
ক্যানসার আক্রান্ত রোগী চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হওয়ার পর বা যেকোনো ধরনের অস্ত্রোপচারের পর সেই রোগীদের নানান শারীরিক ও মানসিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এসব থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অবশ্যই শারীরিক ও মানসিক যত্নের একান্ত প্রয়োজন। এ সময়ে যেসব খাবার খেতে পারবেন এবং যা খেতে পারবেন না জানালেন মানবিক সাহায্য সংস্থার স্বাস্থ্য ও পুষ্টি কর্মকর্তা নাজিয়া আফরিন
যেসব খাবার খাবেন না : ফ্রিজে রাখা খাবার এমন রোগীদের খাওয়া যাবে না। চিনিজাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে। যেসব খাবারে চিনির পরিমাণ বেশি কেক-পেস্ট্রি, কোল্ড ড্রিংকস তা এড়িয়ে চলাই ভালো। প্রিজারভেটিভ দেওয়া খাবার খাওয়া যাবে না। যেমন : আচার, চাটনি, নোনা মাছ, জেলি, পাউরুটি, অধিক চিনি ও অধিক লবণযুক্ত খাবার। জাংক ফুড বা অতিরিক্ত ভাজাভুজি-জাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে ট্রান্সফ্যাট থাকে। এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। শরীরের সরাসরি ক্ষতি করতে পারে এ ধরনের খাবার। যেমন: শিঙাড়া, সমুচা ও অতিরিক্ত মসলা-জাতীয় খাবার ক্ষতিকর। কিছু কিছু দুগ্ধজাত দ্রব্য খেলে রোগপ্রতিরোধ শক্তি কমে যায়। এর মধ্যে রয়েছে মাখন, চিজের মতো বেশ কিছু খাবার। এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
যেকোনো ধরনের রেড মিড বা অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত মাংস শরীরের জন্য মারাত্মক খারাপ। তাই এই জাতীয় মাংস বাদ দিতে হবে। বারবিকিউ-জাতীয় খাবার, অর্থাৎ যেসব খাবার সরাসরি আগুনে পুড়িয়ে তৈরি করা হয় যেসব খাবার খাবেন না।
যা খেতে পারবেন : জাও ভাত বা নরম ভাতের সঙ্গে তেল-মসলা কম দিয়ে তৈরি তরকারি খেতে হবে। দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় প্রোটিন ও আয়রন রাখা অপরিহার্য। তাই মুরগির মাংস, সামুদ্রিক মাছ, বিভিন্ন ধরনের ডাল, বিচিজাতীয় খাদ্য, ডিম, বাদামের মতো প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার প্রয়োজন।বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিজ্জ তেল যেমন : অলিভ অয়েল, নারকেল তেল, সূর্যমুখী তেলÑএসব খেলেও দ্রুত ত্বকের সৌন্দর্য ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
স্ট্রবেরি, ব্লু বেরি-জাতীয় ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-সমৃদ্ধ খাবার রাখা জরুরি। এ সময় শরীরে ভিটামিন, মিনারেল, আয়রনের অভাব দেখা যায়। তাই সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল খেতে হবে।
হিমোগ্লোবিনের অভাব দেখা দেওয়ায় বিট রুটের শরবত বা সালাদ দেওয়া যেতে পারে। আনার বা ডালিমও খাওয়া যাবে। ফাইবার-জাতীয় খাবার বেশি করে খেতে হবে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অবশ্যই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-জাতীয় টক ফল রাখা লাগবে। যেমন : লেবু, জাম্বুরা, আমরা, আমলকী, আনারস ইত্যাদি মৌসুমি ফল। ভিটামিন-এ, ই খাবার বেশি করে খেতে হবে। যেমন : লাল, কমলা ফল ও সবজি এবং পালংশাক, লেটুসপাতা, ধনেপাতা, বিভিন্ন ধরনের বাদাম-জাতীয় খাবার। প্রতিদিন কয়েক কোয়া রসুন খাওয়া যেতে পারে। কেননা রসুন এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি শরীরের বিভিন্ন টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে। বেশি করে পানি পান করা প্রয়োজন। এ ধরনের রোগীকে তরল-জাতীয় খাবার যেমন : টমেটো, ব্রোকলি, গাজর, ফুলকপি, মটরশুঁটি দিয়ে স্যুপ তৈরি করে খাওয়া যেতে পারে। কেননা তাদের মধ্যে ডিহাইড্রেশন ও নিদ্রাহীনতা থাকায় তরল পুষ্টিকর খাবারগুলো খাওয়া অত্যন্ত উপকার। এ ছাড়া গ্রিন-টি খেতে পারবে। দুধের বদলে সয়া দুধ খাওয়া যায়। এটি প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। রোগপ্রতিরোধ শক্তিও বাড়িয়ে দেয়।
শীতের এ সময়টাতেই বিয়ে, পার্টি, পিকনিক, আরও নানা রকম আয়োজন দেখা যায়। যারা শাড়ি পরেন তাদের শাড়ির সঙ্গে শাল বা সোয়েটার পরতে গেয়ে সাজটা মাটি করে ফেলেন। তাই এই শীতে বেছে নিন হাল ফ্যাশনের লংকাট ব্লাউজ, যা আপনার শীত কাটাবে আর ফ্যাশনে যোগ করবে নতুন মাত্রা। লিখেছেন মোহসীনা লাইজু
নকশায় বৈচিত্র্য
শার্টের ডিজাইনেও বানানো যেতে পারে ব্লাউজ। শার্টের মতো গলা পর্যন্ত বোতাম আর লম্বা হাতায় কাফ ডিজাইন দেওয়া ব্লাউজ এই শীতের জনপ্রিয় ট্রেন্ড। আমাদের দেশের অল্প শীতে শাড়ির সঙ্গে এ ধরনের ব্লাউজ বেশ চলনসই। শাড়ির সঙ্গে আলাদা করে আর শীতের কাপড় পরার প্রয়োজন হয় না। জনপ্রিয় এই ব্লাউজের নাম জ্যাকেট-ব্লাউজ। যারা লম্বা ব্লাউজ পরতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, তাদের জন্য উপযোগী। এ ব্লাউজের কোমরের দৈর্ঘ্যে লোয়ার বাস্টের পরের অংশ থেকে দুই সাইডে কামিজের মতো করে কাটা থাকে। ফলে ব্লাউজের ফিটিং ভালো হয়। পরতেও স্বাচ্ছন্দ্য আসে। জ্যাকেট-ব্লাউজের গলায়ও আছে নানা ধরনের বৈচিত্র্য। হাইনেক, রাউন্ড নেক, শার্ট কলার ও কি শেরওয়ানি কলার। ব্লাউজের হাতার কাটিংও নানা ধরনের কাট দেখা যায়। ঝালর হাতা, ফুল বটম ঘটি হাতা, ফ্রিল হাতা, মাইক হাতা ইত্যাদি। শাড়ির সঙ্গে শীতের ব্লাউজ নিয়ে ডিজাইনাররা নানা ধরনের নিরীক্ষা করেছেন। কাটিং প্যাটার্নের সঙ্গে সঙ্গে এর ফেব্রিকসেও এসেছে বৈচিত্র্য। সুতি, সিল্ক, ফানেল, নিটও ডেনিম কাপড়ের ব্লাউজরূপী জ্যাকেটের ব্লাউজ পাওয়া যাচ্ছে ব্র্যান্ড ও নন-ব্র্যান্ডের ফ্যাশন হাউজে। ডিজাইনার তানিয়া কাউসার বলেন, ‘দেখতে পুরোটা ব্লাউজ হলেও শীতের কথা মাথায় রেখে এতে জ্যাকেটের একটা আমেজ আনা হয়েছে। ব্লাউজের লেন্থ মিডিয়াম ও লং দুই ধরনের স্টাইলই হয়। কোনো কোনো ব্লাউজের বাটন লাইনে চেইন ও ফ্রিল ব্যবহার করেছি।’ ডিজাইনার রাহুল হোসেন বলেন, ‘শীত মানেই উৎসবের মৌসুম। এ সময় শাড়ির সঙ্গে চাইলেও কোনো গরম কাপড় সহজে ব্যবহার করা যায় না। শাল বা চাদর শাড়ির সঙ্গে মানানসই হলেও এগুলো ব্যবহারে কিছুটা বয়স্ক ভাব চলে আসে। শাড়ির সঙ্গে আলাদা করে কার্ডিগান পরলে অনেক গরম ও মোটা লাগার আশঙ্কা থাকে। তাদের জন্য উপযোগী হলো লংকাটের ব্লাউজ। প্রতিটি শাড়ির সঙ্গে আলাদা করে শীতের কাপড় ম্যাচিং করা কষ্টকর। তাই জ্যাকেট-ব্লাউজ এ সমস্যার সমাধান।’
ব্লাউজের ধরন
ডেনিম,খাদি বা মোটা কাপড়ের জ্যাকেট-ব্লাউজই এখন বেশি চলছে। সঙ্গে রয়েছে মোটা সুতি, ডেনিম, ফ্লানেলের জ্যাকেট-ব্লাউজ। ফুলস্লিভ, হাফস্লিভ ও স্লিভলেস এই তিন প্যাটার্নের ব্লাউজ বানাতে পারেন। যেকোনো ধরনের শাড়ির সঙ্গে সহজেই মানিয়ে যাবে। শাড়ির রঙ যদি খুব গাঢ় হয় তাহলে ব্লাউজের রঙ হতে হবে ঠিক উল্টো। অর্থাৎ হালকা। আবার শাড়ি হালকা হলে ব্লাউজ গাঢ় হবে। গর্জিয়াস শাড়ি হলে জ্যাকেট ব্লাউজ হবে একদম সাদামাটা। শীতের সময় গাঢ় রঙ যেমন লাল, মেরুন, বিস্কুট, ম্যাজেন্টা ও ডিপ পেস্ট বেছে নিতে পারেন। সুতির পাশাপাশি খাদি, এন্ডি কটন, এন্ডি সিল্ক, হাফ সিল্ক, কন্ট্রাস্ট মসলিন বেছে নেওয়া যায়। জ্যাকেট ব্লাউজের আছে নানা নাম। কোট ব্লাউজ, কার্ডিগান ব্লাউজ, টপস কাটিং ব্লাউজ বেশি চলছে বলে জানালেন দেশালের বিক্রয়কর্মী। একরঙা ব্লাউজের নকশায় জামদানি নকশা, ব্লকপ্রিন্ট, বাটিক, টাইডাই, কলংকারি, ফুলকারি, হ্যান্ড পেইন্টিংয়ে নানা ধরনের ডিজাইন ব্যবহার করা যেতে পারে।
কোন শাড়িতে কেমন ব্লাউজ
এক রঙের জর্জেট শাড়ির সঙ্গে ভারী নকশার এমব্রয়ডারি করা ব্লাউজ দারুণ মানানসই। হালকা শীতে বেছে নিতে পারেন কলার নেক-ব্লাউজ। এই ব্লাউজগুলো এখন বেশ চলছে। মোটা সুতি দিয়ে ফুল হাতা দিয়ে আর নিজের পছন্দমতো ডিজাইনের কলার দিয়ে এই ব্লাউজগুলো যেকোনো শাড়ির সঙ্গে পরা যায়। উলের ব্লাউজও পরা যায় শাড়ির সঙ্গে। ব্লাউজের জায়গায় এখন অনেকেই এক রঙের সোয়েটার পরেন। এতে ফ্যাশন যেমন হয়, তেমনি শীতের হাত থেকে রেহাইও পাওয়া যায়। তবে সে ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে সোয়েটার, যাতে একদম ফিটিং হয়, ঢিলেঢালা ভাব থাকলে ভালো লাগবে না। শীতের সময়টা শাড়ির সঙ্গে পরার জন্য ভেলভেট বা ব্রোকেট কাপড় দিয়ে ব্লাউজ তৈরি করতে পারেন। ভেলভেট কাপড় শরীরকে যেমন উষ্ণ রাখবে, তেমনি ব্রোকেট গর্জিয়াস লুক দেবে। এ ছাড়া সিল্কের শাড়ির সঙ্গে পরতে পারেন সিকুইন ব্লাউজ। সিকুইন ব্লাউজ সাধারণত ফুলসিøভ হয়। কিন্তু শাড়ি খুব বেশি হেভি আর কাজ করা হলে এই ব্লাউজ না এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। সাধারণত হালকা কিংবা এক রঙের শাড়ির সঙ্গে সিকুইন ব্লাউজ বেশি মানানসই। এই ব্লাউজ পরে ছিমছামভাবে শাড়ির ভেতরেই গরম থাকা যায়। ব্লাউজের পরিবর্তে পরতে পারেন হাইনেক স্কিনি কিংবা নিটেড টপ।
কোথায় পাবেন ও দরদাম : বেশির ভাগ মানুষ নিজের পছন্দ ও মাপমতো ডিজাইন দিয়ে ব্লাউজ বানিয়ে নেয়। যারা বানাতে চান না তারা রেডিমেড ব্লাউজ কিনতে পারেন। ঢাকার নিউ মার্কেট, বসুন্ধরা সিশিপিং মল, গাউছিয়া, আনারকলি মার্কেট, নুরজাহান মার্কেটসহ নানা জায়গায় রেডিমেড ব্লাউজ বিক্রি হয় এমন দোকান পাবেন। এ ছাড়া দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলোতে রেডিমেড ব্লাউজ পাবেন। এসব ব্লাউজ কিনে শুধু দুপাশ সেলাই করে নিতে হবে। অনলাইন শপ থেকেও নানা ধরনের কাস্টমাইজ ব্লাউজ কিনতে পারবেন। সাদামাটা এক রঙের ব্লাউজ কিনতে পারবেন ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। আর নকশাদার ব্লাউজ কিনতে আপনার খরচ হবে ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে। টেইলারি শপ থেকে যদি কাপড় কিনে বানাতে চান তবে সেলাই খরচ হবে ৫০০ থেকে ১২০০ টাকা।
অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ আত্মিক বিকাশের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। কিন্তু অধিকাংশ অভিভাবকই জানেন না কীভাবে শিশুকে শ্রদ্ধাবোধ শেখাতে হবে। লিখেছেন প্যারেন্টিং গবেষক শ্যামল আতিক
শিশুর শ্রদ্ধাবোধ শিক্ষার মূল গাঁথুনিটা শুরু হয় পরিবার থেকে। পরিবারে একে অন্যকে সম্মান করলে খুব সহজেই শিশুদের মধ্যে সঞ্চারিত হয়। একটু খেয়াল করলে দেখবেন, পরিবারের সবাই আস্তে কথা বলে, সেখানে গৃহকর্মী থেকে শুরু করে ছোট শিশুও কোমল কণ্ঠে কথা বলে। আবার উল্টোটাও ঘটে। আসলে শিশুরা উপদেশ শুনে শিখে না, বরং দেখে শিখে। মা-বাবা যদি অন্যকে সম্মান করে, শিশুও অন্যকে সম্মান করতে শিখবে। আমরা যদি অন্যের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনি, অন্যের কথার মাঝখানে কথা না বলি তাহলে এই গুণ শিশুদের মধ্যে সঞ্চারিত হবে। বয়সে বড়দের যদি আপনি বলে সম্বোধন করি, শিশু এই গুণটি রপ্ত করবে।
তবে কিছু বিষয় শিশুকে স্পষ্ট করে বলতে হবে। যেমন সাক্ষাতে হাসিমুখে কুশল জিজ্ঞেস করা ও হাত মেলানো, বড়দের অগ্রাধিকার দেওয়া, মেহমান বাড়িতে এলে বসতে বলা, কাউকে কটু কথা না বলা এগুলো শিশুকে স্পষ্ট করে বলতে হবে। তার আগে জানতে হবে শিশু এ বিষয়গুলো বুঝে কি না? যদি না বুঝে তাহলে আপনি নিজে এগুলো চর্চা করুন, আপনাকে দেখেই শিশু শিখবে। যদি বুঝে, তাহলে তা তাকে বলতে পারেন। তবে কোনোভাবেই জোরজবরদস্তি, বকাবকি কিংবা প্রহার করা যাবে না। ছোট হলেও শিশুকে সম্মান করতে হয়। কারণ সম্মান পেলে শিশুর মধ্যে আত্মমর্যাদা ও আত্মসম্মানবোধ তৈরি হয়। শিশুও অন্যকে সম্মান করতে শিখে। তাই দেখা হলে শিশুকে সালাম অথবা অভিবাদন দিন। আপনার পক্ষ থেকে কোনো ভুল হলে শিশুকে দুঃখিত বলুন। শিশু কোনো সহযোগিতা করলে ‘ধন্যবাদ’ জানান। আস্তে আস্তে এই গুণ শিশুর মধ্যেও সঞ্চারিত হবে। শিশু ভুল করলে সবার সামনে তিরস্কার করা যাবে না। বিশেষ করে তার বন্ধুদের সামনে কোনোভাবেই নয়। যদি শাসন করতেই হয়, তা করতে হবে আড়ালে ডেকে। শিশুর ব্যক্তিগত ব্যাপারেও আমাদের শ্রদ্ধা করতে জানতে হবে। যেমন শিশুর ডায়েরি না পড়া, বাথরুমে ঢোকার আগে শিশুর অনুমতি নেওয়া ইত্যাদি।
এ ছাড়া শিশুর মধ্যে যদি অন্যকে সম্মান করার গুণ থাকে তা তাকে ধরিয়ে দিন। যখন সে কাউকে শ্রদ্ধা কিংবা সহযোগিতা করে, এর জন্য তাকে প্রশংসা করুন, মাঝেমধ্যে পুরস্কৃত করুন। এই গুণগুলো যে শিশুর মধ্যে আছে তা তাকে বারবার বলুন। যদি এই বিষয়গুলো পালন করতে পারেন, তাহলে আশা করা যায়, আপনার শিশু পারস্পরিক আদব ও অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতার গুণ নিয়ে বেড়ে উঠবে।
অনেক দিন ধরেই নো মেকআপ লুকের ট্রেন্ড চলছে। এর বৈশিষ্ট্য হলো আপনি মেকআপ করবেন কিন্তু দেখে বোঝা যাবে না। লিখেছেন নাহার সুলতানা
কেমন মেকআপ
শ্যামলা ত্বক : যাদের গায়ের রং একটু চাপা, তারা ওয়াটার বেস ফাউন্ডেশন ব্যবহার করুন। ত্বকের স্বাভাবিক রঙের কাছাকাছি যে ফাউন্ডেশন শেড, সেটিই বেছে নিন। তারপর কমপ্যাক্ট বা ফেস পাউডার দিন। দিনের বেলায় গাঢ় গোলাপি রঙ ও রাতের বেলায় ব্রোঞ্জ বা বার্গান্ডি রঙ ব্যবহার করে দেখতে পারেন। যদি রাতের পার্টি হয়, তাহলে গোল্ডেন শেড ট্রাই করতে পারেন। লিপস্টিক হিসেবে ওয়ার্ম রঙ কপার, ব্রোঞ্জ, গাঢ় লাল, বার্গান্ডি রঙ হতে পারে।
মিশ্র ত্বক : মেকআপ শুরুতে ত্বক পরিষ্কার করে ফাউন্ডেশন ব্যবহার করুন। তারপর ভিজে স্পঞ্জ দিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। কয়েক মিনিট অপেক্ষা করে কমপ্যাক্ট পাউডার লাগান। ঠোঁটের জন্য বোল্ড কালারের লিপস্টিক ভালো মানাবে। তবে বেবি পিংক এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
ফর্সা ত্বক : মেকআপ লাগানোর আগে মুখে ময়েশ্চারাইজার দিন। প্রয়োজনে কনসিলার লাগাতে পারেন। ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে না চাইলে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা যায়। গায়ের রঙ বেশি ফর্সা হলে হালকা পিংক শেডের ক্রিম ব্লাশন ব্যবহার করতে পারেন। কালোর পরিবর্তে ব্রাউন মাশকারাই ভালো হবে। মেটালিক আইশ্যাডো বা আইশ্যাডোর কোনো প্যাস্টেল শেড বা গোল্ডেন শিমারÑসবকিছুই ভালো লাগবে। লাল, গোলাপি রঙের কোনো নরম শেডের লিপস্টিকের সঙ্গে লিপগ্লস না দিয়ে ঠোঁটে গ্লস বা শিমার ব্যবহার করা ভালো।
যা করবেন না
ফাউন্ডেশন : মেকআপের ক্ষেত্রে বেসের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাই ভুলেও বেস হিসেবে হেভি ফাউন্ডেশন ব্যবহার করবেন না। ফাউন্ডেশনের বদলে বরং বিবি বা সিসি ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো মেকআপ বেস হিসেবে বেশ হালকা, তাই ব্যবহারে ত্বক আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। ন্যাচারাল শেডের ফাউন্ডেশনেরও হালকা শেড ব্যবহার করতে পারেন। ত্বকের টোনের এক শেড ওপরেও হতে পারে।
কাজল বা আইলাইনার : চোখের মেকআপে কাজল বা আইলাইনার এমনভাবে ব্যবহার করেন যেন চোখের সাজ স্পষ্ট হয়ে পড়ে। তাই নো মেকআপ লুকে কাজল বা আইলাইনের ব্যবহার কখনোই করবেন না। বরং চোখে মাশকারা দিন। এতে চোখ বড় ও সুন্দর দেখাবে।
আইশ্যাডো : চোখের কোণে কালি ঢাকতে নিতান্তই যদি আইশ্যাডো লাগাতে হয় তাহলে লাইট ব্রাউন বা হালকা গোল্ডেন ভাব রয়েছে এমন আইশ্যাডো বেছে নিন।
ব্লাশ : ব্লাশের ব্যবহার ছাড়া কোনো মেকআপই সম্পূর্ণ হয় না। নো মেকআপ লুকে ব্লাশের ঠিকভাবে ব্যবহার জরুরি। এই মেকআপে লাইট পিঙ্ক লিপস্টিক কিংবা মুস ব্লাশ ব্যবহার করলে গালে একেবারে হালকা একটা টিন্ট লুক দিতে হবে। এর ফলে মেকআপ আকর্ষণীয় হবে।
কয়েক ধরনের কাবাবের রেসিপি দিয়েছেন মারজানা তাবাসসুম অন্যা
চিকেন বটি কাবাব
উপকরণ
হাড় ছাড়া মুরগির মাংস বিউব করে কাটা আধা কেজি, পানি ছাড়া টক দই ২ টেবিল চামচ, বেসন ২ টেবিল চামচ, আদা বাটা আধা টেবিল চামচ, রসুন বাটা আধা টেবিল চামচ, গরম মসলা এক টেবিল চামচ, টালা জিরার গুঁড়ো আধা চা চামচ, ধনেগুঁড়ো ১ চা চামচ, গোল মরিচের গুঁড়ো ১ চা চামচ, মরিচের গুঁড়ো ১ চা চামচ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, চিলি সস ১ টেবিল চামচ, লবণ ১ চা চামচ, সরিষার তেল সিকি কাপ।
যেভাবে তৈরি করবেন
১. মাংসে সব উপকরণ মাখিয়ে কয়লা চুলা জালিয়ে বাটিতে নিয়ে সামান্য তেল দিয়ে মেরিনেট করা মাংসগুলো এর মধ্যে দিয়ে ১৫ মিনিট ঢেকে রাখুন।
২. এবার শাসলিক কাঠিতে চিকেন একটার পর একটা গেঁথে নিন।
৩. তাওয়ায় সরিষার তেল দিয়ে গেঁথে রাখা কাবাবগুলো স্যালো ফ্রাই করুন অথবা কয়লার আগুনে রান্না করুন।
শ্রিম্প বারবিকিউ
উপকরণ
চিংড়ি ১ কেজি, রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, ওরিগ্যানো আধা টেবিল চামচ, চিলি ফ্লেক্স ১ চা চামচ, বারবিকিউ সস ৩ টেবিল চামচ, লবণ ১ চা চামচ, মরিচের গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ, লেবুর রস ২ টেবিল চামচ, গোল মরিচের গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ, অলিভ অয়েল সিকি কাপ।
যেভাবে তৈরি করবেন
১. চিংড়ি ভালো করে ধুয়ে মাথা ও লেজ রেখে চিরে নিন।
২. এবার সব উপকরণ দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে ১৫ মিনিট মেরিনেট করুন।
৩. শাসলিক কাঠিতে চিংড়ি মাছ একটার পর একটা গেঁথে নিন।
৪. এবার চিংড়ি মাছগুলোকে ভালো করে অলিভ অয়েল ব্রাশ করে কয়লায় পুড়িয়ে নিন অথবা স্যালো ফ্রাই করুন।
টেংরি কাবাব
উপকরণ
মুরগির রান ১০ পিস, পানি ছাড়া টক দই ১ কাপ, বেসন আড়াই টেবিল চামচ, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, শাহি গরম মসলা ১ টেবিল চামচ, টালা জিরার গুঁড়ো আধা চা চামচ, ধনেগুঁড়ো ১ চা চামচ, গোল মরিচের গুঁড়ো ১ চা চামচ, মরিচের গুঁড়ো ২ টেবিল চামচ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, লবণ ১ চা চামচ, ফুড কালার বা হলুদের গুঁড়ো ১ চা চামচ, ঘি ১ টেবিল চামচ।
যেভাবে তৈরি করবেন
১. মুরগির রান ভালো করে ধুয়ে চিরে নিন।
২. ফ্রাইপ্যানে ঘি নিয়ে এর মধ্যে বেসন দিয়ে তিন মিনিট ভাজুন।
৩. চিকেনের সঙ্গে বেসন ও বাকি উপাদানগুলো ভালো করে মিশিয়ে মেরিনেট করে সাত-আট ঘণ্টা রেখে দিন।
৪. এবার ফ্রাইপ্যানে ঘি দিয়ে মুরগির রানগুলো স্যালো ফ্রাই করে নিন।
স্মোকি মাসালা চিকেন তন্দুরি
উপকরণ
মুরগির রান ৪টি, বেসন ৪ টেবিল চামচ, পাঁচফোড়ন ১ চিমটি, টকদই আধা কাপ, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ১ চা চামচ, ধনেগুঁড়ো ২ চা চামচ, তন্দুরি মসলা ২ টেবিল চামচ, লবণ আধা চা চামচ, ধনেপাতা কুচি সিকি কাপ, লাল মরিচের গুঁড়ো ২ চা চামচ, সাদা সরিষা বাটা ২ টেবিল চামচ, সরিষার তেল আধা কাপ, পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ, চিনি ১ চা চামচ, টমেটো পেস্ট ২ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ ৪টি।
যেভাবে তৈরি করবেন
১. মাংস ভালো করে ধুয়ে চিরে নিন।
২. ফ্রাইপ্যানে সরিষার তেল নিয়ে এর মধ্যে পাঁচফোড়ন দিন। এবার এর মধ্যে বেসন দিয়ে ৩ মিনিট ভাজুন।
৩. এবার চিকেনের সঙ্গে বেসনের মিশ্রণ ও বাকি উপাদানগুলা ভালো করে মিশিয়ে সাত-আট ঘণ্টা মেরিনেট করে রেখে দিন।
৪. চিকেনকে ভালো করে সরিষার তেল ব্রাশ করে কয়লায় পুড়িয়ে নিন।
৫. একটি প্যানে সরিষার তেল নিয়ে এর মধ্যে পেঁয়াজ বাটা, মেরিনেট করা মশল্লা, টমেটো পেস্ট দিয়ে কষিয়ে নিন। কষানো হলে চিকেনগুলো দিয়ে পাঁচ মিনিট ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখুন। এর মধ্যে ৩-৪টি কাঁচা মরিচ ফালি করে দিন। হয়ে গেলে নামিয়ে নিন।
আগের ইনিংসের মতোই ব্যর্থ উসমান খাজা। পারেননি ডেভিড ওয়ার্নারও। প্রথম ইনিংসের দুই সেঞ্চুরিয়ানও ফিরে গেছেন। দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিংয়ে তাই খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থায় নেই অস্ট্রেলিয়া। তবুও তৃতীয় দিন শেষে এগিয়ে আছে তারা।
ওভালে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতকে ২৯৬ রানে আটকে দেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট হারিয়ে ১২৩ রান করে অসিরা। এগিয়ে আছে ২৯৬ রানে।
দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিংয়ের শুরুটা ভালো করেছে ভারত। অস্ট্রেলিয়াকে চেপে ধরেছে তারা।
দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও উসমান খাজা ফেরেন ২৪ রানের মধ্যেই। মারনাস লাবুশান ও স্টিভেন স্মিথের ৬২ রানের জুটি ভাঙেন রবীন্দ্র জাদেজা, পরে ট্রাভিস হেডকেও ফেরান এই স্পিনার। টেস্ট ক্যারিয়ারে অষ্টমবারের মতো স্মিথকে আউট করেছেন জাদেজা।
তৃতীয় দিন শেষে মারনাস লাবুশানের সঙ্গে অপরাজিত আছেন ক্যামেরুন গ্রিন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: অস্ট্রেলিয়া: ৪৬৯ ও ৪৪ ওভারে ১২৩/৪ (লাবুশেন ৪১*, স্মিথ ৩৪; জাদেজা ২/২৫, উমেশ ১/২১)ভারত ১ম ইনিংস: ৬৯.৪ ওভারে ২৯৬ (রাহানে ৮৯, শার্দূল ৫১, জাদেজা ৪৮; কামিন্স ৩/৮৩, গ্রিন ২/৪৪, বোল্যান্ড ২/৫৯)।
আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিজের পালন করা সাড়ে ২১ মণ ওজনের গরু উপহার দিতে চেয়েছিলেন কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার চরকাউনা গ্রামের সাধারণ কৃষক বুলবুল আহমেদ ও তার স্ত্রী ইসরাত জাহান। তাদের এই ভালোবাসার প্রতি সম্মান জানিয়ে উপহারের এই গরু গ্রহণে সম্মতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
শুক্রবার (৯ জুন) সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি কৃষিবিদ মশিউর রহমান হুমায়ুন বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী উপহারের গরু গ্রহণে সম্মতি দেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী খুশি হয়েছেন এবং এই বিরল ভালোবাসার জন্য বুলবুল আহমেদ ও তার স্ত্রীকে ধন্যবাদ দেন।
হাসান জাহিদ তুষার জানান, প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা এই গরু বুলবুল আহমেদের নিজ বাড়িতেই থাকবে এবং সেখানেই কোরবানি হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোরবানির গরুর মাংস স্থানীয় দরিদ্র-অসহায় জনগণের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
গরুটি ক্রস ব্রাহমা প্রজাতির। এতে আনুমানিক ৮০০ কেজি মাংস হতে পারে বলে জানিয়েছেন বুলবুল আহমেদ। বুলবুল জানান, ২০২০ সালে নেত্রকোনা জেলা থেকে আড়াই লাখ টাকায় প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেওয়ার জন্য তিনি এই গরু কেনেন। গরু কেনার পর কিশোরগঞ্জের বিখ্যাত পাগলা মসজিদে পাঁচ হাজার টাকা মানতও করছিলেন তিনি যেন তার গরুটি সুস্থ থাকে।
তিনি আরও জানান, তিনি ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে মাঠকর্মী হিসেবে কর্মরত তার স্ত্রী ইসরাত জাহান আওয়ামী লীগ সরকারের একটি বাড়ি, একটি খামার প্রকল্প থেকে ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে এবং নিজের জমানো টাকা দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্য এই গরু কেনেন। তারা গত তিন বছর গরুটির নিবিড় পরিচর্যা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আবেগ ও ভালবাসা থেকে তারা এই গরু ক্রয় ও লালন পালন করেছেন বলে জানান।
উপহার হিসেবে তার গরুটি গ্রহণ করার সম্মতি দেওয়ায় বুলবুল আহমেদ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। বুলবুল আহমেদ কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
বেশ ক'দিন তীব্র তাপদাহের পর গতকাল রাজধানী ঢাকাজুড়ে হয়েছে স্বস্তির বৃষ্টি। এতে তাপমাত্রা এসেছে কমে, পরিচ্ছন্ন হয়েছে পরিবেশ। তবুও আজ সকালে বায়ুদূষণের কারণে বিশ্বে দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষ পাঁচে আছে ঢাকা। বৃষ্টিধোয়া রাজধানী ঢাকা আজ সকাল সাড়ে ৮টায় ১৫৫ স্কোর নিয়ে দূষণের তালিকায় চতুর্থ।
আজ শনিবার (১০ জুন) সকাল সাড়ে ৮টায় বায়ুমানের সূচক (একিউআই) অনুযায়ী ঢাকায় বাতাসের স্কোর ছিল ১৫৫। বায়ুর মান বিচারে এ মাত্রাকে 'অস্বাস্থ্যকর' বলা হয়। একই সময়ে একিউআই স্কোর ১৬৮ নিয়ে প্রথম অবস্থানে আছে পাকিস্তানের লাহোর। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভিয়েতনামের হ্যানয়, স্কোর ১৫৬। তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইসরায়েলের তেলআবিব। আর পঞ্চম স্থানে আছে চীনের শেংডু, স্কোর ১৪৯।
একইসময়ে ১৩৮ স্কোর নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহেনেসবার্গ। ১৩২ স্কোর নিয়ে সপ্তম স্থানে রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই। অষ্টম নেপালের কাঠমান্ডু, স্কোর ১২৭। ১১৮ স্কোর নিয়ে নবম স্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ডেট্রয়েট আর ১১৭ স্কোর নিয়ে দশম সৌদি আরবের রিয়াদ।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার দূষিত বাতাসের শহরের এ তালিকা প্রকাশ করে। প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই স্কোর একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের কোনো ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে কি না, তা জানায়।
তথ্যমতে, একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়। আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত 'অস্বাস্থ্যকর' হিসেবে বিবেচিত হয়। একইভাবে একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে থাকলে 'খুব অস্বাস্থ্যকর' এবং স্কোর ৩০১ থেকে ৪০০ এর মধ্যে থাকলে 'ঝুঁকিপূর্ণ' বলে বিবেচিত হয়।
ষাটের দশকে বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের আগুন তরুণদের বুকে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। স্বাধীন বাংলা প্রতিষ্ঠান ক্ষেত্র তৈরি করতে গড়ে তুলেছিলেন ‘নিউক্লিয়াস’। স্বাধীনতার পর তিনি সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের বাঁধভাঙা ঢেউ তুলেছিলেন। কিন্তু নব্বইয়ের দশকে সবকিছু থেকে দূরে আড়ালে চলে যান। রাজনীতিতে তাকে নিয়ে তৈরি হয়েছিল রহস্য। সেই রহস্য নায়ক সিরাজুল আলম খান চলে গেলেন চিররহস্যের দেশে।
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম এ সংগঠক গতকাল শুক্রবার দুপুর আড়াইটার কিছু পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
সিরাজুল আলম খানের মৃত্যুর বিষয়টি দেশ রূপান্তরকে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক।
সিরাজুল আলম খানের ব্যক্তিগত সহকারী রুবেল দেশ রূপান্তরকে বলেন, অসুস্থ অবস্থায় তাকে রাজধানীর একটি প্রাইভেট হাসপাতালে প্রথমে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে গত ১ জুন নেওয়া হয় আইসিইউতে। এরপর গত বৃহস্পতিবার রাতে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়।
বঙ্গবন্ধুর আস্থাভাজন সিরাজুল আলম খানের জন্ম নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলীপুর গ্রামে, ১৯৪১ সালের ৬ জানুয়ারি। তার বাবা খোরশেদ আলম খান ছিলেন স্কুল পরিদর্শক। মা সৈয়দা জাকিয়া খাতুন গৃহিণী ছিলেন। ছয় ভাই ও তিন বোনের মধ্যে দ্বিতীয় সিরাজুল আলম খান।
১৯৬১ সালে ছাত্রলীগের সহসাধারণ সম্পাদক হন সিরাজুল আলম খান। ১৯৬৩ সালে তিনি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৭২ সালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গঠন করেন।
সিরাজুল আলম খানের মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান (মান্না), জনসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক (নুর)।
সিরাজুল আলম খানের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তার আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান তিনি। শোক জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিভিন্ন সংগঠন।
প্রয়াত সিরাজুল আলম খানের ঘনিষ্ঠ ও নাট্য পরিচালক সাকিল সৈকত দেশ রূপান্তরকে বলেন, সিরাজুল আলম খানের মরদেহ বিকেলে হাসপাতাল থেকে মোহাম্মদপুরের আল-মারকাজুলে নেওয়া হয়েছে। সেখানে গোসল শেষে রাতে শমরিতা হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হবে। আজ শনিবার সকাল ১০টায় বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে জানাজা শেষে নোয়াখালীতে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে পুনরায় জানাজা শেষে বেগমগঞ্জের আলীপুরে মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হবে রাজনীতির এ নায়ককে।
১৯৪১ সালে জন্ম নেওয়া এ কিংবদন্তি রাজনীতিককে বিগত কয়েক বছর ধরে নিয়মিত হাসপাতালে যেতে হয়েছে। দেশে এবং বিদেশে দীর্ঘ সময় চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি।
জন্মের কয়েক বছর পর পিতার চাকরির সুবাদে সিরাজুল আলম খুলনায় চলে যান। ১৯৫৬ সালে খুলনা জিলা স্কুল থেকে এসএসসি ও ১৯৫৮ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। অনার্স ডিগ্রি অর্জনের পর কনভোকেশন মুভমেন্টে অংশ নেওয়ার কারণে তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়।
স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলন-সংগ্রাম পরিচালনায় ১৯৬২ ছাত্রলীগ নেতা সিরাজুল আলম খান, আবদুর রাজ্জাক ও কাজী আরেফ আহমেদের নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ বা স্বাধীনতার ‘নিউক্লিয়াস’ গঠিত হয়। পরে ছাত্র-তরুণদের আন্দোলন সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তারা। বঙ্গবন্ধুরও ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে ছিলেন এ ছাত্রনেতারা। ছয় দফার সমর্থনে জনমত গঠনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেন সিরাজুল আলম খান। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা বাতিল ও বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে আন্দোলন ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-শ্রমিকদের সম্পৃক্ত করতে প্রধান ভূমিকা পালন করেন তিনি।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনির সঙ্গে বিরোধের জের ধরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ভেঙে দুই ভাগ হয়। এরপর ১৯৭২ সালে সিরাজুল আলম খানের উদ্যোগে রাজনৈতিক দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ প্রতিষ্ঠা হয়। তিনি কখনো নেতৃত্বে না এলেও জাসদ নেতাদের পরামর্শ দিয়ে তাদের ‘তাত্ত্বিক গুরু’ হিসেবে খ্যাতি পান। অনুসারী সবাই তাকে ‘দাদা ভাই’ নামেই ডাকতেন।
মূলত নব্বইয়ের দশকে সিরাজুল আলম খান কখনো জনসমক্ষে আসতেন না এবং বক্তৃতা-বিবৃতি দিতেন না; আড়ালে থেকে তৎপরতা চালাতেন বলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘রহস্য পুরুষ’ হিসেবে পরিচিতি পান। নব্বই পর্যন্ত একাধিকবার জেল-জুলুম খেটেছেন তিনি।
দাদা ভাইয়ের মৃত্যুত গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চেয়ারপারসন অধ্যাপক আলতাফুন্নেসা, গণফোরাম একাংশে সভাপতি মোস্তফা মোহসিন মন্টু ও সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান।
ব্রাজিলের সান্তোস থেকে বার্সেলোনায় খেলতে এসেছিলেন নেইমার। তখন কাতালানদের মধ্যমণি আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনেল মেসি। দুই দেশের রাজনৈতিক বিরোধ চরমে। তবু সেসবকে পাশ কাটিয়ে দুজনে হয়ে ওঠেন বন্ধু।
ক্যাম্প ন্যু ছেড়ে নেইমার পাড়ি জমিয়েছিলেন প্যারিসে। তবুও বন্ধুত্ব ছিল অটুট। তার টানেই মেসিকে যখন বার্সা ছেড়ে দেয়, তখন এই ব্রাজিলিয়ান পার্ক দে প্রিন্সেসে ভেড়াতে মধ্যস্ততা করেন।
পিএসজির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে মেসির। কিংবদন্তি এই ফুটবলার এবার ফুটবল ছেড়ে যাচ্ছেন সকার খেলতে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাব ইন্টার মায়ামির হয়ে মাঠ মাতাবেন তিনি।
মেসি নিজে সেই ঘোষণা দেওয়ার আগ পর্যন্ত তার দলবদল নিয়ে চলছিল নানা নাটকীয়তা। সেই সব রহস্যময় দিনগুলোতে নেইমার কি জানতেন মেসির ঠিকানা হতে চলেছে কোনটা?
এক সাক্ষাৎকারে নেইমার বলেছেন, 'আমি জানতাম মেসি মায়ামিতে যাবে (হাসি)।'
তারপর নেইমার যোগ করেন, 'মেসি আমার সেরা বন্ধুদের একজন। সে আমাকে দারুণ সব মুহূর্ত উপহার দিয়েছে। আমি তার সঙ্গে খেলার সুযোগ পেয়েছি এটা আমার সৌভাগ্য। আমি জানতাম সে মায়ামিতে যাচ্ছে, এ নিয়ে আমার সঙ্গে তার কথাও হয়েছে। শহর ও জীবনযাত্রার কারণে মেসি সেখানে দারুণ সময় কাটাবে, এটা তাকে বলেছিলাম। আমি নিশ্চিত তার পদচারণায় দেশটির লিগে আসবে আমুল পরিবর্তন।'
বাসায় তেলাপোকা মারার ওষুধ দেওয়ার পর বিষক্রিয়ায় মারা গেছে রাজধানীর বারিধারা এলাকার ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন তুষারের দুই ছেলে। তার মেয়ে এখনো অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। গত শনিবার ‘ডিসিএস অরগানাইজেন লিমিটেড’ নামের একটি পেস্ট কন্ট্রোল কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন ওই ব্যবসায়ী। প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা বাসায় ওষুধ দিয়ে ছয় ঘণ্টা পরে ঢুকে ঘর পরিষ্কার করতে বলেছিলেন। পরিবারটি ৯ ঘণ্টা পরে বাসায় ঢুকে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়। এ সময় তাদের সবারই পেট খারাপ, বমির মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
ওই পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, সেই পেস্ট কন্ট্রোল কোম্পানি পোকামাকড় নিধনের জন্য অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেট (গ্যাস ট্যাবলেট) ব্যবহার করেছিল, যেটা থেকে বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হয়। সেই গ্যাসের বিষক্রিয়াতেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পর ওই প্রতিষ্ঠানের ৫ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এদিকে রাজধানীতে গত পাঁচ বছরে এই বিষক্রিয়ায় বেশ কয়েকজন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উচ্চমাত্রার এই কীটনাশক বাসায় ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অথচ বিভিন্নভাবে সাধারণ কীটনাশক হিসেবে দেদার বিক্রি হচ্ছে সারা দেশে।
সূত্র বলছে, রাজধানীসহ সারা দেশে কয়েক শতাধিক পেস্ট কন্ট্রোল প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব কোম্পানির প্রায় ৯৫ ভাগের কোনো অনুমোদন নেই। কৃষি ও পরিবেশ অধিদপ্তরের এসব দেখভাল করার কথা থাকলেও তারাও খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না।
পেস্ট কন্ট্রোল সার্ভিস প্রতিষ্ঠান সেবা নিন প্ল্যাটফর্ম লি.-এর চেয়ারম্যান শামসুল আলম বলেন, দেশে ব্যাঙের ছাতার মতো পেস্ট কন্ট্রোল প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। অধিক মুনাফার আশায় তারা এক ধরনের নিষিদ্ধ ট্যাবলেট ব্যবহার করে। আবার অনেকে লিকুইড কেমিক্যাল ব্যবহার করে। কিন্তু কোন মাত্রায় এসব ব্যবহার করতে হয় তার প্রশিক্ষণ নেই। সরকারের পক্ষ থেকে এসব প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে আরও বেশি সতর্ক হওয়া উচিত।
রাজধানীর বেশ কিছু বাজার ঘুরে দেখা যায় অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেট যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে। ফুটপাত থেকে শুরু করে দেয়াল লিখন ও অনলাইনের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে চটকদার বিজ্ঞাপন। অথচ চাষাবাদ ছাড়া অন্য কাজে যার ব্যবহার নিষিদ্ধ। বদ্ধ ঘরে এই ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করলে যে কারও বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মাইকিং করে এসব কীটনাশক বিক্রি করছিলেন কাঞ্চন মিয়া। এ ধরনের কীটনাশক বিক্রির অনুমতি তার আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের অনুমতি লাগে না। দশ বছর ধরে এই ব্যবসা করি। কেউ তো কিছু বলে না। কোথা থেকে এসব পণ্য সংগ্রহ করা হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেশিরভাগ পুরান ঢাকা থেকে সংগ্রহ করি। গাজীপুর সাভার থেকেও এসে দিয়ে যায়। এসব ব্যবহারে মানুষের মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে তা জানেন না বলে জানান তিনি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন কীটনাশক জাতীয় একপ্রকার ওষুধের জেনেটিক বা গ্রুপ নাম হলো অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড। বাজারে অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেট আকারে ফসটক্সিন, সেলফস, কুইকফস, কুইকফিউম, ডেসিয়াগ্যাস এক্সটি ইত্যাদি নামে পাওয়া যায়। অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেট গ্যাস ট্যাবলেট নামেও পরিচিত। বাতাসের সংস্পর্শে এসে জীবনবিনাশী ভয়াবহ টক্সিক গ্যাস ফসফিন উৎপাদন করে। এই ট্যাবলেট সাধারণত গুদামজাত শস্যের পোকা দমন, ধান ক্ষেতের পোকা দমন, কলাগাছের পোকা দমন ও ইঁদুর দমনে ব্যবহার হয়ে থাকে। গত এক দশকে দেশে এই বিষাক্ত কীটনাশক মানুষের বাসাবাড়িতে ব্যবহার বাড়ছে। দেশের বাজারে ট্যাবলেট আকারে সহজলভ্য। রাজধানীতে ছারপোকা দমনে প্রায় যথেচ্ছ ব্যবহার হচ্ছে এই ট্যাবলেট।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে বালাইনাশক গ্রহণ করলে সেটা দ্রুত ফুসফুসে শোষিত হয় এবং রক্তে মিশে যায়। যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ বালাইনাশক শ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয় তাহলে নাক, গলা ও ফুসফুস মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সরকারের যে দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান রয়েছে এসব বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে কোন কোন কীটনাশক কোন মাত্রায় কোন কোন কীটপতঙ্গের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হবে সেটি নির্দিষ্ট করে নিশ্চিত করতে হবে। আমদানির সময়ও বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। অথবা দেশেই যদি তৈরি করতে হয় তাহলে যথাযথ কর্র্তৃপক্ষের লাইসেন্স নিয়ে উৎপাদন করতে হবে। এটির গুণগত মান থাকছে কি না তারও পরীক্ষা করতে হবে।
পরিবেশ গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি ওই বাসায় পেস্ট কন্ট্রোল প্রতিষ্ঠানটি অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ব্যবহার করেছে। যদিও আমরা এ বিষয়ে নিশ্চিত না। আমার মতে এটা আরও বেশি তদন্ত করা উচিত। সরকারের যে প্রতিষ্ঠান এসব বিক্রির অনুমোদন দেয় তাদের এই তদন্ত করে জানানো দরকার কী ধরনের কেমিক্যাল সেখানে ব্যবহার করা হয়েছিল। কারণ পেস্ট কন্ট্রোলের নামে কী ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় এটা জানাটা জরুরি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে কোন ধরনের কীটনাশক কীভাবে ব্যবহার করা হবে তার কোনো নীতিমালা নেই। কীটনাশকগুলো সাধারণ কৃষিজমিতে ব্যবহৃত হয়। ঢাকা শহরে এরকম বিষ ব্যবহার নিষিদ্ধ করা উচিত। তাছাড়া রাস্তাঘাটে এসব জিনিস অহরহ বিক্রি হচ্ছে। এসবও তদন্তের আওতায় আনতে হবে।
আরও এক কর্মী গ্রেপ্তার : দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় টিটু মোল্লা নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি বালাইনাশক কোম্পানিটির কর্মকর্তা। গত সোমবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ভাটারা থানার ওসি আবুল বাসার মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, ওই ঘটনায় করা মামলায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের মেয়ে অর্পিতা শাহরিয়ার কবির মুমুর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) রাতে বনানীর বাসা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। রাতেই পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
তবে কী কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
শুক্রবার সকালে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বনানীর একটি বাসা থেকে অর্পিতা শাহরিয়ার কবির মুমুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়, যা ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। পরে রাতেই পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে স্ত্রী হারান শাহরিয়ার কবির।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের মেয়ে অর্পিতা শাহরিয়ার কবির মুমুর (৪১) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃত্যুর আগে তিনি চিরকুট লিখে গেছেন। তবে সেখানে কি লেখা আছে তা নিশ্চিত করে জানা যায়নি।
বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর মহাখালীর আমতলী এলাকার বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। রাতেই পরিবারের দাবির প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়ায় মরদেহ হস্তান্তর করেছে পুলিশ। বিষয়টি দেশ রূপান্তরকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. জাহাঙ্গীর আলম। পুলিশের ধারণা, অর্পিতা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
গুলশান বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. শহীদুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে। পরে স্বজনের অনুরোধে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়।
জানা গেছে, লন্ডনে আইন বিষয়ে পড়ালেখা করতেন অর্পিতা। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে মা ফাতেমা কবিরের মৃত্যুর কারণে তিনি দেশে আসেন। এরপর দেশেই ছিলেন। মায়ের মৃত্যুর পর মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্থ ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার তার লণ্ডনে ফেরার কথা ছিল। মৃত্যুর আগে লিখে যাওয়া একটি চিরকুটে (সুইসাইড নোট) তিনি আত্মহত্যার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।
মেয়ের মৃত্যুতে শোকে বিবহবল লেখক–কলামিস্ট শাহরিয়ার কবির গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারেননি। তবে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল বলেন, রাজধানীর মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে অর্পিতাকে তাঁর মায়ের কবরে দাফন করা হয়েছে। রবিবার তাঁর কুলখানি অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার সকালে বৈঠক করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। এরপর দুপুরে বৈঠক করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে। এই বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মহাপরিচালক উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তিন প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এখানে মূলত আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে দেশের রাজনীতিতে যে উত্তাপ দেখা দিয়েছে তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে আনিসুল হক গণমাধ্যমে বলেছেন, তাদের এ বৈঠকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মূলত শ্রম আইন নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের শ্রম আইন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি পরামর্শ ছিল। বৈঠকে সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একটি সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এ মাসেই জেনেভা যাওয়ার কথা রয়েছে।
পরে বেলা ১টা ১০ মিনিটে মার্কিন দূতাবাসে প্রবেশ করেন বিএনপি মহাসচিব। এরপর বেলা আড়াইটার দিকে তিনি দূতাবাস থেকে বের হন। রাতে মির্জা ফখরুল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান সামনে রেখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে ভিসানীতি ঘোষণা করেছে তার ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই নীতি দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়ক হবে আমরা মনে করি বলে রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রদূতকে আমি জানিয়েছি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া আওয়ামী লীগের অধীনে দেশে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না। দেশের জনগণও তাই মনে করে। এ ছাড়া নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার নিয়ে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আমাদের কোনো আলাপ হয়নি।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সম্প্রতি আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছিলেন, “নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করবেন।” তার এমন বক্তব্য নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠলে পরে গণমাধ্যমে বিবৃতি দেয় আইন মন্ত্রণালয়। এরপর গতকাল মঙ্গলবার সকালে সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া কীভাবে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দেশের সংবিধানে কী আছে তা-ও জানতে চেয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।’
আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরকারের দূরত্ব প্রকাশ্যে চলে এসেছে। কোনো ধরনের রাখঢাক ছাড়াই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করছেন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আরও বেশি দৌড়ঝাঁপ শুরু করছেন। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের দূরত্ব এখন স্পষ্ট। আলোচনা আছে, সরকারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পশ্চিমা এ দেশটি হঠাৎ আরও ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করেছে।
জানা গেছে, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে এতদিন যুক্তরাষ্ট্রের মতপার্থক্য ছিল না। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করছে দেশটি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও এ নিয়ে কোনো দ্বিমত করেনি। এরই মধ্যে, ভিসানীতি ঘোষণা করে সরকারকে বড় চাপ দেওয়ার পূর্বাভাস দেয় যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি নিয়ে সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপি একে অন্যকে ঘায়েল করার চেষ্টা করে। তবে ভিসানীতি যে সরকারের ও আওয়ামী লীগের ওপরই বেশি চাপ তৈরি করেছে, সেটা ভেতরে-বাইরে আলোচনা আছে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায় ও কূটনীতি-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র দেশ রূপান্তরকে জানিয়েছে, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র তাদের অবস্থান পাল্টে নির্বাচনের স্বার্থে প্রয়োজনে সংবিধানের বাইরে যেতে হবে সরকারকে এমন প্রস্তাব দিতে চলেছে। ওই সূত্রগুলো দাবি করেছে, গত মাসের শেষের দিকে অথবা চলতি সপ্তাহে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বাসভবনে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পিটার হাস ওই বৈঠকে রাজনৈতিক সমঝোতায় না আসলে সব দলের অংশগ্রহণে জাতীয় সরকারের আদলে একটা কিছু করার বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন। তা না হলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের স্বার্থে সংবিধানসম্মত করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাব করেন। এ প্রস্তাব সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানেও দেওয়া হয়েছে। আনিসুল হকের সঙ্গে শ্রম আইন নিয়েও দীর্ঘ আলাপ করেন এ রাষ্ট্রদূত।
আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন নেতা দেশ রূপান্তরকে বলেন, পিটার হাসের ওই প্রস্তাব নিয়ে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে গেলে তাতে বড় আপত্তি তোলা হয়। শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা পাওয়া যাবে না এটা ধরেই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরুর বার্তা দেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে। তারা স্বীকার করেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ক্রমেই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছে। তবে নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের অসহযোগিতা করবে ধরে নিয়েই সরকারি দল আওয়ামী লীগ প্রস্তুতি নিচ্ছে।
পিটার হাস সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গেও নির্ধারিত-অনির্ধারিত বৈঠক করা শুরু করেছেন। গত সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে পিটার হাসকে উদ্দেশ্য করে প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, রাষ্ট্রদূতরা সীমা লঙ্ঘন করলে আইনি ব্যবস্থা নেবে সরকার।
আগামী নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় হয়ে ওঠার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর এক সদস্য দেশ রূপান্তরকে বলেন, পিটার হাসের দৌড়ঝাঁপ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘নাহি ছাড়ি’ অবস্থান আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরে দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে।
সরকারের দুই মন্ত্রীও দেশ রূপান্তরের কাছে স্বীকার করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সরকারের বিপক্ষে যেতে শুরু করেছে। ‘অন্যায় হস্তক্ষেপ’ বেড়েছে পিটার হাসের।
আওয়ামী লীগের কূটনীতিসম্পৃক্ত এক নেতা বলেন, সরকার বিকল্প হিসেবে শক্তিশালী দেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে কাজ করে চলেছে। বিকল্প দেশের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠলে নির্বাচন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রকে মাইনাস করে চলার এক ধরনের কৌশল গ্রহণ করা হবে। এ কৌশলে নির্বাচন সম্পন্ন হয়ে গেলে যুক্তরাষ্ট্রর সঙ্গে সম্পর্ক ঝালাই করা হবে নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর আরেক সদস্য দেশ রূপান্তরকে বলেন, ভিসানীতি মূলত সরকারের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। অনেকেই ভিসানীতিকে সব গেল বলে ধরে নিয়ে অবস্থান টলমলে করে তুলতে চায়। এরকম অবস্থা আওয়ামী লীগকে একটু চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। দলের নেতাকর্মীরা যেন সাহস হারিয়ে না ফেলে, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করার কৌশল গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সমালোচনা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। এমন কথা শোনা যাচ্ছে যে, আওয়ামী লীগ কি তাদের অবস্থান থেকে সরতে শুরু করবে? আবার প্রশ্নও আছে যে, নির্বাচন কি হবে? জাতীয় সরকার আসবে খুব শিগগিরই, এমন গুঞ্জনও রয়েছে জোরালোভাবে। শুধু তাই নয়, বাতিল হওয়া নির্বাচন পদ্ধতি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এমন গুঞ্জনও শুরু হয়েছে। যদিও এসবে কোনো ভিত্তি রয়েছে মনে করেন না আওয়ামী লীগ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। তারা দাবি করেন, সংবিধান অনুযায়ীই নির্বাচন হবে। এ ইস্যুতে কোনো শক্তির সঙ্গেই আপস করবেন না আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দলটির সভাপতিম-লীর সদস্য ফারুক খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, কোনো দেশের চাওয়ায় বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন হবে না। দেশের মানুষের চাওয়া অনুযায়ী সংবিধানসম্মতভাবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হবে। তিনি বলেন, সবার মতো করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে বদ্ধপরিকর।
কূটনীতিসম্পৃক্ত আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের আরেক নেতা বলেন, দৃশ্যত যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সরকারের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে মনে করা হলেও সেপ্টেম্বরের আগে পশ্চিমা এ দেশটি তার চূড়ান্ত অবস্থান পরিষ্কার করবে না বলে তারা মনে করছেন। ওই নেতা বলেন, সেপ্টেম্বরে ভারত সফর রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। মূলত সেই সফরেই বোঝা যাবে সরকার কোনদিকে যাবে। এ নেতা আরও বলেন, ‘আমাদের ডিপ্লোম্যাসি (পররাষ্ট্রনীতি) পরস্পরের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের নীতি। কূটনীতিতে প্রধানমন্ত্রী দেশি-বিদেশি অনেক নেতাকে ছাড়িয়ে গেছেন। সেই আস্থা-বিশ্বাসও প্রধানমন্ত্রীর ওপর আমাদের রয়েছে।’
এতদিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিষ্কার হয়ে না ওঠায় সরকার ও আওয়ামী লীগ নেতারা দাবি করতেন, দেশটিকে তারা বোঝাতে পেরেছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সমালোচনা প্রমাণ করে না যে, ক্ষমতাধর দেশটির সঙ্গে আওয়ামী লীগের বোঝাপড়া ঠিক আছে। যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি ঘোষণার পরই দেশটির অবস্থান আওয়ামী লীগের পক্ষে আছে এমন কথা কেউ আর বিশ্বাস করছে না।
আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা দেশ রূপান্তরকে বলেন, আমেরিকাকে মাইনাস ধরেই এগিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলটির শীর্ষ পর্যায়ের দুই নেতা আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান আগের চেয়ে বেশি স্পষ্ট হয়ে ওঠায় রাজনীতিতে তারা ‘ব্যাকফুটে’ চলে যাচ্ছেন কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমি একটাই বুঝি, একটাই জানি, আগামী নির্বাচন সংবিধানসম্মতভাবেই হবে। এ জায়গা থেকে একটুও নড়বে না সরকার।’