করোনা ও চুল পড়া
ডা. জাহেদ পারভেজ | ২৪ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০
মাথার চুল পড়া ও গজানো স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তবে চিন্তার বিষয় তখনই, যখন চুল পড়ার চেয়ে গজানোর হার কমে যায়। তবে কভিড-১৯ সংক্রমণ পরবর্তী সময়ে চুল উঠতে পারে বলে জানাচ্ছে নতুন গবেষণা। বিশেষত বহুদিন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত থাকলে চুল পড়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা যায়। ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি অব মেডিসিনের সাম্প্রতিক সময়ের সমীক্ষা বলছে, করোনার প্রথম ২৫টি উপসর্গের মধ্যে রয়েছে চুল পড়ে যাওয়া।
কারণ
সাধারণত বংশগতি, অপুষ্টি, দুশ্চিন্তা, অনিদ্রা, শারীরিক রোগ, বিশেষত হরমোনজনিত রোগ, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ইত্যাদি কারণে মাত্রাতিরিক্ত চুল পড়তে পারে। ডেঙ্গু, টাইফয়েড, চিকুনগুনিয়া পরবর্তী এমনকি ভাইরাল ইনফেকশন পরবর্তীতেও চুল পড়ার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। তবে কভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে রোগীদের চুল বেশি পড়ে কী কারণে তার সঠিক কারণ জানা না গেলেও কিছু বিষয়কে দায়ী করা হচ্ছে।
যেমন : ভিটামিন ‘ডি’ লেভেল কমে যাওয়া দেহের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ‘ডি’ লেভেল কমে যাওয়ায় চুল পড়ার সমস্যা হয়। সার্স কোভ-২ ভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রকে বেশি আক্রমণ করলেও আক্রমণকারী ভাইরাসটিকে প্রতিহত করতে গিয়ে সারাক্ষণ দেহের ইমিউন সিস্টেম বা রোগপ্রতিরোধী ব্যবস্থাকে মারাত্মক ক্ষতির মধ্যে ফেলে। রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতার অন্যতম সহচর ভিটামিন ‘ডি’ লেভেল কমে যায়। ভিটামিন ‘ডি’ সঠিক পরিমাণে থাকা চুলের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
চুলের জীবনচক্রের পরিবর্তন
চুলের জীবনচক্রের চার স্তর- যা হলো ক্রমবর্ধমান পর্যায় যা দুই থেকে সাত বছর স্থায়ী হয় এবং চুলের দৈর্ঘ্য নির্ধারণ করে। রূপান্তরপর্ব যা প্রায় ১০ দিন স্থায়ী হয়। বিশ্রামের পর্যায়, যা তিন মাস স্থায়ী হয়। প্রায় ১০ থেকে ১৫ ভাগ চুল এই পর্যায়ে থাকে। পুরনো চুল বিশ্রামে থাকা অবস্থায় নতুন চুল বৃদ্ধির পর্ব শুরু হয়। চতুর্থ স্তরে নতুন চুলের পর্যায়। এই পর্যায়ে পুরনো চুল পড়ে এবং নতুন চুল গজায়। প্রতিদিন প্রায় ৫০ থেকে ১৫০টি চুল কমে যেতে পারে এই পর্যায়ে। করোনা-পরবর্তী সময়ে রোগীদের চুলের চতুর্থ পর্যায়ে চলে যায়। তখন দ্রুত চুল পড়তে থাকে; সে অনুযায়ী গজায় না। বিশেষ করে যাদের মাথায় এমনিতেই চুল কম, তারা বেশি ঝুঁকির মুখে পড়ে।
করণীয়
প্রতিদিন হালকা শারীরিক ব্যায়াম ও মানসিক চাপ কমানো, দুশ্চিন্তামুক্ত ও হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করা
খাদ্যতালিকায় দুধ, ডিমসহ পুষ্টিকর ও আয়রনসমৃদ্ধ খাবার রাখা
দুপুর ১২টার দিকে যতটা সম্ভব কম কাপড়ে শরীর ঢেকে ২০ থেকে ২৫ মিনিট গায়ে রোদ লাগানোর চেষ্টা করুন। এতে ভিটামিন ‘ডি’ লেভেল বজায় থাকতে পারে বা ঘাটতি পুষিয়ে নিতে সাহায্য করে।
প্রতিকার
দ্রুত চুল পড়ার সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে Platelet Rich Plasma TheraPz ev PRP TheraPz, Microneddling TheraPz, Hair Filler, Hair Booster, Growth Factor TheraPz ইত্যাদির মতো আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থা রয়েছে। এ ধরনের চিকিৎসা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন ও কার্যকর ।
শেয়ার করুন
ডা. জাহেদ পারভেজ | ২৪ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০

মাথার চুল পড়া ও গজানো স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তবে চিন্তার বিষয় তখনই, যখন চুল পড়ার চেয়ে গজানোর হার কমে যায়। তবে কভিড-১৯ সংক্রমণ পরবর্তী সময়ে চুল উঠতে পারে বলে জানাচ্ছে নতুন গবেষণা। বিশেষত বহুদিন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত থাকলে চুল পড়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা যায়। ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি অব মেডিসিনের সাম্প্রতিক সময়ের সমীক্ষা বলছে, করোনার প্রথম ২৫টি উপসর্গের মধ্যে রয়েছে চুল পড়ে যাওয়া।
কারণ
সাধারণত বংশগতি, অপুষ্টি, দুশ্চিন্তা, অনিদ্রা, শারীরিক রোগ, বিশেষত হরমোনজনিত রোগ, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ইত্যাদি কারণে মাত্রাতিরিক্ত চুল পড়তে পারে। ডেঙ্গু, টাইফয়েড, চিকুনগুনিয়া পরবর্তী এমনকি ভাইরাল ইনফেকশন পরবর্তীতেও চুল পড়ার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। তবে কভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে রোগীদের চুল বেশি পড়ে কী কারণে তার সঠিক কারণ জানা না গেলেও কিছু বিষয়কে দায়ী করা হচ্ছে।
যেমন : ভিটামিন ‘ডি’ লেভেল কমে যাওয়া দেহের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ‘ডি’ লেভেল কমে যাওয়ায় চুল পড়ার সমস্যা হয়। সার্স কোভ-২ ভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রকে বেশি আক্রমণ করলেও আক্রমণকারী ভাইরাসটিকে প্রতিহত করতে গিয়ে সারাক্ষণ দেহের ইমিউন সিস্টেম বা রোগপ্রতিরোধী ব্যবস্থাকে মারাত্মক ক্ষতির মধ্যে ফেলে। রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতার অন্যতম সহচর ভিটামিন ‘ডি’ লেভেল কমে যায়। ভিটামিন ‘ডি’ সঠিক পরিমাণে থাকা চুলের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
চুলের জীবনচক্রের পরিবর্তন
চুলের জীবনচক্রের চার স্তর- যা হলো ক্রমবর্ধমান পর্যায় যা দুই থেকে সাত বছর স্থায়ী হয় এবং চুলের দৈর্ঘ্য নির্ধারণ করে। রূপান্তরপর্ব যা প্রায় ১০ দিন স্থায়ী হয়। বিশ্রামের পর্যায়, যা তিন মাস স্থায়ী হয়। প্রায় ১০ থেকে ১৫ ভাগ চুল এই পর্যায়ে থাকে। পুরনো চুল বিশ্রামে থাকা অবস্থায় নতুন চুল বৃদ্ধির পর্ব শুরু হয়। চতুর্থ স্তরে নতুন চুলের পর্যায়। এই পর্যায়ে পুরনো চুল পড়ে এবং নতুন চুল গজায়। প্রতিদিন প্রায় ৫০ থেকে ১৫০টি চুল কমে যেতে পারে এই পর্যায়ে। করোনা-পরবর্তী সময়ে রোগীদের চুলের চতুর্থ পর্যায়ে চলে যায়। তখন দ্রুত চুল পড়তে থাকে; সে অনুযায়ী গজায় না। বিশেষ করে যাদের মাথায় এমনিতেই চুল কম, তারা বেশি ঝুঁকির মুখে পড়ে।
করণীয়
প্রতিদিন হালকা শারীরিক ব্যায়াম ও মানসিক চাপ কমানো, দুশ্চিন্তামুক্ত ও হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করা
খাদ্যতালিকায় দুধ, ডিমসহ পুষ্টিকর ও আয়রনসমৃদ্ধ খাবার রাখা
দুপুর ১২টার দিকে যতটা সম্ভব কম কাপড়ে শরীর ঢেকে ২০ থেকে ২৫ মিনিট গায়ে রোদ লাগানোর চেষ্টা করুন। এতে ভিটামিন ‘ডি’ লেভেল বজায় থাকতে পারে বা ঘাটতি পুষিয়ে নিতে সাহায্য করে।
প্রতিকার
দ্রুত চুল পড়ার সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে Platelet Rich Plasma TheraPz ev PRP TheraPz, Microneddling TheraPz, Hair Filler, Hair Booster, Growth Factor TheraPz ইত্যাদির মতো আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থা রয়েছে। এ ধরনের চিকিৎসা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন ও কার্যকর ।