বক্তৃতা দিতে না পেরে ‘ক্ষুব্ধ হয়ে’ সভাস্থল ত্যাগ: যা বললেন ইশরাক
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৩ মে, ২০২২ ২১:৫১
দলের চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিবাদে সোমবার (২৩ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপি। কয়েক শ নেতাকর্মী নিয়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, সকাল ১০টায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়। বেলা সাড়ে ১১টা পার হলেও বক্তব্যের সুযোগ দেওয়া হয়নি ইশরাককে। যদিও অনেক অনিয়মিত নেতাকর্মীকে বক্তব্যের সুযোগ দেওয়া হয়। কেউ কেউ মূল বিষয়ের বাইরে গতানুগতিক ধারায় অগোছালো বক্তব্য দেন। কিন্তু সময়ের অজুহাতে ইশরাকসহ অনেককে সুযোগ দেওয়া যাচ্ছে না বলে মাইকে ঘোষণা হয়। এর কিছু সময় পর ইশরাক কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মঞ্চ ছেড়ে প্রেসক্লাবের ভেতরে চলে যান। এ সময় অনেকে তাকে আটকানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
জানা যায়, বিষয়টি নিয়ে মঞ্চে আলোচনা হলে কিছুক্ষণ পর বক্তব্য দিতে ইশরাকের নাম ঘোষণা করা হয়। তখন মঞ্চে না থাকায় ইশরাক এলে তাকে সুযোগ দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়। এর কিছুক্ষণ পর সমর্থকদের নিয়ে প্রেসক্লাব রাস্তার পশ্চিম পাশে চলে যান ইশরাক। সেখানে ৮-১০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে ছবি তোলেন। নেতাকর্মীদের সঙ্গে কুশলবিনিময় করেন। এর কিছু সময় পর সমাবেশ ত্যাগ করেন বিএনপির এ নেতা।
এ বিষয়ে বিএনপির তরুণ ও মাঠ পর্যায়ের নেতারা বলেন, যারা শুধু মুখে গরম কথা বলে কিন্তু মাঠে থাকে না তাদের বক্তব্য আমরা শুনতে চাই না। তারপরও দলের স্বার্থে মেনে নিই। কিন্তু ইশরাক পরীক্ষিত ও শতভাগ কমিটেড। এমন নেতাকে দল যদি কথা বলার সুযোগ না দেয় সেটি সত্যি হতাশাজনক।
তবে ইশরাকের ঘনিষ্ঠরা বলছেন, প্রচণ্ড গরমের কারণে তিনি প্রেসক্লাবের মধ্যে কিছুক্ষণ অবস্থান নেন। সেই সঙ্গে মাঠের নেতাকর্মীদের শান্ত করতে তাদের নিয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, রাগ করে নয় অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে তিনি নেতা কর্মীদের নিয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেছিলেন।
তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ আহ্বায়ক কমিটির সিনিয়র সদস্য হিসেবে এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে বিএনপি মেয়র প্রার্থী হিসেবে ঢাকা মহানগর বিএনপির যেকোনো অনুষ্ঠানেই প্রটোকল অনুযায়ী আমি বিভিন্ন সময় বক্তব্য দিয়ে আসছি। কিন্তু আজকের অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল ইসলাম প্রোগ্রাম চলাকালীন হঠাৎ করেই ঘোষণা দেন যে, সময় স্বল্পতার কারণে বেশ কিছু নেতা-কর্মীকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দিতে পারছেন না। যারা বক্তব্য দিতে পারছেন না, তাদের মধ্যে আমার নামটিও তিনি ভুলবশত ঘোষণা করেন। এতে নেতা-কর্মীরা বিভ্রান্ত হয়ে যায়। তাই প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য বক্তাদের যাতে বক্তব্যের সময় কোনো ব্যাঘাত না ঘটে সে জন্য আমি দূরে গিয়ে দাঁড়াই।
তিনি বলেন, বক্তব্য দিতে না দেওয়ার কারণে রাগ করে নয়, পরিস্থিতি শান্ত করতে সমাবেশস্থল থেকে একটু দূরে সরে আসি।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সমাবেশের সভাপতিত্ব করছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম। সঞ্চালনা করছেন ঢাকা উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল ইসলাম মজনু।
সোমবার রাতে নিজের ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে ইশরাক জানান, কোনো কোনো দৈনিক পত্রিকার অনলাইন বিভাগ থেকে ও কয়েকটি অনলাইন পত্রিকায় আমাকে উদ্দেশ্য করে নিউজ প্রকাশিত হয়েছে যা আমার গোচরে এসেছে।
তিনি জানান, সমাবেশ শুরু হয়ে ধারাবাহিকভাবে দলীয় নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা দিচ্ছেন, একপর্যায়ে সভার পরিচালক ঘোষণা করেন সময়ের স্বল্পতার কারণে এখন অনেককে বক্তব্যের সুযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না, তার মধ্যে আমার নামও ঘোষণা করা হয়। কিছু সময় পর আমি একটু দূরে গিয়ে নেতাকর্মীকে নিয়ে সভার পরবর্তী বক্তৃতার বক্তব্য শুনি এবং সভা শেষে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সভাস্থল ত্যাগ করি।
তিনি জানান, আমি ক্ষুব্ধ হয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেছি এটা ঠিক নয়, আশা করি এ ব্যাপারে কারো মাঝে কোনো ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ থাকবে না এবং দয়া করে প্রকাশিত সংবাদ সংশোধন করে আমাকে বাধিত করবেন।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৩ মে, ২০২২ ২১:৫১

দলের চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিবাদে সোমবার (২৩ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপি। কয়েক শ নেতাকর্মী নিয়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, সকাল ১০টায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়। বেলা সাড়ে ১১টা পার হলেও বক্তব্যের সুযোগ দেওয়া হয়নি ইশরাককে। যদিও অনেক অনিয়মিত নেতাকর্মীকে বক্তব্যের সুযোগ দেওয়া হয়। কেউ কেউ মূল বিষয়ের বাইরে গতানুগতিক ধারায় অগোছালো বক্তব্য দেন। কিন্তু সময়ের অজুহাতে ইশরাকসহ অনেককে সুযোগ দেওয়া যাচ্ছে না বলে মাইকে ঘোষণা হয়। এর কিছু সময় পর ইশরাক কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মঞ্চ ছেড়ে প্রেসক্লাবের ভেতরে চলে যান। এ সময় অনেকে তাকে আটকানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
জানা যায়, বিষয়টি নিয়ে মঞ্চে আলোচনা হলে কিছুক্ষণ পর বক্তব্য দিতে ইশরাকের নাম ঘোষণা করা হয়। তখন মঞ্চে না থাকায় ইশরাক এলে তাকে সুযোগ দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়। এর কিছুক্ষণ পর সমর্থকদের নিয়ে প্রেসক্লাব রাস্তার পশ্চিম পাশে চলে যান ইশরাক। সেখানে ৮-১০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে ছবি তোলেন। নেতাকর্মীদের সঙ্গে কুশলবিনিময় করেন। এর কিছু সময় পর সমাবেশ ত্যাগ করেন বিএনপির এ নেতা।
এ বিষয়ে বিএনপির তরুণ ও মাঠ পর্যায়ের নেতারা বলেন, যারা শুধু মুখে গরম কথা বলে কিন্তু মাঠে থাকে না তাদের বক্তব্য আমরা শুনতে চাই না। তারপরও দলের স্বার্থে মেনে নিই। কিন্তু ইশরাক পরীক্ষিত ও শতভাগ কমিটেড। এমন নেতাকে দল যদি কথা বলার সুযোগ না দেয় সেটি সত্যি হতাশাজনক।
তবে ইশরাকের ঘনিষ্ঠরা বলছেন, প্রচণ্ড গরমের কারণে তিনি প্রেসক্লাবের মধ্যে কিছুক্ষণ অবস্থান নেন। সেই সঙ্গে মাঠের নেতাকর্মীদের শান্ত করতে তাদের নিয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, রাগ করে নয় অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে তিনি নেতা কর্মীদের নিয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেছিলেন।
তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ আহ্বায়ক কমিটির সিনিয়র সদস্য হিসেবে এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে বিএনপি মেয়র প্রার্থী হিসেবে ঢাকা মহানগর বিএনপির যেকোনো অনুষ্ঠানেই প্রটোকল অনুযায়ী আমি বিভিন্ন সময় বক্তব্য দিয়ে আসছি। কিন্তু আজকের অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল ইসলাম প্রোগ্রাম চলাকালীন হঠাৎ করেই ঘোষণা দেন যে, সময় স্বল্পতার কারণে বেশ কিছু নেতা-কর্মীকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দিতে পারছেন না। যারা বক্তব্য দিতে পারছেন না, তাদের মধ্যে আমার নামটিও তিনি ভুলবশত ঘোষণা করেন। এতে নেতা-কর্মীরা বিভ্রান্ত হয়ে যায়। তাই প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য বক্তাদের যাতে বক্তব্যের সময় কোনো ব্যাঘাত না ঘটে সে জন্য আমি দূরে গিয়ে দাঁড়াই।
তিনি বলেন, বক্তব্য দিতে না দেওয়ার কারণে রাগ করে নয়, পরিস্থিতি শান্ত করতে সমাবেশস্থল থেকে একটু দূরে সরে আসি।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সমাবেশের সভাপতিত্ব করছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম। সঞ্চালনা করছেন ঢাকা উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল ইসলাম মজনু।
সোমবার রাতে নিজের ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে ইশরাক জানান, কোনো কোনো দৈনিক পত্রিকার অনলাইন বিভাগ থেকে ও কয়েকটি অনলাইন পত্রিকায় আমাকে উদ্দেশ্য করে নিউজ প্রকাশিত হয়েছে যা আমার গোচরে এসেছে।
তিনি জানান, সমাবেশ শুরু হয়ে ধারাবাহিকভাবে দলীয় নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা দিচ্ছেন, একপর্যায়ে সভার পরিচালক ঘোষণা করেন সময়ের স্বল্পতার কারণে এখন অনেককে বক্তব্যের সুযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না, তার মধ্যে আমার নামও ঘোষণা করা হয়। কিছু সময় পর আমি একটু দূরে গিয়ে নেতাকর্মীকে নিয়ে সভার পরবর্তী বক্তৃতার বক্তব্য শুনি এবং সভা শেষে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সভাস্থল ত্যাগ করি।
তিনি জানান, আমি ক্ষুব্ধ হয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেছি এটা ঠিক নয়, আশা করি এ ব্যাপারে কারো মাঝে কোনো ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ থাকবে না এবং দয়া করে প্রকাশিত সংবাদ সংশোধন করে আমাকে বাধিত করবেন।