ঐক্যফ্রন্টকে ওবায়দুল কাদের
শপথ না নিয়ে জনরায়কে অসম্মান করা ঠিক হবে না
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১ জানুয়ারি, ২০১৯ ১৪:৫৫
বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের (এমপি) জনগণের রায় মেনে নিয়ে শপথে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, তারা জনগণের রায়কে অপমান-অসম্মান করবে না।’
মঙ্গলবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘তারা (বিএনপি) গতবার নির্বাচন বর্জন করে ভুল করেছে। এর মধ্যে যে কয়জন নির্বাচিত হয়েছে তারা জনগণের রায়ে নির্বাচিত হয়েছেন। জনগণের রায়কে যেন অসম্মান না করে এটা আমি বলতে চাই।’
এবারও জনগণ যে রায় তাদের দিয়েছে, এতে সন্তুষ্ট-অসন্তুষ্ট এটা তাদের ব্যাপার। ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের আবারও ভুল না করার পরামর্শ দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনের ঘোষণাকে কীভাবে দেখছে আওয়ামী লীগ- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপির দেশে আন্দোলন করার মতো কোনো অবজেকটিভ কন্ডিশন নেই। আন্দোলনে অংশ নেওয়ার মতো কোনো সাবজেকটিভ প্রিপারেশনও তাদের নেই। এ অবস্থায় আন্দোলনের সূত্র তাদের বিরুদ্ধে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আন্দোলন করতে হলে সেরকম চেতনা দরকার, সেরকম মানসিকতা দরকার। দলকে সু-সংগঠিত করতে সেরকম প্রস্তুতি দরকার। সেই প্রস্তুতিটা তাদের মধ্যে আছে বলে মনে হয় না। যদি থাকত তাহলে সারা দেশে তাৎক্ষণিক একটা মিছিল করতে পারতো, এরকমটাও দেখলাম না।’
তিনি বলেন, ‘গত সোমবার সংবাদ সম্মেলনে তাদের নেতাদের চেহারার দিকে তাকিয়ে দেখেছেন? এত নার্ভাস, তারা হতাশায় ভেঙে পড়েছেন। নেতারাই হতাশায় ভেঙে পরেছেন, কর্মীরা কীভাবে আশাবাদী হবে? কর্মীদের মধ্যে কীভাবে গতি পাবে?’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন নিয়ে যে আপত্তি তারা করেছে, এর একটা প্রতিবাদও কোথাও দেখলাম না। বিএনপি নেত্রী জেলে তার পরেও তারা কোনো সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শন করতে পারেনি। বিএনপি অচিরেই কোনো আন্দোলন গড়ে তুলবে এটা কোনো ভাবার কোনো কারণ নেই।
নতুন সরকারের কী চ্যালেঞ্জ নিচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নতুন সরকারের চ্যালেঞ্জ একটাই- যে প্রতিশ্রুতি নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে এবং বিজয় পেয়েছে, সেটার বাস্তবায়ন।’
এবারের নির্বাচন ৭০, ৫৪ সালের মতো হয়েছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সারাদেশে যে গণজোয়ার, ৭০ সালের পর আমরা এমন জোয়ার দেখিনি। ৭০ সাল, ৫৪ সালের নির্বাচনের ফলাফল যেমনটা নৌকার পক্ষে হয়েছিল, এবারও সেরকমটাই হয়েছে।’
‘তবে আমি অবাক হয়েছি- এত বড় দল বিএনপি যার কোনো সাংগঠনিক অবকাঠামোই নেই। এবারের নির্বাচনে দেখা গেছে- তাদের অবস্থা এতই দুর্বল, নড়বড়ে যে, তারা বিভিন্ন কেন্দ্রে, তাদের মধ্যে যাদেরকে হেভিওয়েট বলা হয় তারাও নিজেদের কেন্দ্রে এজেন্ট দিতে পারেনি’ যোগ করেন তিনি।
এসময় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এজেন্ট না দিতে পারলে ভোটের ফলাফলের প্রতিক্রিয়া তো এমন হবেই। আমরা তো তাদের অনুরোধ করেও এজেন্ট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারিনি। কোথাও তাদের পোস্টার নেই ব্যানার নেই এগুলো কিসের লক্ষণ? তবে মওদুদ আহমেদ সাহেবের সঙ্গে এমন জয় আমি আশা করিনি। আমি ভেবেছিলাম তিনি থাকবেন, উনার এজেন্টরা থাকবেন। তাহলে তো ভোটের ব্যবধানটা অনেক কমে যেত। এত ব্যবধান হতো না।’
তার দাবি, ‘আসলে নির্বাচনের নামে একটা নাটক তারা করেছেন, সারা বিশ্বকে দেখানোর জন্য এবং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য।’
মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি ফলাফলে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। সে ক্ষেত্রে তাদেরকে কি মন্ত্রিত্ব দেওয়া হবে নাকি প্রধান বিরোধী দল হিসেবে রাখা হবে- এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বিষয়টা শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ- আলোচনার পরে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
মন্ত্রী-এমপিদের শপথ কবে নাগাদ হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আশা করি, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ১০ জানুয়ারির মধ্যে এমপিদের এবং মন্ত্রীদের শপথ অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাবে।’
এর আগে মঙ্গলবার সকালে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
সেখানে তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পুনরায় নির্বাচনের দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘এটা কি মামাবাড়ির আবদার? এটা কখনো পূরণ হবে না।’
নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হয়েছে দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘পর্যবেক্ষকরাও বলছেন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে।’
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১ জানুয়ারি, ২০১৯ ১৪:৫৫

বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের (এমপি) জনগণের রায় মেনে নিয়ে শপথে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, তারা জনগণের রায়কে অপমান-অসম্মান করবে না।’
মঙ্গলবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘তারা (বিএনপি) গতবার নির্বাচন বর্জন করে ভুল করেছে। এর মধ্যে যে কয়জন নির্বাচিত হয়েছে তারা জনগণের রায়ে নির্বাচিত হয়েছেন। জনগণের রায়কে যেন অসম্মান না করে এটা আমি বলতে চাই।’
এবারও জনগণ যে রায় তাদের দিয়েছে, এতে সন্তুষ্ট-অসন্তুষ্ট এটা তাদের ব্যাপার। ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের আবারও ভুল না করার পরামর্শ দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনের ঘোষণাকে কীভাবে দেখছে আওয়ামী লীগ- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপির দেশে আন্দোলন করার মতো কোনো অবজেকটিভ কন্ডিশন নেই। আন্দোলনে অংশ নেওয়ার মতো কোনো সাবজেকটিভ প্রিপারেশনও তাদের নেই। এ অবস্থায় আন্দোলনের সূত্র তাদের বিরুদ্ধে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আন্দোলন করতে হলে সেরকম চেতনা দরকার, সেরকম মানসিকতা দরকার। দলকে সু-সংগঠিত করতে সেরকম প্রস্তুতি দরকার। সেই প্রস্তুতিটা তাদের মধ্যে আছে বলে মনে হয় না। যদি থাকত তাহলে সারা দেশে তাৎক্ষণিক একটা মিছিল করতে পারতো, এরকমটাও দেখলাম না।’
তিনি বলেন, ‘গত সোমবার সংবাদ সম্মেলনে তাদের নেতাদের চেহারার দিকে তাকিয়ে দেখেছেন? এত নার্ভাস, তারা হতাশায় ভেঙে পড়েছেন। নেতারাই হতাশায় ভেঙে পরেছেন, কর্মীরা কীভাবে আশাবাদী হবে? কর্মীদের মধ্যে কীভাবে গতি পাবে?’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন নিয়ে যে আপত্তি তারা করেছে, এর একটা প্রতিবাদও কোথাও দেখলাম না। বিএনপি নেত্রী জেলে তার পরেও তারা কোনো সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শন করতে পারেনি। বিএনপি অচিরেই কোনো আন্দোলন গড়ে তুলবে এটা কোনো ভাবার কোনো কারণ নেই।
নতুন সরকারের কী চ্যালেঞ্জ নিচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নতুন সরকারের চ্যালেঞ্জ একটাই- যে প্রতিশ্রুতি নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে এবং বিজয় পেয়েছে, সেটার বাস্তবায়ন।’
এবারের নির্বাচন ৭০, ৫৪ সালের মতো হয়েছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সারাদেশে যে গণজোয়ার, ৭০ সালের পর আমরা এমন জোয়ার দেখিনি। ৭০ সাল, ৫৪ সালের নির্বাচনের ফলাফল যেমনটা নৌকার পক্ষে হয়েছিল, এবারও সেরকমটাই হয়েছে।’
‘তবে আমি অবাক হয়েছি- এত বড় দল বিএনপি যার কোনো সাংগঠনিক অবকাঠামোই নেই। এবারের নির্বাচনে দেখা গেছে- তাদের অবস্থা এতই দুর্বল, নড়বড়ে যে, তারা বিভিন্ন কেন্দ্রে, তাদের মধ্যে যাদেরকে হেভিওয়েট বলা হয় তারাও নিজেদের কেন্দ্রে এজেন্ট দিতে পারেনি’ যোগ করেন তিনি।
এসময় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এজেন্ট না দিতে পারলে ভোটের ফলাফলের প্রতিক্রিয়া তো এমন হবেই। আমরা তো তাদের অনুরোধ করেও এজেন্ট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারিনি। কোথাও তাদের পোস্টার নেই ব্যানার নেই এগুলো কিসের লক্ষণ? তবে মওদুদ আহমেদ সাহেবের সঙ্গে এমন জয় আমি আশা করিনি। আমি ভেবেছিলাম তিনি থাকবেন, উনার এজেন্টরা থাকবেন। তাহলে তো ভোটের ব্যবধানটা অনেক কমে যেত। এত ব্যবধান হতো না।’
তার দাবি, ‘আসলে নির্বাচনের নামে একটা নাটক তারা করেছেন, সারা বিশ্বকে দেখানোর জন্য এবং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য।’
মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি ফলাফলে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। সে ক্ষেত্রে তাদেরকে কি মন্ত্রিত্ব দেওয়া হবে নাকি প্রধান বিরোধী দল হিসেবে রাখা হবে- এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বিষয়টা শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ- আলোচনার পরে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
মন্ত্রী-এমপিদের শপথ কবে নাগাদ হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আশা করি, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ১০ জানুয়ারির মধ্যে এমপিদের এবং মন্ত্রীদের শপথ অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাবে।’
এর আগে মঙ্গলবার সকালে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
সেখানে তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পুনরায় নির্বাচনের দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘এটা কি মামাবাড়ির আবদার? এটা কখনো পূরণ হবে না।’
নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হয়েছে দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘পর্যবেক্ষকরাও বলছেন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে।’