
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, সরকার ক্ষমতায় থাকতে বিদেশি শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। তারা গোপন চুক্তির মাধ্যমে দেশের বহু এলাকা বিদেশিদের কাছে তুলে দিয়ে আগ্রাসনের পথ করে দিয়েছে। ক্ষমতা থেকে গেলে সব বের হবে। তখন কোনো প্রভু তাদের বাঁচাতে পারবে না।
আজ শনিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি দেশের জন্য লজ্জার। সরকারের লোকজনকে কোথাও ভিসা দেয়া হবে না। কোনো সভ্যদেশ আপনাদের যায়গা দেবে না, কোথাও আপনাদের যায়গা হবে না। বাংলার মাটিতেই থাকতে হবে। সকল অপকর্মের বিচার এই দেশের মাটিতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করছে সরকার। বিএনপির কর্মীদের ঘরে ঘুমাতে দেয়নি তারা। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের বিচার হবে, শাস্তি হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের উস্কানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। কিন্তু বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবেই সবকিছু মোকাবিলা করবে। জনগণই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। এ সময় দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের প্রতিরোধ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে অধীনেই নির্বাচন হবে। সরকারকে বিদায় নিতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। জনগণ অতীতের মতো আবারও বিএনপিকে ক্ষমতায় আনবে।
ঝড়বৃষ্টিসহ দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া উপেক্ষা করে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতাকর্মীরা খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন। অবিলম্বে বর্তমান সরকার পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবি ও দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, হয়রানি ও নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনুর মুক্তি দাবিতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া দেশের ১৫ জেলা ও মহানগরে আজ জনসমাবেশ করছে বিএনপি। একইসঙ্গে সমমনা গণফোরাম জোটের উদ্যোগেও একই কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সরকার বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বিষয়ে যথেষ্ট আন্তরিক, বরং বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে রাজনীতি করছে।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় শেখ রাসেল এভিয়ারি পার্কে নতুনভাবে চালুকৃত ক্যাবল-কার (রোপওয়ে) উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, 'খালেদা জিয়া যতোবারই হাসপাতালে গেছে ততবারই বিএনপি বলেছে বিদেশ না পাঠালে খালেদা জিয়ার জীবন সংকটাপন্ন এবং তাকে বাচাঁনো কঠিন হবে। কিন্তু প্রতিবারই আল্লাহর রহমতে তিনি হাসপাতালে বাংলাদেশের চিকিৎসকদের চিকিৎসা ও সেবায় সুস্থ হয় বাড়ি ফেরত গেছেন। এখনো বেগম খালেদা জিয়া যাতে সর্বোচ্চ চিকিৎসা পান সরকার সেজন্য যা কিছু করা দরকার সেটি করছে।'
চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের আয়োজনে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক বিপুল কৃষ্ণ দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বনবিভাগের 'সুফল' প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও উপপ্রধান বন সংরক্ষক গোবিন্দ রায়, চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের ডিএফও আবদুল্লাহ আল মামুন, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বজন কুমার তালুকদার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউল গনি ওসমানী, রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. নাহিদ হাসান প্রমুখ।
ঢাকা মহনগর উত্তর আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য পদসহ সকল সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছেন হক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মানবিক বাংলাদেশ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আদম তমিজি হক।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বরাবর লেখা একটি আবেদনপত্র ফেসবুকে পোস্ট করেন আদম তমিজি হক।
ধর্ম ও ব্যবসায়িক কাজে মনোনিবেশ করতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
আবেদনপত্রে আদম তমিজি হক লিখেছেন, ‘মাননীয় সভানেত্রী, যথাবিহিত সম্মানপূর্বক নিবেদন এই যে, আমি আদম তমিজি হক বিগত সাত বছর যাবত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাথে একনিষ্ঠভাবে কাজ করে আসছি এবং দলের পক্ষে যথাসম্ভব উন্নয়নমূলক কাজে অবদান রেখেছি। এই ধারাবাহিকতায় আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য পদ লাভ করি।’
‘মাননীয় সভানেত্রী বর্তমানে আমি পরিবারসহ সৌদি আরবে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করার কারণে রাজনীতির সাথে সংযুক্ত থাকা সম্ভব হচ্ছে না। আমি আমার বাকি জীবনের সময়টুকু দ্বীনের (ইসলাম ধর্মের) পথে এবং ব্যবসায়িক কাজে মনোনিবেশ করতে চাচ্ছি। তাই, আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সকল পদ থেকে অব্যাহতি চাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এখন ভোটের অধিকার জনগণের হাতে। কাজেই নির্বাচিত সরকারই নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা গ্রহণ করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন আর ফিরে যাওয়ার উপায় নেই। এখন আমাদের সংবিধানও জনগণের ভোটাধিকার সুরক্ষিত করে। নির্বাচিত সরকারের পরিবর্তে একটি নির্বাচিত সরকার (ক্ষমতায়) আসবে।’
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) প্রচারিত ভয়েস অফ আমেরিকার (ভোয়া) বাংলা সার্ভিসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা এই মন্তব্য করেন। গত ২৭ সেপ্টেম্বর ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের প্রধান শতরূপা বড়ুয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওয়াশিংটন সফরের সময় ওই সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। ওই সাক্ষাৎকারের ভিডিও ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এক সময় তারা (বিএনপি) তত্ত্বাবধায়ক সরকারের (সিজি) বিরোধিতা করত, এখন তারা দাবি করছে, কিন্তু ভবিষ্যতে তারা কী করবে তা নিশ্চিত নয়। তাছাড়া বিএনপি এই (সিজি) ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা হাইকোর্টের বিচারকদের বয়স বাড়ানো, ১.২৩ কোটি ভুয়া ভোটার দিয়ে ভোটার তালিকা প্রণয়নসহ ইচ্ছে মতো সরকার বসানোর জন্য নানা ধরনের অপকর্ম করেছে। কোনোটাতেই কাজ হয়নি, কারণ জনগণ তা মেনে নেয়নি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি যখন ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে যায়, তখন আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের (সিজি) জন্য আন্দোলন করেছিলাম। যখন ভোট চুরি হয়েছিল, তখন জনগণ তা চেয়েছিল (সিজি)। তখন বিএনপি নেত্রী (বেগম খালেদা জিয়া) বলেন, পাগল ও শিশু ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নয়, এটা তাদের বক্তব্য। তারা এর বিরুদ্ধে ছিল।’
তিনি বলেন, দ্বিতীয় বিষয় ছিল ২০০৮ সালে সিজির অধীনে নির্বাচন হয়েছিল, কারণ বিএনপি ২০০১ থেকে ২০০৬ মেয়াদে তাদের বিভিন্ন অপকর্মের কারণে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, মানি লন্ডারিং এবং জরুরি অবস্থা জারি করেছিল।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার (সিজি) আসে। কিন্তু তারা দুই বছর নির্বাচন দেয়নি, বরং আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালে যখন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তখন তাও সিজির অধীনে অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সেই নির্বাচনে বিএনপি কতটি আসন পেয়েছিল?
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জামায়াতসহ বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ৩০০ আসনের মধ্যে মাত্র ২৯টি আসন পেয়েছে এবং তারপর তারা পুনরায় নির্বাচনে আরেকটি আসন পায়, ফলে তাদের আসন সংখ্যা ৩০ হয়। সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে তারা এই পরিস্থিতির প্রত্যক্ষ করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ জন্য তারা ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন এবং তা বানচাল করতে আগুন সন্ত্রাস করেছিল।’
আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা ৩ হাজারের বেশি মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, হাজার হাজার গাছ কেটেছে, রাস্তা কেটেছে, ৫০০ টিরও বেশি ভোটকেন্দ্র ও স্কুল পুড়িয়ে দিয়েছে, বোমা মেরে আদালতে বিচারক হত্যা করেছে। তারপর ২০১৮ সালের নির্বাচন এলো এবং তারা এতে অংশগ্রহণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৩০০টি আসনে প্রায় ৭৫০টি মনোনয়নপত্র ছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কারণ, একটি মনোনয়ন এসেছে লন্ডন থেকে, আরেকটি তাদের গুলশান অফিস থেকে এবং অন্যটি এসেছে পুরানা পল্টন অফিস থেকে।’
তিনি বলেন, ‘এভাবে, যখন প্রতিটি আসনে দুই বা তিনজনকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। সে নির্বাচনেও তারা ব্যর্থ হয়। নির্বাচনে তারা মাত্র কয়েকটি (সিট) জিতেছে।’
বিএনপি কখনোই অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করেনি উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তারা সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না।
তিনি জানতে চান ‘তারা হঠাৎ সিজির দাবি করছে কেন? প্রশ্ন হলো, তাদের নেতা কে? জনগণ কাকে ভোট দেবে? জনগণ এমন একজন নেতা দেখতে চায়, যিনি ভোট দিলে আগামীতে এই দেশ পরিচালনা করবেন। এমন কাউকে সামনে আনতে পেরেছেন যাকে নিয়ে তারা নির্বাচনে অংশ নেবেন?
শেখ হাসিনা বলেন, এখন পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতসহ ২০ দলীয় জোট আছে, কিন্তু তাদের নেতৃত্ব কোথায়, যারা দেশ পরিচালনা করবে।
তিনি আরো বলেন, ‘তৃতীয় বিষয় হলো নির্বাচন। এটা জনগণের ভোটের অধিকার।’
তিনি বলেন, ২০০৭ সালে যখন জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয় তখন হাইকোর্টের একটি রায়ের পরে তা করা হয়। এতে বলা হয়েছিল যে বাংলাদেশে কোনো অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসতে পারবে না এবং একটি নির্বাচিত সরকারকে অন্য নির্বাচিত সরকার দ্বারা প্রতিস্থাপিত করতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আমি বিএনপিকে জিজ্ঞেস করতে চাই—৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম কই? ভুয়া আল্টিমেটাম, এক দফা ভুয়া, বিএনপি হচ্ছে ভুয়া, আন্দোলন ভুয়া, ক্ষমতা দখল ভুয়া।'
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে কৃষক লীগ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির উদ্দেশে এই কথা বলেন তিনি।
বর্তমান সরকার অবৈধ হলে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার জন্য সরকারের কাছে কেন বারবার আবেদন করা হচ্ছে, সেটা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে তার পরিবারের পক্ষ থেকে সম্প্রতি সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে করা এই আবেদনের ওপর রবিবার মতামত দেবে আইন মন্ত্রণালয়।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, এদের হাতে বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিরাপদ নয়, স্বচ্ছ নির্বাচন নিরাপদ নয়, মুক্তিযুদ্ধ নিরাপদ নয়, স্বাধীনতার আদর্শ নিরাপদ নয়। ওরা ৭১ এর বাংলাদেশ চায় না। ওরা চায় খুন আর সন্ত্রাসের বাংলাদেশ, ওরা চায় দুর্নীতি আর স্বৈরাচারের বাংলাদেশ।'
ওবায়দুল কাদের বলেন, 'সামনে নভেম্বর, তারপরে ডিসেম্বর, তারপরে জানুয়ারি, ফাইনাল খেলা। খেলা হবে। প্রস্তুত হয়ে যান, নেত্রী আসছেন। আপনাদের ডাক দিবেন, যখনই ডাক দেবেন রাস্তায় নেমে আসতে হবে। যারা রাস্তা দখল করতে আসবে তাদের খবর আছে। যারা আগুন নিয়ে আসবে তাদের হাত আগুন জ্বালিয়ে দেব, যারা মারতে আসবে তাদের হাত ভেঙে দেব।'
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি নাশকতার পরিকল্পনা করছে। ২০১৪ সালের মতো আবারও দেশে বোমাবাজি, আগুন সন্ত্রাস করলে তাদের হাত ভেঙে দেওয়া হবে।
শনিবার গাজীপুরের কালিগঞ্জে শহীদ ময়েজউদ্দিন আহমেদের ৩৯তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া দণ্ডিত আসামি। তারেক রহমান লন্ডনে বসে ষড়যন্ত্র করছে। সেই দণ্ডিত আসামি কোনদিন এই বাংলাদেশে নেতৃত্ব দিতে পারবে না। বিদেশে বসে বাংলাদেশকে ধ্বংসের জন্য উপদেশ এবং নির্দেশ দিতে পারে, ষড়যন্ত্র করতে পারে। কিন্তু জনগণ আপনাদের সঙ্গে ছিল না, ভবিষ্যতেও থাকবে না। দিন-তারিখ দিয়ে লাভ নেই, ইনশাআল্লাহ সংবিধান সম্মতভাবে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। আমরা এই দেশকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে নিয়ে যাব।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি নেতারা বলে পদত্যাগ করতে হবে। কিসের পদত্যাগ? কার জন্য পদত্যাগ? কী হইছে দেশের যে পদত্যাগ করতে হবে?
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মতিন সরকারের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সিমিন হোসেন রিমি ও মেহের আফরোজ চুমকি প্রমুখ।
আগামী চেস গিল্ড স্কুল দাবায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আইয়ান রহমান ও মনন রেজা নীড়। একক ইভেন্টের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী ক্যাটাগরিতে আইয়ান ও ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে নীড়। ৭ রাউন্ডের খেলায় আইয়ান ও নীড় দুজনই পেয়েছে সাড়ে ছয় পয়েন্ট করে।
বিটজ দলগত বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এলিগেন্ট চেস একাডেমি। এই দলে খেলেছে জারিফ হক আফনান, তাসরিক সায়হান, সিয়াম চৌধুরী ও নীলাভা চৌধুরী। আজ শনিবার দাবা ফেডারেশন কার্যালয়ে শেষ হয়েছে এই প্রতিযোগিতা।
আগামী চেস গিল্ডের আয়োজনে গত ২৮ সেপ্টেম্বর শুরু হয় ‘আমরা ৯২’ আগামী চেস গিল্ড স্কুল রেটিং টুর্নামেন্ট। সুইস লিগ পদ্ধতিতে হয়েছে খেলা। একক ও দলগত দুই বিভাগে অংশ নেয় ১৪৫ জন দাবাড়ু। টুর্নামেন্টে বিজয়ীরা ট্রফি, মেডেল ও সার্টিফিকেটের পাশাপাশি পেয়েছে ৭০ হাজার টাকা।
টুর্নামেন্ট শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন গ্র্যান্ডমাস্টার রিফাত বিন সাত্তার, আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম।
টানা ৬ ম্যাচ জিতে লা লিগার শীর্ষে উঠে এসেছিল জিরোনা। আগের রাতে সেভিয়াকে হারানো বার্সেলোনা সেই জিরোনাকে পেছনে ফেলে। আর রিয়াল মাদ্রিদ এবার উড়তে থাকা জিরোনাকে হারিয়ে লা লিগার কর্তৃত্ব পুনরুদ্ধার করেছে।
শনিবার মন্তিলিভি স্টেডিয়ামে জিরোনাকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে কার্লো আনচেলত্তির দল। রিয়ালের হয়ে গোল তিনটি করেছেন জোসেলু, অঁরেলিয়ে চুয়ামেনি ও জুড বেলিংহাম।
আট ম্যাচের সাতটিতে জিতে রিয়ালের পয়েন্ট এখন ২১। সমান ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে বার্সেলোনা। আর টানা ছয় জয়ের পর রিয়ালের কাছে হেরে যাওয়া জিরোনা ১৯ পয়েন্ট নিয়ে আছে তিনে।
সপ্তাহ খানেক আগেই আতলেতিকো মাদ্রিদে গিয়ে ৩-১ গোলে হেরেছিল রিয়াল। এবার জিরোনায় গিয়ে
প্রথমার্ধেই ২ গোলে এগিয়ে যায় আনচেলোত্তির শিষ্যরা। এর মধ্যে ১৭ মিনিটে বেলিংহামের ক্রস থেকে বল জালে পাঠান জোসেলু। আর ২২ মিনিটে টনি ক্রুসের কর্নার থেকে হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন চুয়ামেনি।
রিয়াল ব্যবধান ৩-০ করে ৭১ মিনিটে। জোসেলুর শট জিরোনা গোলরক্ষক প্রতিহত করলেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি। নাগালে বল পেয়ে দারুণভাবে বল জালে পাঠান বেলিংহাম। এটি রিয়ালের হয়ে ৭ ম্যাচে তার অষ্টম গোল।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নিতে চায় তার পরিবার। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। এদিকে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছেন জার্মান বিএনপি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর বিএনপি নেতারা।
তারা বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জার্মানিতে নেওয়ার কথা ছিল উন্নত চিকিৎসার জন্য। কিন্তু সে সময় শেষ পর্যন্ত তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়। এবার চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে আনার কথা শুনছি। জার্মানিতে খালেদা জিয়ার যে চিকিৎসা দরকার তার আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা জার্মানিতে রয়েছে। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি যদি চেয়ারপারসনকে জার্মানিতে আনা হয় তাহলে আমরা তার জন্য কিছু করার সুযোগ পাব। জার্মানিতে তার ভালো চিকিৎসা হবে।’
এর অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল জার্মান দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) জান রল্ফ জানোস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন। জবাবে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জানোস্কি বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া যে ধরনের সমস্যায় ভুগছেন তার সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা বিশ্বের যে কয়েকটি দেশে সম্ভব জার্মানি তার অন্যতম। বাংলাদেশ সরকার অনুমতি দিলে জার্মানিতে তার সুচিকিৎসা হতে পারে।’
গত ৯ আগস্ট খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত দেড় মাসের বেশি সময় ধরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় খালেদা জিয়া ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে অনেক দিন ধরে তার লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়ে আসছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, লিভার সিরোসিসের কারণে খালেদা জিয়ার হৃদ্যন্ত্র ও কিডনির জটিলতা বেড়েছে। তিনি হাসপাতালে কখনো কিছুটা ভালো থাকছেন, পরক্ষণেই তার স্বাস্থ্যের পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। ফলে তাকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘লিভার সমস্যার কারণে ম্যাডামের শ্বাস কষ্ট হয়। ইতোমধ্যে তাকে দুইবার করোনারী কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রাখা হয়েছিল। লিভার প্রতিস্থাপন করতে পারলে শ্বাসকষ্টটা হতো না।’
এদিকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতির লক্ষণ না থাকায় তার পরিবার ও বিএনপির পক্ষ থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি এখন সামনে এসেছে।
খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নেওয়া হতে পারে এমন খবরে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও খোঁজখবর নিচ্ছেন জার্মান বিএনপি নেতারা।
জার্মান বিএনপির সভাপতি আকুল মিয়া বৃহস্পতিবার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘জার্মানিতে ম্যাডামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আনা হতে পারে বলে জানতে পেরেছি। আমরা খুবই খুশি। কারণ জার্মানিতে আসলে আমরা তার চিকিৎসার বিষয়ে আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করতে পারব। চেয়ারপারসনের যে চিকিৎসা দরকার তা সকল ব্যবস্থা জার্মানিতে রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ম্যাডামের মুক্তি, তার উন্নত চিকিৎসা ও গণতন্ত্র ফেরাতে দেশে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে জার্মানিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছি। আগামী ৯ অক্টোবর আমাদের কর্মসূচি রয়েছে। জার্মান বিএনপির উদ্যোগে রোডমার্চ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করব জার্মান পার্লামেন্টের সামনে। ’
আকুল মিয়া বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যখন বিদেশে নেওয়ার আলোচনা চলছিল তখনও জার্মানিতে নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়েছিল। সে সময় তারেক রহমানের সেবা করতে না পারলেও চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সেবা করতে পারব বলে আশা করছি। তার চিকিৎসা জার্মানিতে করতে পারলে আমরা ধন্য হবো।’
গত ২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার খালেদা জিয়ার ছোট ভাই সাঈদ ইস্কান্দার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করেছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনি মতামত জানতে চেয়ে আবেদনের কপি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে করা আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। খালেদা জিয়ার ভাইয়ের আবেদনটি অল্প সময়ের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।’
গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত অভিযোগে দেশের কিছু ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়টি নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পাল্টা বক্তব্য দিতেও শুরু করেছে। এতে বিরোধীপক্ষেরই ঝুঁকি দেখছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এই সবপক্ষই চাপে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ অবস্থান নিয়ে রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অন্যকে ঘায়েল করার চেষ্টা হলেও মূলত নির্বাচনী রাজনীতিতে এক ধরনের পরিবর্তন আসবে। একপক্ষ নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিলেও সেই পথ থেকে তাদেরও সরতে হবে। আবার সরকারপক্ষ যেনতেন নির্বাচন করে ক্ষমতায় বসে যাবে সেই সুযোগও থাকছে না। যে যাই বলুক নির্বাচনী রাজনীতিতে সামনের দিনগুলোতে এ পরিবর্তন আসতেই হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সবপক্ষের জন্য। তাদের অবস্থানে বিএনপি উৎফুল্ল হয়ে যাবে, আর আওয়ামী লীগ ধরাশায়ী হয়ে যাবে ব্যাপারটা এমন নয়। বরং এতে এক ধরনের সমাধানের পথ খুলে যেতে পারে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ না দিলেও জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হবে এমন আভাস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
কিন্তু গত বছর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে আসছে। তাদের একাধিক প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফর করে সরকার ও বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছে। সুষ্ঠু নির্বাচনে সমর্থনের কথা জানিয়ে গত ২৪ মে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। যার প্রয়োগের কথা জানানো হলো গত শুক্রবার।
এর আগে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তা ও র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ভিসানীতি প্রয়োগের প্রক্রিয়া শুরুর মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার অনড় অবস্থানের বিষয়টি আবার জানাল। দেশটির এ অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দেখছে দুভাবে। একটি হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখা। দ্বিতীয়টি হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করা বিএনপিকে নির্বাচনে আনা। এর বাইরে অন্য কোনো বিরূপ প্রভাব দেখছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, সরকার এত দিন যেটা চেয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র সেটাই আশা করছে।
তবে বিএনপি ভিসানীতির জন্য সরকারকে দায়ী করেছে এবং সেটা তাদের নেতাকর্মীদের এক দফা আন্দোলনে আরও উজ্জীবিত করবে, এমন দাবি করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কারণে আগামী নির্বাচন যেনতেনভাবে হয়ে যাবে সেটি ভাবার কোনো সুযোগ নেই। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রস্তুতি সবাইকে নিতে হবে। এর বাইরে কোনো রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠী, বাহিনী ও সরকারি কর্মকর্তা যেই হোক শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে প্রভাবিত করা বা একপেশে করার চিন্তা বা পদক্ষেপ গ্রহণ করে এগিয়ে যেতে চাইলে, পড়তে হবে ভিসানীতির আওতায়। যুক্তরাষ্ট্রের অনড় অবস্থান এখন পর্যন্ত সেটাই ইঙ্গিত করে।’
সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করে এক দফা দিয়ে আন্দোলনে আছে বিএনপি। অন্যদিকে সরকারি দল আওয়ামী লীগ বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন করার জন্য এক দফা ঘোষণা করেছে। তারাও শান্তি-সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকারও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। সেটা নিশ্চিত করতে তারা অঙ্গীকারবদ্ধ। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগ এটাও বলে আসছে, তাদের সরকারের চাওয়া আর যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া একই।
নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দুভাবে দেখলেও দলটির বিভিন্ন পর্যায়ে নানা রকম কানাঘুষা রয়েছে। ভেতরে-ভেতরে ‘ভেঙে পড়লেও’ ওপরে শক্ত মনোভাব ধরে রাখার চেষ্টা করছেন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কথা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তারা বেশ বিরক্তি প্রকাশ করেন। তারা বলেন, সরকার ও আওয়ামী লীগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নতুন কিছু নয়। দুপক্ষের অবস্থান একই বলেও দাবি করেন ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা।
সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নির্বাচনে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে আমেরিকার যে অবস্থান তাতে বিএনপিরই ক্ষতি, কারণ তারা ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন হতে দেবে না।’ তিনি বলেন, সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা ও আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় সরকার। সেখানে সব দল নির্বাচনে আসুক সেই আহ্বানও জানানো হয়েছে।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত এবং সহযোগিতা করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই ব্যক্তিদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা রয়েছেন। শান্তিপূর্ণ উপায়ে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা জোরালোভাবে দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র তো বিএনপির দাবি সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেনি। যুক্তরাষ্ট্রের যে অবস্থান সেখানে তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে এসব বলা হয়নি। ফলে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করায় আওয়ামী লীগ বা সরকার কেন বেকায়দায় পড়বে? আমরা মনে করি, বিএনপিই তো বেকায়দায় রয়েছে। কারণ, তাদের দাবি অসাংবিধানিক। আর অসাংবিধানিক উপায় অবলম্বন করছে। তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের এই অনড় অবস্থান বিএনপির বিরুদ্ধে গেছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খানের দাবি, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে শঙ্কিত বিএনপি। তারা তো বিএনপির একটা দাবির কথাও বলে নাই।’ সরকার বা আওয়ামী লীগ ভীত ও শঙ্কিত নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের উচিত বিএনপির প্রতিক্রিয়া জানা।’
আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ বলেন, ‘আমরা যেমন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই, আমেরিকারও একই রকম চাওয়া।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়। যুক্তরাষ্ট্র যে এমন কিছু করবে এটা প্রত্যাশিতই ছিল। এটা সিম্পল ব্যাপার আমাদের জন্য।’
ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় বিরোধী দল আছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যে বক্তব্য এসেছে সে সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিবৃতিতে কোন বিরোধী দলের কথা বলা হয়েছে তা স্পষ্ট করা হয়নি। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। তবে আজকে দেশে গণতন্ত্রের যে সংকট তার জন্য সরকার এককভাবে দায়ী। তা ছাড়া এর আগে বাইডেন প্রশাসন তাদের দেশে যে গণতন্ত্রের সম্মেলন করেছে তাতে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি।’
ভিসানীতি প্রয়োগের জন্য সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ বিগত দুটি বিতর্কিত সংসদ নির্বাচন করার পর আবারও আগামী নির্বাচন একতরফা করতে যে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সে কারণে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। এর দায় সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগকে নিতে হবে। আজকে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ আগের ঘোষণার ধারাবাহিকতা। প্রথমদিকে নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতি বাংলাদেশের রাজনীতিতে, সাধারণ মানুষের ভেতর যে বড় ধাক্কা মনে হয়েছিল, ঘোষণা আসার পর সেটা মনে হয়নি। তবে কোনো একটা সমীকরণ থেকেই যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এর প্রভাব কত দূর যাবে সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনে কী বার্তা যাবে সেটা পরিষ্কার নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা তাদের বৈশি^ক চর্চারই অংশ। মূল কথা হলো, এটা সবার জন্যই চাপ।’
বিশ্বকাপের দল ঘোষণা নিয়ে চলছে নানা নাটকীয়তা। রাতটা পোহালেই বাংলাদেশ দল উড়াল দেবে ভারতের গোয়াহাটিতে। তবে এখনও ঘোষণা করা হয়নি দল। বিসিবি জানিয়েছে, নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে চলমান তৃতীয় ওয়ানডের ম্যাচ শেষেই জানানো হবে বিশ্বকাপের দল।
প্রচুর আলোচনা ও জল্পনা–কল্পনার পর আজ বিশ্বকাপে নিজেদের স্কোয়াড ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিসিবির ফেসবুক পেজে আজ দুপুর ১টা ২৮ মিনিটে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। সেখানে দেখা যায় বিসিবির লোগোসংবলিত বক্সে করে গুরুত্বপুর্ণ কিছু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভিডিও–র শেষে প্রশ্ন করা হয়েছে, বলুন তো ভেতরে কি?
বিকেল ৫টা ৪৩ মিনিটে আরেকটি পোস্টে জানানো হয় সন্ধ্যা পৌণে ৬টায় ঘোষণা করা হবে দল। কিন্তু ৫টা ৪০ মিনিটে আরেকটি পোস্টে জানানো হয় তৃতীয় ওয়ানডের শেষেই দল ঘোষনা করা হবে।
তার নাম শেখ মোহাম্মদ আসলাম। একসময় সুইডেন ছিলেন বলে পরিচিত হয়ে ওঠেন স্ইুডেন আসলাম নামে। তেজগাঁও এলাকার এই শীর্ষ সন্ত্রাসী একসময় ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড বা অপরাধ জগৎ কাঁপাতেন। ২৭ বছর ধরে আছেন কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে। হত্যাসহ ১৭ মামলার একটি ছাড়া বাকিগুলোতে জামিন পেয়েছেন তিনি। কিন্তু বহু দিনের পুরনো প্রতিপক্ষের হাতে প্রাণ হারানোর শঙ্কায় জামিনের জন্য আবেদন করছেন না তিনি।
মোহাম্মদপুর এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলালও জামিনের আবেদন করছেন না। প্রায় ২০ বছর ধরে কারাগারে থাকা হেলালের বিরুদ্ধে আছে অন্তত এক ডজন মামলা। বেশিরভাগ মামলায় জামিন হয়ে গেছে। এই দুজনের মতোই কারা হাজতে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীরা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছেন না। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে কেউ সাক্ষ্যও দিতে আসেন না আদালতে। তারা বছরের পর বছর ধরে কারাগারে থাকলেও সমস্যা হচ্ছে না। অনেকেই অসুস্থ না হয়েও বছরের পর বছর হাসপাতালে আরামে
থাকছেন। বাইরে থাকা তাদের সহযোগীদের সঙ্গেও যোগাযোগ থাকছে। এই সহযোগীরাই তাদের হয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ করছেন।
পুলিশের তালিকায় ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম আছে যাদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। অবশ্য এই তালিকায় সুইডেন আসলাম নেই। তালিকা করা হয় ২০০১ সালের ২৬ ডিসেম্বর। এদের মধ্যে ১৩ জন বিদেশে আত্মগোপন করে আছেন। কারাগারে আছেন ৬ জন, মারা গেছেন ৩ জন। একজনের কোনো হদিস নেই।
এই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আটজনকে ১ লাখ টাকা এবং ১৫ জনকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়। এর মধ্যে পিচ্চি হান্নান র্যাবের ক্রসফায়ার, গণপিটুনিতে আলাউদ্দিন ও কামাল পাশা ওরফে পাশা কারাগারে মারা গেছেন। কালা জাহাঙ্গীর বেঁচে আছেন নাকি আত্মগোপনে, কেউ বলতে পারছেন না। পিচ্চি হেলাল, টিটন, ফ্রিডম সোহেল ও কিলার আব্বাস কারাগারে আছেন। খোরশেদ আলম ওরফে রাশু কিছুদিন আগে ছাড়া পেলেও কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আবার আটক করেছে। মশিউর রহমান কচি, সুব্রত বাইন, আমিন রসুল সাগর. ইমাম হোসেন, প্রকাশ কুমার বিশ্বাস, মোল্লা মাসুদ, শামীম আহমেদ, হারিস আহমেদ, তানভিরুল ইসলাম জয়, জাব্বার মুন্না, জাফর আহমেদ, কামরুল হাসান হান্নান ওরফে ছোট হান্নান দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তাদের ধরতে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি করা আছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে আসার চেষ্টা করছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তাদের ব্যবহার করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি আন্ডারওয়ার্ল্ডে একে অপরকে ঘায়েল করার চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে গাড়ি থামিয়ে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ভাগ্যক্রমে তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও গুলিবিদ্ধ এক পথচারী সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে আছেন। এ ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন জড়িত বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আন্ডারওয়ার্ল্ড উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোও। দেশের বাইরে থাকা সন্ত্রাসীরা নিজেদের সহযোগীদের মাধ্যমে নতুন করে আধিপত্য বিস্তারের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এমনকি কারাগারে থাকা সন্ত্রাসীরাও সহযোগীদের নানা বিষয়ে বার্তা দিচ্ছে। এর মধ্যে কেউ কেউ রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত হতে চাইছে। যে কারণে সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে পুলিশ সদর দপ্তর সব কটি ইউনিট, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার এসপিদের বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের সদর দপ্তরে আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসীদের বিষয়ে নতুন করে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কারাগার কর্তৃপক্ষকেও হাজতি ও বন্দি সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, যেসব সন্ত্রাসী দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আটক আছে, তাদের একটি তালিকা করেছে একটি সংস্থা। এ বিষয়ে বলা হয়েছে, আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও তারা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছে না। তারা কারাগারকেই নিরাপদ মনে করছে।
কারা সূত্র জানায়, শীর্ষ সন্ত্রাসী সুইডেন আসলাম একটি মামলায় জামিন না নেওয়ায় কারাগারে আছেন। বাকি সব মামলার জামিন হয়ে গেছে। ২৭ বছরের কারাজীবনে তার দুইবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। বেশিরভাগ সময় কেটে যাচ্ছে হাসপাতালে থেকেই। হুইলচেয়ারে করে চলাফেরা করেন সব সময়। মোবাইল ফোনে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ করেন সহযোগীদের সঙ্গে। তার স্ত্রী আয়েশা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।
সুইডেন আসলামের বিষয়ে তার এক আত্মীয় দেশ রূপান্তরকে বলেন, এলাকায় তার যখন একক আধিপত্য ছিল, তখন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল। তারাই এখন তার বিরুদ্ধে। সুইডেন আসলাম বের হয়ে এলে প্রতিপক্ষরাই তাকে মেরে ফেলবে, এমন শঙ্কা আছে। এসব দিক বিবেচনা করেই তিনি বের হতে চাইছেন না। কারাগারেই তিনি ভালো আছেন।
জানা গেছে, সুইডেন আসলামের বিরুদ্ধে মামলাগুলোতে কোনো সাক্ষীও পাওয়া যায় না। ১৯৮৬ সালে তিনি অপরাধ জগতে যুক্ত হন। ওই বছর পূর্ব রাজাবাজারে স্কুলের সামনে কিশোর শাকিলকে গুলি করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। তারপর থেকে তার বিরুদ্ধে একের পর এক হত্যাকা-সহ নানা অপরাধের তথ্য বের হয়ে আসে। এরই মধ্যে নিজেকে রক্ষা করতে সুইডেন চলে যান। বছর পাঁচেক ওই দেশে থেকে আবার ফিরে আসেন দেশে। তারপর সুইডেন শব্দটি নামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। ১৯৯৭ সালের ২৩ মার্চ গালিব খুন হন। এ ঘটনায় আসলামসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ১৯৯৮ সালের ৮ এপ্রিল অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২৪ সাক্ষীর মধ্যে পুলিশ চারজনকে আদালতে হাজির করতে পেরেছে। বাকিরা আর আসেননি এবং এই মামলায় তিনি জামিনও নেননি।
দীর্ঘদিন কারাগারে থাকলেও আসলাম মোবাইল ফোনে সহযোগীদের সঙ্গে কথা বলতে পারছেন। স্ত্রী আয়েশা আকতার নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। বলা চলে রাজার হালেই আছেন তিনি।
মিরপুর ও কাফরুল এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী কিলার আব্বাস ২২ বছর ধরে কারাগারে আটক আছেন। তার বিরুদ্ধে থাকা ১১টি মামলার জামিন হয়েছে। একটি মামলার জামিন হতে বাকি আছে। তা ছাড়া কমিশনার নিউটন হত্যা মামলায় ফাঁসির আদেশ হলেও উচ্চ আদালতে খালাস পেয়েছেন তিনি। আরেকটি মামলার শুনানি চলছে উচ্চ আদালতে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কিলার আব্বাসের এক সহযোগী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ভাইয়ের সঙ্গে মাঝেমধ্যে কাশিমপুর কারাগারে গিয়ে দেখা করে আসি। দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনি কারাগার থেকে বের হতে চাচ্ছেন না। জামিন চাইলে তিনি জামিন পেয়ে যাবেন। কিন্তু ভাই তা করবেন না। কারণ প্রতিপক্ষ সক্রিয় আছে। তার প্রাণ শঙ্কা আছে। আমরা ইচ্ছা করলে যেকোনো সময় জামিন নিয়ে ভাইকে বের করে আনতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরেক সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলালেরও প্রায় সব মামলার জামিন হয়ে গেছে। শুধু একটা মামলার জামিন বাকি আছে। তিনি যখন কারাগারে, তখন বিএনপি তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করেছিল। অথচ হেলাল বিএনপির রাজনীতি করেন। জেলে বসেই মোহাম্মদপুর, আদাবর ও ধানম-ি, মিরপুর এলাকার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছেন। মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড দখল ও চাঁদাবাজি চালাচ্ছেন। তার সঙ্গে মিরপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদতের ভালো যোগাযোগ। মোবাইল ফোনে নিয়মিত কথা বলেন তারা। তার আরেক সহযোগী হাবিবুর রহমান তাজ ১৩ বছর ধরে কারাগারে আটক আছেন। মামলার সাক্ষীদের হাজির করতে পারছে না রাষ্ট্রপক্ষ। ইচ্ছে করে জামিনও নিচ্ছেন না তাজ। গ্রেপ্তারের আগে দীর্ঘদিন ভারত পালিয়ে ছিলেন। ২০০৮ সালে ভারতে গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েক মাস পর তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে রাজধানীর কাফরুলে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি ইসমাইল হোসেনকে হত্যা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তা ছাড়া কলেজছাত্র কামরুল ইসলাম ওরফে মোমিন হত্যার সঙ্গেও জড়িত তাজ। মতিঝিল থানার সাবেক ওসি এ কে এম রফিকুল ইসলামের আশ্রয়-প্রশয়ে থাকতেন তিনি। কয়েক বছর আগে ওসি রফিক মারা যান।’
মতিঝিলে একটি গোয়েন্দা সংস্থার দুই কর্মকর্তাকে হত্যা করে আলোচনায় আসে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী ঈদুল। প্রায় ১৫ বছর ধরে কাশিমপুর কারাগারে আটক আছেন তিনি। একবার পঙ্গু হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে আটক করে ফেলে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে আটটি মামলা থাকলেও দুটি মামলা বাদে সব কটিতে জামিন পেয়েছেন। বাকি মামলাগুলোতে ইচ্ছা করে জামিন নিচ্ছেন না বলে তার এক স্বজন জানিয়েছেন।
সেভেন স্টার গ্রুপের একসময়ের সদস্য ফ্রিডম সোহেল ধানম-ি ৩২ নম্বরে গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজার আসামি। সাজা কমিয়ে কারাগারেই থাকার চেষ্টা করছেন সোহেল। তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা আছে। ৯টি মামলায় জামিন পেয়েছেন। একটি মামলায় সাজা হয়েছে। আরেকটি মামলায় জামিন নিচ্ছেন না।
তার সহযোগী পুরস্কারঘোষিত সন্ত্রাসী রাশু কিছুদিন আগে কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আটক করে। তার এক স্বজন দেশ রূপান্তরকে জানান, মাস দুয়েক আগে সর্বশেষ মামলায় জামিন হয় রাশুর। তার কোনো ইচ্ছা ছিল না কারাগার থেকে বের হওয়ার। আর এ কারণে ইচ্ছা করেই একটি সংস্থাকে কারাগার থেকে বের হওয়ার তথ্য দিয়ে আবার গ্রেপ্তার হন। কারণ তিনি বের হলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে মেরে ফেলবে এমন আশঙ্কা ছিল। আরেক সন্ত্রাসী লম্বু সেলিম একটি মামলা বাদে সব মামলায় জামিনে আছেন। ভারতের কলকাতা থেকে তাকে পুশব্যাক করা হয়েছিল। প্রায় আট বছর ধরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। বেশিরভাগ সময় হাসপাতালে থাকেন। নিরাপত্তাহীনতার কারণে জেল থেকে বের হচ্ছেন না তিনি।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, সন্ত্রাসীদের কর্মকা- রোধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নানা কৌশলে কাজ করছে। তারা সরগরম হলেও কাজ হবে না। যারা দেশের বাইরে আছে, তাদের চিহ্নিত করে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ধরার চেষ্টা চলছে। যারা দেশে আছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনতে পুলিশ-র্যাব কাজ করছে। তবে আন্ডারওয়ার্ল্ডের কেউ বিশ্ঙ্খৃলা তৈরি করতে পারবে না। তিনি বলেন, ‘কোনো সন্ত্রাসী জামিন না নিলে এটা আমাদের করার কিছু নেই। তবে তাদের বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি হয়, সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।’
পুলিশ সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি, চোরাকারবারিসহ ভিন্ন ধরনের অপরাধীরা দুবাই, মালয়েশিয়া, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আত্মগোপন করে আছেন। তাদের সহযোগীরা বাংলাদেশে অবস্থান করে অপরাধমূলক কর্মকা- চালিয়ে আসছেন। তাদের নির্দেশে হত্যাকান্ডের মতো ঘটনাও ঘটাচ্ছেন তারা। মতিঝিলে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যাকান্ডের পেছনে বিদেশ কানেকশন।
২০০৩ সালে মালিবাগের সানরাইজ হোটেলে ডিবি পুলিশের দুই সদস্যকে হত্যার পর পালিয়ে যাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান দুবাইয়ে আত্মগোপন করে আছেন। টিপু হত্যাকান্ডের পর তিনি আলোচনায় এসেছিলেন। দুবাইয়ে থাকলেও ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে সবচেয়ে বেশি প্রভাব তার। জিসানের সহযোগী জাফর আহমেদ মানিক ওরফে ফ্রিডম মানিক ভারতে পালিয়ে আছেন। কিন্তু দেশে তার দখলবাজি, টেন্ডারবাণিজ্য ও চাঁদাবাজিতে নিয়ন্ত্রণ এখনো আছে। মোল্লা মাসুদ ও সুব্রত বাইন ভারতে থেকে সক্রিয় আছেন। তানভীর ইসলাম জয়ও সক্রিয় আছেন। কলকাতা, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ঘুরে তার অবস্থান এখন থাইল্যান্ডে। সেখানে বসেই তিনি কলকাঠি নাড়ছেন।
লাক্সারিয়াস জীবন পাওয়ার জন্য এখন মানুষ দিনরাত শুধুই কাজ করে চলেছেন। যার মধ্যে অফিস ডেস্কে বসে কাজ করেন এমন মানুষের সংখ্যা একেবারে কম নয়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চেয়ারে বসে ল্যাপটপের সামনে তাকিয়ে থাকা রীতিমতো যন্ত্রণাদায়ক।
শুধু তাই নয়, এটা স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। যারা অফিসে ডেস্কে কাজ করেন তাদের মোটা হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।
সারাদিন যারা ডেস্কে বসে কাজ করেন তাদের অন্যতম অভিযোগও এটি। তারা বলে থাকেন, চেয়ারে বসে কাজ করে মোটা হয়ে যাচ্ছি! তবে এই অজুহাতকে একেবারে সত্য বলার সুযোগ নেই। কারণ ডেস্কে বসে কাজ করেও স্লিম ও ফিট থাকা সম্ভব। এজন্য মেনে চলুন পাঁচটি টিপস।
হাঁটুনফিট ও কর্মক্ষম থাকতে নিয়মিত হাঁটুন। দিনের পর দিন দীর্ঘ সময় বসে থাকলে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। সুস্থ থাকতে প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করুন। এমনকি কাজের ফাঁকেও ১০ মিনিটের ব্রেক নিয়ে হেঁটে আসতে পারেন।
সোজা হয়ে বসুনচেয়ারে মেরুদণ্ড সোজা রেখে বসুন। মেরুদণ্ডের ডিস্কগুলোতে অনেক চাপ পড়ে, সেই সঙ্গে চাপ পড়ে মেরুদণ্ডের পাশের মাংসপেশি ও লিগামেন্টের ওপর। কম্পিউটার ব্যবহার করার সময় মনিটরটি চোখের সমান স্তরে রাখুন। মাউস ব্যবহার করার সময় শুধু আপনার কব্জি নয় পুরো হাত ব্যবহার করুন।
চাপ এড়িয়ে চলুনএটা খুব কঠিন কাজ, চাপমুক্ত থাকা। বিশেষ করে যখন চারপাশ থেকে নানা ধরনের চাপ আসতে থাকে। তবে মানসিক স্থিরতা ধরে রাখুন, নিজেকে মোটিভেট করুন। কোনও চাপই বেশি দিন থাকে না, এগুলো নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট না করে নিজের কাজে মনোযোগ বাড়ান। এক্ষেত্রে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে অনলাইনে কিছু যোগা শিখে অভ্যাস করুন।
চোখের যত্নকম্পিউটারে কাজ করার সময় স্ক্রিনে একটানা ১০-১৫ মিনিটের বেশি তাকিয়ে থাকবেন না। নিয়মিত চোখের পাতা ফেলুন। স্ক্রিনে পর্যাপ্ত আলো রাখুন, যেন চোখের ওপর বাড়তি চাপ না পড়ে।
হাড়ের যত্ন বসে থাকার ফলে হাড় দুর্বল হয়ে যেতে পারে। ক্যালসিয়ামের ঘাটতিও হতে পারে। এজন্য নজর দিতে হবে প্রতিদিনের খাবারে স্বাভাবিক খাবারের সঙ্গে নিয়মিত ডিম, দুধ, দই ও বাদাম রাখুন।