ডায়াবেটিস হলে কী করবেন
| ১৪ জুন, ২০১৯ ০০:০০
ডায়াবেটিস একটি বিপাকজনিত রোগ। আমাদের শরীরে ইনসুলিন নামের হরমোনের সম্পূর্ণ বা আপেক্ষিক ঘাটতির কারণে বিপাকজনিত গোলযোগ সৃষ্টি হয়ে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। একসময় তা প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে আসে। এই সামগ্রিক অবস্থাকে ডায়াবেটিস বলে।
এ রোগে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ দীর্ঘস্থায়ীভাবে বেড়ে যায়। সুস্থ লোকের রক্তে প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ অভুক্ত অবস্থায় ৫ দশমিক ৬ মিলি মোলের কম এবং খাবার দুই ঘণ্টা পরে ৭ দশমিক ৮ মিলি মোলের কম থাকে। অভুক্ত অবস্থায় রক্তের প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ ৭ দশমিক ১ মিলি মোলের বেশি হলে অথবা ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার দুই ঘণ্টা পর রক্তের প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ ১১ দশমিক ১ মিলি মোলের বেশি হলে ডায়াবেটিস হয়েছে বলে গণ্য করা হয়।
লক্ষণ
ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া ও খুব বেশি পিপাসা লাগা
বেশি ক্ষুধা পাওয়া ও যথেষ্ট খাওয়ার সত্ত্বেও ওজন কমে যাওয়া
ক্লান্তি ও দুর্বলতা বোধ করা
ক্ষত শুকাতে বিলম্ব হওয়া
খোস-পাঁচড়া, ফোঁড়া প্রভৃতি চর্মরোগ দেখা দেওয়া
চোখে কম দেখা।
আক্রান্ত হওয়ার কারণ
যাদের বংশে বিশেষ করে বাবা-মা বা রক্ত সম্পর্কিত নিকটাত্মীয়ের ডায়াবেটিস আছে।
যাদের ওজন অনেক বেশি ও যারা ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রমের কোনো কাজ করেন না।
যারা বহুদিন ধরে কর্টিসোল জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করেন।
যেসব নারীর গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস ছিল আবার যেসব নারী নয় পাউন্ডের বেশি ওজনের বাচ্চা প্রসব করেছেন।
যাদের রক্তচাপ আছে এবং রক্তে কোলেস্টেরল বেশি থাকে।
কী ধরনের জটিলতা হয়?
পক্ষাঘাত স্নায়ুতন্ত্রের জটিলতা, হৃদরোগ, পায়ে পচনশীল ক্ষত, চক্ষুরোগ, প্রস্রাবে আমিষ বের হওয়া ও পরবর্তী সময়ে কিডনির কার্যক্ষমতা লোপ পাওয়া। পাতলা পায়খানা, যক্ষ্মা, মাড়ির প্রদাহ, চুলকানি, ফোঁড়া, পাঁচড়া ইত্যাদি। তাছাড়া রোগের কারণে যৌনক্ষমতা কমে যায়। মহিলাদের ক্ষেত্রে বেশি ওজনের শিশু জন্ম, মৃত শিশুর জন্ম, অকালে সন্তান প্রসব, জন্মের পরেই শিশুর মৃত্যু এবং নানা ধরনের জন্মগত ত্রুটি দেখা দিতে পারে।
চাই নিয়ন্ত্রিত জীবন
চিনি, মিষ্টি জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে।
শর্করাবহুল খাবার কিছুটা হিসাব করে খাওয়া উচিত।
আঁশবহুল খাবার বেশি খাওয়া দরকার।
সম্পৃক্ত ফ্যাট কম খাওয়া এবং অসম্পৃক্ত ফ্যাট খাওয়ার অভ্যাস করা উচিত।
ক্যালরিবহুল খাবার নির্দেশিত পরিমাণে খেতে হবে।
নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খাওয়া এবং কোনো বেলার খাবার খাওয়া বাদ দেওয়া যাবে না।
আজ কম খেলেন আবার কাল বেশি খেলেন এভাবে খাবার খাওয়া যাবে না।
ব্যায়াম : রোগ নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে ব্যায়াম বা শরীরচর্চার ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যায়াম বা দৈহিক পরিশ্রম মাংসপেশির জড়তা দূর করে এবং রক্ত চলাচলে সাহায্য করে। শরীর সুস্থ থাকে। ফলে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বেড়ে যায়। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট এবং সপ্তাহে কমপক্ষে পাঁচদিন হাঁটলে শরীর যথেষ্ট সুস্থ থাকবে। অধ্যাপক ডা. গোবিন্দ চন্দ্র দাস
অ্যালার্জি ও অ্যাজমা বিশেষজ্ঞ
চেম্বার : দি অ্যালার্জি অ্যান্ড অ্যাজমা সেন্টার
স্কাইটাচ রাজকোষ, ৪৩ আর/৫ সি, পশ্চিম পান্থপথ, ঢাকা
০১৭২১৮৬৮৬০৬, ০১৯২১৮৪৯৬৯৯
শেয়ার করুন
| ১৪ জুন, ২০১৯ ০০:০০

ডায়াবেটিস একটি বিপাকজনিত রোগ। আমাদের শরীরে ইনসুলিন নামের হরমোনের সম্পূর্ণ বা আপেক্ষিক ঘাটতির কারণে বিপাকজনিত গোলযোগ সৃষ্টি হয়ে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। একসময় তা প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে আসে। এই সামগ্রিক অবস্থাকে ডায়াবেটিস বলে।
এ রোগে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ দীর্ঘস্থায়ীভাবে বেড়ে যায়। সুস্থ লোকের রক্তে প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ অভুক্ত অবস্থায় ৫ দশমিক ৬ মিলি মোলের কম এবং খাবার দুই ঘণ্টা পরে ৭ দশমিক ৮ মিলি মোলের কম থাকে। অভুক্ত অবস্থায় রক্তের প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ ৭ দশমিক ১ মিলি মোলের বেশি হলে অথবা ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার দুই ঘণ্টা পর রক্তের প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ ১১ দশমিক ১ মিলি মোলের বেশি হলে ডায়াবেটিস হয়েছে বলে গণ্য করা হয়।
লক্ষণ
ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া ও খুব বেশি পিপাসা লাগা
বেশি ক্ষুধা পাওয়া ও যথেষ্ট খাওয়ার সত্ত্বেও ওজন কমে যাওয়া
ক্লান্তি ও দুর্বলতা বোধ করা
ক্ষত শুকাতে বিলম্ব হওয়া
খোস-পাঁচড়া, ফোঁড়া প্রভৃতি চর্মরোগ দেখা দেওয়া
চোখে কম দেখা।
আক্রান্ত হওয়ার কারণ
যাদের বংশে বিশেষ করে বাবা-মা বা রক্ত সম্পর্কিত নিকটাত্মীয়ের ডায়াবেটিস আছে।
যাদের ওজন অনেক বেশি ও যারা ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রমের কোনো কাজ করেন না।
যারা বহুদিন ধরে কর্টিসোল জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করেন।
যেসব নারীর গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস ছিল আবার যেসব নারী নয় পাউন্ডের বেশি ওজনের বাচ্চা প্রসব করেছেন।
যাদের রক্তচাপ আছে এবং রক্তে কোলেস্টেরল বেশি থাকে।
কী ধরনের জটিলতা হয়?
পক্ষাঘাত স্নায়ুতন্ত্রের জটিলতা, হৃদরোগ, পায়ে পচনশীল ক্ষত, চক্ষুরোগ, প্রস্রাবে আমিষ বের হওয়া ও পরবর্তী সময়ে কিডনির কার্যক্ষমতা লোপ পাওয়া। পাতলা পায়খানা, যক্ষ্মা, মাড়ির প্রদাহ, চুলকানি, ফোঁড়া, পাঁচড়া ইত্যাদি। তাছাড়া রোগের কারণে যৌনক্ষমতা কমে যায়। মহিলাদের ক্ষেত্রে বেশি ওজনের শিশু জন্ম, মৃত শিশুর জন্ম, অকালে সন্তান প্রসব, জন্মের পরেই শিশুর মৃত্যু এবং নানা ধরনের জন্মগত ত্রুটি দেখা দিতে পারে।
চাই নিয়ন্ত্রিত জীবন
চিনি, মিষ্টি জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে।
শর্করাবহুল খাবার কিছুটা হিসাব করে খাওয়া উচিত।
আঁশবহুল খাবার বেশি খাওয়া দরকার।
সম্পৃক্ত ফ্যাট কম খাওয়া এবং অসম্পৃক্ত ফ্যাট খাওয়ার অভ্যাস করা উচিত।
ক্যালরিবহুল খাবার নির্দেশিত পরিমাণে খেতে হবে।
নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খাওয়া এবং কোনো বেলার খাবার খাওয়া বাদ দেওয়া যাবে না।
আজ কম খেলেন আবার কাল বেশি খেলেন এভাবে খাবার খাওয়া যাবে না।
ব্যায়াম : রোগ নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে ব্যায়াম বা শরীরচর্চার ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যায়াম বা দৈহিক পরিশ্রম মাংসপেশির জড়তা দূর করে এবং রক্ত চলাচলে সাহায্য করে। শরীর সুস্থ থাকে। ফলে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বেড়ে যায়। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট এবং সপ্তাহে কমপক্ষে পাঁচদিন হাঁটলে শরীর যথেষ্ট সুস্থ থাকবে। অধ্যাপক ডা. গোবিন্দ চন্দ্র দাস
অ্যালার্জি ও অ্যাজমা বিশেষজ্ঞ
চেম্বার : দি অ্যালার্জি অ্যান্ড অ্যাজমা সেন্টার
স্কাইটাচ রাজকোষ, ৪৩ আর/৫ সি, পশ্চিম পান্থপথ, ঢাকা
০১৭২১৮৬৮৬০৬, ০১৯২১৮৪৯৬৯৯