতে, "বিশ্বাসঘাতকরা ছিল এর নির্মাতা।"
এ সপ্তাহেই বিজেপির একজন এমপি দিয়া কুমারি বলেন, শাহজাহান হিন্দু একটি রাজপরিবারের জমি দখল করে তাজমহল বানিয়েছিলেন।
ইতিহাসবিদ রানা সাফাভি বলেন, গত এক দশকে এসব কল্পকথা আর গুজবের তত্ত্ব নতুন করে কট্টর হিন্দুদের একটি অংশের মধ্যে প্রাণ পেয়েছে। "কট্টরপন্থী এই অংশটি ভুয়া খবর, ভুয়া ইতিহাস এবং হিন্দুদের ওপর কল্পিত নিপীড়ন অবিচারের তত্ত্বে মশগুল।"
মোগল স্থাপত্যের শীর্ষ বিশেষজ্ঞ ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এশিয়ান আর্টস বিভাগের অধ্যাপক এবা কোচ লিখেছেন, তাজমহলকে নিয়ে যতটা পাণ্ডিত্যপূর্ণ গবেষণা হয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশি হয়েছে কল্পকথার চর্চা। -বিবিসি বাংলা