ডায়াবেটিক রোগীর খাদ্যতালিকা
স্থূলতা বা ওজন বৃদ্ধি, মেদবাহুল্য, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা, মানসিক চাপ, ধূমপান ইত্যাদির উপস্থিতি এবং সেই সঙ্গে মন্দ খাদ্যাভ্যাস থাকলে তথা উচ্চ শর্করা এবং কম আঁশযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করলে অথবা বংশগত কারণেও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য তিনটি ‘ডি’ মেনে চলা জরুরি, যেমনÑ ডায়েট, ডিসিপ্লিন এবং ড্রাগ। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো ডায়েট তথা খাদ্যাভ্যাস।
খাবারের নিয়ম
ডায়াবেটিক রোগীর খাদ্যাভ্যাসে কিছু সাধারণ নিয়মাবলি মেনে চলা উচিত, যেমন- তিনবেলার খাবার ছয়বারে ভাগ করে খেতে হবে এবং কোনো বেলার খাবারই বাদ দেওয়া যাবে না। সেই সঙ্গে চর্বি জাতীয় খাবার কম গ্রহণ এবং মিষ্টি জাতীয় খাদ্য পরিহার করা আবশ্যক। ওজন অনুযায়ী নির্দিষ্ট খাদ্যতালিকা মেনে চলতে হবে। এছাড়া খাবার খেতে কোনো অসুবিধা হলে রক্তে শর্করার পরিমাণ পরীক্ষা করে ওষুধ সমন্বয় করে নিতে হবে এবং প্রয়োজনে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
লাউ, পেঁপে, চিচিঙ্গা, চালকুমড়া, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউশাক, লালশাক, পুঁইশাক, পালংশাক, কলমিশাক ইত্যাদি শাক-সবজি খাওয়ায় কোনো বাধা-নিষেধ নেই ডায়াবেটিক রোগীর জন্য। এসব শাক-সবজি ইচ্ছামতোই খাওয়া যাবে। তবে মিষ্টিকুমড়া, গাজর, বরবটি, বেগুন, ঢেঁড়স, মটরশুঁটি, কাঁকরোল, করলা ইত্যাদি সবজি খেতে হবে পরিমাণমতো। এছাড়া ডায়াবেটিক রোগীর জন্য কালোজাম, লেবু, আমড়া, বাতাবি লেবু, বাঙ্গি, জামরুল, আমলকি, কচি ডাবের পানি, মিষ্টি ছাড়া ফলের আচার ইত্যাদি ফলমূল খেতেও কোনো নিষেধ নেই। কিন্তু কিছু কিছু ফল নির্দিষ্ট পরিমাণে গ্রহণ করা আবশ্যক। যেমন- ছোট একটি আমের অর্ধেক, একটি বড় পাকা পেয়ারা, বড় আকারের ছয়টি লিচু বা মিষ্টি কুল, একটি আতা ফল, কাঁঠালের তিনটি মাঝারি আকারের কোয়া, একটি মাঝারি আকারের কমলা, আপেল বা মাল্টা, আধা কাপ পাকা বেল, দুই চামচ কোরানো নারকেল, তরমুজ মাঝারি এক টুকরা কিংবা একটি বড় আকারের পাকা সাগর কলার অর্ধেক একজন ডায়াবেটিক রোগী একদিনে খেতে পারেন। প্রতিদিন এসব ফলের যেকোনো একটি অথবা পরিমাণমতো খাওয়া যাবে। তবে একাধিক ফল একসঙ্গে খাওয়া উচিত নয়।
খাবারের সময়
ডায়াবেটিক রোগী সকাল ৮-৮.৩০টার দিকে সকালের নাস্তা সেরে ফেলবেন। সকালের নাস্তায় দুটি ছোট ও পাতলা আটার রুটি, একটি ডিম সেদ্ধ এবং বাধা-নিষেধ নেই এরকম ফল বা সবজি ইচ্ছামতো, বেলা ১১টার দিকে হালকা খাবার হিসেবে এক কাপ দুধ বা মুড়ি, বিস্কুট, খই, নুডলস বা ডাল/চিনাবাদাম ৩০ গ্রাম অথবা পরিমাণমতো যে কোনো একটি ফল, ২-২.৩০টার দিকে দুপুরের খাবার খেয়ে নেবেন। দুপুরের খাবারে ২.২৫ কাপ পরিমাণ ভাতের সঙ্গে ২ টুকরা মাছ বা মাংস, ২ কাপ পরিমাণ মাঝারি-ঘন ডাল এবং পরিমাণ মতো যেকোনো একটি সবজি খেতে পারেন। বিকাল ৫-৫.৩০টার দিকে বিকালের নাস্তা করতে পারেন। নাস্তায় সকাল ১১টার হালকা খাবারের মতো নির্দেশাবলি মানলে ভালো। রাত ৮-৮.৩০টায় রাতের খাবার হিসেবে চারটা ছোট-পাতলা আটার রুটি, এক টুকরা মাছ বা মাংস, এক কাপ মাঝারি-ঘন ডাল ও পরিমাণমতো যেকোনো একটি সবজি খাওয়া যেতে পারে। রাত ১১-১১.৩০টার দিকে এক গ্লাস দুধ বা দুইটা বিস্কুট অথবা ছোট একটি পাউরুটি কিংবা পরিমাণমতো একটি ফল খেয়ে আধা ঘণ্টা হালকা হাঁটাহাঁটি করে রোগীকে ঘুমাতে যেতে হবে।
শেয়ার করুন

স্থূলতা বা ওজন বৃদ্ধি, মেদবাহুল্য, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা, মানসিক চাপ, ধূমপান ইত্যাদির উপস্থিতি এবং সেই সঙ্গে মন্দ খাদ্যাভ্যাস থাকলে তথা উচ্চ শর্করা এবং কম আঁশযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করলে অথবা বংশগত কারণেও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য তিনটি ‘ডি’ মেনে চলা জরুরি, যেমনÑ ডায়েট, ডিসিপ্লিন এবং ড্রাগ। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো ডায়েট তথা খাদ্যাভ্যাস।
খাবারের নিয়ম
ডায়াবেটিক রোগীর খাদ্যাভ্যাসে কিছু সাধারণ নিয়মাবলি মেনে চলা উচিত, যেমন- তিনবেলার খাবার ছয়বারে ভাগ করে খেতে হবে এবং কোনো বেলার খাবারই বাদ দেওয়া যাবে না। সেই সঙ্গে চর্বি জাতীয় খাবার কম গ্রহণ এবং মিষ্টি জাতীয় খাদ্য পরিহার করা আবশ্যক। ওজন অনুযায়ী নির্দিষ্ট খাদ্যতালিকা মেনে চলতে হবে। এছাড়া খাবার খেতে কোনো অসুবিধা হলে রক্তে শর্করার পরিমাণ পরীক্ষা করে ওষুধ সমন্বয় করে নিতে হবে এবং প্রয়োজনে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
লাউ, পেঁপে, চিচিঙ্গা, চালকুমড়া, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউশাক, লালশাক, পুঁইশাক, পালংশাক, কলমিশাক ইত্যাদি শাক-সবজি খাওয়ায় কোনো বাধা-নিষেধ নেই ডায়াবেটিক রোগীর জন্য। এসব শাক-সবজি ইচ্ছামতোই খাওয়া যাবে। তবে মিষ্টিকুমড়া, গাজর, বরবটি, বেগুন, ঢেঁড়স, মটরশুঁটি, কাঁকরোল, করলা ইত্যাদি সবজি খেতে হবে পরিমাণমতো। এছাড়া ডায়াবেটিক রোগীর জন্য কালোজাম, লেবু, আমড়া, বাতাবি লেবু, বাঙ্গি, জামরুল, আমলকি, কচি ডাবের পানি, মিষ্টি ছাড়া ফলের আচার ইত্যাদি ফলমূল খেতেও কোনো নিষেধ নেই। কিন্তু কিছু কিছু ফল নির্দিষ্ট পরিমাণে গ্রহণ করা আবশ্যক। যেমন- ছোট একটি আমের অর্ধেক, একটি বড় পাকা পেয়ারা, বড় আকারের ছয়টি লিচু বা মিষ্টি কুল, একটি আতা ফল, কাঁঠালের তিনটি মাঝারি আকারের কোয়া, একটি মাঝারি আকারের কমলা, আপেল বা মাল্টা, আধা কাপ পাকা বেল, দুই চামচ কোরানো নারকেল, তরমুজ মাঝারি এক টুকরা কিংবা একটি বড় আকারের পাকা সাগর কলার অর্ধেক একজন ডায়াবেটিক রোগী একদিনে খেতে পারেন। প্রতিদিন এসব ফলের যেকোনো একটি অথবা পরিমাণমতো খাওয়া যাবে। তবে একাধিক ফল একসঙ্গে খাওয়া উচিত নয়।
খাবারের সময়
ডায়াবেটিক রোগী সকাল ৮-৮.৩০টার দিকে সকালের নাস্তা সেরে ফেলবেন। সকালের নাস্তায় দুটি ছোট ও পাতলা আটার রুটি, একটি ডিম সেদ্ধ এবং বাধা-নিষেধ নেই এরকম ফল বা সবজি ইচ্ছামতো, বেলা ১১টার দিকে হালকা খাবার হিসেবে এক কাপ দুধ বা মুড়ি, বিস্কুট, খই, নুডলস বা ডাল/চিনাবাদাম ৩০ গ্রাম অথবা পরিমাণমতো যে কোনো একটি ফল, ২-২.৩০টার দিকে দুপুরের খাবার খেয়ে নেবেন। দুপুরের খাবারে ২.২৫ কাপ পরিমাণ ভাতের সঙ্গে ২ টুকরা মাছ বা মাংস, ২ কাপ পরিমাণ মাঝারি-ঘন ডাল এবং পরিমাণ মতো যেকোনো একটি সবজি খেতে পারেন। বিকাল ৫-৫.৩০টার দিকে বিকালের নাস্তা করতে পারেন। নাস্তায় সকাল ১১টার হালকা খাবারের মতো নির্দেশাবলি মানলে ভালো। রাত ৮-৮.৩০টায় রাতের খাবার হিসেবে চারটা ছোট-পাতলা আটার রুটি, এক টুকরা মাছ বা মাংস, এক কাপ মাঝারি-ঘন ডাল ও পরিমাণমতো যেকোনো একটি সবজি খাওয়া যেতে পারে। রাত ১১-১১.৩০টার দিকে এক গ্লাস দুধ বা দুইটা বিস্কুট অথবা ছোট একটি পাউরুটি কিংবা পরিমাণমতো একটি ফল খেয়ে আধা ঘণ্টা হালকা হাঁটাহাঁটি করে রোগীকে ঘুমাতে যেতে হবে।