প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
আয়াজুর রাহমান | ২৩ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি (এনএসইউ) বাংলাদেশের প্রথম অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৯২ সালে ফাউন্ডেশন ফর প্রমোশন অফ এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এফপিইআর) প্রতিষ্ঠিত হয়। এফপিইআরের পরবর্তী সময়ে নামকরণ হয় এনএসইউ ফাউন্ডেশন। শিক্ষা ও গবেষণা নামে পরিচিত এনএসইউ ফাউন্ডেশনটি একাধিক বিশিষ্ট শিল্পপতি, পৃষ্ঠপোষক, দানশীল, শিক্ষাবিদ এবং দেশের প্রথিতযশা ব্যক্তিদের দ্বারা গঠিত। নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে বেসরকারি খাতে উচ্চ শিক্ষা কেন্দ্র হিসেবে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিল বেশ কয়েকজন স্বপ্নচারী ব্যক্তি। তাদের নিরলস প্রচেষ্টা এবং কঠোর পরিশ্রম এনএসইউ প্রতিষ্ঠার অনুমোদনের পথ প্রশস্ত করেছিল। যেহেতু, সেই সময়ে বেসরকারি খাতে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন এবং পরিচালনা করার জন্য দেশে কোনো প্রাসঙ্গিক আইন ছিল না। তখন এনএসইউ ফাউন্ডেশনের ব্যক্তিরাই নিজের উদ্যোগে এগিয়ে এসেছিল। প্রাসঙ্গিক আইন প্রণয়ন ও আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে তৎকালীন সরকারকে সহায়তা করার জন্য তাদের প্রচেষ্টা ছিল। পরবর্তী সময়ে সরকার প্রণীত নতুন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন (পিইউএ) -১৯৯২ অনুসারে এনএসইউ প্রতিষ্ঠার অনুমোদন পায়। ১৯৯৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছিল। পরে ২০১২ সালে এনএসইউ ফাউন্ডেশন, পিইউএ ২০১০ এর আলোকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশ অনুসারে ফাউন্ডেশনের মতো একই ধরনের ব্যক্তিদের নিয়ে এনএসইউ ট্রাস্ট গঠন করে এবং পুরো পরিচালনা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম এদের ওপর ন্যস্ত করা হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হলেন এনএসইউর চ্যান্সেলর।
আধুনিক ক্যাম্পাস আর উন্নত দেশগুলোর মতো শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর পরই দেশব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। দেশে শিক্ষার্থীর তুলনায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সিটের সংখ্যা পর্যাপ্ত না থাকায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়টি হয়ে ওঠে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার অন্যতম ভরসার জায়গা। দিনে দিনে বিশ্ববিদ্যালয়টি এতটাই জনপ্রিয়তা পায় যে এর শিক্ষার মান ছাড়িয়ে যায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও। বর্তমানে দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে। তবে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় তার শিক্ষার মান ঠিকই ধরে রেখেছে। সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়। চলতি বছর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে চতুর্থতম অবস্থানে রয়েছে। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে র্যাংকিংয়ে প্রথম অবস্থানে রয়েছে। এছাড়া বিশ্ব র্যাংকিংয়েও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় দুই হাজার র্যাংকিং-এর মধ্যে রয়েছে।
সাধারণভাবে, এনএসইউ বিশ্বের উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে মডেল হিসেবে ধরে তাদের অ্যাকাডেমিক বৈশিষ্ট্য যেমন সেমিস্টার সিস্টেম, ক্রেডিট আওয়ারস, লেটার গ্রেড ইত্যাদির অনুসরণ করে। যখন প্রথম চালু করা হয় তখন এর অর্থনীতি, ব্যবসায় এবং কম্পিউটার বিজ্ঞানের মতো স্নাতক প্রোগ্রামের পাঠ্যক্রমটি মূলত আরবান ক্যাম্পেইন ইলিনয় বিশ^বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম। যা দেশের উচ্চ শিক্ষার সর্বোচ্চ স্বীকৃত পাঠক্রম। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) দ্বারা
যথাযথভাবে অনুমোদিত হয়েছিল। এনএসইউর একটি আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা বোর্ড রয়েছে, যা বিশ্বজুড়ে স্কলারদের সমন্বয়ে গঠিত, বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার জন্য।
ট্রাস্টি বোর্ড (বিওটি) হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ নীতিনির্ধারণ ও অনুমোদনের সংস্থা। মি. এম এ হাসেম বিওটির বর্তমান চেয়ারম্যান। শিল্পপতি মি. এম এ হাসেম বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের প্রাক্তন সংসদ সদস্য; পারটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান।
বিওটির প্রায় ১৭ জন সদস্য আছেন। এরা সবাই এনএসইউ ট্রাস্টের সদস্য। এনএসইউর উপাচার্য অধ্যাপক আতিক ইসলাম, বিওটির প্রাক্তন সদস্য। অধ্যাপক আতিক ইসলাম এনএসইউর বর্তমান উপাচার্য। তিনি ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার এডিথ ক্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য।
এর আগে তিনি ক্যানবেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা ও সরকার অনুষদের ডিনের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। দীর্ঘ অ্যাকাডেমিক কর্মজীবনে তিনি সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়, নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়, কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়, ক্যানটারবেরি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সিঙ্গাপুরের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৭টির মতো ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। এসব ডিপার্টমেন্টে দেশ-বিদেশের মানসম্মত সব ফ্যাকাল্টি রয়েছে। যার ফলে এর শিক্ষার মান আন্তর্জাতিকভাবেও গ্রহণযোগ্যতা রাখে। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রেডিট ট্রান্সফারের সুযোগও রয়েছে।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন উন্নত দেশের ভাষা শিক্ষার ব্যবস্থাও রয়েছে। অনার্স মাস্টার্স কোর্সের পাশাপাশি অনেক শর্ট কোর্সের সুযোগও রয়েছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে।
পড়াশুনার মানের পাশাপাশি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে আধুনিক ও উন্নত মানের ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করলে মনে হবে আপনি যুক্তরাষ্ট্র কিংবা যুক্তরাজ্যের কোনো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছেন। উন্নত বিশ্বের ক্যাম্পাসগুলোর আর্কিটেকচার অনুসরণ করে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসটি নির্মাণ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আড্ডা দেওয়ার জন্য রয়েছে বিশালাকার অডিটোরিয়াম। আছে একটি বড় ক্যাফেটেরিয়া। এছাড়া খেলাধুলার সুযোগও রয়েছে। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমের পরিবেশ অত্যন্ত উন্নত মানের এবং ডিজিটাল। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই প্রথম বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে প্রেজেন্টেশন দেওয়ার মতো শিক্ষাব্যবস্থা চালু করা হয়। যা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও আগে ছিল না। ক্লাস প্রেজেন্টেশনের ফলে শিক্ষার্থীরাও হয়ে ওঠে স্মার্ট। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানে আধুনিকতার ছোঁয়াই পরবর্তী সময়ে দেশের বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনুসরণ করা শুরু করে।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা শেষে দেশের এবং বিশ্বের অনেক বড় বড় কোম্পানিতে ইন্টার্ন করার সুযোগ পাওয়া যায়। ফলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনার মান দেশের অন্যান্য সব বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে অনেক উন্নত বলা যায়। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা শেষে বেকার বসে থাকার সুযোগও অনেক কম।
কেননা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একজন শিক্ষার্থীকে মেধাবী হিসেবেই নয় স্মার্ট হিসেবেও গড়ে তোলে। যেন একজন শিক্ষার্থীর কর্মজীবনে কোনো সমস্যা না হয়। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা করে দেশ-বিদেশের অনেক ভালো ভালো কোম্পানিতে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী। দেশে এমন আন্তর্জাতিক মানের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থাকায় এখন আর শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্র কিংবা অন্যান্য দেশে গিয়ে টাকা খরচ করার প্রয়োজন নেই বরং দেশে থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই আন্তর্জাতিক মানের ডিগ্রি অর্জন করতে পারেন দেশের শিক্ষার্থীরা।
শেয়ার করুন
আয়াজুর রাহমান | ২৩ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি (এনএসইউ) বাংলাদেশের প্রথম অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৯২ সালে ফাউন্ডেশন ফর প্রমোশন অফ এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এফপিইআর) প্রতিষ্ঠিত হয়। এফপিইআরের পরবর্তী সময়ে নামকরণ হয় এনএসইউ ফাউন্ডেশন। শিক্ষা ও গবেষণা নামে পরিচিত এনএসইউ ফাউন্ডেশনটি একাধিক বিশিষ্ট শিল্পপতি, পৃষ্ঠপোষক, দানশীল, শিক্ষাবিদ এবং দেশের প্রথিতযশা ব্যক্তিদের দ্বারা গঠিত। নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে বেসরকারি খাতে উচ্চ শিক্ষা কেন্দ্র হিসেবে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিল বেশ কয়েকজন স্বপ্নচারী ব্যক্তি। তাদের নিরলস প্রচেষ্টা এবং কঠোর পরিশ্রম এনএসইউ প্রতিষ্ঠার অনুমোদনের পথ প্রশস্ত করেছিল। যেহেতু, সেই সময়ে বেসরকারি খাতে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন এবং পরিচালনা করার জন্য দেশে কোনো প্রাসঙ্গিক আইন ছিল না। তখন এনএসইউ ফাউন্ডেশনের ব্যক্তিরাই নিজের উদ্যোগে এগিয়ে এসেছিল। প্রাসঙ্গিক আইন প্রণয়ন ও আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে তৎকালীন সরকারকে সহায়তা করার জন্য তাদের প্রচেষ্টা ছিল। পরবর্তী সময়ে সরকার প্রণীত নতুন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন (পিইউএ) -১৯৯২ অনুসারে এনএসইউ প্রতিষ্ঠার অনুমোদন পায়। ১৯৯৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছিল। পরে ২০১২ সালে এনএসইউ ফাউন্ডেশন, পিইউএ ২০১০ এর আলোকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশ অনুসারে ফাউন্ডেশনের মতো একই ধরনের ব্যক্তিদের নিয়ে এনএসইউ ট্রাস্ট গঠন করে এবং পুরো পরিচালনা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম এদের ওপর ন্যস্ত করা হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হলেন এনএসইউর চ্যান্সেলর। আধুনিক ক্যাম্পাস আর উন্নত দেশগুলোর মতো শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর পরই দেশব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। দেশে শিক্ষার্থীর তুলনায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সিটের সংখ্যা পর্যাপ্ত না থাকায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়টি হয়ে ওঠে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার অন্যতম ভরসার জায়গা। দিনে দিনে বিশ্ববিদ্যালয়টি এতটাই জনপ্রিয়তা পায় যে এর শিক্ষার মান ছাড়িয়ে যায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও। বর্তমানে দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে। তবে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় তার শিক্ষার মান ঠিকই ধরে রেখেছে। সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়। চলতি বছর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে চতুর্থতম অবস্থানে রয়েছে। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে র্যাংকিংয়ে প্রথম অবস্থানে রয়েছে। এছাড়া বিশ্ব র্যাংকিংয়েও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় দুই হাজার র্যাংকিং-এর মধ্যে রয়েছে। সাধারণভাবে, এনএসইউ বিশ্বের উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে মডেল হিসেবে ধরে তাদের অ্যাকাডেমিক বৈশিষ্ট্য যেমন সেমিস্টার সিস্টেম, ক্রেডিট আওয়ারস, লেটার গ্রেড ইত্যাদির অনুসরণ করে। যখন প্রথম চালু করা হয় তখন এর অর্থনীতি, ব্যবসায় এবং কম্পিউটার বিজ্ঞানের মতো স্নাতক প্রোগ্রামের পাঠ্যক্রমটি মূলত আরবান ক্যাম্পেইন ইলিনয় বিশ^বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম। যা দেশের উচ্চ শিক্ষার সর্বোচ্চ স্বীকৃত পাঠক্রম। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) দ্বারা যথাযথভাবে অনুমোদিত হয়েছিল। এনএসইউর একটি আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা বোর্ড রয়েছে, যা বিশ্বজুড়ে স্কলারদের সমন্বয়ে গঠিত, বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার জন্য। ট্রাস্টি বোর্ড (বিওটি) হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ নীতিনির্ধারণ ও অনুমোদনের সংস্থা। মি. এম এ হাসেম বিওটির বর্তমান চেয়ারম্যান। শিল্পপতি মি. এম এ হাসেম বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের প্রাক্তন সংসদ সদস্য; পারটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান। বিওটির প্রায় ১৭ জন সদস্য আছেন। এরা সবাই এনএসইউ ট্রাস্টের সদস্য। এনএসইউর উপাচার্য অধ্যাপক আতিক ইসলাম, বিওটির প্রাক্তন সদস্য। অধ্যাপক আতিক ইসলাম এনএসইউর বর্তমান উপাচার্য। তিনি ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার এডিথ ক্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য। এর আগে তিনি ক্যানবেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা ও সরকার অনুষদের ডিনের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। দীর্ঘ অ্যাকাডেমিক কর্মজীবনে তিনি সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়, নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়, কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়, ক্যানটারবেরি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সিঙ্গাপুরের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৭টির মতো ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। এসব ডিপার্টমেন্টে দেশ-বিদেশের মানসম্মত সব ফ্যাকাল্টি রয়েছে। যার ফলে এর শিক্ষার মান আন্তর্জাতিকভাবেও গ্রহণযোগ্যতা রাখে। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রেডিট ট্রান্সফারের সুযোগও রয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন উন্নত দেশের ভাষা শিক্ষার ব্যবস্থাও রয়েছে। অনার্স মাস্টার্স কোর্সের পাশাপাশি অনেক শর্ট কোর্সের সুযোগও রয়েছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। পড়াশুনার মানের পাশাপাশি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে আধুনিক ও উন্নত মানের ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করলে মনে হবে আপনি যুক্তরাষ্ট্র কিংবা যুক্তরাজ্যের কোনো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছেন। উন্নত বিশ্বের ক্যাম্পাসগুলোর আর্কিটেকচার অনুসরণ করে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসটি নির্মাণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আড্ডা দেওয়ার জন্য রয়েছে বিশালাকার অডিটোরিয়াম। আছে একটি বড় ক্যাফেটেরিয়া। এছাড়া খেলাধুলার সুযোগও রয়েছে। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমের পরিবেশ অত্যন্ত উন্নত মানের এবং ডিজিটাল। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই প্রথম বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে প্রেজেন্টেশন দেওয়ার মতো শিক্ষাব্যবস্থা চালু করা হয়। যা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও আগে ছিল না। ক্লাস প্রেজেন্টেশনের ফলে শিক্ষার্থীরাও হয়ে ওঠে স্মার্ট। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানে আধুনিকতার ছোঁয়াই পরবর্তী সময়ে দেশের বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনুসরণ করা শুরু করে। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা শেষে দেশের এবং বিশ্বের অনেক বড় বড় কোম্পানিতে ইন্টার্ন করার সুযোগ পাওয়া যায়। ফলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনার মান দেশের অন্যান্য সব বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে অনেক উন্নত বলা যায়। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা শেষে বেকার বসে থাকার সুযোগও অনেক কম। কেননা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একজন শিক্ষার্থীকে মেধাবী হিসেবেই নয় স্মার্ট হিসেবেও গড়ে তোলে। যেন একজন শিক্ষার্থীর কর্মজীবনে কোনো সমস্যা না হয়। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা করে দেশ-বিদেশের অনেক ভালো ভালো কোম্পানিতে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী। দেশে এমন আন্তর্জাতিক মানের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থাকায় এখন আর শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্র কিংবা অন্যান্য দেশে গিয়ে টাকা খরচ করার প্রয়োজন নেই বরং দেশে থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই আন্তর্জাতিক মানের ডিগ্রি অর্জন করতে পারেন দেশের শিক্ষার্থীরা।