প্রধানমন্ত্রীকে প্রথম টিকা নিয়ে মানুষের মধ্যে আস্থা তৈরির প্রস্তাব ফখরুলের
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৪ জানুয়ারি, ২০২১ ১৯:২২
করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে দেশের মানুষের সন্দেহ দূর করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রথম টিকা নিতে প্রস্তাব করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এ প্রস্তাব জানান। ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে নাগরিক ঐক্য।
ফখরুল বলেন, করোনা টিকায় মানুষের আস্থা নেই। মানুষের যথেষ্ট সন্দেহ আছে। টিকা নিয়ে সন্দেহ দূর করতে ইংল্যান্ডের রানি আগে টিকা নিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমার প্রস্তাব, প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) আপনি প্রথম টিকাটি নিন। তারপর মানুষকে বলুন ভয়ের কিছু নেই। তাহলেই মানুষের আস্থা ফিরে আসবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, করোনার প্রণোদনার টাকা নিয়ে সরকারের মূল লক্ষ্য ছিল পকেট ভর্তি করা। করোনার পরীক্ষা নিয়ে যে লুট সরকার করেছে, টিকা নিয়ে সরকার একই কাজ করছে।
করোনার টিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। সরকারের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে লুট করা, দুর্নীতি করা।
তিনি বলেন, এখন প্রধান সংকট হচ্ছে, একটা অনির্বাচিত সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে জবাবদিহি ছাড়া জোর করে ক্ষমতায় আছে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রকে দলীয়করণ করেছে। তিনি আরও বলেন, জনগণ অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
আলোচনা সভায় সরকারের কর্মকাণ্ডে দুর্নীতি আর অপচয়ের অভিযোগ তুলেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দুর্নীতি আর অপচয় এ সরকারের অপর নাম। প্রতিটি ক্ষেত্রে, প্রতিটি কার্যকলাপে তাদের দুর্নীতি। পদ্মা সেতু করতে ১০ হাজার কোটি টাকার জায়গায় ৩০ হাজার কোটি টাকা লাগল। কে কত টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারা করেছে জানি না। তবে অপচয় যে হয়েছে, অস্বীকার করা যাবে না।
করোনার টিকা বেশি দামে কেনা হয়েছে উল্লেখ করে জাফরুল্লাহ বলেন, ইউরোপ যে টিকা দুই ডলারে কিনছে, ভারত তা কিনছে দুই থেকে আড়াই ডলারে। সেই টিকা বাংলাদেশ পাঁচ ডলারে কিনছে। কারণ, একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মধ্যস্বত্বভোগী হয়ে টাকা নিচ্ছে। টিকা কিনতে একটি বিশেষ কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেন, সরকার অত্যন্ত ভুল পথে যাচ্ছে। বেসরকারি খাতে টিকা আনতে দেওয়া যাবে না। সরকারের নৈতিক দায়িত্ব হলো টিকাসংক্রান্ত ভুল ঠিক করা।
সভাপতির বক্তব্যে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মানুষের ভোটাধিকার সরকার দেবে না। যেভাবেই হোক তারা ক্ষমতায় থাকতে চায়। উনসত্তরের মতো গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই বছরের মধ্যে এ সরকারকে বিদায় করা হবে। এই সরকার যত তাড়াতাড়ি যায়, ততই ভালো। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একসঙ্গে, একমঞ্চে এসে সরকারকে বিদায় করতে হবে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, এই সরকার জঙ্গিবাদ, চরমপন্থা, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কথা বলে। অথচ তারাই জঙ্গিবাদী, চরমপন্থী ও সন্ত্রাসী কায়দায় দেশ চালাচ্ছে।
কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, বাংলাদেশ দুর্নীতিবাজদের হবে না। ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মাধ্যমে এ দুর্নীতিবাজ সরকারকে হটাতে হবে।
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শওকত মাহমুদ বক্তব্য দেন।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৪ জানুয়ারি, ২০২১ ১৯:২২

করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে দেশের মানুষের সন্দেহ দূর করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রথম টিকা নিতে প্রস্তাব করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এ প্রস্তাব জানান। ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে নাগরিক ঐক্য।
ফখরুল বলেন, করোনা টিকায় মানুষের আস্থা নেই। মানুষের যথেষ্ট সন্দেহ আছে। টিকা নিয়ে সন্দেহ দূর করতে ইংল্যান্ডের রানি আগে টিকা নিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমার প্রস্তাব, প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) আপনি প্রথম টিকাটি নিন। তারপর মানুষকে বলুন ভয়ের কিছু নেই। তাহলেই মানুষের আস্থা ফিরে আসবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, করোনার প্রণোদনার টাকা নিয়ে সরকারের মূল লক্ষ্য ছিল পকেট ভর্তি করা। করোনার পরীক্ষা নিয়ে যে লুট সরকার করেছে, টিকা নিয়ে সরকার একই কাজ করছে।
করোনার টিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। সরকারের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে লুট করা, দুর্নীতি করা।
তিনি বলেন, এখন প্রধান সংকট হচ্ছে, একটা অনির্বাচিত সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে জবাবদিহি ছাড়া জোর করে ক্ষমতায় আছে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রকে দলীয়করণ করেছে। তিনি আরও বলেন, জনগণ অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
আলোচনা সভায় সরকারের কর্মকাণ্ডে দুর্নীতি আর অপচয়ের অভিযোগ তুলেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দুর্নীতি আর অপচয় এ সরকারের অপর নাম। প্রতিটি ক্ষেত্রে, প্রতিটি কার্যকলাপে তাদের দুর্নীতি। পদ্মা সেতু করতে ১০ হাজার কোটি টাকার জায়গায় ৩০ হাজার কোটি টাকা লাগল। কে কত টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারা করেছে জানি না। তবে অপচয় যে হয়েছে, অস্বীকার করা যাবে না।
করোনার টিকা বেশি দামে কেনা হয়েছে উল্লেখ করে জাফরুল্লাহ বলেন, ইউরোপ যে টিকা দুই ডলারে কিনছে, ভারত তা কিনছে দুই থেকে আড়াই ডলারে। সেই টিকা বাংলাদেশ পাঁচ ডলারে কিনছে। কারণ, একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মধ্যস্বত্বভোগী হয়ে টাকা নিচ্ছে। টিকা কিনতে একটি বিশেষ কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেন, সরকার অত্যন্ত ভুল পথে যাচ্ছে। বেসরকারি খাতে টিকা আনতে দেওয়া যাবে না। সরকারের নৈতিক দায়িত্ব হলো টিকাসংক্রান্ত ভুল ঠিক করা।
সভাপতির বক্তব্যে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মানুষের ভোটাধিকার সরকার দেবে না। যেভাবেই হোক তারা ক্ষমতায় থাকতে চায়। উনসত্তরের মতো গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই বছরের মধ্যে এ সরকারকে বিদায় করা হবে। এই সরকার যত তাড়াতাড়ি যায়, ততই ভালো। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একসঙ্গে, একমঞ্চে এসে সরকারকে বিদায় করতে হবে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, এই সরকার জঙ্গিবাদ, চরমপন্থা, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কথা বলে। অথচ তারাই জঙ্গিবাদী, চরমপন্থী ও সন্ত্রাসী কায়দায় দেশ চালাচ্ছে।
কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, বাংলাদেশ দুর্নীতিবাজদের হবে না। ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মাধ্যমে এ দুর্নীতিবাজ সরকারকে হটাতে হবে।
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শওকত মাহমুদ বক্তব্য দেন।