প্যানডামিক
রুশো রকিব | ১১ মে, ২০২০ ০০:০১
ভেবেছিলাম সবাই বোধ করি বেশ কনসার্ন কভিড-১৯ প্যানডামিক নিয়ে! কিন্তু তার রিফ্লেকশন ফেসবুকে পেলাম না। আসলে আমরা কেবল তা-ই দেখছি বা ভাবছি যা আমাদের দেখানো হচ্ছে বা জানানো হচ্ছে। আসলে কি আমরা একটা প্রকট সত্য উপলব্ধি করতে পারছি? আমরা একটা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি এবং যেতে বাধ্য হচ্ছি। আমাদের মনের গভীরে এক ক্ষত ক্রমশ আমাদের গ্রাস করছে। কতটা মানসিক চাপ নিয়ে আমাদের সকাল হয় দুপুর কখন গড়িয়ে যায় বিকালে। আমি এসব বলে কোনো জাগরণ ঘটাতে চাই না। আমি কেবল শান্ত হয়ে শান্তিতে আমার সূর্যাস্ত দেখতে চাই। রাতের ক্লান্তিকে এড়িয়ে যেতে চাই ভোরের আলো দেখব বলে। আমি অনেক দিন ভোর দেখি না। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে দ্রুত ব্যস্ত হয়ে যাওয়া এই নগরী আমি দেখেছি বছরের পর বছর। আমি দিব্যি করে বলতে পারি আমার মত করে ধারাবাহিক এই নগরীকে জেগে উঠতে আপনারা অনেকেই দেখেননি। আপনারা দেখেননি কাক ডাকা ভোরের আগেও একটা ভোর আছে। আমি এই নগরের নই এটা সত্য আবার মিথ্যাও। আমি তো এই নগরে একজন আগুন্তক, তবে কেন এই কুহকে এত ঘুরপাক। এই নগরের সাথে নিজেকে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলেছি কখন জানি না। হয়ত তাই মনের অজান্তে এই নাগরিক কোলাহল খুব মিস করছি। আমি নিশ্চিত করোনা প্যানডামিক শেষেও এই নগর আর আগের মতো হবে না। অনেক কিছু বদলে যাবে। ফ্রান্সে নার্সরা তাদের প্রয়োজনীয় মাস্ক ও সুরক্ষা পোশাক না পাওয়ায় নগ্ন হয়ে প্রতিবাদ করল। এ তো কেবল প্রতিবাদ নয়। তারা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে আরেকবার দেখালো মানবতার নগ্ন রূপ। সভ্যতার গা থেকে আজ পোশাক খসে গেল। নগ্নতাকে আজ নতুন ভাবে আবিষ্কার করলাম। যদি আপনি না করে থাকেন তবে নিজেকে প্রশ্ন করতে পারেন আরেকবার! আজ রাস্তায় লাশ ফেলে স্বজনের পালিয়ে যাওয়া দৃশ্য আমাকে হতচকিত করেছে। কিন্তু জানেন আমি এ যাত্রা বেঁচে গেছি। কারণ অসুস্থ বাবার/ মার মৃত্যু কামনা করতে দেখেছি। মৃত্যুর ঘণ্টা দুয়েক না-গড়াতেই শোক জানিয়ে স্ট্যাটাস। অনেকে আবার শোক জানায়, যাক কষ্টটা কমে গেল। অসহায় হয়ে ডাক্তারদের সরি বলতে শুনেছি। আবার মৃত বাচ্চার শরীরে চিকিৎসা চিকিৎসা খেলার নামে ব্যবসার আতিপাতি দেখেছি। তবুও এই অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর মিছিল সইতে সইতে আমাদের মগজের সেনসিটিভিটি কমে যাচ্ছে আরোও যাবে। যে মানুষ বুকে চেপে সন্তানকে দাফন করতে যায়, তার বোধ সেই দিনই শেষ হয়ে যায়। ইকুয়েডরের রাস্তায় লাশের পড়ে থাকার দৃশ্য মানুষের সভ্যতাকে চপেটাঘাত করে না! রুয়ান্ডার নিরাপত্তারক্ষীরা কোয়ারান্টাইনে থাকা নারীকে ধর্ষণ করে। হায় মানবতা তুমি কোথায় মুখ লুকাবে! এরপরও আমরা স্বপ্ন দেখি একদিন ভোর হবে সূর্য উঠবে। আচ্ছা রাত যদি গভীর থেকে গভীরতর হয় আর একটা ব্ল্যাকহোল আমাদের গ্রাস করে, কী এমন ক্ষতি হবে! হয়ত সোনার মুখের হাসিটা মিলিয়ে যাবে। স্ত্রীর আদর, ভাইয়ের-মায়ের স্নেহ মিলিয়ে যাবে, তাতে কী! আমাকে তো আর ধর্ষণের ভয় বুকে বাঁচতে হবে না। আমাকে তো আর প্রিয়জনের লাশ রাস্তায় ফেলে পালাতে হবে না। মৃত্যুভয় এক অদ্ভূত ব্যাপার, ভাবতে শুরু করলে আপনাকে গ্রাস করবে। এত এত অর্ধমৃত মানুষের শহরে আমি কী নিয়ে বাঁচব আমাকে বলতে পার!
বৃটিশ সাম্রাজ্যের সিটি অব হার্ট লন্ডন আজ ইমিউনিটির পাসপোর্ট নিয়ে ভাবছে। সবাই আমরা এখনো গন্ডি পেরুতে পারছি না। দেশ দেশ জাতি জাতি খেলায় এখনো মত্ত। এই পৃথিবী যদি অভিন্ন নয় তবে কেন প্যানডামিক। কেন আপনারা এমন শব্দ কুহকে আমাদের ওপর আপনাদের রিসার্চ চাপিয়ে দেন। আমি রুদ্র মুহাম্মদ নই আমি আপনাদেরকে জাগাতে আসিনি। আমি আপনাদেরকে ভালোবাসিনি। আমি কেবল আমার কথাগুলো বলতে এসেছি। আপনারা বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, মানুষের জীবন আপনারা আর ফিরে পাবেন না। আপনারা আর কখনোই প্রমিকার মুখে ফুচকা গুঁজে দেওয়ার নামে তার ঠোঁট স্পর্শ করতে পারবেন না। আপনারা আর কখনো রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে রং-চা-চিনি-ছাড়া, চিনি-কম-দুধ-বেশি এই সুখ পাবেন না। আজও যখন ধর্মের নামে আমাদের সচেতন করতে চায় তখন করুণা হয়। আজই তো সময় একটু ঘুরে দাঁড়ানোর। অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার। বেঁচে থাকতে তো কেউ দেবে না তাই আর কেন মৃত্যুর ভয়। বাঁচার যদি সাধ হয় তবে লড়াই করেই বাঁচতে হবে। পৃথিবী হয় হবে শোষকের নয় শোষিতের। হয় তাদের হবে নয় আমাদের। আমাদের পৃথিবীতে আমরা আর করোনা সহবাস করতে পারব। বিশ্বাস করুন আমি পাগল নই আমি করুণা পেতে আসিনি। আমি প্রেমিক, আমি ভালোবাসতে এসেছি, ভালেবাসা পেতে এসেছি। একটা ছোট ডাটা গুগল করবেন করোনায় কত মানুষ মারা যায় আর ক্ষুধা পুষ্টিহীনতায় কত। সিরিয়ায়, বাগদাদে, প্যলেস্টাইন আর হিজবুল্লাহর নামে কত। কত বালুচ জোয়ান আজও রক্ত দেয়, তাদের রক্ত আপনার আমার আমাদের মতই লাল। আফগান নারী কী তার মরদের জন্য অপেক্ষা করে না, করে। কেবল আমরা বুঝতে চাইনা। শরণার্থী হয়ে নিরাপত্তা জন্য আমরা যখন দাঁড়াই তখন আমাদের অপমান করতে অবজ্ঞা করতে তোমাদের বুক কাঁপে না। আমরা তোমাদের উচ্ছিষ্টটুকু নিতে চেয়েছিলাম, তোমরা তাতেও আপত্তি জানালে, হায় তবে এ কি সেই শিশুর আর্তনাদ, যে সাগরের জলে ডুবতে ডুবতে হয়ত মার আঙ্গুলটি খুঁজে ফিরেছে। হয়ত ডুবে যাওয়ার আগে শেষ বার মাথা তুলে বাবার দৃষ্টি খুঁজেছে। পেটের ভেতরে জমে থাকা লোনা জল বমি করেছে বারংবার তোমাদের সভ্যতার শরীরে। তোমরা তাকে বাঁচতে দাওনি। তার মৃত শরীরের ভার সাগর বইতে পারেনি, ফিরিয়ে দিয়েছে তটে। বর্ণিল পোশাকে আবৃত মৃত বাচ্চার শব তোমাদের ক্যাথারসিস জাগিয়েছে কেবল শুধরে দিতে পারেনি। আজও যখন অপুষ্টিতে আহাজারি উঠে বাতাসে তোমরা ত্রাণ নিয়ে আস। কেন এই ত্রাণ, কার জন্য ত্রাণ, কে এলো ত্রাতা হয়ে। আমি সেই ত্রাণ কর্তাকে খুঁজে ফিরি। তোমরা মানুষ, তোমরা তোমাদের ত্রাতাকে অবজ্ঞা করেছ বার বার। তোমরা তাকে রক্তাক্ত করেছ। তার ভালোবাসাকে উপেক্ষা করেছ। আজও তোমরা প্রেমিকের হৃদয়ের চেয়ে ক্ষমতাকে বড় করে দেখ। আজও তেমরা ভালোবাসার চেয়ে নির্ভরতাকে বেশি প্রাধান্য দাও। আজও তোমরা নিরামিষে আমিষ খোঁজ। তোমরা বিপথে হেঁট না। তোমরা পথভ্রষ্ট হয়ো না, তোমরা তোমাদের পথপ্রদর্শককে ভালোবাস। তার নৈকট্য লাভের চেষ্টা কর। তেমাদের চিন্তাকে শানিত কর, চিত্তকে মুক্ত কর। নিশ্চয় মুক্তির মিছিলে দেখা হবে।
রাত: ৩.৩০, ০৫ এপ্রিল ২০২০, শ্যামলী।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
রুশো রকিব | ১১ মে, ২০২০ ০০:০১

ভেবেছিলাম সবাই বোধ করি বেশ কনসার্ন কভিড-১৯ প্যানডামিক নিয়ে! কিন্তু তার রিফ্লেকশন ফেসবুকে পেলাম না। আসলে আমরা কেবল তা-ই দেখছি বা ভাবছি যা আমাদের দেখানো হচ্ছে বা জানানো হচ্ছে। আসলে কি আমরা একটা প্রকট সত্য উপলব্ধি করতে পারছি? আমরা একটা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি এবং যেতে বাধ্য হচ্ছি। আমাদের মনের গভীরে এক ক্ষত ক্রমশ আমাদের গ্রাস করছে। কতটা মানসিক চাপ নিয়ে আমাদের সকাল হয় দুপুর কখন গড়িয়ে যায় বিকালে। আমি এসব বলে কোনো জাগরণ ঘটাতে চাই না। আমি কেবল শান্ত হয়ে শান্তিতে আমার সূর্যাস্ত দেখতে চাই। রাতের ক্লান্তিকে এড়িয়ে যেতে চাই ভোরের আলো দেখব বলে। আমি অনেক দিন ভোর দেখি না। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে দ্রুত ব্যস্ত হয়ে যাওয়া এই নগরী আমি দেখেছি বছরের পর বছর। আমি দিব্যি করে বলতে পারি আমার মত করে ধারাবাহিক এই নগরীকে জেগে উঠতে আপনারা অনেকেই দেখেননি। আপনারা দেখেননি কাক ডাকা ভোরের আগেও একটা ভোর আছে। আমি এই নগরের নই এটা সত্য আবার মিথ্যাও। আমি তো এই নগরে একজন আগুন্তক, তবে কেন এই কুহকে এত ঘুরপাক। এই নগরের সাথে নিজেকে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলেছি কখন জানি না। হয়ত তাই মনের অজান্তে এই নাগরিক কোলাহল খুব মিস করছি। আমি নিশ্চিত করোনা প্যানডামিক শেষেও এই নগর আর আগের মতো হবে না। অনেক কিছু বদলে যাবে। ফ্রান্সে নার্সরা তাদের প্রয়োজনীয় মাস্ক ও সুরক্ষা পোশাক না পাওয়ায় নগ্ন হয়ে প্রতিবাদ করল। এ তো কেবল প্রতিবাদ নয়। তারা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে আরেকবার দেখালো মানবতার নগ্ন রূপ। সভ্যতার গা থেকে আজ পোশাক খসে গেল। নগ্নতাকে আজ নতুন ভাবে আবিষ্কার করলাম। যদি আপনি না করে থাকেন তবে নিজেকে প্রশ্ন করতে পারেন আরেকবার! আজ রাস্তায় লাশ ফেলে স্বজনের পালিয়ে যাওয়া দৃশ্য আমাকে হতচকিত করেছে। কিন্তু জানেন আমি এ যাত্রা বেঁচে গেছি। কারণ অসুস্থ বাবার/ মার মৃত্যু কামনা করতে দেখেছি। মৃত্যুর ঘণ্টা দুয়েক না-গড়াতেই শোক জানিয়ে স্ট্যাটাস। অনেকে আবার শোক জানায়, যাক কষ্টটা কমে গেল। অসহায় হয়ে ডাক্তারদের সরি বলতে শুনেছি। আবার মৃত বাচ্চার শরীরে চিকিৎসা চিকিৎসা খেলার নামে ব্যবসার আতিপাতি দেখেছি। তবুও এই অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর মিছিল সইতে সইতে আমাদের মগজের সেনসিটিভিটি কমে যাচ্ছে আরোও যাবে। যে মানুষ বুকে চেপে সন্তানকে দাফন করতে যায়, তার বোধ সেই দিনই শেষ হয়ে যায়। ইকুয়েডরের রাস্তায় লাশের পড়ে থাকার দৃশ্য মানুষের সভ্যতাকে চপেটাঘাত করে না! রুয়ান্ডার নিরাপত্তারক্ষীরা কোয়ারান্টাইনে থাকা নারীকে ধর্ষণ করে। হায় মানবতা তুমি কোথায় মুখ লুকাবে! এরপরও আমরা স্বপ্ন দেখি একদিন ভোর হবে সূর্য উঠবে। আচ্ছা রাত যদি গভীর থেকে গভীরতর হয় আর একটা ব্ল্যাকহোল আমাদের গ্রাস করে, কী এমন ক্ষতি হবে! হয়ত সোনার মুখের হাসিটা মিলিয়ে যাবে। স্ত্রীর আদর, ভাইয়ের-মায়ের স্নেহ মিলিয়ে যাবে, তাতে কী! আমাকে তো আর ধর্ষণের ভয় বুকে বাঁচতে হবে না। আমাকে তো আর প্রিয়জনের লাশ রাস্তায় ফেলে পালাতে হবে না। মৃত্যুভয় এক অদ্ভূত ব্যাপার, ভাবতে শুরু করলে আপনাকে গ্রাস করবে। এত এত অর্ধমৃত মানুষের শহরে আমি কী নিয়ে বাঁচব আমাকে বলতে পার! বৃটিশ সাম্রাজ্যের সিটি অব হার্ট লন্ডন আজ ইমিউনিটির পাসপোর্ট নিয়ে ভাবছে। সবাই আমরা এখনো গন্ডি পেরুতে পারছি না। দেশ দেশ জাতি জাতি খেলায় এখনো মত্ত। এই পৃথিবী যদি অভিন্ন নয় তবে কেন প্যানডামিক। কেন আপনারা এমন শব্দ কুহকে আমাদের ওপর আপনাদের রিসার্চ চাপিয়ে দেন। আমি রুদ্র মুহাম্মদ নই আমি আপনাদেরকে জাগাতে আসিনি। আমি আপনাদেরকে ভালোবাসিনি। আমি কেবল আমার কথাগুলো বলতে এসেছি। আপনারা বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, মানুষের জীবন আপনারা আর ফিরে পাবেন না। আপনারা আর কখনোই প্রমিকার মুখে ফুচকা গুঁজে দেওয়ার নামে তার ঠোঁট স্পর্শ করতে পারবেন না। আপনারা আর কখনো রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে রং-চা-চিনি-ছাড়া, চিনি-কম-দুধ-বেশি এই সুখ পাবেন না। আজও যখন ধর্মের নামে আমাদের সচেতন করতে চায় তখন করুণা হয়। আজই তো সময় একটু ঘুরে দাঁড়ানোর। অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার। বেঁচে থাকতে তো কেউ দেবে না তাই আর কেন মৃত্যুর ভয়। বাঁচার যদি সাধ হয় তবে লড়াই করেই বাঁচতে হবে। পৃথিবী হয় হবে শোষকের নয় শোষিতের। হয় তাদের হবে নয় আমাদের। আমাদের পৃথিবীতে আমরা আর করোনা সহবাস করতে পারব। বিশ্বাস করুন আমি পাগল নই আমি করুণা পেতে আসিনি। আমি প্রেমিক, আমি ভালোবাসতে এসেছি, ভালেবাসা পেতে এসেছি। একটা ছোট ডাটা গুগল করবেন করোনায় কত মানুষ মারা যায় আর ক্ষুধা পুষ্টিহীনতায় কত। সিরিয়ায়, বাগদাদে, প্যলেস্টাইন আর হিজবুল্লাহর নামে কত। কত বালুচ জোয়ান আজও রক্ত দেয়, তাদের রক্ত আপনার আমার আমাদের মতই লাল। আফগান নারী কী তার মরদের জন্য অপেক্ষা করে না, করে। কেবল আমরা বুঝতে চাইনা। শরণার্থী হয়ে নিরাপত্তা জন্য আমরা যখন দাঁড়াই তখন আমাদের অপমান করতে অবজ্ঞা করতে তোমাদের বুক কাঁপে না। আমরা তোমাদের উচ্ছিষ্টটুকু নিতে চেয়েছিলাম, তোমরা তাতেও আপত্তি জানালে, হায় তবে এ কি সেই শিশুর আর্তনাদ, যে সাগরের জলে ডুবতে ডুবতে হয়ত মার আঙ্গুলটি খুঁজে ফিরেছে। হয়ত ডুবে যাওয়ার আগে শেষ বার মাথা তুলে বাবার দৃষ্টি খুঁজেছে। পেটের ভেতরে জমে থাকা লোনা জল বমি করেছে বারংবার তোমাদের সভ্যতার শরীরে। তোমরা তাকে বাঁচতে দাওনি। তার মৃত শরীরের ভার সাগর বইতে পারেনি, ফিরিয়ে দিয়েছে তটে। বর্ণিল পোশাকে আবৃত মৃত বাচ্চার শব তোমাদের ক্যাথারসিস জাগিয়েছে কেবল শুধরে দিতে পারেনি। আজও যখন অপুষ্টিতে আহাজারি উঠে বাতাসে তোমরা ত্রাণ নিয়ে আস। কেন এই ত্রাণ, কার জন্য ত্রাণ, কে এলো ত্রাতা হয়ে। আমি সেই ত্রাণ কর্তাকে খুঁজে ফিরি। তোমরা মানুষ, তোমরা তোমাদের ত্রাতাকে অবজ্ঞা করেছ বার বার। তোমরা তাকে রক্তাক্ত করেছ। তার ভালোবাসাকে উপেক্ষা করেছ। আজও তোমরা প্রেমিকের হৃদয়ের চেয়ে ক্ষমতাকে বড় করে দেখ। আজও তেমরা ভালোবাসার চেয়ে নির্ভরতাকে বেশি প্রাধান্য দাও। আজও তোমরা নিরামিষে আমিষ খোঁজ। তোমরা বিপথে হেঁট না। তোমরা পথভ্রষ্ট হয়ো না, তোমরা তোমাদের পথপ্রদর্শককে ভালোবাস। তার নৈকট্য লাভের চেষ্টা কর। তেমাদের চিন্তাকে শানিত কর, চিত্তকে মুক্ত কর। নিশ্চয় মুক্তির মিছিলে দেখা হবে।
রাত: ৩.৩০, ০৫ এপ্রিল ২০২০, শ্যামলী।