কানে কিছু ঢুকে গেলে
ডা. হিমেল ঘোষ | ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০
শিশুরা ছোট কোনো জিনিস নিয়ে খেলার সময় নাক, কান বা মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে ফেলতে পারে। বড়দেরও কটনবাড, মুরগির পালক, ম্যাচের কাঠি ইত্যাদি দিয়ে কারণে কিংবা অকারণে কান খোঁচানোর অভ্যাস রয়েছে। এতে দুর্ঘটনাবশত খোঁচানোর সময় কাঠি ভেঙে বা কটনবাডের অংশ কানে রয়ে যেতে পারে।
কী হতে পারে
কানে কটনবাড বা তুলার অংশ, ম্যাচের কাঠি, পুঁতির দানা, বল বিয়ারিং, পেনসিলের শিস, ছোট রাবার, কাগজ কিংবা ফোমের টুকরো, বোতাম, পাথরের ছোট কুচি, খেলনার টুকরো অংশ, পাখি বা মুরগির পালক, ফলের বীজ, শস্যদানা যেমন ধান, চাল, ফলের বীজ, মুড়ি, চিড়া ইত্যাদি ঢুকলে চিকিৎসকের কাছে যেতে সামান্য দেরি হলেও অসুবিধা নেই। তবে মশা-মাছি, তেলাপোকা, পিঁপড়া বা অন্য কোনো জীব কানে ঢুকে পড়লে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে কানে ব্যথায় অস্বস্তি লাগবে। পাশাপাশি কানে কম শুনতে পাওয়া, মাথা ভার-ভার অনুভূত হওয়া, বিরক্তি এমনকি মানসিক ভীতির মতো উপসর্গও দেখা দিতে পারে। এ ধরনের অনাকাক্সিক্ষত জিনিস দীর্ঘদিন কানের ভেতরে থাকলে বহিঃকর্ণ, টিম্প্যানিক মেমব্রেন কিংবা মধ্যকর্ণে ব্যথা হতে পারে। এ রকম ক্ষেত্রে কান থেকে পুঁজ পড়ে ও দুর্গন্ধ তৈরি হয়।
করণীয়
কানের ভেতরে পোকামাকড় ঢুকলে তা বের হওয়ার জন্য ছটফট করে, কানের পর্দা কামড়ে ধরে ও হাঁটাচলা করে। এমন হলে কানের ছিদ্রের সামনে উজ্জ্বল আলোর টর্চলাইট ধরুন। জীবন্ত পোকামাকড় আলোর প্রতি বেশ সংবেদনশীল। তাই আলোর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পোকামাকড় কান থেকে বের হয়ে আসতে পারে। কোনো ধরনের যন্ত্রের সাহায্যে জীবিত পোকামাকড় বের করলে সমস্যা আরও বেড়ে যায়।
কানে পোকা ঢুকলে অলিভ ওয়েল বা নারিকেল তেলের কয়েক ফোঁটা ধীরে ধীরে কানের মধ্যে দিতে পারেন। এতে পোকা বা পিঁপড়া কানের ভেতরেই মরে যাবে, ফলে ব্যথা বা অস্বস্তিও কমে যাবে।
যদি কোনোভাবেই পোকা বের করা সম্ভব না হয় তাহলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র কিংবা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অথবা বিশেষজ্ঞ নাক-কান-গলা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
বাসায় কানে খোঁচাখুঁচি কিংবা অপচিকিৎসার ফলে কানের পর্দায় ছিদ্র হয়ে ব্যক্তি শ্রবণক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারেন। অল্পবয়সী শিশুরা ভয় পেলে বা অসহযোগিতা করলে জোর না করে হাসপাতালে নিয়ে শিশুকে সম্পূর্ণ অজ্ঞান করে পোকা বের করতে হবে।
জটিলতা
কানে দুর্ঘটনাবশত ঢুকে যাওয়া জিনিস সময়মতো বের না করলে বা অদক্ষ হাতে চেষ্টা করার ফলে নানা জটিলতা তৈরি হতে পারে। যেমন বহিঃকর্ণে আঘাত লাগা এবং তা থেকে রক্ত ক্ষরণ হওয়া, কানের পর্দা ফেটে মধ্যকর্ণের ভেতরে থাকা ছোট অস্থিগুলোতে আঘাত লাগা, সাময়িক ও দীর্ঘমেয়াদে শ্রবণশক্তি হ্রাস পাওয়া ইত্যাদি। মানসম্পন্ন কোম্পানির তৈরি শিশুদের খেলনার প্যাকেটের গায়ে বয়সসীমা দেওয়া থাকে। বয়স্কদের উচিত এসব খেলনা দিয়ে খেলার সময় শিশুকে নজরদারিতে রাখা। এছাড়া যেকোনো কিছু দিয়ে কান খোঁচানো থেকে বড়-ছোট সবারই বিরত থাকা উচিত।
শেয়ার করুন
ডা. হিমেল ঘোষ | ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০

শিশুরা ছোট কোনো জিনিস নিয়ে খেলার সময় নাক, কান বা মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে ফেলতে পারে। বড়দেরও কটনবাড, মুরগির পালক, ম্যাচের কাঠি ইত্যাদি দিয়ে কারণে কিংবা অকারণে কান খোঁচানোর অভ্যাস রয়েছে। এতে দুর্ঘটনাবশত খোঁচানোর সময় কাঠি ভেঙে বা কটনবাডের অংশ কানে রয়ে যেতে পারে।
কী হতে পারে
কানে কটনবাড বা তুলার অংশ, ম্যাচের কাঠি, পুঁতির দানা, বল বিয়ারিং, পেনসিলের শিস, ছোট রাবার, কাগজ কিংবা ফোমের টুকরো, বোতাম, পাথরের ছোট কুচি, খেলনার টুকরো অংশ, পাখি বা মুরগির পালক, ফলের বীজ, শস্যদানা যেমন ধান, চাল, ফলের বীজ, মুড়ি, চিড়া ইত্যাদি ঢুকলে চিকিৎসকের কাছে যেতে সামান্য দেরি হলেও অসুবিধা নেই। তবে মশা-মাছি, তেলাপোকা, পিঁপড়া বা অন্য কোনো জীব কানে ঢুকে পড়লে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে কানে ব্যথায় অস্বস্তি লাগবে। পাশাপাশি কানে কম শুনতে পাওয়া, মাথা ভার-ভার অনুভূত হওয়া, বিরক্তি এমনকি মানসিক ভীতির মতো উপসর্গও দেখা দিতে পারে। এ ধরনের অনাকাক্সিক্ষত জিনিস দীর্ঘদিন কানের ভেতরে থাকলে বহিঃকর্ণ, টিম্প্যানিক মেমব্রেন কিংবা মধ্যকর্ণে ব্যথা হতে পারে। এ রকম ক্ষেত্রে কান থেকে পুঁজ পড়ে ও দুর্গন্ধ তৈরি হয়।
করণীয়
কানের ভেতরে পোকামাকড় ঢুকলে তা বের হওয়ার জন্য ছটফট করে, কানের পর্দা কামড়ে ধরে ও হাঁটাচলা করে। এমন হলে কানের ছিদ্রের সামনে উজ্জ্বল আলোর টর্চলাইট ধরুন। জীবন্ত পোকামাকড় আলোর প্রতি বেশ সংবেদনশীল। তাই আলোর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পোকামাকড় কান থেকে বের হয়ে আসতে পারে। কোনো ধরনের যন্ত্রের সাহায্যে জীবিত পোকামাকড় বের করলে সমস্যা আরও বেড়ে যায়।
কানে পোকা ঢুকলে অলিভ ওয়েল বা নারিকেল তেলের কয়েক ফোঁটা ধীরে ধীরে কানের মধ্যে দিতে পারেন। এতে পোকা বা পিঁপড়া কানের ভেতরেই মরে যাবে, ফলে ব্যথা বা অস্বস্তিও কমে যাবে।
যদি কোনোভাবেই পোকা বের করা সম্ভব না হয় তাহলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র কিংবা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অথবা বিশেষজ্ঞ নাক-কান-গলা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
বাসায় কানে খোঁচাখুঁচি কিংবা অপচিকিৎসার ফলে কানের পর্দায় ছিদ্র হয়ে ব্যক্তি শ্রবণক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারেন। অল্পবয়সী শিশুরা ভয় পেলে বা অসহযোগিতা করলে জোর না করে হাসপাতালে নিয়ে শিশুকে সম্পূর্ণ অজ্ঞান করে পোকা বের করতে হবে।
জটিলতা
কানে দুর্ঘটনাবশত ঢুকে যাওয়া জিনিস সময়মতো বের না করলে বা অদক্ষ হাতে চেষ্টা করার ফলে নানা জটিলতা তৈরি হতে পারে। যেমন বহিঃকর্ণে আঘাত লাগা এবং তা থেকে রক্ত ক্ষরণ হওয়া, কানের পর্দা ফেটে মধ্যকর্ণের ভেতরে থাকা ছোট অস্থিগুলোতে আঘাত লাগা, সাময়িক ও দীর্ঘমেয়াদে শ্রবণশক্তি হ্রাস পাওয়া ইত্যাদি। মানসম্পন্ন কোম্পানির তৈরি শিশুদের খেলনার প্যাকেটের গায়ে বয়সসীমা দেওয়া থাকে। বয়স্কদের উচিত এসব খেলনা দিয়ে খেলার সময় শিশুকে নজরদারিতে রাখা। এছাড়া যেকোনো কিছু দিয়ে কান খোঁচানো থেকে বড়-ছোট সবারই বিরত থাকা উচিত।