দেশে দেশে ব্যতিক্রমী ঈদের প্রস্তুতি
আরফাতুন নাবিলা | ২৩ মে, ২০২০ ০০:০০
করোনার গণসংক্রমণ কমাতে প্রায় সব দেশের মানুষ লকডাউন মেনে চলছে। মুসলিমপ্রধান দেশগুলোও ব্যতিক্রম নয়। অনেক দেশেই মসজিদে জমায়েত ছাড়াই পালিত হয়েছে রমজানের ইবাদত। ঈদের নামাজেও ব্যতিক্রম হবে না। লকডাউনের বিধি মেনে প্রায় সব দেশই খোলা ময়দানে ঈদের জামাত বাতিল করেছে। লিখেছেন আরফাতুন নাবিলা
যুক্তরাজ্য
এ বছর যুক্তরাজ্যের মসজিদগুলোতে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। লকডাউনে সবাইকে বাড়িতেই নামাজে অংশ নিতে হবে। প্রতি বছর রমজান মাস শেষে ঈদের দিন মুসলমানরা পরিবারের সদস্য এবং বন্ধুদের সঙ্গে একত্রিত হয়ে নামাজ আদায়ে শরিক হন। তবে এবার ব্যতিক্রম ঘটতে যাচ্ছে। করোনাভাইরাস মহামারীতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্রিটেনের মুসলিম কাউন্সিল। তাদের পক্ষ থেকে ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য কিছু নির্দেশিকাও দেওয়া হয়েছে। নানা বয়সী মানুষের পদচারণায় যে মসজিদগুলো প্রতি ঈদে মুখর থাকত, এ বছর সেগুলো গত নয় সপ্তাহ ধরে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ। মুসলিম কাউন্সিলের পাবলিক অ্যাফেয়ার্স প্রধান মিকদাদ ভার্সি বলেন, ‘ঈদের সকালে মসজিদে কেউ একা আসে না। সঙ্গে পরিবারের অন্যান্য সদস্য, আপনজন, বন্ধু কেউ না কেউ থাকেই। প্রচুর মানুষের সমাগম হয় মসজিদে। ধর্মীয় দিক দিয়ে দেখলে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া সত্যিই আমাদের জন্য কঠিন। প্রতি বছর নতুন কাপড় পরে সবাই মসজিদে এসে প্রার্থনা করেন। একে অপরের সঙ্গে আনন্দে শামিল হন। এ বছর সেটা সম্ভব হচ্ছে না। সবাই সুস্থ থাকুন এটাই এ মুহূর্তে কাম্য।’ লিডস শহরের মক্কা মসজিদের সিনিয়র এবং ন্যাশনাল অ্যাডভাইজরি বোর্ড মসজিদের প্রধান ইমাম ক্বারি মুহাম্মাদ আসিম বলেন, ‘ব্রিটিশ মুসলিমদের ইতিহাসে এবারই প্রথম কোনো ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। ছয় মাস আগেও এমন অবস্থার কথা ভাবা যেত না। অথচ সেই অবাস্তব চিন্তাই এখন বাস্তব। রোজা শেষে ঈদের নামাজের অপেক্ষায় থাকেন অসংখ্য মানুষ। আমাদের জন্য এটা আসলেই অনেক চ্যালেঞ্জ আর মন খারাপের বিষয়। রমজান মাসজুড়ে আমরা আত্মিক অনেক কিছু ত্যাগ করি। এবার ঈদের দিনেও তেমনটিই করতে হবে।’ মুসলিম কাউন্সিল ইংল্যান্ড, নর্থ আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলসে ঈদ পালনের জন্য ভিন্ন ভিন্ন নির্দেশিকা দিয়েছে। ব্রিটেনের মুসলমানদের ভার্চুয়ালি ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে এবং গিফট অনলাইনে শেয়ার করতে বলা হয়েছে। কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল হারুন খান বলেন, পুরো দেশজুড়ে আপনজন ছাড়া এবং মসজিদে না গিয়ে এবারের ঈদ পালন করতে হচ্ছে। নিঃসন্দেহে এটি সবার জন্য মন খারাপের কারণ। আশা করছি, এই পরিস্থিতিতে মুসলিম সম্প্রদায় অবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নেবে এবং নির্দেশিকা মেনে ঈদের দিন আনন্দে কাটাবে। রমজানের শুরুতে লকডাউনের কারণে মসজিদে গিয়ে প্রার্থনা বন্ধ রাখায় মুসলিম কাউন্সিলকে ধন্যবাদ দিয়েছিলেন স্বাস্থ্য সচিব ম্যাট হ্যানকক।
সৌদি আরব
করোনাভাইরাস প্রাক্কালে ২৩ মে থেকে ২৭ মে পর্যন্ত সৌদি আরবে প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টার কারফিউ চলবে। তার আগ পর্যন্ত, কমার্শিয়াল এবং ব্যবসা সংক্রান্ত যে প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা ছিল সেগুলো সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত স্বাভাবিক নিয়মে চলবে। তবে মক্কা শহরে যেভাবে এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ কারফিউ চলছে সেটি বহাল থাকবে। ঈদ পালনের এই পুরো সময় যেহেতু কারফিউয়ের অধীনে থাকবে তাই সেখানে কোনো মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে না। সব ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে বাড়ি থেকে বের না হয়ে আপনজনদের সঙ্গে নামাজ আদায় করতে বলা হয়েছে। সৌদি আরবের প্রধান মুফতি শেখ আব্দুল আজিজ আল শেখ বলেছেন, ‘মহামারী চলাকালীন বাড়িতে ঈদের নামাজ আদায় করার অনুমতি আছে। অবস্থার কথা বিবেচনা করে সবাই এটি মেনে চলুন।’ এখন পর্যন্ত দেশটিতে কভিড-১৯-এ আক্রান্ত সংখ্যা ৫০,০০০-এরও বেশি। মৃত্যু হয়েছে ৩২৯ জনের।
কাতার
করোনাভাইরাসের প্রকোপ বন্ধ করার লক্ষ্যে কাতার বেশকিছু নতুন কর্মসূচি নিয়েছে। এই কর্মসূচি চলবে ৩০ মে পর্যন্ত। লকডাউনের এ সময় কাতারে কেবল খাবারের দোকান, ফার্মেসি, রেস্টুরেন্ট, ডেলিভারি কোম্পানিগুলো বিশেষ প্রয়োজনে খোলা থাকবে। এছাড়া ঈদের ছুটিতে সব কিছুই বন্ধ থাকবে। শিল্পসংক্রান্ত সব কাজ, কন্ট্রাক্টিং কোম্পানি, কনস্ট্রাকশন সাইট, ইঞ্জিনিয়ারিং অফিস, এমনকি মিনিস্ট্রি অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি সব বন্ধ থাকবে এই ছুটিতে। ২২ মে থেকে শুরু হওয়া এ ছুটিতে জনগণকে তাদের ফোনে ‘ঊঐঞঊজঅত’ অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে। বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় বাধ্যতামূলকভাবে এই অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে। এই অ্যাপে জিপিএস এবং ব্লুটুথ টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়, যেটি কভিড-১৯ এ সংক্রমিত ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে সহায়তা করে। অ্যাপ ব্যবহারকারী ব্যক্তি সংক্রমিত কোনো ব্যক্তির সাহচর্যে এসেছিলেন কি না সেটি এর মাধ্যমে জানা যায়। দেশটিতে লকডাউন চলাকালীন কোনো বাহনে দুজনের বেশি যাত্রী বহন করা যাবে না। যদি ব্যক্তিগত বাহন বা ট্যাক্সির মতো বাহন হয়, সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ যাত্রীসংখ্য তিনজন। বাসে যাত্রীধারণ করা যাবে ধারণক্ষমতার অর্ধেক।
সংযুক্ত আরব আমিরাত
করোনাভাইরাস দমনে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ঈদুল ফিতরের ছুটিতে সব রকম জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দ্রুত আরও কিছু নিয়ম জারি হতে পারে। রমজান মাসজুড়ে দেশের সবাইকে তারাবি নামাজ বাসায় আদায় করতে বলা হয়েছিল। ঈদের জামাতের ব্যাপারেও সে নির্দেশনা বহাল থাকছে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাড়িতেই নামাজ আদায় করতে হবে ঈদের দিন। সব ধরনের পারিবারিক ভ্রমণ বাতিল করা হয়েছে। শিশুদের হাতে ক্যাশ দেওয়ার বদলে ই-ব্যাংকিং ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। সেখানে রাতে কারফিউ দেওয়া থাকলেও ছুটিতে রাত ৮টা থেকে সকাল পর্যন্ত কারফিউয়ের সময় বাড়ানো হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব না মানলে, বাইরে মাস্ক না পরলে জরিমানা করা হচ্ছে।
কুয়েত
কুয়েতেও ঈদের ছুটি পুরোটাই কাটবে কারফিউয়ের মধ্যে। ঈদের দিন থেকে শুরু হয়ে ৩০ মে পর্যন্ত এই কারফিউ বহাল থাকবে। কুয়েতেও জনগণকে বাড়িতে থেকেই ঈদের নামাজ আদায় করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে আরও কিছু কঠিন নির্দেশনা আসতে পারে দেশটিতে।
ওমান
ঈদের ছুটিতে অন্যান্য দেশের মতো সব ধরনের গণজমায়েত নিষিদ্ধ করেছে ওমানের সুপ্রিম কমিটি। কভিড-১৯ এর প্রকোপ ঠেকাতে সব ধরনের মার্কেট, প্রার্থনার স্থান, পারিবারিক ভ্রমণ সব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
মিসর
মিসরের আল আজহার ইউনিভার্সিটি ঐতিহাসিকভাবে ইসলামি চিন্তার কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। সেখানে সিনিয়র স্কলারদের কাউন্সিল থেকেও বাড়িতে থেকেই ঈদের নামাজ আদায় করার কথা বলা হয়েছে। ইসলামিক আইনমতে, সব ধরনের বিপদ থেকে জীবন বাঁচানো এবং মানুষকে রক্ষা করতে হবে। এই নীতি মেনেই মিসরে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঈদের ছুটিতে দেশটিতে কারফিউ আরও জোরদার করা হচ্ছে। রমজান মাসে রাত ৯টা থেকে সকাল পর্যন্ত কারফিউ থাকলেও এখন সেটি বাড়িয়ে বিকাল ৫টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত করা হচ্ছে। মিসরের প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা মাদবুলি বলেছেন, মারণব্যাধি এ ভাইরাস যদি আরও সংক্রমণ ছড়াতে থাকে তবে এ কারফিউয়ের সময় বাড়তে পারে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত। রেস্টুরেন্ট, পার্ক, রাস্তার পাশে বিখ্যাত সব ক্যাফেও বন্ধ থাকবে এ সময়। মিসরে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত সংখ্যা ১৩,০০০ এবং মৃত্যুসংখ্যা ৬৫৯। মার্চের একটি গবেষণায় জানানো হয়, দেশটিতে সংক্রমণের হার দ্রুত আরও বাড়বে। এজন্যই মিসর এই ছুটি থেকে কঠিন নির্দেশনা বহাল রাখছে।
জার্মানি
জার্মানিতে শুরু থেকেই করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। মুসলমানদের মসজিদে নামাজ আদায় করার বিষয়েও ছিল বেশকিছু নিয়ম। মসজিদগুলোতে একসঙ্গে ৫০ জনের বেশি নামাজ আদায় করা যেত না। ভ্রাতৃত্ববোধের পরিচয় দিয়ে চার্চগুলো মুসলিমদের জুমার নামাজ আদায়ের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে দুইভাগে নামাজ আদায় হতো। চার্চগুলোতে একসঙ্গে ১০০ জনেরও বেশি ব্যক্তি নামাজ আদায় করতে পারতেন। তবে এবার এ নিয়মে রাশ টানছে জার্মানি। ঈদের ছুটির নামাজ এবং জুমার নামাজ বন্ধ রাখার কথা বলেছে জার্মানির সেন্ট্রাল কাউন্সিল অব মুসলিমস। কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আয়মান মাজায়েক বলেন, ‘মানুষের নিরাপত্তার জন্য আমাদের ধর্মীয় এ বিধিনিষেধগুলো এ মুহূর্তে মেনে চলতে হচ্ছে। এটা অবশ্যই কষ্টের। তবে এর মধ্যেও হয়তো খোদা ভালো কিছু রেখেছেন।’ কাজেই ঈদের ছুটি থাকলেও ঈদের নামাজ এবার বাড়িতেই শুধু পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আদায় করতে হবে।
বাংলাদেশ
বাংলাদেশে ঈদের নামাজ বাড়িতে আদায় করা নিয়ে বাধ্যবাধকতা না থাকলেও খোলা জায়গায় বা ঈদগাহে আদায় করার নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। পরিবর্তে নামাজ আদায় করতে হবে বাড়ির কাছের মসজিদে। মুসল্লিদের জন্য এক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেমন- ঈদের নামাজের জামায়াতের সময় মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না, নামাজের পূর্বে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবানুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে, মুসল্লিদের প্রত্যেকে নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসবেন এবং মসজিদে জামায়াত শেষে কোলাকুলি এবং পরস্পর হাত মেলানো যাবে না।
অন্যান্য দেশ
বাহরাইন : ঈদের ছুটিসহ লকডাউনের সময় আরও দুই সপ্তাহ বাড়িয়েছে বাহরাইন। বন্ধ করা হয়েছে সব রেস্টুরেন্ট এবং সিনেমা হল। মুসলমানদের ঈদের নামাজ আদায় করতে বলা হয়েছে বাড়ি থেকেই।
ইয়েমেন : ইয়েমেনে ঈদের ছুটিতে ২৪ ঘণ্টার লকডাউন দেওয়া হয়েছে। নিষিদ্ধ করা হয়েছে সব ধরনের ধর্মীয় জনসমাগম।
ইরাক : ইরাকের উত্তর অঞ্চলের কুর্দিশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের এলাকায় ঈদের ছুটির তিনদিন কারফিউ থাকবে। সম্প্রতি করোনাভাইরাস সংক্রমণের খবর পাওয়ায় রাজধানী বাগদাদও আগামী দুই সপ্তাহের জন্য পুরো লকডাউন থাকবে। এছাড়া অন্যান্য এলাকায় বিকাল ৫টা থেকে সকাল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ জারি থাকবে ঈদের ছুটিতে।
সিরিয়া : ঈদের ছুটিতে একত্রিত হয়ে সব প্রার্থনা বাতিল করা হয়েছে সিরিয়ায়। সবাইকে বাড়িতে বসে প্রার্থনা করতে বলা হয়েছে। দেশটিতে কারফিউ চলবে রাতে। বন্ধ থাকবে সব জনসমাগম।
ফিলিস্তিন : ২২ মে থেকে ফিলিস্তিনে শুরু হচ্ছে চারদিন ব্যাপী কারফিউ। এক শহর থেকে অন্য শহরে ভ্রমণ একদম নিষিদ্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে আল-আকসা মসজিদও।
লিবিয়া : লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে তিনদিনের কারফিউ ঘোষণা করেছে লিবিয়ান সরকার।
মরক্কো : মার্চ মাস থেকেই মরক্কোতে লকডাউন শুরু হয়ে গিয়েছিল। সরকার ঘোষণা করেছে এই সময়সীমা বাড়বে ১০ জুন পর্যন্ত। ঈদের ছুটিও পড়ে যাচ্ছে এই ছুটিতেই। মুসলমানদের সবাইকেই বাড়ি থেকেই ঈদের নামাজ আদায় করতে হবে। দেশটিতে কারফিউ চলছে সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৫টা পর্যন্ত।
বাড়িতে ঈদের নামাজ
ঈদের নামাজ সাধারণত সবাই একত্রে মিলে খোলা জায়গায় আদায় করা হয়। বিষয়টি নিয়ে ভারতের বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলার মনজুর আলম জানিয়েছেন, ‘যেহেতু এবার খোলা জায়গায় নামাজ আদায় করা সম্ভব নয়, ফলে বড় ঘরে অথবা বাড়ির ছাদে পরিবারের সবাইকে নিয়ে নামাজ আদায় করা যায়। ফ্ল্যাট বাড়িতে ভবনের সবাই ছাদে একসঙ্গে চলে গেলে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকবে না। সেক্ষেত্রে ছাদে না গিয়ে নিজের ঘরে পড়াই উত্তম।’ তিনি আরও বলেন, এবার ঈদে মানব সভ্যতার সুস্থতার জন্য দোয়া করতে হবে।
শেয়ার করুন
আরফাতুন নাবিলা | ২৩ মে, ২০২০ ০০:০০

করোনার গণসংক্রমণ কমাতে প্রায় সব দেশের মানুষ লকডাউন মেনে চলছে। মুসলিমপ্রধান দেশগুলোও ব্যতিক্রম নয়। অনেক দেশেই মসজিদে জমায়েত ছাড়াই পালিত হয়েছে রমজানের ইবাদত। ঈদের নামাজেও ব্যতিক্রম হবে না। লকডাউনের বিধি মেনে প্রায় সব দেশই খোলা ময়দানে ঈদের জামাত বাতিল করেছে। লিখেছেন আরফাতুন নাবিলা
যুক্তরাজ্য
এ বছর যুক্তরাজ্যের মসজিদগুলোতে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। লকডাউনে সবাইকে বাড়িতেই নামাজে অংশ নিতে হবে। প্রতি বছর রমজান মাস শেষে ঈদের দিন মুসলমানরা পরিবারের সদস্য এবং বন্ধুদের সঙ্গে একত্রিত হয়ে নামাজ আদায়ে শরিক হন। তবে এবার ব্যতিক্রম ঘটতে যাচ্ছে। করোনাভাইরাস মহামারীতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্রিটেনের মুসলিম কাউন্সিল। তাদের পক্ষ থেকে ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য কিছু নির্দেশিকাও দেওয়া হয়েছে। নানা বয়সী মানুষের পদচারণায় যে মসজিদগুলো প্রতি ঈদে মুখর থাকত, এ বছর সেগুলো গত নয় সপ্তাহ ধরে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ। মুসলিম কাউন্সিলের পাবলিক অ্যাফেয়ার্স প্রধান মিকদাদ ভার্সি বলেন, ‘ঈদের সকালে মসজিদে কেউ একা আসে না। সঙ্গে পরিবারের অন্যান্য সদস্য, আপনজন, বন্ধু কেউ না কেউ থাকেই। প্রচুর মানুষের সমাগম হয় মসজিদে। ধর্মীয় দিক দিয়ে দেখলে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া সত্যিই আমাদের জন্য কঠিন। প্রতি বছর নতুন কাপড় পরে সবাই মসজিদে এসে প্রার্থনা করেন। একে অপরের সঙ্গে আনন্দে শামিল হন। এ বছর সেটা সম্ভব হচ্ছে না। সবাই সুস্থ থাকুন এটাই এ মুহূর্তে কাম্য।’ লিডস শহরের মক্কা মসজিদের সিনিয়র এবং ন্যাশনাল অ্যাডভাইজরি বোর্ড মসজিদের প্রধান ইমাম ক্বারি মুহাম্মাদ আসিম বলেন, ‘ব্রিটিশ মুসলিমদের ইতিহাসে এবারই প্রথম কোনো ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। ছয় মাস আগেও এমন অবস্থার কথা ভাবা যেত না। অথচ সেই অবাস্তব চিন্তাই এখন বাস্তব। রোজা শেষে ঈদের নামাজের অপেক্ষায় থাকেন অসংখ্য মানুষ। আমাদের জন্য এটা আসলেই অনেক চ্যালেঞ্জ আর মন খারাপের বিষয়। রমজান মাসজুড়ে আমরা আত্মিক অনেক কিছু ত্যাগ করি। এবার ঈদের দিনেও তেমনটিই করতে হবে।’ মুসলিম কাউন্সিল ইংল্যান্ড, নর্থ আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলসে ঈদ পালনের জন্য ভিন্ন ভিন্ন নির্দেশিকা দিয়েছে। ব্রিটেনের মুসলমানদের ভার্চুয়ালি ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে এবং গিফট অনলাইনে শেয়ার করতে বলা হয়েছে। কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল হারুন খান বলেন, পুরো দেশজুড়ে আপনজন ছাড়া এবং মসজিদে না গিয়ে এবারের ঈদ পালন করতে হচ্ছে। নিঃসন্দেহে এটি সবার জন্য মন খারাপের কারণ। আশা করছি, এই পরিস্থিতিতে মুসলিম সম্প্রদায় অবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নেবে এবং নির্দেশিকা মেনে ঈদের দিন আনন্দে কাটাবে। রমজানের শুরুতে লকডাউনের কারণে মসজিদে গিয়ে প্রার্থনা বন্ধ রাখায় মুসলিম কাউন্সিলকে ধন্যবাদ দিয়েছিলেন স্বাস্থ্য সচিব ম্যাট হ্যানকক।
সৌদি আরব
করোনাভাইরাস প্রাক্কালে ২৩ মে থেকে ২৭ মে পর্যন্ত সৌদি আরবে প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টার কারফিউ চলবে। তার আগ পর্যন্ত, কমার্শিয়াল এবং ব্যবসা সংক্রান্ত যে প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা ছিল সেগুলো সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত স্বাভাবিক নিয়মে চলবে। তবে মক্কা শহরে যেভাবে এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ কারফিউ চলছে সেটি বহাল থাকবে। ঈদ পালনের এই পুরো সময় যেহেতু কারফিউয়ের অধীনে থাকবে তাই সেখানে কোনো মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে না। সব ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে বাড়ি থেকে বের না হয়ে আপনজনদের সঙ্গে নামাজ আদায় করতে বলা হয়েছে। সৌদি আরবের প্রধান মুফতি শেখ আব্দুল আজিজ আল শেখ বলেছেন, ‘মহামারী চলাকালীন বাড়িতে ঈদের নামাজ আদায় করার অনুমতি আছে। অবস্থার কথা বিবেচনা করে সবাই এটি মেনে চলুন।’ এখন পর্যন্ত দেশটিতে কভিড-১৯-এ আক্রান্ত সংখ্যা ৫০,০০০-এরও বেশি। মৃত্যু হয়েছে ৩২৯ জনের।
কাতার
করোনাভাইরাসের প্রকোপ বন্ধ করার লক্ষ্যে কাতার বেশকিছু নতুন কর্মসূচি নিয়েছে। এই কর্মসূচি চলবে ৩০ মে পর্যন্ত। লকডাউনের এ সময় কাতারে কেবল খাবারের দোকান, ফার্মেসি, রেস্টুরেন্ট, ডেলিভারি কোম্পানিগুলো বিশেষ প্রয়োজনে খোলা থাকবে। এছাড়া ঈদের ছুটিতে সব কিছুই বন্ধ থাকবে। শিল্পসংক্রান্ত সব কাজ, কন্ট্রাক্টিং কোম্পানি, কনস্ট্রাকশন সাইট, ইঞ্জিনিয়ারিং অফিস, এমনকি মিনিস্ট্রি অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি সব বন্ধ থাকবে এই ছুটিতে। ২২ মে থেকে শুরু হওয়া এ ছুটিতে জনগণকে তাদের ফোনে ‘ঊঐঞঊজঅত’ অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে। বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় বাধ্যতামূলকভাবে এই অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে। এই অ্যাপে জিপিএস এবং ব্লুটুথ টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়, যেটি কভিড-১৯ এ সংক্রমিত ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে সহায়তা করে। অ্যাপ ব্যবহারকারী ব্যক্তি সংক্রমিত কোনো ব্যক্তির সাহচর্যে এসেছিলেন কি না সেটি এর মাধ্যমে জানা যায়। দেশটিতে লকডাউন চলাকালীন কোনো বাহনে দুজনের বেশি যাত্রী বহন করা যাবে না। যদি ব্যক্তিগত বাহন বা ট্যাক্সির মতো বাহন হয়, সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ যাত্রীসংখ্য তিনজন। বাসে যাত্রীধারণ করা যাবে ধারণক্ষমতার অর্ধেক।
সংযুক্ত আরব আমিরাত
করোনাভাইরাস দমনে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ঈদুল ফিতরের ছুটিতে সব রকম জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দ্রুত আরও কিছু নিয়ম জারি হতে পারে। রমজান মাসজুড়ে দেশের সবাইকে তারাবি নামাজ বাসায় আদায় করতে বলা হয়েছিল। ঈদের জামাতের ব্যাপারেও সে নির্দেশনা বহাল থাকছে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাড়িতেই নামাজ আদায় করতে হবে ঈদের দিন। সব ধরনের পারিবারিক ভ্রমণ বাতিল করা হয়েছে। শিশুদের হাতে ক্যাশ দেওয়ার বদলে ই-ব্যাংকিং ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। সেখানে রাতে কারফিউ দেওয়া থাকলেও ছুটিতে রাত ৮টা থেকে সকাল পর্যন্ত কারফিউয়ের সময় বাড়ানো হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব না মানলে, বাইরে মাস্ক না পরলে জরিমানা করা হচ্ছে।
কুয়েত
কুয়েতেও ঈদের ছুটি পুরোটাই কাটবে কারফিউয়ের মধ্যে। ঈদের দিন থেকে শুরু হয়ে ৩০ মে পর্যন্ত এই কারফিউ বহাল থাকবে। কুয়েতেও জনগণকে বাড়িতে থেকেই ঈদের নামাজ আদায় করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে আরও কিছু কঠিন নির্দেশনা আসতে পারে দেশটিতে।
ওমান
ঈদের ছুটিতে অন্যান্য দেশের মতো সব ধরনের গণজমায়েত নিষিদ্ধ করেছে ওমানের সুপ্রিম কমিটি। কভিড-১৯ এর প্রকোপ ঠেকাতে সব ধরনের মার্কেট, প্রার্থনার স্থান, পারিবারিক ভ্রমণ সব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
মিসর
মিসরের আল আজহার ইউনিভার্সিটি ঐতিহাসিকভাবে ইসলামি চিন্তার কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। সেখানে সিনিয়র স্কলারদের কাউন্সিল থেকেও বাড়িতে থেকেই ঈদের নামাজ আদায় করার কথা বলা হয়েছে। ইসলামিক আইনমতে, সব ধরনের বিপদ থেকে জীবন বাঁচানো এবং মানুষকে রক্ষা করতে হবে। এই নীতি মেনেই মিসরে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঈদের ছুটিতে দেশটিতে কারফিউ আরও জোরদার করা হচ্ছে। রমজান মাসে রাত ৯টা থেকে সকাল পর্যন্ত কারফিউ থাকলেও এখন সেটি বাড়িয়ে বিকাল ৫টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত করা হচ্ছে। মিসরের প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা মাদবুলি বলেছেন, মারণব্যাধি এ ভাইরাস যদি আরও সংক্রমণ ছড়াতে থাকে তবে এ কারফিউয়ের সময় বাড়তে পারে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত। রেস্টুরেন্ট, পার্ক, রাস্তার পাশে বিখ্যাত সব ক্যাফেও বন্ধ থাকবে এ সময়। মিসরে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত সংখ্যা ১৩,০০০ এবং মৃত্যুসংখ্যা ৬৫৯। মার্চের একটি গবেষণায় জানানো হয়, দেশটিতে সংক্রমণের হার দ্রুত আরও বাড়বে। এজন্যই মিসর এই ছুটি থেকে কঠিন নির্দেশনা বহাল রাখছে।
জার্মানি
জার্মানিতে শুরু থেকেই করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। মুসলমানদের মসজিদে নামাজ আদায় করার বিষয়েও ছিল বেশকিছু নিয়ম। মসজিদগুলোতে একসঙ্গে ৫০ জনের বেশি নামাজ আদায় করা যেত না। ভ্রাতৃত্ববোধের পরিচয় দিয়ে চার্চগুলো মুসলিমদের জুমার নামাজ আদায়ের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে দুইভাগে নামাজ আদায় হতো। চার্চগুলোতে একসঙ্গে ১০০ জনেরও বেশি ব্যক্তি নামাজ আদায় করতে পারতেন। তবে এবার এ নিয়মে রাশ টানছে জার্মানি। ঈদের ছুটির নামাজ এবং জুমার নামাজ বন্ধ রাখার কথা বলেছে জার্মানির সেন্ট্রাল কাউন্সিল অব মুসলিমস। কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আয়মান মাজায়েক বলেন, ‘মানুষের নিরাপত্তার জন্য আমাদের ধর্মীয় এ বিধিনিষেধগুলো এ মুহূর্তে মেনে চলতে হচ্ছে। এটা অবশ্যই কষ্টের। তবে এর মধ্যেও হয়তো খোদা ভালো কিছু রেখেছেন।’ কাজেই ঈদের ছুটি থাকলেও ঈদের নামাজ এবার বাড়িতেই শুধু পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আদায় করতে হবে।
বাংলাদেশ
বাংলাদেশে ঈদের নামাজ বাড়িতে আদায় করা নিয়ে বাধ্যবাধকতা না থাকলেও খোলা জায়গায় বা ঈদগাহে আদায় করার নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। পরিবর্তে নামাজ আদায় করতে হবে বাড়ির কাছের মসজিদে। মুসল্লিদের জন্য এক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেমন- ঈদের নামাজের জামায়াতের সময় মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না, নামাজের পূর্বে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবানুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে, মুসল্লিদের প্রত্যেকে নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসবেন এবং মসজিদে জামায়াত শেষে কোলাকুলি এবং পরস্পর হাত মেলানো যাবে না।
অন্যান্য দেশ
বাহরাইন : ঈদের ছুটিসহ লকডাউনের সময় আরও দুই সপ্তাহ বাড়িয়েছে বাহরাইন। বন্ধ করা হয়েছে সব রেস্টুরেন্ট এবং সিনেমা হল। মুসলমানদের ঈদের নামাজ আদায় করতে বলা হয়েছে বাড়ি থেকেই।
ইয়েমেন : ইয়েমেনে ঈদের ছুটিতে ২৪ ঘণ্টার লকডাউন দেওয়া হয়েছে। নিষিদ্ধ করা হয়েছে সব ধরনের ধর্মীয় জনসমাগম।
ইরাক : ইরাকের উত্তর অঞ্চলের কুর্দিশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের এলাকায় ঈদের ছুটির তিনদিন কারফিউ থাকবে। সম্প্রতি করোনাভাইরাস সংক্রমণের খবর পাওয়ায় রাজধানী বাগদাদও আগামী দুই সপ্তাহের জন্য পুরো লকডাউন থাকবে। এছাড়া অন্যান্য এলাকায় বিকাল ৫টা থেকে সকাল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ জারি থাকবে ঈদের ছুটিতে।
সিরিয়া : ঈদের ছুটিতে একত্রিত হয়ে সব প্রার্থনা বাতিল করা হয়েছে সিরিয়ায়। সবাইকে বাড়িতে বসে প্রার্থনা করতে বলা হয়েছে। দেশটিতে কারফিউ চলবে রাতে। বন্ধ থাকবে সব জনসমাগম।
ফিলিস্তিন : ২২ মে থেকে ফিলিস্তিনে শুরু হচ্ছে চারদিন ব্যাপী কারফিউ। এক শহর থেকে অন্য শহরে ভ্রমণ একদম নিষিদ্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে আল-আকসা মসজিদও।
লিবিয়া : লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে তিনদিনের কারফিউ ঘোষণা করেছে লিবিয়ান সরকার।
মরক্কো : মার্চ মাস থেকেই মরক্কোতে লকডাউন শুরু হয়ে গিয়েছিল। সরকার ঘোষণা করেছে এই সময়সীমা বাড়বে ১০ জুন পর্যন্ত। ঈদের ছুটিও পড়ে যাচ্ছে এই ছুটিতেই। মুসলমানদের সবাইকেই বাড়ি থেকেই ঈদের নামাজ আদায় করতে হবে। দেশটিতে কারফিউ চলছে সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৫টা পর্যন্ত।
বাড়িতে ঈদের নামাজ
ঈদের নামাজ সাধারণত সবাই একত্রে মিলে খোলা জায়গায় আদায় করা হয়। বিষয়টি নিয়ে ভারতের বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলার মনজুর আলম জানিয়েছেন, ‘যেহেতু এবার খোলা জায়গায় নামাজ আদায় করা সম্ভব নয়, ফলে বড় ঘরে অথবা বাড়ির ছাদে পরিবারের সবাইকে নিয়ে নামাজ আদায় করা যায়। ফ্ল্যাট বাড়িতে ভবনের সবাই ছাদে একসঙ্গে চলে গেলে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকবে না। সেক্ষেত্রে ছাদে না গিয়ে নিজের ঘরে পড়াই উত্তম।’ তিনি আরও বলেন, এবার ঈদে মানব সভ্যতার সুস্থতার জন্য দোয়া করতে হবে।