
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) দিয়ে বিএনপিকে সংলাপের আমন্ত্রণ জানানো আওয়ামী লীগের লেটেস্ট কৌশল।
তিনি বলেন, ‘২০১৪ ও ২০১৮ সালে সংসদ নির্বাচন যেভাবে করেছে ফের একই কায়দায় নির্বাচন করতে নতুন নতুন কৌশল করছে আওয়ামী লীগ। এসব কৌশলের মধ্যে সবচেয়ে লেটেস্ট কৌশল হচ্ছে ইসিকে দিয়ে আমাদের চিঠি দিয়ে সংলাপের আমন্ত্রণ জানানো। আওয়ামী লীগ মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে পরিকল্পিতভাবে নতুন খেলায় মেতেছে। এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই নিরপেক্ষ সরকারসহ ১০ দফা বাস্তবায়নে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’
শনিবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে বিএনপির আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নেতৃত্ব স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে ব্যর্থ হয়েছিল বলেই ২৫ মার্চ ১৯৭১ এর গণহত্যা হয়েছিল। রাজনৈতিক নেতৃত্ব ব্যর্থ হলেও তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তার ঘোষণার মধ্য দিয়ে দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। কিন্তু নতুন প্রজন্মের কাছে মিথ্যা ইতিহাস প্রচার করছে ক্ষমতাসীনরা।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সংকট একটাই, নির্বাচনের সময় যদি আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকে, তাহলে দেশে আর সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না, এটা প্রমাণিত। শুধু জাতীয় নির্বাচন হয় স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও একই সমস্যা। এ সমস্ত বাদ দিয়ে আসল জায়গায় আসুন, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিতে হবে। সেটা নিয়ে কাজ করুন, সেটা নিয়ে কথা বলুন, সেটা নিয়ে ঘোষণা দিন। তা না হলে অন্য কোনো কিছুই দেশের মানুষ মেনে নেবে না।’
তিনি বলেন, ‘এই যে আওয়ামী লীগ, যাদের জোর করে ক্ষমতায় থাকার অভ্যাস। আমার মনে হয়, আওয়ামী লীগ একটি রাজনৈতিক দল। এই রাজনৈতিক দল যদি একটি দেশে থাকে, তাহলে তার সর্বনাশের জন্য আর কোনো কিছুর দরকার নেই; আওয়ামী লীগই যথেষ্ট। স্বাধীনতার পর যে স্বপ্ন ছিল, যে চেতনা ছিল, যে কমিটমেন্ট ছিল সমস্ত কিছু ভেঙে দিয়ে তারা একদলীয় শাসন বাকশাল কায়েম করেছে।’
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে বলে চাপাবাজি শুরু করেছে। কিন্তু তাদের পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করা সম্ভব নয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্বাচন দেখলেই সেটা বোঝা যায়।’
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানির পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন প্রমুখ।
স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি
গত ১৬ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির এক যৌথ সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা করেন মির্জা ফখরুল। কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২৬ মার্চ ভোর ৬টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশব্যাপী সব দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল ৭টায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয় থেকে দলের জাতীয় নেতারাসহ সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের জাতীয় স্মৃতিসৌধের উদ্দেশ্যে যাত্রা ও জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ।
সাভার থেকে ফিরে শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন। ওই দিনই কবর প্রাঙ্গণে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের উদ্যোগে দোয়া অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার (২৭ মার্চ) বেলা ১১টায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মুক্তিযোদ্ধা গণসমাবেশ হবে।
আমাদের সাচ্চা আওয়ামী লীগের কর্মী দরকার। যারা গা বাঁচাতে বিএনপির সঙ্গে গোপন যোগাযোগ রাখবেন তাদের আমার দরকার নাই বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান।
শনিবার (৩ জুন) সকালে নগরীর জালকুড়ি আরকে ল্যান্ড পার্কে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়ার জন্য খেলা হচ্ছে। পৃথিবীর মানচিত্রে আমাদের ভৌগলিক সীমা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই বিরোধীরা আমাদের দেশের উপর নজর দিয়েছে। তাদের একটাই টার্গেট শেখ হাসিনাকে সরানো। গত এক বছর ধরে এই ষড়যন্ত্র বিএনপি-জামায়াত করে যাচ্ছে। আল্লাহর উপর ভরসা রেখে, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, আগামী নির্বাচন তো দূরের কথা, এরপরের নির্বাচনেও বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তারা আগের চেয়ে ভয়াবহ ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করছে। নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাদের বিষয়ে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।’
শামীম ওসমান বলেন, ‘২০০১ সালের পর যে অত্যাচার হয়েছে তা আমরা ভুলি নাই। ওই ৫ বছর আমাদের অনেক নেতাকর্মীর উপর অত্যাচার করা হয়েছে। অনেক নেতাকর্মীকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল। মা-বোনদেরও রেহাই দেয়নি। তারা বোমা হামলার ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের উপর দোষ চাপিয়ে দিয়েছিল। তাদের এই অত্যাচারের ফলাফল জনগণ এখন তাদের দিয়ে দিচ্ছে। যে ছেলে মায়ের খবর রাখে না সে দলের কি খবর রাখবে? আমরা কাউকে কোনো আঘাত করি না। সবাইকে মাফ করে দিয়েছি। শয়তান শয়তানি করবে। তাই আমরা তাদের ক্ষমা করে দিয়েছি। ওই খুনিরা আবার বের হয়ে এসেছে। তারা এখন আবারও ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করছে। সব এলাকার খবর রাখি।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা, জাতীয় শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি আবদুল মতিন মাস্টার, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মিয়া, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহবায়ক নাসিক ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি, কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা, আনোয়ার ইসলাম, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হক নিপু প্রমুখ।
বিএনপির গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলন চূড়ান্তের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (৩ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার জীবনভিত্তিক বই মেলা ও চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানের দলটি।
জিয়াউর ও বিএনপির নেতারা যে কাজ কর্ম করে থাকে সেটা নিয়ে একটা মিউজিয়াম করার বিষয়ে ভাবনা আছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কথা বলে শেষ করে যাবে না। আওয়ামী লীগ জিয়াউর রহমানকে বলে অখ্যাত। ঠিকিই কিন্তু এই অখ্যাত মানুষটাই দেশের মানুষকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করেছেন। যখন জাতি দিশেহারা, তখন তিনি সাহসী কণ্ঠে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার ডাক দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, আমি মেজর জিয়া বলছি। আই রিভোলট।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান সত্যিই দেশের অগ্রদূত হয়ে জন্ম নিয়েছিলেন। যখনি ক্রান্তিকাল দেখা দিয়েছে। তখনই তিনি মানুষের হয়ে বেরিয়ে এসেছেন। জাতি যখন দিক হারিয়ে ফেলেছিলেন। তখনই তিনি মানুষের জন্য অগ্রনায়ক হয়ে এসেছেন। সেটা হলো ৭৫ পরবর্তী সময়। যখন দেশের মধ্যে অরাজকতা চলছিল। সেদিন এই অখ্যাত মানুষটির কণ্ঠেই ভেসে আসে, আমি মেজর জিয়া বলছি। দায়িত্ব নিয়ে তিনি দেশের মানুষকে নিয়ে কাজে নেমে পড়েছিলেন।
নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আমাদের এই আন্দোলন চূড়ান্তের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে আমাদের ১৭ জন নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে চালিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, আজ বিশ্বের কাছে এই সরকারের ভোট চুরির কর্ম প্রমাণিত হয়েছে। আজ তারাও এদেরকে বিশ্বাস করতে চাচ্ছে না। বিশ্ব জানে এই সরকারের অধীনে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। এটা আশা করা যায় না। তাই এদেরকে পতন করিয়ে আমাদের যে গণতান্ত্রিক ব্যাবস্থা প্রতিষ্ঠিত করা যে চূড়ান্ত লক্ষ্য তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্সের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, মোহাম্মদ শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, প্রফেসর ড তাজমেরী এস এ ইসলাম সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
বক্তব্য রাখার পূর্বে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ দলটির নেতৃবৃন্দ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জীবনী চিত্র প্রদর্শন করেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানা বৈশ্বিক সংকটেও এবার ঘুরে দাঁড়াবার বাজেট দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শনিবার (৩ জুন) সকালে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি আজ বড় বড় কথা বলে। তারা লুটপাটের বাজেট বলে, যাদের অর্থনীতি ছিল লুটপাটের। বিএনপির অর্থনীতি ছিলো লুটপাটের, তাদের চেয়ে ১০ গুণ বেশি বাজেট দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন উর্ধ্বগতি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট এবং প্রহসনের বাজেটের প্রতিবাদে রাজধানীতে এবি পার্টি’র বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।
শুক্রবার (২ জুন) বিকেল ৪ টায় আমার বাংলাদেশ পার্টি- এবি পার্টি’র বিজয় নগরস্থ কেন্দ্রীয় অফিস চত্বরে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
দলের সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব আনোয়ার সাদাত টুটুলের সঞ্চালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাড. তাজুল ইসলাম। সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মন্জু।
সমাবেশের প্রধান বক্তা মজিবুর রহমান মন্জু বলেন, বাজেট তৈরি করা হয় দেশের মানুষের প্রয়োজন ও প্রত্যাশাকে সামনে রেখে। কিন্তু সরকার বাজেট তৈরি করেছে নিজেদের এবং তাদের তল্পিবাহক সিন্ডিকেটের উচ্চবিত্ত সদস্যদের স্বার্থ রক্ষার্থে। প্রচন্ড গরমে মানুষ ঘুমাতে পারছেনা, বিদুৎ খেকো দুর্নীতিবাজ সরকারের লোড শেডিংয়ের যন্ত্রনায় মানুষের জীবন দুর্বিষহ। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকটের কারণে নিত্য প্রয়োজনীয় সকল কিছুর দাম বেশি। এখন দেশের বেশিরভাগ মানুষের সবচাইতে বড় প্রয়োজন খেয়ে পরে কোন রকম বেঁচে থাকা। সরকার এমন বাজেট প্রস্তাব করেছে যাতে মনে হচ্ছে তারা চায় নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণি ধুকে ধুকে মৃত্যুমুখে পতিত হোক।
সরকার যে বাজেট ঘোষণা করেছে এর মাধ্যমে জনগণের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করা হয়েছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, জনগণের আয় বৃদ্ধি না পেলেও সরকার যে কর বৃদ্ধি করেছে তা জনগণকে ঋণগ্রস্থ করে ফেলবে। এই বাজেটে দরিদ্র মানুষের জন্য কিছু নেই, ধনীদের সুবিধা নির্ভর বাজেট করতে যাচ্ছে সরকার। এই কল্পিত অবাস্তব বাজেটের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান নিতে হবে। তিনি বলেন এবারের বাজেট বরাবরের মতই গতানুগতিক, উচ্চাভিলাষী ও লুটপাটের ধারা অব্যাহত রাখার বাজেট বলে আমরা মনেকরি।
সভাপতির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলেও বাংলাদেশে জ্বালানির দাম না কমানো জনগণের অধিকার হরন ও তাদের প্রতি চরম নিষ্পেষণ। এই বাজেটে চলমান দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি আরও দীর্ঘায়িত হবে। বিদ্যুৎ সংকট চরম পর্যায়ে যাবে। জনজীবনে দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পাবে। আমরা বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে বাৎসরিক বাজেট থেকে চাই স্বচ্ছলতা ও সন্মান। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকার করছে উল্টোটা। যাদের আয় নেই, ট্যাক্স দেয়ার সামর্থ নেই, কিন্তু আয়কর পরিচিতি নম্বর আছে, সরকার তাদেরকে ২০০০ টাকা ট্যাক্স দিতে বাধ্য করছে। তিনি বলেন জনগন এই বাজেট ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে।
বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন দলের যুগ্ম-সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, এবি যুব পার্টির আহ্বায়ক এবিএম খালিদ হাসান, সহকারী সদস্য সচিব এম আমজাদ খান, প্রকৌশলী মোহাম্মদ লোকমান, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হুসেইন, মহানগর দক্ষিনের যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার ফারুক, যুব পার্টির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এম ইলিয়াছ আলী, যুব পার্টির সদস্য সচিব শাহাদাত উল্লাহ টুটুল, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব ফিরোজ কবীর, কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আলী নাসের খান, অ্যাডভোকেট সুলতানা রাজিয়া, হাদিউজ্জামান খোকন, ফেরদৌসী আক্তার অপি, মাসুদ জমাদ্দার রানা, সেলিম খান, শফিউল বাশার, আহমদ বারকাজ নাসির, শিলা আক্তার, ছাত্রনেতা আশরাফুল ইসলাম নির্ঝর, সিএম আরিফ প্রমূখ।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
প্রস্তাবিত বাজেটের সাথে দেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতার কোন সঙ্গতি নেই বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
শুক্রবার (২ জুন) দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন ।
তিনি বলেন, এটা একটা স্বজনতোষী, দুর্নীতিবান্ধব বাজেট। এতে দেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকট সমাধানের কোন উদ্যোগ বা দিকনির্দেশনা নেই। এই বাজেট বাস্তবায়ন করাও সম্ভব নয়।
মান্না বলেন, বাজেটে আইএমএফ এর শর্তের ব্যাপারে পরিষ্কার করে কিছু বলা হয়নি। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি রোধ করার কোন পরিকল্পনা নেই এই বাজেটে। অর্থনৈতিক সংস্কারের বিষয়েও পরিষ্কার বক্তব্য নেই। জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি, প্রবাসী আয়ের যে প্রাক্কলন করা হয়েছে তা কল্পনাপ্রসূত। আয় না থাকলেও টিআইএনধারীদের ২ হাজার টাকা পরিশোধের যে বিধান করা হয়েছে তা জনগণের পকেট কাটার আরেকটি উদ্যোগ। মূল্যস্ফীতির লাগাম টানার কোন পরিকল্পনা নেই এই বাজেটে।
গণতন্ত্র মঞ্চের এই শীর্ষ নেতা বলেন, সরকার যেখানে রিজার্ভ সংকটের কারণে কয়লা আমদানি করতে পারছে না, তেল আমদানি করতে পারছে না, যে কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ করতে হচ্ছে, সেখানে রিজার্ভ বাড়ানোর উদ্যোগ না নিয়ে নতুন করে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছে এই বাজেটে। লুটপাটের অবারিত সুযোগ তৈরি করার জন্যই এইসব প্রকল্প গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার।
ডাকসুর সাবেক দুইবারের ভিপি বলেন, এটা একটা স্বজনতোষী বাজেট। সরকার এবং সরকারি দল সংশ্লিষ্টদের দূর্নীতি ও লুটপাটের সুযোগ তৈরি করে দেয়ার জন্যই এরকম একটা বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে। এই সরকারের কাছে এর চেয়ে বেশি কিছু আশা করাও যায় না। কারণ এই সরকার জনগণের সরকার নয়। এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে জনগণের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হবে না।
রাজধানীর সরকারি কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এম ওয়াসিম রানার (৩০) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন তার বন্ধুরা। শুক্রবার (০২ জুন) রাত সাড়ে ১২টার দিকে চানখারপুলের একটি বাসায় তার বন্ধুরা তাকে দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে।
অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রানার বন্ধু ইমরান হোসেন বাবু জানান, 'রানা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলায়। কয়েক দিন যাবৎ রানার খু্ব মন খারাপ ছিল। একাকী থাকতে চাইত। চুপচাপ থাকত। তবে কী চিন্তা করত সে ব্যাপারে কিছু বলত না। তাই আমি তাকে বলেছিলাম- বন্ধু, তুমি কিছুদিনের জন্য কক্সবাজার ঘুরে আস।'
ঘটনার পরপরই রানার স্ত্রী পরিচয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে রাত দেড়টার সময় সানজিদা নামে এক মেয়েকে আহাজারি করতে দেখা যায়। সানজিদা আক্তার (জান্নাতি) কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
সানজিদা আক্তারের প্রতিবেশী মাইদুল ইসলাম জানান, 'সানজিদা আপুকে আমরা জান্নাতি আপু বলে ডাকি। রানা ভাইয়ের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে অনেকদিন আগে। রাজনৈতিক কারণে বিষয়টি জানাজানি হয়নি। জান্নাতি আপু ডেমরা রূপগঞ্জের তারাবো এলাকায় একটি বাসায় থাকতেন।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক এক সহসভাপতি বলেন, 'আমরা জানতাম, সানজিদার সঙ্গে প্রেম ছিল। বিয়ে হয়েছিল কি-না তা সঠিক জানি না।' মৃত্যুর কারণ যা-ই হোক, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসল রহস্য উন্মোচন করে বিচারের দাবি জানান তিনি।
রানার মৃত্যুর খবরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন এবং তারা শোক জানান। আজ (০৩ জুন) শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় কবি নজরুল সরকারি কলেজ মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
টেস্ট ক্রিকেটে সিলেটের পথচলা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। অভিজাত সংস্করণে যা ছিল দেশের অষ্টম ভেন্যু। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পা রাখে দেশের সবচেয়ে সুন্দর এই স্টেডিয়ামটি। তবে মাঠের অভিষেক ম্যাচেই হেরে যায় বাংলাদেশ। তারপর আর কোনো পাঁচ দিনের খেলা গড়ায়নি এই মাঠে। এ নিয়ে স্থানীয়দের আক্ষেপের শেষ নেই।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ফুরাচ্ছে। পাঁচ বছর পর আবারও টেস্ট ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট আয়োজন করতে পারব বলে আশা করছি। এটি আমাদের জন্য খুব একটি উপলক্ষ হবে। কারণ পাঁচ বছর পর সিলেটের মাঠে টেস্ট ক্রিকেট ফিরবে।’
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল সিলেট সফর করেছে। তারা সেখানকার মাঠসহ সব সুযোগ সুবিধা পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সবকিছু দেখে তারা এখানে আরও বেশি ম্যাচ আয়োজনের জন্য উন্মুখ বলে জানিয়েছেন বিসিবির নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান নাদেল।
তিনি যোগ করেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল আমাদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেশ মুগ্ধ। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে আমরা তাদের সব প্রত্যাশা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারব।’
এফটিপি সূচি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজে খেলার কথা নিউজিল্যান্ডের। তবে সিরিজটি হবে দুই ভাগে। প্রথম ভাগে সেপ্টেম্বরের শেষভাগে বাংলাদেশের সঙ্গে ওয়ানডে খেলবে কিউইরা। এই সিরিজ খেলেই বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে দুই দল।
বিশ্বকাপের পর হবে দুই দলের টেস্ট সিরিজ। নভেম্বরের শেষ দিকে আবারও বাংলাদেশে আসবে কিউইরা। বিসিবি প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী ২১ নভেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা সফরকারীদের। এরপর একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে দলটি। ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের প্রথম টেস্ট।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ৩০০ আসনের সীমানা নির্ধারণ করে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রকাশিত গেজেটে কয়েকটি আসনে পরিবর্তন এসেছে।
গত বৃহস্পতিবার ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত গেজেট শনিবার (৩ জুন)বিজি প্রেসের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০২১-এর ধারা ৬-এর উপধারা (৩)-এর অধীনে সংসদের পুনর্নির্ধারিত নির্বাচনী এলাকার প্রাথমিক তালিকা গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রকাশিত হয় এবং ওই বিজ্ঞপ্তির অনুচ্ছেদ ৩-এর অধীন পুনর্নির্ধারিত নির্বাচনী এলাকার বিষয়ে দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত আহ্বান করা হয়।
আরও বলা হয়, পরে নির্ধারিত সময়সূচি মোতাবেক প্রাপ্ত দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামতের ওপর কমিশন কর্তৃক প্রকাশ্য শুনানি গ্রহণ করা হয়। নির্বাচন কমিশন উক্ত আইনের ধারা ৬-এর উপধারা (৪) অনুযায়ী দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত পর্যালোচনা করে প্রাথমিক তালিকায় প্রকাশিত নির্বাচনী এলাকার প্রয়োজনীয় সংশোধন করে সংযুক্ত তপশিল মোতাবেক জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের পুনর্নির্ধারিত সীমানার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করল।
চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে চাপ চাপ রক্ত, ছেঁড়া জামাকাপড়, খাবার, ব্যাগপত্র, রক্তমাখা দেহ। এসবের মাঝেই ভাঙা লাইনের উপর পাওয়া গেলো ছোপ ছোপ রক্তমাখা একটি কবিতার খাতা।
খাতায় লেখা বিভিন্ন রকমের ভালোবাসার কবিতা, মাঝে মাঝে আবার নকশাও আঁকা। হাতে নিয়ে পাতা উল্টাতেই চোখে পড়ল,
‘‘অল্প অল্প মেঘ থেকে হালকা হালকা বৃষ্টি হয়, ছোট্ট ছোট্ট গল্প থেকে ভালোবাসা সৃষ্টি হয়....’’
পাতা উল্টাতেই চোখে পড়ল আরও একটি কবিতা। তার শুরুতে লেখা,
‘ভালোবাসা এই মন তোকে চায় সারাক্ষণ,
আছিস তুই মনের মাঝে
পাশে থাকিস সকাল সাঁঝে।
কী করে তোকে ভুলবে এই মন,
তুই যে আমার জীবন...’
কবিতাটি লেখক কে, কার জন্য এই কবিতা লিখা, তা জানার উপায় নেই। সম্ভবত, কবিতার খাতার মালিক দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনটিতেই ছিলেন। দুর্ঘটনার ভয়াবহতা এতটাই বেশি ছিল যে, সেই কবিতার খাতা ছিটকে এসে পড়েছে ভাঙা লাইনে।
কবিতার খাতার মালিক সুস্থ, আহত না মৃত, তাও জানা সম্ভব হয়নি। যিনি লিখেছেন, তিনি পুরুষ না মহিলা তা-ও জানা সম্ভব হয়নি। তবে লেখা পড়ে বোঝা যায়, কবিতাটি প্রিয় কারও উদ্দেশে লেখা। যাঁর উদ্দেশে এই কবিতা লেখা, এই কবিতার খাতা কি তাঁর কাছেও কোনও দিন পৌঁছাবে! তাও জানার উপায় নেই।
ভারতের ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনাস্থলে এই কবিতার খাতা হাতে পায় আনন্দবাজারের প্রতিনিধি। এভাবেই এক প্রতিবেদনে বর্ণনা তুলে ধরে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির তথ্যমতে, শনিবার ভোর পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৩৩। আহত ৯০০ জনের বেশি। ভেতরে এখনও আটকে আছে অনেক মানুষ।
প্রথম দুই সেটই গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। প্রথমটি নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫ মিনিটে। দ্বিতীয়টিও টাইব্রেকারে। সেটির নিষ্পত্তি ঘণ্টার ওপরে। দুটোতেই জয় নোভাক জকোভিচের। তারপরেরটিও জিতে যান এই সার্বিয়ান। ১৪তম ফ্রেঞ্চ ওপেনের খেলায় স্পেনের আলেজান্দ্রো ফোকিনার সঙ্গে ৩-০ সেটে জয়লাভ করেন তিনি। যে জয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছেন তিনি।
৩৬ বছর বয়সী এই নাম্বার ওয়ান টেনিস তারকা প্রথম সেটে কিছুটা ছন্দহীন ছিলেন। তবে চ্যাম্পিয়নদের ঘুরে দাঁড়াতে তো সময় বেশি লাগে না। জকোভিচও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তারপর ফোকিনাকে কোনো সেট জিততে না দিয়েই ম্যাচ শেষ করেন তিনি।
প্রায় ৪ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই ম্যাচটিতে এক পেশে জয় হলেও প্রতিটি সেটেই উত্তেজনার পারদ ছড়িয়েছেন দুজন। সমর্থকেরাও বারবার হয়েছেন রোমাঞ্চিত। তবে শেষ পর্যন্ত নোভাক জকোভিচের সমর্থকেরাই হাসি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আগামী সোমবার জকোভিচ শেষ ষোলোর ম্যাচ খেলতে নামবেন। সেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে কার্লোস আলকারাজকে পেতে পারেন তিনি।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।