
দরজায় কড়া নাড়ছে ঋতুরাজ বসন্ত। সপ্তাহ পেরোলেই তার আগমন। প্রকৃতিতে বসন্ত বাতাসের আভাস। উৎসবপ্রিয় মানুষের মধ্যেও চলছে নতুন সাজ-পোশাকের প্রস্তুতি। এ উৎসবের সাজ-পোশাক নিয়ে লিখেছেন মোহসীনা লাইজু
পোশাকে রঙ আর প্রকৃতি
উৎসব পার্বণগুলোতে প্রথম পছন্দের তালিকায় থাকে দেশীয় পোশাক। কামিজ, কুর্তা, ফ্রক, শাড়ি, টি-শার্ট ও পাঞ্জাবিÑসবকিছুতেই থাকে উৎসবের রঙ ও নকশা। দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলোর পোশাকে রং আর ডিজাইনে নতুনত্ব পাবেন। বেশির ভাগ ফ্যাশন হাউজই বসন্তের পোশাকে উজ্জ্বল রঙের নানা শেড প্রাধান্য দিয়েছে। আয়োজনে আছে শাড়ি, কামিজ, কুর্তা, লং শার্ট, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, থ্রি-পিস, টি-শার্ট, শার্ট ইত্যাদি। পোশাকের নকশায় কাটিং প্যাটার্ন যেমন গুরুত্ব পেয়েছে, তেমনি ভ্যালু অ্যাডেড হিসেবে ব্লক, টাইডাই, স্প্রে ব্লক, স্ক্রিনপ্রিন্ট, কারচুপি থাকছে। চিরায়ত বাসন্তী ও হলুদ রঙের সঙ্গে কমলা, লাল এবং সবুজ রঙের নানা শেড যোগ হয়েছে। তবে বিশেষত্ব কেড়েছে কোনো কোনো ফ্যাশন হাউজের পোশাক আর শাড়িতে হলুদ ও সাদার মেলবন্ধন জুড়ে দিয়ে।
মিষ্টি ফাগুনের হাওয়ার সঙ্গে হালকা গরমেরও ছোঁয়া থাকে। তাই সুতি কাপড়কেই বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া লিলেন, খাদি, ভয়েল এবং তাঁতও আছে। বসন্তের পোশাকের ডিজাইনে ফ্লোরাল মোটিফের পাশাপাশি প্রকৃতির বিভিন্ন মোটিফও দেখা যাচ্ছে। পোশাকের মধ্যে বিশেষত্ব কেড়েছে সিঙ্গেল কামিজ ও কুর্তা। কামিজের নেক ও নি-লেন্থের নানা ধরনের নকশা যোগ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে স্ক্রিনপ্রিন্টের নানা নিরীক্ষা। কুর্তা আর টপে লেয়ার, কটি, ফ্লিল ও বাটন দিয়ে নতুনত্ব আনা হয়েছে।
ছেলেদের বসন্তের পাঞ্জাবিতে উইভিং কাপড়ের নকশাও বেশি। আছে বিভিন্ন রঙ মিশিয়ে তৈরি কটি। তাগা আউটলেটে আছে বিভিন্ন রঙের পাঞ্জাবি ও নানা রঙের কটি। পাঞ্জাবির বাইরে অনেক ধরনের টি-শার্টও আছে। টি-শার্টের নকশায় প্রাধান্য পেয়েছে বসন্তের মোটিফ। অনেকে ফুল শার্টও পরেন। তাদের জন্য আছে হলুদের নানা শেডের ওপর ফ্লোরাল মোটিফ। আছে সুতির স্ক্রিনপ্রিন্টের হাফ শার্টও।
বসন্তের পোশাক নিয়ে অঞ্জন’স-এর স্বত্বাধিকারী শাহিন আহম্মেদ জানান, ছেলেদের জন্য পাঞ্জাবি, শার্ট ও কটি আর মেয়েদের জন্য শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, টপস নিয়ে অঞ্জন’স এবারের বসন্ত আয়োজন করেছে। থিম হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে ফ্লোরাল ও জ্যামিতিক মোটিফ। হলুদ, কমলা, বাসন্তী, জলপাই ও সবুজ রঙ বেশি প্রাধান্য পেয়েছে এবারের বসন্তের আয়োজনে। ডিজাইনে বৈচিত্র্যের পাশাপাশি পোশাকে উজ্জ্বল রঙ প্রাধান্য পেয়েছে। কাপড় হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে কটন, ভয়েল ও লিলেন কটন।
ফাল্গুনের পোশাক নিয়ে ফ্যাশন হাউজ বিশ্ব রঙ-এর স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার বিপ্লব সাহা বলেন, গোল্ডেন হলুদ, কাঁচা হলুদ, কমলা, গেরুয়া, ম্যাজেন্টার সঙ্গে আরও সহকারী হিসেবে গাজর, কমলা, টিয়া, সবুজ, নেভি ব্লু ও ফিরোজা রঙকে প্রাধান্য দিয়েছি। ফ্লোরাল মোটিফেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। সুতি, লিলেন, অ্যান্ডি সিল্ক, হাফ সিল্ক কাপড়ে পোশাকের নকশাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নানা ভ্যালু অ্যাডেড মিডিয়ার ব্যবহারে। এর মধ্যে রয়েছে ব্লকপ্রিন্ট, স্ক্রিনপ্রিন্ট, হাতের কাজ, কারচুপি ইত্যাদি। মেয়েদের পোশাকের তালিকায় আছে শাড়ি, থ্রি-পিস, সিঙ্গেল কামিজ, টপস সেট, স্কার্ট, আনস্টিচ ড্রেস, পালাজ্জো, সিঙ্গেল ওড়না ও ব্লাউজ। ছেলেদের পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট ও কাতুয়া। বড়দের মতো ছোটদের পোশাকও রয়েছে। উৎসবের পরিপূর্ণতা দিতে পাবেন যুগল আর পরিবারের সবার জন্য একই থিমের পোশাক।
দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলো এ বছরও নানা রঙ, ডিজাইন আর মোটিফ নিয়ে বৈচিত্র্যময় পোশাকের আয়োজন করেছে। বিশ্ব রঙ, ইনফিনিটি, আড়ং, অঞ্জন’স, রঙ বাংলাদেশ, বিবিয়ানা, কে-ক্র্যাফট, বাংলার মেলা, দেশাল ও নিপুণে পেয়ে যাবেন পছন্দের ফাল্গুনের পোশাক। অনলাইন শপ থেকে ফাল্গুনের শাড়ি ও সালোয়ার কামিজ ও কুর্তাও কিনতে পারেন।
সাজে বর্ণিলতা
ফাল্গুনের কোন পোশাকে কেমন সাজবেন জানালেন বিউটি এক্সপার্ট মাসুদ খান, দিনের মেকআপ হালকা হবে। মেকআপের আগে মুখ ফেসওয়াশ দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। সানস্ক্রিন এবং ময়েশ্চারাইজার দিন। এরপর প্রাইমার লাগান। ফাউন্ডেশনের আগে প্রাইমার অবশ্যই লাগাতে হবে। প্রাইমার সাধারণত আপনার সারা দিনের মেকআপকে ধরে রাখতে সাহায্য করবে। ত্বকের সঙ্গে মিলিয়ে ফাউন্ডেশন বেছে নিন। হালকা মেকআপের জন্য অল্প ফাউন্ডেশনই যথেষ্ট। সারা দিন বেশি ফ্রেশ দেখাতে সাহায্য করবে ক্রিম হাইলাইটিং ব্যবহার করলে। আপনার স্কিন শেডের থেকে দু-তিন শেড লাইট কনসিলার দিয়ে করে নিন ক্রিম হাইলাইটিং। কনসিলার চোখের নিচে, কপালে, নাকের ওপর, থুতনিতে লাগিয়ে নিন এবং ব্লেন্ড করে ফেলুন। কনসিলার অবশ্যই পাউডার দিয়ে সেট করে নিন। এবার পুরো মুখ ফেসপাউডার দিয়ে ব্লাশার করুন। চোখের সাজে খেয়াল রাখুন যেন চোখের মেকআপেও স্নিগ্ধভাব ফুটে ওঠে। সেটা হিসাব করেই আইশ্যাডো লাগাবেন। কোরাল, পিচ, কমলা, হলুদ, গোল্ডেন, কপার, লাইট ব্রাউন, লাইট পিংক, লাইট পার্পল, প্যারট গ্রিন কালারগুলো খুব ভালো মানাবে পহেলা ফাল্গুনে। বিশেষ করে পোশাকের সঙ্গে ম্যাচ করে দিন। আইশ্যাডো দেওয়ার পর টানা করে আইলাইনার লাগাবেন। আপনি চাইলে ব্ল্যাক বা ভিন্ন কালারের কাজল এবং লাইনার ব্যবহার করতে পারেন। এটা আই মেকআপে নতুন রূপ নিয়ে আসবে। চোখে আইল্যাশ না পরে মাশকারা লাগিয়ে নিন। লিপস্টিক হিসেবে হালকা রঙগুলোই পারফেক্ট মনে হয়। লাইট পিংক, ব্রাউন বা পিংক, অরেঞ্জ, পিচ, কোরাল ইত্যাদি কালারগুলো বেশ ভালো লাগবে দেখতে। আইশ্যাডো যে কালারে দিয়েছেন সেই কালারের লিপস্টিক দিতে পারেন। কপালে ছোট গোল টিপ দিন।
চুল বাঁধতে অনীহা থাকলে ভাবনার কিছু নেই। প্রথমে চুল ভালো করে শুকিয়ে নিন। এরপর ব্লো-ডাই করুন। চাইলে চুল স্ট্রেইট কিংবা কার্লিও করে নিতে পারেন। অনেকে হয়তো ভাবেন, চুলটা ছেড়ে রাখবেন ঠিকই; কিন্তু সামনে একটু বাঁধা তো থাকতেই পারে। তারা প্রথমেই ঠিক করুন চুলের স্টাইল কী হবে। মাঝে বা কিনারে সিঁথি করে কপালের সামনের দুই পাশের চুল টুইস্ট করে পেঁচিয়ে ক্লিপ দিয়ে কানের পাশে আটকে দিতে পারেন। পেছনের চুলটা ছেড়ে রাখুন। এই সাজে চুলে ফুলের ব্যান্ড যেমন মানানসই, তেমনি কানের একপাশে দু-তিনটি গাঁদা বা জারবেরা গুঁজে দিলেও বেশ লাগবে। বসন্তের সাজে বেণিরও জুড়ি নেই। দুই পাশের চুল টুইস্ট করে পেঁচিয়ে ক্লিপ দিয়ে কানের পাশে আটকে দিতে পারেন। আবার সামনের সব চুলকে অনেকগুলো ভাগ করে অল্প চুল নিয়ে টুইস্ট করে পাফ করা চুলের ওপর দিয়ে মাথার একেবারে পেছনে আটকে দিন। টুইস্ট করতে না চাইলে পাশে সিঁথি করে স্প্রে দিয়ে চুলটা একটু গুছিয়ে কানের দুই পাশে আটকে দিতে পারেন। সামনের সাজ শেষে এবার বেণির পালা। পেছনের চুল ভালো করে আঁচড়ে খেজুর বেণি করুন। চুল ছোট হলে মন খারাপ করবেন না। টারসেল ব্যবহার করুন বেণিতে। এবার পছন্দসই গাঁদা ফুলের মালা বেণিতে লাগিয়ে দিন। সামনের কার্লি চুলগুলো ইচ্ছেমতো সিঁথি করে দুই পাশে এলোমেলো করে ফেলে রাখুন। এবার পেছনের চুলে একটা হাতখোঁপা করুন। আরেকটু ভিন্নতা আনতে কানের একপাশ দিয়ে খোঁপার কিছু চুল বের করে দিন। সামনের চুল কার্ল করতে না চাইলে টুইস্ট করে পছন্দমতো স্টাইল করতে পারেন। খোঁপার একপাশে বড় ফুল গুঁজে দিন। গাঁদা বা বেলি ফুলের মালা দিয়েও জড়িয়ে নিতে পারেন খোঁপা।
মডেল : এফা তাবাসসুম
সাজ : শোভন মেকওভার
পোশাক : অঞ্জন’স
গহনা : এজেড গ্যালারি
ছবি : আবুল কালাম আজাদ
বাইরে বের হলে কমবেশি সানবার্ন হতে পারে। সানবার্ন দূর করতে কী করবেন জানালেন বিউটিবক্সের রূপবিশেষজ্ঞ রোকসানা আনজুম
সূর্যের তাপে আমাদের ত্বকের এপিডার্মিস লেয়ারে মেলানোসাইট সেলস ট্রিগার হয়ে যায়। যার ফলে স্কিনে এক্সেস মেলানিন তৈরি হয়। এ কারণে তখন ত্বকের উপরিভাগে তামাটে দাগ দেখা যায়, যাকে সানট্যান বলে। শুধু বাইরে গেলেই না, নিয়মিত ত্বকের যত্নে সানস্ক্রিন দিতে হবে। দিনের বেলা বাইরে বের হওয়ার আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন দিতে হবে। এমনকি বাসায় থাকলে বা মেঘলা দিনেও সানস্ক্রিন দিতে ভুল করা যাবে না। তারপরও নানা কারণে সানবার্ন হতে পারে।
আমাদের দেশের আবহাওয়ায় এসপিএস ৫০+ এর ওপর আছে এমন সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। বাইরে দীর্ঘসময় থাকলে চার ঘণ্টা পর পর সানস্ক্রিন দিতে হবে। নয়তো কার্যকারিতা থাকবে না। সানট্যান দূর করতে ফেসমাস্ক খুব কার্যকর।
ফেসমাস্ক : ১
চন্দন, অরেঞ্জ পিল পাউডার, টারমারিক, শঙ্খ গুঁড়ো, মুলতানি মাটি খুবই ভালো কাজ করে। এই উপাদান সমপরিমাণ মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করে নিতে পারেন। চন্দন কালো দাগ দূর করে ত্বক পরিষ্কার করে অল্প সময়েই। অরেঞ্জ পিল পাউডার ত্বকের মরা চামড়া দূর করে ইনস্ট্যান্ট গ্লো এনে দেয়। ওয়াইল্ড টারমারিক রেডনেস, ইচিনেস, একনে, র্যাশ কমাতে সাহায্য করে। শঙ্খগুঁড়ো স্কিন হোয়াইটেনিং, অ্যান্টি এজিং ও হিলিং প্রোপারটিজ কমায়। মুলতানি মাটি ত্বক ভেতর থেকে পরিষ্কার করে ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে।
৪ টেবিল চামচ ব্রাইটেনিং মাস্কের সঙ্গে পরিমাণমতো গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এবার গলায়, হাতে, ফেইসে মানে ট্যানড এরিয়াতে ভালোভাবে ব্যবহার করুন। ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। গোলাপজল ত্বককে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। সানট্যান দূর করতে সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার এই মাস্ক ব্যবহার করুন। দ্রুতই ত্বক উজ্জ্বল, কোমল ও প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে।
ফেসমাস্ক : ২
ডার্ক স্পটস, সানট্যান আর নির্জীব ত্বকের জন্য উপটান ব্যবহার করতে পারেন। এতে আছে বিভিন্ন হার্বস-এর অসাধারণ ব্লেন্ডিং, যা অল্প সময়েই সানট্যান ও স্পটস দূর করে স্কিনের হেলদি গ্লো ফিরিয়ে আনে। মুলতানি মাটি, রোজ পেটাল আর যষ্টিমধু- বলিরেখা দূর করে এবং ত্বক পরিষ্কার করে। নিম, চন্দন, হলুদ- একনে ও একনে স্পটস দূর করে। চালেরগুঁড়ো ও অরেঞ্জ পিল পাউডার- সানট্যান ও পিগমেন্টেশন দূর করে। তিনটি উপাদান সমপরিমাণ মিশিয়ে উপটান তৈরি করে নিন।
৪ টেবিল চামচ এই অর্গানিক উপটানের সঙ্গে ৩ চা চামচ অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে মুখ, গলা, হাতে ব্যবহার করুন। ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকে নরম অনুভূতি এনে দেয় এবং আর্দ্রতা ধরে রাখে।
এক্সফোলিয়েশন
ত্বকের উপরিভাগে যে পিগমেন্টেড মরা চামড়া থাকে সেগুলো দূর করা যায় এক্সফোলিয়েশন বা স্ক্রাবিংয়ের মাধ্যমে। স্ক্রাব ত্বককে গভীরভাবে পরিষ্কার করে, পোরস থেকে ইমপিওরিটিস বের আনে। যার কারণে ত্বক বেশ উজ্জ¦ল, সতেজ ও ফ্রেশ দেখায়। মুখের ত্বকের জন্য মাইল্ড বিডসযুক্ত স্ক্রাব বেছে নিন । হাত-পায়ের জন্য আলাদা বডি স্ক্রাব পাওয়া যায়, সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন। সপ্তাহে ১ দিন স্ক্রাবিং ব্যবহার করলেই হবে।
নুডলস খেতে যখন একঘেয়ে লাগে তখন নুডলস দিয়ে তৈরি করতে পারেন ভিন্ন স্বাদের নাশতা। রেসিপি দিয়েছেন উম্মাহ মোস্তফা
কাটলেট
উপকরণ
নুডলস নরম করে সেদ্ধ করা আধা প্যাকেট, কোরাল মাছের কিমা ১ কাপ, পাপরিকা ১ চা চামচ, গোলমরিচের গুঁড়ো ১ চা চামচ, লেবুর জেস্ট আধা চা চামচ, লেবুর রস ২ টেবিল চামচ, টমেটো সস ১ টেবিল চামচ, ধনেপাতা কুচি ২ টেবিল চামচ, ডিম ২টি, ব্রেডক্রাম আধা কাপ, তেল আধা কাপ, লবণ ১ চা চামচ।
যেভাবে তৈরি করবেন
১. তেল, ব্রেডক্রাম আর ডিম বাদে বাকি সব উপকরণ একসঙ্গে ভালো করে মাখিয়ে ৩০ মিনিট মেরিনেট করে রেখে দিন।
২. মেরিনেট শেষে কাটলেটের আকারে করে সেটাকে ডিমে ডুবিয়ে, ব্রেডক্রামে গড়িয়ে আরও ১০ মিনিট ফ্রিজে রেখে দিন।
৩. ফ্রাইপ্যানে অল্প তেলে অল্প আঁচে হালকা করে ভেজে পরিবেশন করুন।
ফিঙ্গার
উপকরণ
নুডলস আধা প্যাকেট, পাউরুটি ২ পিস, গোলমরিচ আধা চা চামচ, লবণ আধা চা চামচ, ডিম ১টি, ব্রেডক্রাম আধা কাপ, তেল আধা কাপ।
যেভাবে তৈরি করবেন
১. নুডলস, পাউরুটি, গোলমরিচ, লবণ একসঙ্গে মাখিয়ে আঙুলের মতন আকার করে নিন।
২. বানানো ফিঙ্গার ডিমে ডুবিয়ে, ব্রেডক্রামে গড়িয়ে আরও ১০ মিনিট ফ্রিজে রাখুন।
৩. এবার ফ্রাইপ্যানের অল্প তেলে লালচে করে ভেজে পরিবেশন করুন।
মম
উপকরণ
পুরের জন্য : নুডলস সেদ্ধ সিকি কাপ, সেদ্ধ কিমা সিকি কাপ, সয়াসস ২ টেবিল চামচ, গোলমরিচের গুঁড়ো ১ চা চামচ।
বাইরের সেলের জন্য : ময়দা আধা কাপ, লবণ আধা চা চামচ, পানি সিকি কাপ।
যেভাবে তৈরি করবেন
১. ময়ান বানিয়ে ছোট ছোট গোলা করে রুটি বানিয়ে নিন।
২. তৈরি করে রাখা পুর অল্প পরিমাণে রুটির মধ্যে দিয়ে কলসির মতন করে মম বানান।
৩. চুলার মাঝারি আঁচ রেখে ভাপে ১০ মিনিট সেদ্ধ করে নামিয়ে গরম-গরম পরিবেশন করুন।
ঝাঁপ ভাপা পিঠা
উপকরণ
নুডলস সেদ্ধ করে নরম করা ১ প্যাকেট, সুজি আধা কাপ, টক দই সিকি কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ ধনেপাতা কুচি ২ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ কুচি ১টি, হলুদের গুঁড়ো ১ চিমটি, লবণ ১ চা চামচ।
যেভাবে তৈরি করবেন
১. সব উপকরণ একসঙ্গে ভালো করে মেখে নিন।
২. এবার ভাপা পিঠার ছাঁচে দিয়ে চুলার মাঝারি আঁচ রেখে ভাপে ১০ মিনিট সেদ্ধ করে নামিয়ে পরিবেশন করুন।
গলায়, হাতে, কানে গহনা হিসেবে পছন্দমতো যেকোনো ফুলই ব্যবহার করতে পারেন। বেশ কয়েক বছর ধরেই জনপ্রিয়তা পেয়েছে ফুলের ‘হেডব্যান্ড’। এটি পরতে পারেন এবারও। চাইলে এক ধরনের ফুল দিয়েই পূর্ণ করতে পারেন আপনার সাজ। আবার মানানসই একাধিক ফুলের সমন্বয়ও করতে পারেন। যে সাজে আপনি নিজে স্বচ্ছন্দ, সে সাজেই আপনি সুন্দর। এমনটাই জানালেন রূপবিশেষজ্ঞ শারমিন কচি। পোশাকের বেলাতেও ঠিক তাই। শাড়ি যেমন বাঙালি উৎসবের জন্য যথার্থ, তেমনি কুর্তা, স্কার্ট, সারারা, এমনকি জিনস-টপসের মতো যেকোনো পাশ্চাত্য পোশাকের সঙ্গেও ফুলের সাজ মানানসই, যদি আপনি তাতে স্বচ্ছন্দ হন।
রূপবিশেষজ্ঞ ফারহানা রুমি বলেন, ‘বসন্ত মানেই রঙের ছড়াছড়ি। বাঙালি নারীর ঐতিহ্যবাহী সাজে খোঁপায় গাঁদা ফুল, সঙ্গে লাল টিপ কপালে। রঙিন ফুলের সাজে বসন্তের আমেজ। চুল খোলা রাখলেও এক পাশে ফুল দেওয়া হয়। চুলের জন্য বড় আকারের ফুল বেছে নিলে একটা ফুলই থাক, অন্য গহনাও একটু হালকাই হোক। ফুল ছোট আকারের হলে অবশ্য একাধিক ফুল নেওয়া যায়। ফুলের ফাল্গুনে কতই না ফুল। সতেজ, রঙিন সব ফুল। একটু লম্বা সময় পর্যন্ত সতেজ থাকে গোলাপ, গাঁদা, কাঠগোলাপ, গ্লাডিওলাস, বেবি’স ব্রেথ, জিপসি, প্যান্সি, হাইড্রেনজিয়া, বেলি, চায়না বেলি, ক্রিসেন্থিমাম, জারবেরা, অর্কিড, ডালিয়া, ডেইজি, বেগুনি ফুল। পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে যেমন ফুলের রঙ বেছে নেওয়া যায়, তেমনি রঙের বৈপরীত্যও আনা যেতে পারে। হয়তো আপনি বাসন্তী শাড়ি পরছেন, এর সঙ্গে নিলেন বাহারি রঙের ফুল। চাইলে কিন্তু ওই শাড়ির সঙ্গেই মেরুন বা সাদা বা একেবারে বাসন্তী রঙের ফুলও বেছে নিতে পারেন।
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে জেলেখা বেগম নামে এক বৃদ্ধাকে মৃত দেখিয়ে তার বয়স্ক ভাতার কার্ড বাতিল করা হয়েছে। বিগত ৫ মাস যাবৎ তিনি বয়স্ক ভাতা বঞ্চিত রয়েছেন বলে জানা গেছে। অপরদিকে তার নাম পরিবর্তন করে আমিনা নামে অন্যজনকে বয়স্ক ভাতার কার্ড বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মেম্বার বাদশার বিরুদ্ধে।
রানীশংকৈল উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের সাতঘরিয়া গ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেলেখা বেগম নন্দুয়ার ইউনিয়নের সাতঘরিয়া গ্রামের আ. রহিমের স্ত্রী। পূর্বের চেয়ারম্যান ওই বৃদ্ধার নামে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেন।
ভুক্তভোগী বলেন, আমি ভাতার কার্ড পাওয়ার পর থেকে প্রতি তিন মাস অন্তর ১৫০০ টাকা করে পেয়েছিলাম। কিন্তু গত তারিখে আমার টাকার কোনো মেসেজ না আসায় আমি উপজেলা সমাজসেবা অফিসে গিয়ে জানতে পারি আমাকে মৃত দেখিয়ে আমিনা নামে ভাতার কার্ড করে দিয়েছেন মেম্বার বাদশাহ।
ইউনিয়ন পরিষদে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মৃত্যুর নিবন্ধন বইয়ের ২০২১ সালের রেজিস্ট্রারে বৃদ্ধার মৃত্যু নিবন্ধিত নেই। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এমন একটি সনদ দেওয়ায় তার ভাতাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তিনি এ বিষয়ে আরও বলেন, আমি জীবিত থাকার পরও মেম্বার বাদশাহ আমাকে মৃত দেখিয়ে আরেকজনের নামে কিভাবে টাকা খেয়ে ভাতার টাকা পরিবর্তন করে দেয়! আমি জীবিত থাকার পরও মেম্বার আমাকে মৃত দেখাল। আমি গরিব মানুষ। আমার কোনো ছেলেমেয়ে নাই। এই টাকা দিয়ে ওষুধ খেয়ে বেঁচে আছি। আমি এর বিচার চাই।
মেম্বার বাদশাহ বলেন, প্রথমবারের মতো এমন ভুল করেছি। সামনের দিকে সর্তকতার সাথে কাজ করব।
নন্দুয়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বারী বলেন, জীবিত মানুষ মৃত দেখিয়ে ভাতার কার্ড পরিবর্তনের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে মেম্বার যদি করে থাকেন তাহলে খুবই খারাপ করেছেন।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত একটি প্রত্যয়নপত্রের ভিত্তিতে জানতে পারি, জেলেখা বেগম ৭ ডিসেম্বর ২০২১ এ মৃত্যু বরণ করেন। তাই ভাতাটি বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু ওয়েবসাইটে মৃত্যু সনদ যাচাই ছাড়া সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর কাউকে মৃত দেখাতে পারবে না- সাংবাদিকের এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের এভাবেই হয়। আমরা এভাবেই করে থাকি, প্রত্যায়নপত্র দেখে প্রতিস্থাপন করে থাকি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সমাজসেবা অফিসে প্রেরিত প্রত্যায়নটির কোনো তথ্য ইউনিয়ন পরিষদের ফাইলে সংরক্ষণ করা হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির বলেন, এটি সংশোধনের কার্যক্রম চলমান। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, এটি একটি গুরুতর অভিযোগ। আমরা তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেব।
বিরতি কাটিয়ে আবারও আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরছে আর্জেন্টিনা। গত মার্চে ঘরের মাঠে সবশেষ আকাশী-নীলদের দেখা গিয়েছিল তিন মাস পর আগামী জুনে তারা আসছে এশিয়া সফরে। সফরকালে ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচও খেলবেন লিওনেল মেসিরা।
আগামী ১৫ জুন বেইজিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামবে আর্জেন্টিনা। চারদিন পর ১৯ জুন জাকার্তায় ইন্দোনেশিয়ার মুখোমুখি হবেন তারা। সেই ম্যাচ দুটিকে সামনে রেখে আজ দল ঘোষণা করেছেন দেশটির কোচ লিওনেল স্কালোনি। লিওনেল মেসিকে অধিনায়ক করে ২৭ সদস্যের দল ঘোষণা করা হয়েছে।
বিশ্বকাপজয়ী খেলোয়াড়দের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন কিছু নাম। এই দলে এই দলে চমক হিসেবে রয়েছে আলেজান্দ্রো গার্নাচো। যিনি বিশ্বকাপের পর আর্জেন্টিনার প্রথম প্রীতি ম্যাচের দলে ছিলেন। তবে চোটের কারণে অভিষেকের সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায়।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে আলো ছড়িয়েছেন গার্নাচো। গত বছরের জুলাইয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মূল দলে জায়গা হয় তার। এখন পর্যন্ত ক্লাবটির হয়ে ৩৫ ম্যাচ খেলেছেন এই লেফট উইঙ্গার। এখন পর্যন্ত নিজে করেছেন ছয়টি গোল, করিয়েছেন আরও ছয়টি। এমন পারফরম্যান্স নজর এড়ায়নি স্কালোনির। তাই জাতীয় দলে জায়গা পেতে বেগ পেতে হয়নি।
দলের তৃতীয় গোলকিপার হিসেবে জায়গা পেয়েছেন ওয়াল্টার বেতিনেজ। এছাড়া বেশ কয়েক বছর পর দলে ফিরেছেন লিওনার্দো বলের্দি। ফরাসি ক্লাব মার্সেইয়ের হয়ে চলতি মৌসুমে তিনি দুর্দান্ত খেলছেন। তবে স্কোয়াডের মাঝ মাঠের ফুটবলারদের নিয়ে কোনো চমক নেই।
তবে এই স্কোয়াডে নেই লাউতারো মার্তিনেজের নাম। গোড়ালির চোটের কারণে এই দুই প্রীতি ম্যাচে তাকে পাচ্ছে না আর্জেন্টিনা। তবে তার জায়গায় মাঠ মাতাতে দেখা যাবে জিওভানি সিমিওনেকে।
আর্জেন্টিনার ২৭ সদস্যের দল
গোলরক্ষক:
এমিলিয়ানো মার্টিনেজ (অ্যাস্টন ভিলা), জেরনিমো রুলি (আয়াক্স), ওয়াল্টার বেনিটেজ (পিএসভি)।
ডিফেন্ডার:
নাহুয়েল মোলিনা (অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ), গঞ্জালো মন্তিয়েল (সেভিয়া), জার্মান পেজেল্লা (রিয়েল বেটিস), ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো (টটেনহ্যাম হটস্পার), লিওনার্দো বলের্দি (অলিম্পিক মার্সেই), নিকোলাস ওতামেন্ডি (বেনফিকা), ফ্যাকুন্ডো মদিনা (আরসি লেন্স), নিকোলাস তাগলিয়াফিকো (লিয়ন), মার্কোস অ্যাকুনা (সেভিলা)।
মিডফিল্ডার:
লিয়ান্দ্রো পেরেদেস (জুভেন্তাস), এনজো ফার্নান্দেজ (চেলসি), গুইডো রদ্রিগেজ (রিয়েল বেটিস), রদ্রিগো ডি পল (অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ), এজেকিয়েল পালাসিওস (বেয়ার লেভারকুসেন), অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার (ব্রাইটন), থিয়াগো আলমাদা (আটলান্টা ইউনাইটেড), জিওভানি লো সেলসো (ভিলারিয়াল)।
ফরোয়ার্ড:
লুকাস ওকাম্পোস (সেভিয়া), অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া (জুভেন্তাস), লিওনেল মেসি (পিএসজি), জুলিয়ান আলভারেজ (ম্যানচেস্টার সিটি), জিওভানি সিমিওনে (নাপোলি), আলেজান্দ্রো গার্নাচো (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড), নিকোলাস গঞ্জালেজ (ফিওরেন্টিনা)।
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার আজমপুর ইউনিয়নের মদনপুর গ্রামে স্ত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় চাচাতো ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে পলাশ হোসেন (২৮) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
শনিবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত পলাশ হোসেন ওই গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, নিহত পলাশ হোসেনের চাচাতো ভাই সুমন প্রায়ই পলাশের স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করত। শনিবার সন্ধ্যায় আবারো উত্ত্যক্ত করে। পলাশ বাড়িতে এলে বিষয়টি তাকে জানায় তার স্ত্রী। এ ঘটনায় পলাশ তার চাচাতো ভাইয়ের কাছে বিষয়টির প্রতিবাদ করতে গেলে উভয়ের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সুমন ছুরি দিয়ে পলাশকে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই পলাশ মারা যায়।
মহেশপুর থানার ওসি খন্দকার শামীম উদ্দিন বলেন, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। নিহত পলাশ পেশায় ভ্যানচালক ছিলেন, সঙ্গে কৃষিকাজও করত।
মার্চে ঘরের মাঠে দুটি প্রীতি ম্যাচের পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে দেখা যায়নি আর্জেন্টিনাকে। তিন মাস পর আগামী মাসে তারা খেলবে আরও দুটি প্রীতি ম্যাচ। অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে সেই ম্যাচের জন্য ২৭ সদস্যের দল ঘোষণা করেছেন লিওনেল স্কালোনি। তবে ঘোষিত সেই দলে নেই লাউতারো মার্তিনেজ।
আর্জেন্টিনার ক্রীড়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টস ও ওলে তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গোড়ালির চোটের কারণে মার্তিনেজ চিকিৎসাধীন আছেন। তাই তাকে জাতীয় দলের স্কোয়াডে রাখা হয়নি।
চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে ইন্টার মিলানের হয়ে গোল করেছিলেন। ফাইনালেও তাকে ইতালিয়ান ক্লাবটির হয়ে খেলতে দেখা যেতে পারে। তারপরই তিনি মাঠের বাইরে চলে যাবেন। ঐ সময়ে তিনি বিশ্রামে থাকবেন। আর তাই কোচ স্কালোনি তাকে দলে রাখবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার শিরোপা জয়ের অন্যতম সদস্য মার্তিনেজ। তবে পুরো টুর্নামেন্টে তিনি ব্যাথানাশক ঔষধ খেয়ে খেলছিলেন।
আগামী ১৫ জুন বেইজিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ও ১৯ জুন জাকার্তায় ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামবে আর্জেন্টিনা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ব শান্তির পক্ষে সোচ্চার ছিলেন এবং মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ে আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।
বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ কথা বলেন।
ড. মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উৎসব আমাদের বিদেশস্থ সকল মিশনে উদযাপন করছি। জুলিও কুরি পদক ছিল জাতির পিতার কর্মের স্বীকৃতি এবং বাংলাদেশের জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মান।
তিনি বলেন, বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে কারাবরণ করেন বঙ্গবন্ধু। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে বৈষম্য, সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালির ওপর নির্যাতন ও নিপীড়ন বঙ্গবন্ধু মেনে নিতে পারেননি। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বাংলার নিপীড়িত, শোষিত, বঞ্চিত মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে স্বাধীনতার ডাক দেন। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলার মানুষ দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর “সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো প্রতি বৈরীতা নয়”- এই বৈদেশিক নীতি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আজ আমাদের মধ্যে নেই, কিন্তু তার শান্তির বার্তা নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতিসংঘে এক নম্বর শান্তিরক্ষী দেশের মর্যাদা পেয়েছে। দেশে দেশে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ চালু করেছে।
‘বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনে আমাদের অঙ্গীকার হবে বিশ্বে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যে কাজ করে যাওয়া। তাহলেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন অর্জিত হবে’।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৩ সালের ২৩ মে বিশ্ব শান্তি পরিষদ ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদকে ভূষিত করে।
নতুন পে-স্কেল কিংবা মহার্ঘ ভাতা নয়, সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়বে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি বা ইনক্রিমেন্ট অনুযায়ী। তাদের বেতন প্রতি বছর যতটা বাড়ার কথা এবার তার চেয়ে বেশি বাড়বে। আর তা চলতি বছরের মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে বাড়ানো হবে। অর্থাৎ আগামী অর্থবছরে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়মিত ইনক্রিমেন্ট ৫ শতাংশের বাইরে বাড়ানো হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।
এ বিষয়ে পলিসি রিচার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর দেশ রূপান্তরকে বলেন, গত প্রায় এক বছর ধরে দ্রব্যমূল্য বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষ কষ্টে আছেন। সরকারি কর্মকর্তাদের বেশিরভাগের একমাত্র আয় বেতন-ভাতা। বৈশি^ক মন্দার কারণে সরকারও খানিকটা সংকটে আছে। এ পরিস্থিতিতে পে-স্কেল দেওয়ার মতো বড় ধরনের ব্যয় বাড়ানো সরকারের পক্ষে কঠিন হবে। ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হলে সরকারের ওপর চাপ বেশি হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে সরকারি কর্মরতদের খানিকটা স্বস্তি দিতে কোন খাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় এমন প্রস্তাব চাওয়া হয়। একই সঙ্গে বাজেটবিষয়ক বিভিন্ন বৈঠকে সরকারি নীতিনির্ধারকরাও এ বিষয়ে আলোচনা করেন। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে যাচাই-বাছাই করে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার প্রস্তাব করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে উপস্থাপন করে। চলতি মাসে গণভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী এ বিষয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী ওই বৈঠকে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলে কত বাড়তি ব্যয় হবে তা হিসাব করে পরের বৈঠকে উপস্থাপন করতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বড় ধরনের ব্যয় না বাড়িয়ে একটা উপায় বের করতেও বলেন। শেষ পর্যন্ত ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা চলতি মাসে প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনে নিজেই জানিয়েছেন।
বর্তমানে সরকারি কর্মচারীরা ২০১৫ সালের বেতন কমিশন অনুযায়ী বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এ বেতন কমিশন প্রণীত হয়েছিল। এ কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, আর নতুন বেতন কমিশন গঠন করা হবে না। প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট বা বেতন বাড়ানো হবে। এ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী তা হয়ে আসছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি হিসাব অনুযায়ী, দেশে সরকারি কর্মচারী ১৪ লাখ। বিভিন্ন করপোরেশন এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের নিয়ে হিসাব করলে প্রায় ২২ লাখ।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের বাজেটে নিয়মিত ইনক্রিমেন্টের বাইরে আরও কতটা বাড়ানো যায় তা হিসাব করে নির্ধারণ করা হবে। এ কাজ করতে বাজেট প্রস্তাব পেশ করার পর আলাদা কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটি মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে যাচাই-বাছাই শেষে ইনক্রিমেন্টের হার সুপারিশ করবে। এ ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনা করে বিদ্যমান ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টের সঙ্গে প্রতি মাসে বেতন বাড়ানো হবে, নাকি গড় মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনা করে ইনক্রিমেন্টের হার বাড়ানো হবে, তা খতিয়ে দেখা হবে। ২০তম গ্রেড থেকে প্রথম গ্রেড পর্যন্ত সবার জন্য একই হারে বেতন বাড়নো হবে কি না, তা আরও খতিয়ে দেখা হবে। চূড়ান্ত হিসাব অর্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষে প্রকাশ করা হবে। যে তারিখেই প্রকাশ করা হোক না কেন, আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকরী ধরা হবে।
এখানে মহার্ঘ ভাতা ১০ শতাংশ দেওয়া হলে এ হিসাবে ৪ হাজার কোটি টাকা যোগ করতে হবে। ১৫ শতাংশ দেওয়া হলে ৬ হাজার কোটি এবং ২০ শতাংশ দেওয়া হলে ৮ হাজার কোটি টাকা যোগ করতে হবে। অর্থাৎ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলে আগামী অর্থবছরে সরকারের ব্যয় বাড়বে। আর এতে সরকার ব্যয় কমিয়েও সরকারি কর্মকর্তাদের সন্তুষ্টিতে ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো পথে হেঁটেছে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি কর্মরতদের বেতন-ভাতা বাবদ রাখা হয়েছে ছিল ৭৪ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা। খরচ না হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ১ হাজার ৯৩ কোটি টাকা কমানো হয়েছে। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা বাজেট হওয়ার কথা আছে। এ বাজেট সরকারি কর্মরতদের বেতন-ভাতার জন্য বরাদ্দ ৭৭ হাজার কোটি টাকা রাখা হতে পারে। সরকারি কর্মকর্তাদের অনেক পদ এখনো খালি আছে। এতে ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো হলেও সরকারের ব্যয়ে বড় ধরনের চাপ বাড়বে না।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোট শেষ হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
দায়িত্বশীল সূত্র থেকে এখন পর্যন্ত ৪৫০টি কেন্দ্রের প্রাথমিক ফল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে নৌকা প্রতীকে আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ১ লাখ ৮৫ হাজার ৩৭৯ ভোট এবং টেবিলঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন পেয়েছেন ২ লাখ ৫ হাজার ৪১৩ ভোট।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
গাজীপুর সিটিতে মেয়র পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে আওয়ামী লীগের আজমত উল্লা খান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের মধ্যে। দুজনই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। অপরদিকে ভোটের পরিবেশ ভালো বলে জানান আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহনূর ইসলাম রনি।
কোটা পদ্ধতি তুলে দেওয়ার পরও বিসিএস পরীক্ষায় নারীদের চাকরি পাওয়ার হার প্রায় একই রয়েছে। ১০ শতাংশ কোটা থাকা অবস্থায় তারা যে পরিমাণ চাকরি পাচ্ছিলেন, কোটা তুলে দেওয়ার পরও প্রায় একই হারে চাকরি পাচ্ছেন। সাধারণ ক্যাডার বা কারিগরি ক্যাডারে পিছিয়ে পড়লেও শিক্ষার মতো পেশাগত ক্যাডারগুলোতে এগিয়ে গিয়ে বিসিএসে মোট চাকরি পাওয়ার হারে প্রায় একই অবস্থান ধরে রেখেছেন নারীরা।
অথচ কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় বলা হয়েছিল, কোটা তুলে দিলে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে নারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। প্রশাসনে নারীর অংশগ্রহণের গ্রাফ নিম্নমুখী হবে। আসলে তা হয়নি। কোটা তুলে দেওয়ার পরও তারা প্রায় সমানতালে এগিয়ে চলছেন।
৪০তম বিসিএস দিয়ে চাকরিতে ঢুকে বর্তমানে ঢাকা বিভাগে কর্মরত একজন নারী কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, যে বয়সে ছেলেরা চাকরির জন্য প্রতিযোগিতা করে সেই বয়সে অধিকাংশ নারীকেই বিবাহিত জীবনে প্রবেশ করতে হয়। সংসার করে, সন্তান লালনপালন করে নারীরা ভালো প্রস্তুতি নিতে পারে না। ফলে অনেক মেধাবী নারী প্রতিযোগিতায় উতরে যেতে পারেন না। অনেক নারী পারিবারিক কারণে বিয়ের পর চাকরির আবেদনই করেন না। বিয়ের পর পরীক্ষায় অংশ নিতে বাধা আসে। এসব কাটিয়ে উঠে চাকরিতে প্রবেশ করা কঠিন। আর বিসিএসের চাকরি মানেই বদলিযোগ্য। সংসার-সন্তান রেখে বদলিকৃত পদে যোগ দেওয়া কঠিন বিষয়। সবকিছু মিলিয়ে নারীদের জন্য এ চাকরি সহজ নয়। একজন পুরুষ বেকার নারী বিয়ে করে, কিন্তু একজন নারী বেকার পুরুষ বিয়ে করে না। এ বিষয়টাও ছেলেদের প্রস্তুত হতে সাহায্য করে। এ বাস্তবতা থেকেও পুরুষ প্রতিযোগী বেশি হয়। অন্যদিকে যোগ্য হলেও অনেক নারী প্রতিযোগিতাই করে না।
একজন নারী ইউএনও বলেন, পরীক্ষার হলে বা মৌখিক পরীক্ষার সময় অনেক নারীকে দুগ্ধপোষ্য সন্তানকে সঙ্গে আনতে হয়। এগুলোও অনেক সময় নারীকে চাকরির ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করে। ঘরে ঘরে বাধা পায় নারীর অগ্রযাত্রার নানা চেষ্টা। নগর-জীবনে নারীর অস্তিত্ব অনেকটা স্বচ্ছন্দের। কিন্তু নগরসভ্যতার বাইরে বিশাল বিস্তৃত গ্রামীণ জনজীবনে পুরুষতন্ত্রের নানা ধরনের অনাকাক্সিক্ষত বেষ্টনী এখনো নারীকে ধরাশায়ী করে রাখে। হাজার হাজার বছর ধরে পৃথিবীর পথ হাঁটছে নারী-পুরুষ। তবু তাদের মধ্যে ভারসাম্য নেই।
কোটা না থাকার পরও নারীরা তাদের অবস্থান কীভাবে ধরে রাখলেন জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ শাইখ ইমতিয়াজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নারী শিক্ষায় বাংলাদেশের অর্জন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। প্রাথমিকের পর মাধ্যমিকেও মেয়েরা অনেক এগিয়েছে। উচ্চশিক্ষায়ও মেয়েদের অংশগ্রহণের হার বেড়েছে। সবকিছু মিলে বিসিএসে এর প্রতিফল ঘটেছে। যে পরিমাণ মেয়ে উচ্চশিক্ষা নিচ্ছে, সেই তুলনায় চাকরিতে প্রবেশের হার বেশি। উচ্চশিক্ষায় যায় হয়তো ৮০ ভাগ ছেলে। আর মেয়েদের মধ্যে উচ্চশিক্ষায় যাওয়ার হার ৩০ বা ৩৫ শতাংশ। তাদের মধ্যে ২৬ বা ২৭ শতাংশ মেয়ে বিসিএস দিয়ে চাকরি পাচ্ছে। এদিক দিয়ে চিন্তা করলে মেয়েরা অনেক ভালো করছে।’
এক প্রশ্নের জবাব ড. ইমতিয়াজ বলেন, ‘মেয়েদের কাছে শিক্ষা এখনো অপরচুনিটি (সুযোগ) আর ছেলেদের কাছে অধিকার। মেয়েরা যখন এ সুযোগটা পায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা কাজে লাগাতে চায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘পরিবারের ছেলেসন্তানের জন্য যে বিনিয়োগ, মেয়েসন্তানের জন্য এখনো তার চেয়ে অনেক কম। এখনো মনে করা হয় মেয়ে তো অন্যের ঘরে চলে যাবে। অথচ মজার বিষয় হচ্ছে, পরিবারের দায়িত্ব উচ্চশিক্ষিত ছেলের তুলনায় উচ্চশিক্ষিত মেয়ে অনেক বেশি বহন করে। এসব প্রতিবন্ধকতা হাজার বছরে তৈরি হয়েছে। এগুলো দূর হতে আরও সময় লাগবে।’
অন্যান্য কোটার মতো প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে নারীদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা ছিল। নারীরা যোগ্যতা অনুযায়ী মেধা কোটায়ও নিয়োগ পেতেন। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরিতে মেধাভিত্তিক জেলা কোটার পাশাপাশি ১৫ শতাংশ নারী কোটা রয়েছে এখনো। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধাভিত্তিক জেলা কোটার পাশাপাশি ৬০ শতাংশ নারী কোটা সংরক্ষিত রেখে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এভাবে নারীরা সরকারি চাকরিতে পুরুষ প্রার্থীর সঙ্গে মেধা কোটায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নিয়োগ লাভের পাশাপাশি সংরক্ষিত কোটায়ও নিয়োগ লাভের সুবিধা পেয়ে থাকেন।
শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে ছাত্রীর হার বাড়ছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে এক দশকের বেশি সময় ধরে ছাত্রের চেয়ে ছাত্রীর হার বেশি। কলেজ পর্যায়ে ছাত্র ও ছাত্রীর হার প্রায় সমান। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীর হার ৩৬ শতাংশের বেশি।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে সরকার। ৪০তম সাধারণ বিসিএস হচ্ছে কোটামুক্ত প্রথম বিসিএস। ধাপে ধাপে বাছাই করে গত বছর ৩০ মার্চ এই বিসিএসের চূড়ান্ত সুপারিশ করে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। প্রায় ১৩ মাস পর গত মাসে সেই সুপারিশের বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে পিএসসি। সেখানে বলা হয়েছে, ৪০তম বিসিএসে মোট ২৬ দশমিক ০৩ শতাংশ নারী চূড়ান্তভাবে সুপারিশ পেয়েছেন। যা কোটাযুক্ত ৩৮তম বিসিএসে ২৬ দশমিক ৯১ ও ৩৭তমে ২৪ দশমিক ৬০ শতাংশ ছিল। গত ১ নভেম্বর এ বিসিএসের কর্মকর্তারা চাকরিতে যোগ দিয়েছেন।
পিএসসির একজন সাবেক চেয়ারম্যান বলেছেন, কোটামুক্ত একটি সাধারণ বিসিএসে ২৬ দশমিক ০৩ শতাংশ নারী চূড়ান্তভাবে সুপারিশ পেয়েছেন এটা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় নারীদের শক্ত সক্ষমতা প্রকাশ করে। কারণ এর আগে কোটাযুক্ত ৩৮তম বিসিএসের তুলনায় মাত্র দশমিক ৮৮ শতাংশ কম। অর্থাৎ কোটা তুলে দেওয়ার পরও নারীরা ১ শতাংশও পিছিয়ে পড়েননি। আরেকটি বিষয় লক্ষণীয় যে, প্রত্যেক বিসিএসে নারীদের আবেদনের হার অর্থাৎ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের হার পুরুষের তুলনায় কম অর্থাৎ গড় হার কম। পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতেও নারী প্রার্থীদের পুরুষের তুলনায় অনেক কম চোখে পড়ে। এমনকি কোনো কোনো কক্ষে নারী প্রার্থী থাকেই না। একই সঙ্গে প্রতিযোগিতায় ধাপগুলো অতিক্রম করার ক্ষেত্রে নারীদের অনুত্তীর্ণ হওয়ার পরিমাণ বেশি থাকে। ৪০তম বিসিএসে যোগ্য আবেদনকারী নারী ছিলেন ৩৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ। তাদের মধ্যে ১৯ দশমিক ১৯ শতাংশ নারী প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হন। অথচ পুরুষদের ক্ষেত্রে ভিন্ন চিত্র। যোগ্য আবেদনকারী পুরুষ ছিলেন ৬১ দশমিক ৬২ শতাংশ। প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ পুরুষের হার ৮০ দশমিক ৮১ শতাংশ।
৪০তম বিসিএসের সাধারণ ক্যাডারে ২১ দশমিক ০৮ শতাংশ নারী সুপারিশ পেয়েছেন। এই হার ৩৮ ও ৩৭তম বিসিএসে ছিল যথাক্রমে ২৪ দশমিক ১৪ ও ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ।
৪০তম বিসিএসের কারিগরি ক্যাডারে ২৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ নারী সুপারিশ পেয়েছেন। এই হার ৩৮ ও ৩৭তম বিসিএসে ছিল যথাক্রমে ২৯ দশমিক ৫৩ ও ২৫ দশমিক ২ শতাংশ।
সাধারণ এবং কারিগরি ক্যাডারে নারীরা পিছিয়ে পড়লেও শিক্ষার মতো পেশাগত ক্যাডারে এগিয়েছেন। ৪০তম বিসিএসে ২৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ নারী সুপারিশ পেয়েছেন। যা ৩৮তমে ২৬ দশমিক ৩০ এবং ৩৭তমে ২৫ দশমিক ২ শতাংশ ছিল।
পুরোপুরি মেধার ভিত্তিতে নেওয়া ৪০তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারেও নারীরা পিছিয়েছেন। জেলা কোটাও না থাকায় নাটোর, ভোলা, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি থেকে প্রশাসন ক্যাডারে কেউ সুপারিশ পাননি।
গত বছর প্রকাশিত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সরকারি চাকরিজীবীদের তথ্যসংক্রান্ত ‘স্ট্যাটিসটিকস অব সিভিল অফিসার্স অ্যান্ড স্টাফস’ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, সিভিল প্রশাসনের ১৪ লাখ সরকারি কর্মচারীর মধ্যে ২৬ শতাংশ নারী। সরকারি দপ্তরের মধ্যে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে কাজ করেন সবচেয়ে কমসংখ্যক নারী। মন্ত্রণালয়ের মোট জনবলের ১৯, অধিদপ্তরের ৩১, বিভাগীয় কমিশনার ও ডেপুটি কমিশনারের কার্যালয়ের ১২ এবং আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ১২ শতাংশ কর্মী নারী।