শেখ হাসিনার আ’লীগের অপমৃত্যু ঘটেছে: কাদের সিদ্দিকী
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২ জানুয়ারি, ২০১৯ ১৫:৪৯
নির্বাচনে নির্লজ্জ ভোট ডাকাতি হয়েছে দাবি করে এনিয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। ছবি: দেশ রূপান্তর
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কলঙ্কিত নির্বাচন আখ্যা দিয়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, এমন নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের অপমৃত্যু ঘটেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের এ বিজয় অল্পদিনের মধ্যেই সবচেয়ে নিন্দার বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।
বুধবার সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে কাদের সিদ্দিকী এমন মন্তব্য করেন। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ‘নির্লজ্জ ভোট ডাকাতি’ হয়েছে দাবি করে এ সম্পর্কে নিজের বক্তব্য তুলে ধরতে তিনি এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
বাংলাদেশে নির্বাচন পদ্ধতির অপমৃত্যু ঘটেছে দাবি করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘মানুষের আশা ছিল একাদশ সংসদ নির্বাচন খুবই অর্থবহ হবে, কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। নির্বাচনের ইতিহাসে গত ৩০ ডিসেম্বরের সাধারণ নির্বাচন একটি কলঙ্কিত অধ্যায় হিসেবে ভাবীকালে বিবেচিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘হুজুর মওলানা ভাসানী বা শেখ মুজিবের আওয়ামী লীগ নয়, জননেত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের অপমৃত্যু ঘটেছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের এখন আর কোনো অস্তিত্ব নেই।’
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশে নির্বাচন পদ্ধতি চালু হওয়ার পর এরকম একতরফা নির্বাচন, যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রশাসন দিয়ে সন্ত্রাসী দিয়ে বাক্স ভরা এবং প্রতিটি কেন্দ্রে রাতের অন্ধকারে আগে থেকেই বাক্স ভরে কেন্দ্রে পাঠানোর নজির কখনো ছিল না।’
ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগ আর কখনো জনগণের সমর্থন নিয়ে জয়যুক্ত হতে পারবে না দাবি করে তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমার দেশ, তারপরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আজকে যার সবদিকে জয়জয়কার সেই জননেত্রী শেখ হাসিনা, তারপরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন শেখ হাসিনার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’
ভাড়া করে আনা বিদেশি পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনকে সুষ্ঠু বলেছেন দাবি করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এ নেতা বলেন, ‘২০-২৫ জন মানুষের জীবন যাদের কাছে তুচ্ছ, তারাই বলতে পারে স্বাভাবিক হয়েছে। বাংলাদেশের এই নির্বাচন ত্রুটিতে ভরা পৃথিবীর সবচেয়ে কলঙ্কিত নির্বাচন।’
নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমার জীবনে কোনো নির্বাচন কমিশনকে এতটা সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে কাজ করতে দেখিনি। প্রশাসনকে এতটা নির্লিপ্ত থাকতে বা বিরোধী প্রার্থীদের এতটা হয়রানি নাজেহাল করার নজিরও কখনো দেখিনি।’
এই নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু-কন্যার সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে দাবি করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘শাপলা চত্বরে হেফাজতের রক্ত যেভাবে ধুয়েমুছে পরিষ্কার করা হয়েছিল, তার চাইতেও গভীরভাবে বাংলাদেশ ও দেশের মানুষের অন্তর থেকে বর্তমান সরকার এবং সরকারের নেত্রী ধুয়েমুছে একেবারে পরিষ্কার হয়ে গেছে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘নিজের দলকে সামলানো শেখ হাসিনার জন্য এত দুষ্কর হবে যে একসময় বিরক্ত হয়ে তিনি পদত্যাগ না করেই চলে যেতে পারেন।’
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদারের পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে শুরুতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২ জানুয়ারি, ২০১৯ ১৫:৪৯

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কলঙ্কিত নির্বাচন আখ্যা দিয়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, এমন নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের অপমৃত্যু ঘটেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের এ বিজয় অল্পদিনের মধ্যেই সবচেয়ে নিন্দার বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।
বুধবার সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে কাদের সিদ্দিকী এমন মন্তব্য করেন। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ‘নির্লজ্জ ভোট ডাকাতি’ হয়েছে দাবি করে এ সম্পর্কে নিজের বক্তব্য তুলে ধরতে তিনি এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
বাংলাদেশে নির্বাচন পদ্ধতির অপমৃত্যু ঘটেছে দাবি করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘মানুষের আশা ছিল একাদশ সংসদ নির্বাচন খুবই অর্থবহ হবে, কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। নির্বাচনের ইতিহাসে গত ৩০ ডিসেম্বরের সাধারণ নির্বাচন একটি কলঙ্কিত অধ্যায় হিসেবে ভাবীকালে বিবেচিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘হুজুর মওলানা ভাসানী বা শেখ মুজিবের আওয়ামী লীগ নয়, জননেত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের অপমৃত্যু ঘটেছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের এখন আর কোনো অস্তিত্ব নেই।’
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশে নির্বাচন পদ্ধতি চালু হওয়ার পর এরকম একতরফা নির্বাচন, যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রশাসন দিয়ে সন্ত্রাসী দিয়ে বাক্স ভরা এবং প্রতিটি কেন্দ্রে রাতের অন্ধকারে আগে থেকেই বাক্স ভরে কেন্দ্রে পাঠানোর নজির কখনো ছিল না।’
ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগ আর কখনো জনগণের সমর্থন নিয়ে জয়যুক্ত হতে পারবে না দাবি করে তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমার দেশ, তারপরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আজকে যার সবদিকে জয়জয়কার সেই জননেত্রী শেখ হাসিনা, তারপরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন শেখ হাসিনার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’
ভাড়া করে আনা বিদেশি পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনকে সুষ্ঠু বলেছেন দাবি করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এ নেতা বলেন, ‘২০-২৫ জন মানুষের জীবন যাদের কাছে তুচ্ছ, তারাই বলতে পারে স্বাভাবিক হয়েছে। বাংলাদেশের এই নির্বাচন ত্রুটিতে ভরা পৃথিবীর সবচেয়ে কলঙ্কিত নির্বাচন।’
নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমার জীবনে কোনো নির্বাচন কমিশনকে এতটা সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে কাজ করতে দেখিনি। প্রশাসনকে এতটা নির্লিপ্ত থাকতে বা বিরোধী প্রার্থীদের এতটা হয়রানি নাজেহাল করার নজিরও কখনো দেখিনি।’
এই নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু-কন্যার সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে দাবি করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘শাপলা চত্বরে হেফাজতের রক্ত যেভাবে ধুয়েমুছে পরিষ্কার করা হয়েছিল, তার চাইতেও গভীরভাবে বাংলাদেশ ও দেশের মানুষের অন্তর থেকে বর্তমান সরকার এবং সরকারের নেত্রী ধুয়েমুছে একেবারে পরিষ্কার হয়ে গেছে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘নিজের দলকে সামলানো শেখ হাসিনার জন্য এত দুষ্কর হবে যে একসময় বিরক্ত হয়ে তিনি পদত্যাগ না করেই চলে যেতে পারেন।’
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদারের পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে শুরুতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী।