বন্যা দুর্গতরা অনাহারে, বিএনপিকে ত্রাণ বিতরণে বাধা দেয়া হচ্ছে: টুকু
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৪ জুলাই, ২০২২ ১৯:২৩
বিএনপিকে বন্যাকবলিত মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের স্থায়ী কমিটি সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
বিএনপির ত্রাণ কমিটির এই আহ্বায়ক আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘বন্যা দুর্গতরা অনাহারে ভুগছে, কিন্তু সরকার তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে না।’
সোমবার গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে টুকু এ অভিযোগ করেন। বিএনপির ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি ও ত্রাণ সংগ্রহ কর্মকাণ্ডে আওয়ামী লীগ ও পুলিশি বাধার প্রতিবাদে জাতীয় ত্রাণ কমিটি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
টুকু বলেন, ‘সরকার ব্যস্ত পদ্মা সেতু নিয়ে। অথচ দেশের একটি বৃহৎ অঞ্চলের মানুষ বন্যা কবলিত হয়ে মানবতার জীবনযাপন করছে। বিরোধী দল হয়েও সীমিত সম্পদ নিয়ে আমরা বন্যাকবলিত মানুষের পাশে ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছি, সেখানেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। কোথাও কোথাও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারাও জারি করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘সারা দেশে বিশেষ করে সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুর বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলে বানভাসি মানুষের হাহাকারে যখন আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে, বন্যার্তদের জন্য সরকারি সাহায্য যখন নিতান্তই অপ্রতুল।’
এই সময় সবাইকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে আসতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলে থাকলেও জনগণের দল হিসেবে বিএনপি ইতিমধ্যে সিলেট, সুনামগঞ্জ, ফেনী, নেত্রকোনা এবং কুড়িগ্রামসহ সারা দেশে যথাসাধ্যভাবে বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে সরকারি দল বিশেষ করে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্বাচনী আসন ফেনীর ফুলগাজীতে ত্রাণ বিতরণের প্রস্তুতি সভায় বিনা উসকানিতে লাঠিসোঁটা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।’
টুকু অভিযোগ করে বলেন, ‘ফেনীতে হামলায় ২০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের নিকটস্থ হাসপাতালে নেওয়ার পথে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ফের হামলা চালায়। ঘটনাস্থলের পাশেই ফুলগাজী থানা থাকা সত্ত্বেও তারা সময়মতো হস্তক্ষেপ করেনি। করলে এমন ঘটনা ঘটা সম্ভব ছিল না।’
বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষ অনাহারে ভুগছে উল্লেখ করে টুকু বলেন, ‘চিকিৎসার অভাবে নানা ধরনের রোগে সেখানকার মানুষেরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান অনির্বাচিত ফ্যাসিস্ট সরকারের জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সময় আশপাশের জেলাগুলোতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ও আলোকসজ্জার জন্য প্রায় শত কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। চট্টগ্রামে কনসার্ট করে আর ঢাকায় আতশবাজি ফুটিয়ে বিপুল অর্থ নষ্ট করা হয়েছে। কিন্তু সারাদেশে বন্যার্ত ও বানভাসি মানুষ না খেয়ে বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে। সে জন্য সরকারের অর্থ বরাদ্দ দিতে পারছে না। জনগণের কল্যাণ এখন এ সরকারের লক্ষ্য নয়। মেগা প্রজেক্ট নিয়েই তাদের যত মনোযোগ, কারণ সেখানে মধু আছে। মেগা প্রজেক্টগুলো দুর্নীতি আর টাকা পাচারের উৎস হয়ে উঠেছে।’
টুকু বলেন, ‘করোনার সময়েও ‘হেল্প সেল’ গঠন করে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল বিএনপি। এবারও পানিবন্দী মানুষদের উদ্ধার, ত্রাণ বিতরণ, চিকিৎসা ও ওষুধ, গৃহনির্মাণ এবং কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোসহ বিভিন্নভাবে বন্যার্তদের সহযোগিতা করছে বিএনপি।’
বন্যার মতো এমন দুর্ভোগের সময়ে ক্ষমতাসীন মহলকে সব ধরনের সংকীর্ণ রাজনৈতিক কূটকৌশল পরিহার করে আর্তমানবতার সেবায় আত্মনিয়োগের আহ্বান জানান সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও হাজী ইয়াসিন।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৪ জুলাই, ২০২২ ১৯:২৩
বিএনপিকে বন্যাকবলিত মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের স্থায়ী কমিটি সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
বিএনপির ত্রাণ কমিটির এই আহ্বায়ক আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘বন্যা দুর্গতরা অনাহারে ভুগছে, কিন্তু সরকার তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে না।’
সোমবার গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে টুকু এ অভিযোগ করেন। বিএনপির ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি ও ত্রাণ সংগ্রহ কর্মকাণ্ডে আওয়ামী লীগ ও পুলিশি বাধার প্রতিবাদে জাতীয় ত্রাণ কমিটি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
টুকু বলেন, ‘সরকার ব্যস্ত পদ্মা সেতু নিয়ে। অথচ দেশের একটি বৃহৎ অঞ্চলের মানুষ বন্যা কবলিত হয়ে মানবতার জীবনযাপন করছে। বিরোধী দল হয়েও সীমিত সম্পদ নিয়ে আমরা বন্যাকবলিত মানুষের পাশে ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছি, সেখানেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। কোথাও কোথাও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারাও জারি করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘সারা দেশে বিশেষ করে সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুর বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলে বানভাসি মানুষের হাহাকারে যখন আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে, বন্যার্তদের জন্য সরকারি সাহায্য যখন নিতান্তই অপ্রতুল।’
এই সময় সবাইকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে আসতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলে থাকলেও জনগণের দল হিসেবে বিএনপি ইতিমধ্যে সিলেট, সুনামগঞ্জ, ফেনী, নেত্রকোনা এবং কুড়িগ্রামসহ সারা দেশে যথাসাধ্যভাবে বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে সরকারি দল বিশেষ করে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্বাচনী আসন ফেনীর ফুলগাজীতে ত্রাণ বিতরণের প্রস্তুতি সভায় বিনা উসকানিতে লাঠিসোঁটা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।’
টুকু অভিযোগ করে বলেন, ‘ফেনীতে হামলায় ২০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের নিকটস্থ হাসপাতালে নেওয়ার পথে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ফের হামলা চালায়। ঘটনাস্থলের পাশেই ফুলগাজী থানা থাকা সত্ত্বেও তারা সময়মতো হস্তক্ষেপ করেনি। করলে এমন ঘটনা ঘটা সম্ভব ছিল না।’
বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষ অনাহারে ভুগছে উল্লেখ করে টুকু বলেন, ‘চিকিৎসার অভাবে নানা ধরনের রোগে সেখানকার মানুষেরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান অনির্বাচিত ফ্যাসিস্ট সরকারের জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সময় আশপাশের জেলাগুলোতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ও আলোকসজ্জার জন্য প্রায় শত কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। চট্টগ্রামে কনসার্ট করে আর ঢাকায় আতশবাজি ফুটিয়ে বিপুল অর্থ নষ্ট করা হয়েছে। কিন্তু সারাদেশে বন্যার্ত ও বানভাসি মানুষ না খেয়ে বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে। সে জন্য সরকারের অর্থ বরাদ্দ দিতে পারছে না। জনগণের কল্যাণ এখন এ সরকারের লক্ষ্য নয়। মেগা প্রজেক্ট নিয়েই তাদের যত মনোযোগ, কারণ সেখানে মধু আছে। মেগা প্রজেক্টগুলো দুর্নীতি আর টাকা পাচারের উৎস হয়ে উঠেছে।’
টুকু বলেন, ‘করোনার সময়েও ‘হেল্প সেল’ গঠন করে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল বিএনপি। এবারও পানিবন্দী মানুষদের উদ্ধার, ত্রাণ বিতরণ, চিকিৎসা ও ওষুধ, গৃহনির্মাণ এবং কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোসহ বিভিন্নভাবে বন্যার্তদের সহযোগিতা করছে বিএনপি।’
বন্যার মতো এমন দুর্ভোগের সময়ে ক্ষমতাসীন মহলকে সব ধরনের সংকীর্ণ রাজনৈতিক কূটকৌশল পরিহার করে আর্তমানবতার সেবায় আত্মনিয়োগের আহ্বান জানান সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও হাজী ইয়াসিন।