ছবির পাঠশালা
রবিউল কমল | ২৩ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০
১৯৯৮ সাল থেকে পথচলা শুরু হয় ফটোগ্রাফির শিক্ষায়তন নাম পাঠশালা’র। তবে পাঠশালার শুরুর গল্পটা ছিল একটু অন্যরকমের। বরেণ্য আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের হাত ধরে ১৯৮৯ সালে দৃকের যাত্রা শুরু হয়। দৃকে তার সঙ্গে কয়েকজন নামকরা আলোকচিত্রী কাজ করতেন। তারা সবসময় ভাবতেন- কীভাবে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের ফটোগ্রাফার তৈরি করা যায়, কীভাবে বাংলাদেশি ফটোগ্রাফারদের দক্ষতা বাড়ানো যায়। তারা আরও ভাবলেন, এসবের জন্য প্রয়োজন একটি মানসম্মত প্রতিষ্ঠান। তারপর ১৯৯৮ সালে পান্থপথ আর কলাবাগান সংযোগ সড়কের কাছাকাছি ১৬ শুক্রাবাদ বাড়িটির উঠোনে আমগাছের নিচে আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের কাছে কয়েকজন আলোকচিত্রপ্রেমী ছবি তোলা শেখার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এরপর তাদের নিয়েই শুরু হয় পাঠশালার প্রথম পর্ব। সময়ও ঢের গড়িয়েছে। পরিসর বেড়েছে, বেড়েছে পাঠশালার শিক্ষার্থী। পাঠশালার লক্ষ্য ছিল, বাংলাদেশি ফটোগ্রাফাররা ছবির মাধ্যমে গল্প বলবেন। সেই গল্প পৌঁছে যাবে বিশ্ববাসীর কাছে। তখন থেকেই কাজ করে যাচ্ছে পাঠশালা। আর সৃষ্টিশীল কাজের বিভিন্ন কৌশল শেখার জন্য উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান হলো পাঠশালা বা ‘দ্য সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউট’।
পাঠশালার বর্তমান কর্মকা- নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা তানভীর মুরাদ জানান, পাঠাশালার কাজ আগের চেয়ে বিস্তৃত হয়েছে। একটি ছবি একটি গল্পের প্রতীকী রূপ। সেই গল্পকে আরও কতভাবে বলা যায়, সে বিষয়টা আরও পরিষ্কার করা এবং বিশ্বব্যাপী জায়গা করে নিতে সৃজনশীলতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে পাঠশালা। এখানকার ফটোগ্রাফাররা দেশের বাইরেও কাজ করছেন এবং তারা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। আমরা চাই আমাদের ফটোগ্রাফাররা শুধু ছবি তুলবেন না, তারা জীবনের গল্প বলবেন। তারা আমাদের বিভিন্ন সংকটের কথা বলবেন, সমাধানের কথা বলবেন। আমাদের স্নাতক প্রোগ্রামে এসব ক্রিটিক্যাল বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করানো হয়।
তিনি আরও জানান, এখানের ডিপার্টমেন্ট অব ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশনের আওতায় চলচ্চিত্রের বিভিন্ন খুঁটিনাটি শেখাতে প্রতিষ্ঠানটি যুক্ত করেছে বিশেষ প্রোগ্রাম। এই প্রোগ্রামটির নাম ‘পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন’। আর এরপরই প্রতিষ্ঠানটি বদলে ফেলেছে তাদের পুরনো নামটি, কারণ ফটোগ্রাফির গ-ি পেরিয়ে প্রতিষ্ঠানটি যুক্ত করেছে অন্যান্য মিডিয়া অনুষঙ্গও। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশনের প্রোগ্রামটি পরিচালনা করছে পাঠশালা। আর চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মঞ্চ ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব খ ম হারুন। পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির দায়িত্বে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। পরিচালনা পর্ষদে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. সাদেকা হালিম, জার্নালিজম বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাহমিদুল হকসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মনোনীত আরও কয়েকজন বিশিষ্ট অধ্যাপক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব।
পাঠশালার কারিকুলাম নিয়ে তানভীর মুরাদ জানান, এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিস্তৃত পড়াশোনা করানো হয়। আন্তর্জাতিক মান নির্ণয়ে পাঠশালাতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম হয়। এর মধ্যে আছে, অসলো বিশ্ববিদ্যালয়, জার্মানির হ্যানোভার ইউনিভার্সিটি ও ডেনমার্ক স্কুল। তাই পাঠশালার শিক্ষার্থীরা প্রথম থেকেই আন্তর্জাতিক এ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়েই যাচ্ছেন। এর মাধ্যমে তাদের ধারণা তৈরি হচ্ছে, আন্তর্জাতিকভাবে তারা নিজেদের কোথায় দেখতে চান। ছয় মাস করে তিন সেমিস্টারে ভাগ করা দেড় বছর মেয়াদি প্রোগ্রামে শেখানো হয় চলচ্চিত্রের বিভিন্ন খুঁটিনাটি দিক। সাউন্ড অ্যান্ড মিউজিক, স্ক্রিপ্ট অ্যান্ড স্ক্রিনপ্লে, ডিরেকশন, সেট ডিজাইন, অ্যাক্টিং, ক্যামেরাঅ্যান্ড লাইট, ব্রডকাস্ট জার্নালিজম অ্যান্ড টিভি রিপোর্টিং-এর মতো বিভিন্ন বিষয়ের খুঁটিনাটি ও টুকিটাকি শিখতে পারবে একজন শিক্ষার্থী। এছাড়া চলচ্চিত্র নির্মাণের এ কোর্সটি ছাড়াও যদি কেউ কেবল শখের বসে ছবি তোলা শিখতে চায়, তাদের জন্য রয়েছে চার সপ্তাহের বেসিক ফটোগ্রাফি কোর্স। আরও রয়েছে ছবি তোলার বিভিন্ন কৌশল নিয়ে আট সপ্তাহের ফাউন্ডেশন কোর্স। আর আলোকচিত্রীকে যারা পেশা হিসেবে নিতে চান, তাদের জন্য পাঠশালার আয়োজন এক বছরের প্রোগ্রাম ইন ফটোগ্রাফি। তবে এখানেও রয়েছে শিক্ষাগত যোগ্যতার বাধ্যবাধকতা। তাছাড়া পাঠশালায় দুই ও তিন বছরের অ্যাডভান্সড ও স্নাতক ফটোগ্রাফি কোর্সটিও চাইলে করে নিতে পারবে যে কেউ। পাশাপাশি রয়েছে ছয় সপ্তাহের ভিডিওগ্রাফির বেসিক কোর্স।
দক্ষিণ এশিয়ার সেরা ফটোগ্রাফি ও ফিল্ম মেকিং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে পাঠশালা। প্রতি দুই বছর পরপর প্রতিষ্ঠানটি আয়োজন করছে ছবিমেলার, যেখানে ঢুঁ মারছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নামকরা সব আলোকচিত্রীরা। আর আমাদের দেশের তরুণরা সৃষ্টিশীল কিছু করার স্বপ্ন নিয়ে যারা এগিয়ে যেতে চাইছে, তাদের সেই লক্ষ্য পূরণে সহযোগিতা করছে পাঠশালা।
পাঠশালায় পড়েছেন শাহরিয়ার কবীর হিমেল। তিনি এখন দ্য ডেইলি স্টারে ফটোগ্রাফার হয়ে কাজ করছেন। ফটোগ্রাফির ক্যারিয়ার সম্ভাবনা নিয়ে পাঠশালার এই প্রাক্তন শিক্ষার্থী বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশে ফটোগ্রাফি বিষয়টা বিস্তৃত হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশের সঙ্গে সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন ক্ষেত্র। ফলে বাড়ছে ফটোগ্রাফার বা আলোকচিত্রীদের চাহিদা। শিল্প, সাংবাদিকতা বা কমার্শিয়াল কিংবা ডকুমেন্টারি ক্ষেত্রগুলোয় আলোকচিত্রীদের অনেক চাহিদা রয়েছে। মিডিয়ার প্রসারের ফলে যেমন বেড়েছে নাটক, চলচ্চিত্র, বিজ্ঞাপনের সংখ্যা, একইসঙ্গে বাড়ছে আলোকচিত্রীদের চাহিদা। রয়েছে দেশে থেকেই আন্তর্জাতিক অনেক প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ। শাহরিয়ার কবীর হিমেলা আরও বললেন, পড়াশোনা শেষে একজন ফটোগ্রাফার নিজের ইচ্ছামতো যেকোনো জায়গায় যেতে পারেন। এটাই অনেক বড় সুবিধা। এ পড়াশোনা আমরা আসলে সীমাবদ্ধ করে দিচ্ছি না। এটা ওপেন প্লাটফর্ম, যে যার পছন্দ ও সুবিধামতো ক্ষেত্র বেছে নিতে পারবেন। চাইলে সে বিসিএস দিতে পারে, ব্যাংক জব করতে পারে, বেসরকারি চাকরি করতে পারে, সাংবাদিকতা করতে পারে বা নিজের আলোকচিত্র প্রতিষ্ঠান দাঁড় করাতে পারে।
শেয়ার করুন
রবিউল কমল | ২৩ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০

১৯৯৮ সাল থেকে পথচলা শুরু হয় ফটোগ্রাফির শিক্ষায়তন নাম পাঠশালা’র। তবে পাঠশালার শুরুর গল্পটা ছিল একটু অন্যরকমের। বরেণ্য আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের হাত ধরে ১৯৮৯ সালে দৃকের যাত্রা শুরু হয়। দৃকে তার সঙ্গে কয়েকজন নামকরা আলোকচিত্রী কাজ করতেন। তারা সবসময় ভাবতেন- কীভাবে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের ফটোগ্রাফার তৈরি করা যায়, কীভাবে বাংলাদেশি ফটোগ্রাফারদের দক্ষতা বাড়ানো যায়। তারা আরও ভাবলেন, এসবের জন্য প্রয়োজন একটি মানসম্মত প্রতিষ্ঠান। তারপর ১৯৯৮ সালে পান্থপথ আর কলাবাগান সংযোগ সড়কের কাছাকাছি ১৬ শুক্রাবাদ বাড়িটির উঠোনে আমগাছের নিচে আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের কাছে কয়েকজন আলোকচিত্রপ্রেমী ছবি তোলা শেখার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এরপর তাদের নিয়েই শুরু হয় পাঠশালার প্রথম পর্ব। সময়ও ঢের গড়িয়েছে। পরিসর বেড়েছে, বেড়েছে পাঠশালার শিক্ষার্থী। পাঠশালার লক্ষ্য ছিল, বাংলাদেশি ফটোগ্রাফাররা ছবির মাধ্যমে গল্প বলবেন। সেই গল্প পৌঁছে যাবে বিশ্ববাসীর কাছে। তখন থেকেই কাজ করে যাচ্ছে পাঠশালা। আর সৃষ্টিশীল কাজের বিভিন্ন কৌশল শেখার জন্য উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান হলো পাঠশালা বা ‘দ্য সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউট’।
পাঠশালার বর্তমান কর্মকা- নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা তানভীর মুরাদ জানান, পাঠাশালার কাজ আগের চেয়ে বিস্তৃত হয়েছে। একটি ছবি একটি গল্পের প্রতীকী রূপ। সেই গল্পকে আরও কতভাবে বলা যায়, সে বিষয়টা আরও পরিষ্কার করা এবং বিশ্বব্যাপী জায়গা করে নিতে সৃজনশীলতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে পাঠশালা। এখানকার ফটোগ্রাফাররা দেশের বাইরেও কাজ করছেন এবং তারা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। আমরা চাই আমাদের ফটোগ্রাফাররা শুধু ছবি তুলবেন না, তারা জীবনের গল্প বলবেন। তারা আমাদের বিভিন্ন সংকটের কথা বলবেন, সমাধানের কথা বলবেন। আমাদের স্নাতক প্রোগ্রামে এসব ক্রিটিক্যাল বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করানো হয়।
তিনি আরও জানান, এখানের ডিপার্টমেন্ট অব ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশনের আওতায় চলচ্চিত্রের বিভিন্ন খুঁটিনাটি শেখাতে প্রতিষ্ঠানটি যুক্ত করেছে বিশেষ প্রোগ্রাম। এই প্রোগ্রামটির নাম ‘পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন’। আর এরপরই প্রতিষ্ঠানটি বদলে ফেলেছে তাদের পুরনো নামটি, কারণ ফটোগ্রাফির গ-ি পেরিয়ে প্রতিষ্ঠানটি যুক্ত করেছে অন্যান্য মিডিয়া অনুষঙ্গও। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশনের প্রোগ্রামটি পরিচালনা করছে পাঠশালা। আর চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মঞ্চ ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব খ ম হারুন। পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির দায়িত্বে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। পরিচালনা পর্ষদে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. সাদেকা হালিম, জার্নালিজম বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাহমিদুল হকসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মনোনীত আরও কয়েকজন বিশিষ্ট অধ্যাপক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব।
পাঠশালার কারিকুলাম নিয়ে তানভীর মুরাদ জানান, এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিস্তৃত পড়াশোনা করানো হয়। আন্তর্জাতিক মান নির্ণয়ে পাঠশালাতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম হয়। এর মধ্যে আছে, অসলো বিশ্ববিদ্যালয়, জার্মানির হ্যানোভার ইউনিভার্সিটি ও ডেনমার্ক স্কুল। তাই পাঠশালার শিক্ষার্থীরা প্রথম থেকেই আন্তর্জাতিক এ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়েই যাচ্ছেন। এর মাধ্যমে তাদের ধারণা তৈরি হচ্ছে, আন্তর্জাতিকভাবে তারা নিজেদের কোথায় দেখতে চান। ছয় মাস করে তিন সেমিস্টারে ভাগ করা দেড় বছর মেয়াদি প্রোগ্রামে শেখানো হয় চলচ্চিত্রের বিভিন্ন খুঁটিনাটি দিক। সাউন্ড অ্যান্ড মিউজিক, স্ক্রিপ্ট অ্যান্ড স্ক্রিনপ্লে, ডিরেকশন, সেট ডিজাইন, অ্যাক্টিং, ক্যামেরাঅ্যান্ড লাইট, ব্রডকাস্ট জার্নালিজম অ্যান্ড টিভি রিপোর্টিং-এর মতো বিভিন্ন বিষয়ের খুঁটিনাটি ও টুকিটাকি শিখতে পারবে একজন শিক্ষার্থী। এছাড়া চলচ্চিত্র নির্মাণের এ কোর্সটি ছাড়াও যদি কেউ কেবল শখের বসে ছবি তোলা শিখতে চায়, তাদের জন্য রয়েছে চার সপ্তাহের বেসিক ফটোগ্রাফি কোর্স। আরও রয়েছে ছবি তোলার বিভিন্ন কৌশল নিয়ে আট সপ্তাহের ফাউন্ডেশন কোর্স। আর আলোকচিত্রীকে যারা পেশা হিসেবে নিতে চান, তাদের জন্য পাঠশালার আয়োজন এক বছরের প্রোগ্রাম ইন ফটোগ্রাফি। তবে এখানেও রয়েছে শিক্ষাগত যোগ্যতার বাধ্যবাধকতা। তাছাড়া পাঠশালায় দুই ও তিন বছরের অ্যাডভান্সড ও স্নাতক ফটোগ্রাফি কোর্সটিও চাইলে করে নিতে পারবে যে কেউ। পাশাপাশি রয়েছে ছয় সপ্তাহের ভিডিওগ্রাফির বেসিক কোর্স।
দক্ষিণ এশিয়ার সেরা ফটোগ্রাফি ও ফিল্ম মেকিং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে পাঠশালা। প্রতি দুই বছর পরপর প্রতিষ্ঠানটি আয়োজন করছে ছবিমেলার, যেখানে ঢুঁ মারছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নামকরা সব আলোকচিত্রীরা। আর আমাদের দেশের তরুণরা সৃষ্টিশীল কিছু করার স্বপ্ন নিয়ে যারা এগিয়ে যেতে চাইছে, তাদের সেই লক্ষ্য পূরণে সহযোগিতা করছে পাঠশালা।
পাঠশালায় পড়েছেন শাহরিয়ার কবীর হিমেল। তিনি এখন দ্য ডেইলি স্টারে ফটোগ্রাফার হয়ে কাজ করছেন। ফটোগ্রাফির ক্যারিয়ার সম্ভাবনা নিয়ে পাঠশালার এই প্রাক্তন শিক্ষার্থী বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশে ফটোগ্রাফি বিষয়টা বিস্তৃত হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশের সঙ্গে সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন ক্ষেত্র। ফলে বাড়ছে ফটোগ্রাফার বা আলোকচিত্রীদের চাহিদা। শিল্প, সাংবাদিকতা বা কমার্শিয়াল কিংবা ডকুমেন্টারি ক্ষেত্রগুলোয় আলোকচিত্রীদের অনেক চাহিদা রয়েছে। মিডিয়ার প্রসারের ফলে যেমন বেড়েছে নাটক, চলচ্চিত্র, বিজ্ঞাপনের সংখ্যা, একইসঙ্গে বাড়ছে আলোকচিত্রীদের চাহিদা। রয়েছে দেশে থেকেই আন্তর্জাতিক অনেক প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ। শাহরিয়ার কবীর হিমেলা আরও বললেন, পড়াশোনা শেষে একজন ফটোগ্রাফার নিজের ইচ্ছামতো যেকোনো জায়গায় যেতে পারেন। এটাই অনেক বড় সুবিধা। এ পড়াশোনা আমরা আসলে সীমাবদ্ধ করে দিচ্ছি না। এটা ওপেন প্লাটফর্ম, যে যার পছন্দ ও সুবিধামতো ক্ষেত্র বেছে নিতে পারবেন। চাইলে সে বিসিএস দিতে পারে, ব্যাংক জব করতে পারে, বেসরকারি চাকরি করতে পারে, সাংবাদিকতা করতে পারে বা নিজের আলোকচিত্র প্রতিষ্ঠান দাঁড় করাতে পারে।