রোগতত্ত্ব গবেষণায় আইইডিসিআর
ডা. মুশতাক হোসেন | ২৫ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০
১৯৭৬ সালের আগস্টে বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিলের সভায় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) প্রতিষ্ঠার জন্য ২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা বরাদ্দের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। যে ভবনকে ভিত্তি ধরে আইইডিসিআর-এর প্রকল্প শুরু হয়, সেটা ছিল ম্যালেরিয়া ইনস্টিটিউট। ভবনটির লাগোয়া জমি অধিগ্রহণ করে ছয় তলা ভবন তৈরি হয়, যেখানে চারটি তলায় চারটি ল্যাবরেটরি তৈরি হয়। কিন্তু আইইডিসিআর-এর এ সুখ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। প্রতিষ্ঠার এক দশকের মধ্যেই তার জন্য নির্মিত ছয়তলা ভবনটি ছেড়ে দিতে হয় মতিঝিল থেকে স্থানান্তরিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জন্য। আইইডিসিআর ভবন বেহাত হওয়ার তিন দশকেরও বেশি সময় পরে আবার নতুন বহুতল ভবন তৈরি হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকের বাসভবনের জায়গাটির ত্যাগ স্বীকার করে। কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করি, এ ভবনটি যেন আবার বেহাত হয়ে না যায়!
আইইডিসিআর-এর পুরো নাম Institute of Epidemiology Disease Control & Research. মূল ভিত্তি রোগতত্ত্ব। কিন্তু রোগতত্ত্ব কী? একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীতে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত অবস্থা এবং ঘটনার বিস্তার ও কারণগুলো যে বিষয়টিতে অধ্যয়ন করা হয়; এবং অধ্যয়ন করা বিদ্যা স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানে কাজে লাগানো হয় তাকে রোগতত্ত্ব বলে সংজ্ঞায়িত করা যায়।
মোটা দাগে আইইডিসিআর-এর চারটি কাজ : (১) স্বাস্থ্য সম্পর্কিত অবস্থা ও ঘটনার নজরদারি ও সাড়া দান (২) হঠাৎ ঘটে যাওয়া কোনো স্বাস্থ্য দুর্ঘটনার তদন্ত ও সাড়া দান (৩) এতদসংক্রান্ত গবেষণা (৪) দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য এ বিষয়ে দক্ষ কর্মশক্তি তৈরি করা। আইইডিসিআর-এর পূর্বসূরি ম্যালেরিয়া ইনস্টিটিউট চালু হয়েছিল বাংলাদেশ থেকে (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) থেকে প্রাণঘাতী ম্যালেরিয়া রোগকে নির্মূল করার জন্য। রোগতাত্ত্বিক ও কীটতাত্ত্বিক বিদ্যাকে কাজে লাগিয়ে ১৯৬০ দশকের মধ্যেই ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রিত হয়। এর ধারাবাহিকতায় একইভাবে রোগতাত্ত্বিক ও কীটতাত্ত্বিক বিদ্যা কাজে লাগিয়ে অন্যান্য সংক্রামক ব্যাধি নির্মূল করার জন্য একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার তাগিদ অনুভব করেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্যবিদরা। সে তাগিদের ফলেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে আইইডিসিআর প্রতিষ্ঠিত হলো।
আগেই বলেছি আইইডিসিআর-এর যাত্রাপথ ফুলে বিছানো ছিল না। এর একটা বড় কারণ হচ্ছে সব সরকারের উচ্চ মহলে ধারণা হলো যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন মানেই শুধুমাত্র বড় বড় হাসপাতাল তৈরি করা। জনস্বাস্থ্য বিষয়টার গুরুত্ব তাদের কাছে খুবই দুর্বল। এখনো জনস্বাস্থ্যের সিংহভাগ কার্যকলাপ চলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তথা বৈদেশিক ঋণ ও অনুদানে। শুধু সরকারি উচ্চ মহলের কথা বলছি কেন? এ দেশের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর বেশির ভাগ ধারণাই এমন হাসপাতালকেন্দ্রিক!
জনস্বাস্থ্য কী, এর সংজ্ঞা কী? সমাজের সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টা দ্বারা রোগ প্রতিরোধ, জীবনকে দীর্ঘায়ু করা, স্বাস্থ্য উন্নয়নের যে শৈল্পিক ও বৈজ্ঞানিক কর্মযজ্ঞ তাই জনস্বাস্থ্য। জনস্বাস্থ্য শুধু নির্দিষ্ট কোনো রোগ দূর করা নিয়ে কাজ করে না, সমগ্র স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ওপর কর্মকা-কে কেন্দ্রীভূত করে।
যা হোক, আইইডিসিআর-এর কথায় ফিরে আসি। ১৯৮১ সালে উচ্চ পর্যায়ের নীতিনির্ধারকদের সিদ্ধান্তে আইইডিসিআর-কে নিপসমের সঙ্গে একীভূত করে ফেলা হলো। দু’টো প্রতিষ্ঠানের কাজ নাকি একই! নিপসম হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে জনস্বাস্থ্যে স্নাতকোত্তর স্বাস্থ্য জনশক্তি তৈরি করা, আর আইইডিসিআর-এর কাজ হলো রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য বাস্তব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা। দু’টোকে এক করে মেলাতে গিয়ে দু’টো প্রতিষ্ঠানের কাজই কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলো।
অবশেষে ১৯৮৭ সালে তিনটি জাতীয়-আন্তর্জাতিক সংস্থার (বাংলাদেশ সরকার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি) যৌথ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আইইডিসিআর ও নিপসমকে আবার আলাদা করা হলো। তবে আইইডিসিআর আর আগের পূর্ণ রূপ পেল না, ভাগাভাগি হলে যা হয় আর কি! সে অপূর্ণতার ক্ষত আজও রয়ে গেছে।
আইইডিসিআর তখন একটি মধ্যমেয়াদি পাঁচসালা পরিকল্পনা গ্রহণ করে। সে পরিকল্পনা মোতাবেক নতুন-পুরাতন মিলিয়ে আইইডিসিআর-এ আটটি বিভাগ আছে : (১) রোগতত্ত্ব (২) জৈব পরিসংখ্যান (৩) মেডিকেল সামাজিক বিজ্ঞান (৪) মেডিকেল কীটতত্ত্ব (৫) ভাইরাস বিদ্যা (৬) পরজীবী বিদ্যা (৭) প্রাণী সংক্রামিত রোগ (৮) অণুজীব বিদ্যা।
পরিচালক সর্বোচ্চ নির্বাহী প্রধান। আটটির মধ্যে চারটি বিভাগের প্রধান হচ্ছেন মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালকের সমমর্যাদার)। বাকি চারটি বিভাগের প্রধান হচ্ছেন প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (স্বাস্থ্য বিভাগের উপ-পরিচালকের সমমর্যাদার)। এর পরবর্তী কনিষ্ঠ পদ হচ্ছে ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা। কিন্তু তিনটি বিভাগে এ পদ নেই। ওপরের ও নিচের পদে এ ধরনের খাপছাড়া অবস্থা হচ্ছে - নিপসমের সঙ্গে জোড়া লেগে আবার আলাদা হওয়ার পরে যে অপূর্ণতা রয়ে গেছে- এটি তার অন্যতম উদাহরণ।
আইইডিসিআর-এ রয়েছে চারটি বিভাগীয় ল্যাবরেটরি : ভাইরাস বিদ্যা, মেডিকেল কীটতত্ত্ব, অণুজীব বিদ্যা ও প্রাণী সংক্রামক রোগ (ওয়ান হেলথ)। একটি লাইব্রেরি রয়েছে। রয়েছে মিলনায়তন ও কয়েকটি ক্লাস রুম ও সভা কক্ষ। বিভাগগুলোর নিয়মিত কাজের পাশাপাশি ২০১২ সাল থেকে চালু হয়েছে দু’ বছর মেয়াদি ফিল্ড এপিডেমিওলজি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি (এফইটিপি)। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত এমএসসি ইন অ্যাপ্লাইড এপিডেমিওলজি কোর্স হিসেবে চালু আছে। বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের যৌথ সমঝোতা অনুযায়ী এ কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। ২০১৬-১৮ সময়ে দু’ বছর মেয়াদি ইমপ্রুভিং পাবলিক হেলথ ম্যানেজমেন্ট ফর অ্যাকশন (ইম্প্যাক্ট) কোর্স চালু হয়েছিল। দু’ বছর মেয়াদি কোর্সটি এখন নেই। তবে ছয় মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি রয়েছে। এফইটিপি কোর্সেও ২ বছর মেয়াদের পাশাপাশি সংক্ষিপ্ত মেয়াদের কর্মসূচি রয়েছে।
রোগ নজরদারি ও সাড়াদান (): আইইডিসিআর-এ যে সব রোগের নজরদারি ও সাড়াদান ব্যবস্থা চালু আছে : (১) ইনফ্লুয়েঞ্জা (২) নিপাহ ভাইরাস (৩) ডেঙ্গু (৪) অসংক্রামক ব্যাধি (৫) রোটা ভাইরাস ও ইন্টাসাসেপশন (৬) অ্যান্টি মাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স (৭) কলেরা (৮) এনথ্রাক্স (৯) লেপ্টোস্পাইরোসিস (১০) শ্বাসতন্ত্রের রোগ (১১) খাদ্যবাহিত রোগ (১২) নবউদ্ভূত প্রাণী সংক্রমিত রোগ (১৩) আকস্মিক মস্তিষ্ক ও মেরুরজ্জু প্রদাহ (১৪) শিশুদের মাঝে কীটনাশকজনিত বিষক্রিয়া
স্বাস্থ্য দুর্ঘটনার তদন্ত ও সাড়াদান : ২০০৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত আইইডিসিআর প্রায় ৩০০টি স্বাস্থ্য দুর্ঘটনার তদন্ত ও সাড়াদান করেছে। উল্লেখ্য, এ কাজের জন্য জাতীয় পর্যায়ে আইইডিসিআর-এর পরিচালকের নেতৃত্বে রয়েছে জাতীয় দ্রুত সাড়াদান টিম (National Rapid Response Team-NRRT)। অনুরূপভাবে জেলাতে সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে রয়েছে জেলা দ্রুত সাড়াদান টিম (Upazilla Rapid Response Team- URRT) ও উপজেলাতে রয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার নেতৃত্বে উপজেলা দ্রুত সাড়াদান টিম (District Rapid Response Team- DRRT)। জাতীয় দ্রুত সাড়াদান টিম ২০০৭ সাল থেকে যে সব স্বাস্থ্য দুর্ঘটনার তদন্ত ও সাড়াদান করেছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো : নিপাহ, মস্তিষ্কের অজানা প্রদাহ, প্যানডেমিক ইনফ্লুয়েঞ্জা, এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা, নতুন ভাইরাসের ইনফ্লুয়েঞ্জা, এনথ্রাক্স, ডিপথেরিয়া, কলেরা, খাদ্যে বিষক্রিয়া, ডায়রিয়া, হেপাটাইটসি-ই ভাইরাস, হাম, রুবেলা, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, আন্ত্রিক জ্বর, গণমনস্তাত্ত্বিক অসুস্থতা, জলবসন্ত, গুটিবসন্তের গুজব, ইবোলার গুজব, ঘাগরা শাকের বিষক্রিয়া, ম্যালেরিয়া, পোটকা মাছের বিষক্রিয়া, কীটনাশক বিষক্রিয়া, নিউমোনিয়া প্রাদুর্ভাব, জাপানিজ এনকেফালাইটিস, অজ্ঞাতনামা রোগ প্রভৃতি। আইইডিসিআর-এ অবস্থিত পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার (পিএইচইওসি) এসব কার্যক্রম সমন্বয় করে থাকে।
উল্লেখ্য, রোগ প্রাদুর্ভাবের গুজবকে একই রকম গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত ও সাড়াদান করতে হয়। কারণ প্রকৃত কারণকে উদঘাটন করে জনসমক্ষে প্রকাশ করে সামাজিক উদ্বেগকে নিরসন করাও দ্রুত সাড়াদান টিমের কর্তব্য। জানা রোগের দ্রুত বিস্তার ঘটলে তাকে নিয়ন্ত্রণের জন্য জাতীয় সাড়াদান টিমকে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে জেলা ও উপজেলা টিমকে সহায়তা করতে হয়।
জাতীয় দ্রুত সাড়াদান টিমের কাজের সঙ্গে অধিকাংশ ক্ষেত্রে যুক্ত হন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা। আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআরবি সরকারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারকের অধীনে জাতীয় সাড়াদান কার্যক্রমে সক্রিয় সহযোগিতা করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রদান করে কারিগরি সহায়তা।
২০১৯ কার্যক্রম : উল্লিখিত নিয়মিত কার্যক্রম ছাড়াও ২০১৯ সালে আইইডিসিআর গুরুত্বপূর্ণ যে সব কাজ করেছে তার মধ্যে কয়েকটি হচ্ছে : জলবায়ু পরিবর্তনজনিত রোগের নজরদারি, যৌনবাহিত রোগের নজরদারি, আকস্মিক জ্বরের নজরদারি, শিশু স্বাস্থ্য ও শিশু মৃত্যু নজরদারি প্রভৃতি। পূর্বে উল্লিখিত কোর্সগুলো ছাড়াও অন্যান্য যে সব অ্যাকাডেমিক কোর্স চালু আছে : ক্লিনিক্যাল এপিডেমিওলজি, জীবনাচরণ ও পরিবেশগত ঝুঁকি হ্রাসে কেমিব্রজ কর্মসূচি (ঈঅচঅইখঊ) প্রভৃতি। ঢাকার বাইরে নরসিংদীর বেলাবোতে আইইডিসিআর-এর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ডিপথেরিয়া ও অন্যান্য সংক্রামক ব্যাধি নির্ণয়ের ফিল্ড ল্যাবরেটরি রয়েছে।
অন্তত ১০টি নতুন বিষয়ে আইইডিসিআর গবেষণা করছে। এছাড়াও ৩ জন পিএইচডি ও ৬ জন এমফিল ছাত্র-ছাত্রীর গবেষণা কার্যক্রম চলছে এখানে। প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে ১৯টিরও বেশি বিষয়ে। কর্মশালা পরিচালিত হয়েছে ১৩টিরও বেশি বিষয়ে।
আইইডিসিআর-এর পরিচালক জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানসমূহের আন্তর্জাতিক সমিতির (ওঅঘচঐও) সহ-সভাপতি। আইইডিসিআর অন্যান্য যে সব আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সদস্য : : Global Outbreak Alert and Response Network (GOARN), Global Influenza Surveillance and Response System (GISRS), International Association of National Public Health Institutes (IANPHI), Alliance for Health Security Cooperation - Advisory Group
সামনে কি : দেশের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার সক্ষমতা বাড়ানো, জরুরি জনস্বাস্থ্য পরিস্থিতি মোকাবিলা করার সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমেই আমরা দ্রুত সব অজানা অপ্রচলিত গুরুতর রোগব্যাধি শনাক্ত করতে পারি। আমাদের দেশে কতগুলো নির্দিষ্ট সংক্রামক রোগের নজরদারি ব্যবস্থা চালু আছে। হঠাৎ করে নতুন ও অজানা রোগের নজরদারির জন্য ঘটনাভিত্তিক নজরদারি ব্যবস্থাও চালু আছে। কিন্তু যে প্রতিষ্ঠান এর দায়িত্বপ্রাপ্ত সেটি সিংহভাগ বৈদেশিক সহায়তা নির্ভর। প্রয়োজন দেশের রাজস্ব বাজেটের ওপর ভিত্তি করে দেশের নজরদারি ব্যবস্থা শক্তিশালী করা।
লেখক : সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, আইইডিসিআর এবং ডাকসুর সাবেক জিএস
শেয়ার করুন
ডা. মুশতাক হোসেন | ২৫ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০

১৯৭৬ সালের আগস্টে বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিলের সভায় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) প্রতিষ্ঠার জন্য ২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা বরাদ্দের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। যে ভবনকে ভিত্তি ধরে আইইডিসিআর-এর প্রকল্প শুরু হয়, সেটা ছিল ম্যালেরিয়া ইনস্টিটিউট। ভবনটির লাগোয়া জমি অধিগ্রহণ করে ছয় তলা ভবন তৈরি হয়, যেখানে চারটি তলায় চারটি ল্যাবরেটরি তৈরি হয়। কিন্তু আইইডিসিআর-এর এ সুখ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। প্রতিষ্ঠার এক দশকের মধ্যেই তার জন্য নির্মিত ছয়তলা ভবনটি ছেড়ে দিতে হয় মতিঝিল থেকে স্থানান্তরিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জন্য। আইইডিসিআর ভবন বেহাত হওয়ার তিন দশকেরও বেশি সময় পরে আবার নতুন বহুতল ভবন তৈরি হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকের বাসভবনের জায়গাটির ত্যাগ স্বীকার করে। কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করি, এ ভবনটি যেন আবার বেহাত হয়ে না যায়!
আইইডিসিআর-এর পুরো নাম Institute of Epidemiology Disease Control & Research. মূল ভিত্তি রোগতত্ত্ব। কিন্তু রোগতত্ত্ব কী? একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীতে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত অবস্থা এবং ঘটনার বিস্তার ও কারণগুলো যে বিষয়টিতে অধ্যয়ন করা হয়; এবং অধ্যয়ন করা বিদ্যা স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানে কাজে লাগানো হয় তাকে রোগতত্ত্ব বলে সংজ্ঞায়িত করা যায়।
মোটা দাগে আইইডিসিআর-এর চারটি কাজ : (১) স্বাস্থ্য সম্পর্কিত অবস্থা ও ঘটনার নজরদারি ও সাড়া দান (২) হঠাৎ ঘটে যাওয়া কোনো স্বাস্থ্য দুর্ঘটনার তদন্ত ও সাড়া দান (৩) এতদসংক্রান্ত গবেষণা (৪) দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য এ বিষয়ে দক্ষ কর্মশক্তি তৈরি করা। আইইডিসিআর-এর পূর্বসূরি ম্যালেরিয়া ইনস্টিটিউট চালু হয়েছিল বাংলাদেশ থেকে (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) থেকে প্রাণঘাতী ম্যালেরিয়া রোগকে নির্মূল করার জন্য। রোগতাত্ত্বিক ও কীটতাত্ত্বিক বিদ্যাকে কাজে লাগিয়ে ১৯৬০ দশকের মধ্যেই ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রিত হয়। এর ধারাবাহিকতায় একইভাবে রোগতাত্ত্বিক ও কীটতাত্ত্বিক বিদ্যা কাজে লাগিয়ে অন্যান্য সংক্রামক ব্যাধি নির্মূল করার জন্য একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার তাগিদ অনুভব করেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্যবিদরা। সে তাগিদের ফলেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে আইইডিসিআর প্রতিষ্ঠিত হলো।
আগেই বলেছি আইইডিসিআর-এর যাত্রাপথ ফুলে বিছানো ছিল না। এর একটা বড় কারণ হচ্ছে সব সরকারের উচ্চ মহলে ধারণা হলো যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন মানেই শুধুমাত্র বড় বড় হাসপাতাল তৈরি করা। জনস্বাস্থ্য বিষয়টার গুরুত্ব তাদের কাছে খুবই দুর্বল। এখনো জনস্বাস্থ্যের সিংহভাগ কার্যকলাপ চলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তথা বৈদেশিক ঋণ ও অনুদানে। শুধু সরকারি উচ্চ মহলের কথা বলছি কেন? এ দেশের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর বেশির ভাগ ধারণাই এমন হাসপাতালকেন্দ্রিক!
জনস্বাস্থ্য কী, এর সংজ্ঞা কী? সমাজের সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টা দ্বারা রোগ প্রতিরোধ, জীবনকে দীর্ঘায়ু করা, স্বাস্থ্য উন্নয়নের যে শৈল্পিক ও বৈজ্ঞানিক কর্মযজ্ঞ তাই জনস্বাস্থ্য। জনস্বাস্থ্য শুধু নির্দিষ্ট কোনো রোগ দূর করা নিয়ে কাজ করে না, সমগ্র স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ওপর কর্মকা-কে কেন্দ্রীভূত করে।
যা হোক, আইইডিসিআর-এর কথায় ফিরে আসি। ১৯৮১ সালে উচ্চ পর্যায়ের নীতিনির্ধারকদের সিদ্ধান্তে আইইডিসিআর-কে নিপসমের সঙ্গে একীভূত করে ফেলা হলো। দু’টো প্রতিষ্ঠানের কাজ নাকি একই! নিপসম হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে জনস্বাস্থ্যে স্নাতকোত্তর স্বাস্থ্য জনশক্তি তৈরি করা, আর আইইডিসিআর-এর কাজ হলো রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য বাস্তব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা। দু’টোকে এক করে মেলাতে গিয়ে দু’টো প্রতিষ্ঠানের কাজই কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলো।
অবশেষে ১৯৮৭ সালে তিনটি জাতীয়-আন্তর্জাতিক সংস্থার (বাংলাদেশ সরকার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি) যৌথ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আইইডিসিআর ও নিপসমকে আবার আলাদা করা হলো। তবে আইইডিসিআর আর আগের পূর্ণ রূপ পেল না, ভাগাভাগি হলে যা হয় আর কি! সে অপূর্ণতার ক্ষত আজও রয়ে গেছে।
আইইডিসিআর তখন একটি মধ্যমেয়াদি পাঁচসালা পরিকল্পনা গ্রহণ করে। সে পরিকল্পনা মোতাবেক নতুন-পুরাতন মিলিয়ে আইইডিসিআর-এ আটটি বিভাগ আছে : (১) রোগতত্ত্ব (২) জৈব পরিসংখ্যান (৩) মেডিকেল সামাজিক বিজ্ঞান (৪) মেডিকেল কীটতত্ত্ব (৫) ভাইরাস বিদ্যা (৬) পরজীবী বিদ্যা (৭) প্রাণী সংক্রামিত রোগ (৮) অণুজীব বিদ্যা।
পরিচালক সর্বোচ্চ নির্বাহী প্রধান। আটটির মধ্যে চারটি বিভাগের প্রধান হচ্ছেন মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালকের সমমর্যাদার)। বাকি চারটি বিভাগের প্রধান হচ্ছেন প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (স্বাস্থ্য বিভাগের উপ-পরিচালকের সমমর্যাদার)। এর পরবর্তী কনিষ্ঠ পদ হচ্ছে ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা। কিন্তু তিনটি বিভাগে এ পদ নেই। ওপরের ও নিচের পদে এ ধরনের খাপছাড়া অবস্থা হচ্ছে - নিপসমের সঙ্গে জোড়া লেগে আবার আলাদা হওয়ার পরে যে অপূর্ণতা রয়ে গেছে- এটি তার অন্যতম উদাহরণ।
আইইডিসিআর-এ রয়েছে চারটি বিভাগীয় ল্যাবরেটরি : ভাইরাস বিদ্যা, মেডিকেল কীটতত্ত্ব, অণুজীব বিদ্যা ও প্রাণী সংক্রামক রোগ (ওয়ান হেলথ)। একটি লাইব্রেরি রয়েছে। রয়েছে মিলনায়তন ও কয়েকটি ক্লাস রুম ও সভা কক্ষ। বিভাগগুলোর নিয়মিত কাজের পাশাপাশি ২০১২ সাল থেকে চালু হয়েছে দু’ বছর মেয়াদি ফিল্ড এপিডেমিওলজি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি (এফইটিপি)। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত এমএসসি ইন অ্যাপ্লাইড এপিডেমিওলজি কোর্স হিসেবে চালু আছে। বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের যৌথ সমঝোতা অনুযায়ী এ কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। ২০১৬-১৮ সময়ে দু’ বছর মেয়াদি ইমপ্রুভিং পাবলিক হেলথ ম্যানেজমেন্ট ফর অ্যাকশন (ইম্প্যাক্ট) কোর্স চালু হয়েছিল। দু’ বছর মেয়াদি কোর্সটি এখন নেই। তবে ছয় মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি রয়েছে। এফইটিপি কোর্সেও ২ বছর মেয়াদের পাশাপাশি সংক্ষিপ্ত মেয়াদের কর্মসূচি রয়েছে।
রোগ নজরদারি ও সাড়াদান (): আইইডিসিআর-এ যে সব রোগের নজরদারি ও সাড়াদান ব্যবস্থা চালু আছে : (১) ইনফ্লুয়েঞ্জা (২) নিপাহ ভাইরাস (৩) ডেঙ্গু (৪) অসংক্রামক ব্যাধি (৫) রোটা ভাইরাস ও ইন্টাসাসেপশন (৬) অ্যান্টি মাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স (৭) কলেরা (৮) এনথ্রাক্স (৯) লেপ্টোস্পাইরোসিস (১০) শ্বাসতন্ত্রের রোগ (১১) খাদ্যবাহিত রোগ (১২) নবউদ্ভূত প্রাণী সংক্রমিত রোগ (১৩) আকস্মিক মস্তিষ্ক ও মেরুরজ্জু প্রদাহ (১৪) শিশুদের মাঝে কীটনাশকজনিত বিষক্রিয়া
স্বাস্থ্য দুর্ঘটনার তদন্ত ও সাড়াদান : ২০০৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত আইইডিসিআর প্রায় ৩০০টি স্বাস্থ্য দুর্ঘটনার তদন্ত ও সাড়াদান করেছে। উল্লেখ্য, এ কাজের জন্য জাতীয় পর্যায়ে আইইডিসিআর-এর পরিচালকের নেতৃত্বে রয়েছে জাতীয় দ্রুত সাড়াদান টিম (National Rapid Response Team-NRRT)। অনুরূপভাবে জেলাতে সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে রয়েছে জেলা দ্রুত সাড়াদান টিম (Upazilla Rapid Response Team- URRT) ও উপজেলাতে রয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার নেতৃত্বে উপজেলা দ্রুত সাড়াদান টিম (District Rapid Response Team- DRRT)। জাতীয় দ্রুত সাড়াদান টিম ২০০৭ সাল থেকে যে সব স্বাস্থ্য দুর্ঘটনার তদন্ত ও সাড়াদান করেছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো : নিপাহ, মস্তিষ্কের অজানা প্রদাহ, প্যানডেমিক ইনফ্লুয়েঞ্জা, এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা, নতুন ভাইরাসের ইনফ্লুয়েঞ্জা, এনথ্রাক্স, ডিপথেরিয়া, কলেরা, খাদ্যে বিষক্রিয়া, ডায়রিয়া, হেপাটাইটসি-ই ভাইরাস, হাম, রুবেলা, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, আন্ত্রিক জ্বর, গণমনস্তাত্ত্বিক অসুস্থতা, জলবসন্ত, গুটিবসন্তের গুজব, ইবোলার গুজব, ঘাগরা শাকের বিষক্রিয়া, ম্যালেরিয়া, পোটকা মাছের বিষক্রিয়া, কীটনাশক বিষক্রিয়া, নিউমোনিয়া প্রাদুর্ভাব, জাপানিজ এনকেফালাইটিস, অজ্ঞাতনামা রোগ প্রভৃতি। আইইডিসিআর-এ অবস্থিত পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার (পিএইচইওসি) এসব কার্যক্রম সমন্বয় করে থাকে।
উল্লেখ্য, রোগ প্রাদুর্ভাবের গুজবকে একই রকম গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত ও সাড়াদান করতে হয়। কারণ প্রকৃত কারণকে উদঘাটন করে জনসমক্ষে প্রকাশ করে সামাজিক উদ্বেগকে নিরসন করাও দ্রুত সাড়াদান টিমের কর্তব্য। জানা রোগের দ্রুত বিস্তার ঘটলে তাকে নিয়ন্ত্রণের জন্য জাতীয় সাড়াদান টিমকে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে জেলা ও উপজেলা টিমকে সহায়তা করতে হয়।
জাতীয় দ্রুত সাড়াদান টিমের কাজের সঙ্গে অধিকাংশ ক্ষেত্রে যুক্ত হন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা। আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআরবি সরকারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারকের অধীনে জাতীয় সাড়াদান কার্যক্রমে সক্রিয় সহযোগিতা করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রদান করে কারিগরি সহায়তা।
২০১৯ কার্যক্রম : উল্লিখিত নিয়মিত কার্যক্রম ছাড়াও ২০১৯ সালে আইইডিসিআর গুরুত্বপূর্ণ যে সব কাজ করেছে তার মধ্যে কয়েকটি হচ্ছে : জলবায়ু পরিবর্তনজনিত রোগের নজরদারি, যৌনবাহিত রোগের নজরদারি, আকস্মিক জ্বরের নজরদারি, শিশু স্বাস্থ্য ও শিশু মৃত্যু নজরদারি প্রভৃতি। পূর্বে উল্লিখিত কোর্সগুলো ছাড়াও অন্যান্য যে সব অ্যাকাডেমিক কোর্স চালু আছে : ক্লিনিক্যাল এপিডেমিওলজি, জীবনাচরণ ও পরিবেশগত ঝুঁকি হ্রাসে কেমিব্রজ কর্মসূচি (ঈঅচঅইখঊ) প্রভৃতি। ঢাকার বাইরে নরসিংদীর বেলাবোতে আইইডিসিআর-এর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ডিপথেরিয়া ও অন্যান্য সংক্রামক ব্যাধি নির্ণয়ের ফিল্ড ল্যাবরেটরি রয়েছে।
অন্তত ১০টি নতুন বিষয়ে আইইডিসিআর গবেষণা করছে। এছাড়াও ৩ জন পিএইচডি ও ৬ জন এমফিল ছাত্র-ছাত্রীর গবেষণা কার্যক্রম চলছে এখানে। প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে ১৯টিরও বেশি বিষয়ে। কর্মশালা পরিচালিত হয়েছে ১৩টিরও বেশি বিষয়ে।
আইইডিসিআর-এর পরিচালক জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানসমূহের আন্তর্জাতিক সমিতির (ওঅঘচঐও) সহ-সভাপতি। আইইডিসিআর অন্যান্য যে সব আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সদস্য : : Global Outbreak Alert and Response Network (GOARN), Global Influenza Surveillance and Response System (GISRS), International Association of National Public Health Institutes (IANPHI), Alliance for Health Security Cooperation - Advisory Group
সামনে কি : দেশের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার সক্ষমতা বাড়ানো, জরুরি জনস্বাস্থ্য পরিস্থিতি মোকাবিলা করার সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমেই আমরা দ্রুত সব অজানা অপ্রচলিত গুরুতর রোগব্যাধি শনাক্ত করতে পারি। আমাদের দেশে কতগুলো নির্দিষ্ট সংক্রামক রোগের নজরদারি ব্যবস্থা চালু আছে। হঠাৎ করে নতুন ও অজানা রোগের নজরদারির জন্য ঘটনাভিত্তিক নজরদারি ব্যবস্থাও চালু আছে। কিন্তু যে প্রতিষ্ঠান এর দায়িত্বপ্রাপ্ত সেটি সিংহভাগ বৈদেশিক সহায়তা নির্ভর। প্রয়োজন দেশের রাজস্ব বাজেটের ওপর ভিত্তি করে দেশের নজরদারি ব্যবস্থা শক্তিশালী করা।
লেখক : সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, আইইডিসিআর এবং ডাকসুর সাবেক জিএস