ডায়াবেটিস রোগীর ত্বকের যত্ন
ডায়াবেটিস হলে যাপিত জীবনে পরিবর্তন আনতেই হয়। খাদ্যাভ্যাস বদলে ফেলতে হয়। চিনি বা চিনিজাতীয় খাবার বাদ এবং ওজনও নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। অতিরিক্ত ওজন কমাতে হবে। নিয়মিত শরীরচর্চা বা হাঁটার অভ্যাস দরকার। নিজেকে রাখতে হবে সচল, কর্মময়। অতিরিক্ত স্ট্রেস থেকে মুক্ত থাকবে শরীর-মন। ঘুমাতে হবে দৈনিক ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা। ধূমপান বাদ দিতে হবে। নিয়মিত ওষুধ সেবন করে রক্তের চিনির মাত্রা কাক্সিক্ষত সীমার মধ্যে রাখতে হবে। নিয়মিত পরখ করে দেখতে হবে শরীরে কোনো জটিলতা তৈরি হচ্ছে কি না। ডায়েট (খাদ্যাভ্যাস), ডিসিপ্লিন (শৃঙ্খলা) এবং ড্রাগ (ওষুধ) এই তিন ‘ডি’ দিয়ে মোকাবিলা করতে হবে ডায়াবেটিসকে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে ত্বকেও কিন্তু বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আক্রান্ত রোগীদের ত্বকের বাড়তি যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। চোখের পাতায় বা দেহের যেকোনো জায়গায় ফোড়া, ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। নখের গোড়ায় প্রদাহ, দেহের যেকোনো ভাঁজে, কুঁচকিতে ছত্রাকের আক্রমণসহ ত্বকে মারাত্মক চুলকানি দেখা দেয়। রক্তে উচ্চমাত্রায় সুগার ত্বক পানিশূন্য করে ফেলে। এতে ডায়াবেটিস রোগীর ত্বক শুষ্ক, ফেটে যায় ও চুলকানি সৃষ্টি হয়। গলার পেছনে, কুঁচকিতে এ ধরনের কালো, খসখসে আবরণ হয়, যা অ্যাকানথোসিস নেগ্রিকানস নামে পরিচিত। পায়ের সামনের ত্বকে গোলাকৃতি কালো-ছোপ দাগ থাকে। ত্বকের গভীর স্তরে চর্বি ও অন্যান্য স্তর ক্ষয় হতে থাকে। কারও কারও ইনসুলিন দেওয়ার স্থানে ত্বক মোটা, উঁচু বা পাতলা হয়ে যায়। ইনসুলিন অ্যালার্জিও হতে পারে।
লক্ষণ
চোখের পাতার প্রদাহ-ফোড়া, দেহের যেকোনো জায়গায় ফোঁড়া-ফুসকুড়ি, ত্বক ও ত্বকের নিচে প্রদাহ, নখের গোড়ায় প্রদাহ এ-সবই ডায়াবেটিসে বেশি আক্রমণ করে। ছত্রাকের আক্রমণে ত্বকের ভাঁজে, যেমন স্তনের নিচে, কুঁচকি ইত্যাদি স্থানে ফুসকুড়ি-চুলকানি ইত্যাদি হয়। রক্তের উচ্চ শর্করা ত্বককে পানিশূন্য করে দেয়। ফলে ডায়াবেটিস রোগীর ত্বক বেশি শুষ্ক, ত্বক ফেটে যায় ও চুলকানি হয়। অ্যাকানথোসিস নেগ্রিকানস এক ধরনের কালো খসখসে ত্বক আবরণ, যা ডায়াবেটিস ও স্থূল রোগীদের গলার পেছনে, ঘাড়, বাহুমূলে, কুঁচকিতে দেখা যায়। পায়ের সামনের ত্বকে গোলাকৃতি কালো-ছোপ দাগ থাকে। ত্বকের গভীরতর স্তরে চর্বি ও অন্যান্য স্তর ক্ষয় হয়ে ত্বকে ঘা হতে পারে। কারও কারও ইনসুলিন অ্যালার্জি, ইনসুলিন দেওয়ার জায়গায় ত্বক মোটা-উঁচু বা পাতলা হয়ে যায়।
প্রতিকার
ত্বকে কাটা-ছেঁড়া, প্রদাহ, ফুসকুড়ি বা ঘা ইত্যাদি লক্ষ করলেই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কাটলে বা আঘাত পেলে দ্রুত সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এবং অ্যালকোহল বা আয়োডিনযুক্ত কিছু না লাগিয়ে বরং অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম ব্যবহার করুন। বছরে অন্তত দুবার চিকিৎসকের কাছে পা পরীক্ষা করিয়ে নিন। ডায়াবেটিস রোগীদের উপযোগী মোজা-জুতা-স্যান্ডেল ব্যবহার করুন, প্রতিদিন পায়ের যত্ন নিন। নিজে ফুসকুড়ি বা ফোড়া ফাটানোর চেষ্টা করবেন না। ত্বক ভেজা বা আর্দ্র রাখা যাবে না। শীত ভেবে গোসল বা ত্বক ধোয়ার জন্য অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। মৃদু ক্ষারযুক্ত সাবান এবং গোসলের পর আর্দ্রতা রক্ষাকারী লোশন ব্যবহার করুন। আঙুলের ফাঁকে লোশন ব্যবহার করবেন না।
ঘরোয়া যত্ন
ত্বকে কাটা-ছেঁড়া, প্রদাহ, ফুসকুড়ি বা ঘা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কাটলে বা আঘাত পেলে আক্রান্ত জায়গা সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম ব্যবহার জরুরি। পায়ের যত্নে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পা পরীক্ষা করাতে হবে। গোসলে বা ত্বক ধোয়ার জন্য অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার করতে পারবেন না।
শেয়ার করুন

ডায়াবেটিস হলে যাপিত জীবনে পরিবর্তন আনতেই হয়। খাদ্যাভ্যাস বদলে ফেলতে হয়। চিনি বা চিনিজাতীয় খাবার বাদ এবং ওজনও নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। অতিরিক্ত ওজন কমাতে হবে। নিয়মিত শরীরচর্চা বা হাঁটার অভ্যাস দরকার। নিজেকে রাখতে হবে সচল, কর্মময়। অতিরিক্ত স্ট্রেস থেকে মুক্ত থাকবে শরীর-মন। ঘুমাতে হবে দৈনিক ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা। ধূমপান বাদ দিতে হবে। নিয়মিত ওষুধ সেবন করে রক্তের চিনির মাত্রা কাক্সিক্ষত সীমার মধ্যে রাখতে হবে। নিয়মিত পরখ করে দেখতে হবে শরীরে কোনো জটিলতা তৈরি হচ্ছে কি না। ডায়েট (খাদ্যাভ্যাস), ডিসিপ্লিন (শৃঙ্খলা) এবং ড্রাগ (ওষুধ) এই তিন ‘ডি’ দিয়ে মোকাবিলা করতে হবে ডায়াবেটিসকে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে ত্বকেও কিন্তু বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আক্রান্ত রোগীদের ত্বকের বাড়তি যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। চোখের পাতায় বা দেহের যেকোনো জায়গায় ফোড়া, ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। নখের গোড়ায় প্রদাহ, দেহের যেকোনো ভাঁজে, কুঁচকিতে ছত্রাকের আক্রমণসহ ত্বকে মারাত্মক চুলকানি দেখা দেয়। রক্তে উচ্চমাত্রায় সুগার ত্বক পানিশূন্য করে ফেলে। এতে ডায়াবেটিস রোগীর ত্বক শুষ্ক, ফেটে যায় ও চুলকানি সৃষ্টি হয়। গলার পেছনে, কুঁচকিতে এ ধরনের কালো, খসখসে আবরণ হয়, যা অ্যাকানথোসিস নেগ্রিকানস নামে পরিচিত। পায়ের সামনের ত্বকে গোলাকৃতি কালো-ছোপ দাগ থাকে। ত্বকের গভীর স্তরে চর্বি ও অন্যান্য স্তর ক্ষয় হতে থাকে। কারও কারও ইনসুলিন দেওয়ার স্থানে ত্বক মোটা, উঁচু বা পাতলা হয়ে যায়। ইনসুলিন অ্যালার্জিও হতে পারে।
লক্ষণ
চোখের পাতার প্রদাহ-ফোড়া, দেহের যেকোনো জায়গায় ফোঁড়া-ফুসকুড়ি, ত্বক ও ত্বকের নিচে প্রদাহ, নখের গোড়ায় প্রদাহ এ-সবই ডায়াবেটিসে বেশি আক্রমণ করে। ছত্রাকের আক্রমণে ত্বকের ভাঁজে, যেমন স্তনের নিচে, কুঁচকি ইত্যাদি স্থানে ফুসকুড়ি-চুলকানি ইত্যাদি হয়। রক্তের উচ্চ শর্করা ত্বককে পানিশূন্য করে দেয়। ফলে ডায়াবেটিস রোগীর ত্বক বেশি শুষ্ক, ত্বক ফেটে যায় ও চুলকানি হয়। অ্যাকানথোসিস নেগ্রিকানস এক ধরনের কালো খসখসে ত্বক আবরণ, যা ডায়াবেটিস ও স্থূল রোগীদের গলার পেছনে, ঘাড়, বাহুমূলে, কুঁচকিতে দেখা যায়। পায়ের সামনের ত্বকে গোলাকৃতি কালো-ছোপ দাগ থাকে। ত্বকের গভীরতর স্তরে চর্বি ও অন্যান্য স্তর ক্ষয় হয়ে ত্বকে ঘা হতে পারে। কারও কারও ইনসুলিন অ্যালার্জি, ইনসুলিন দেওয়ার জায়গায় ত্বক মোটা-উঁচু বা পাতলা হয়ে যায়।
প্রতিকার
ত্বকে কাটা-ছেঁড়া, প্রদাহ, ফুসকুড়ি বা ঘা ইত্যাদি লক্ষ করলেই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কাটলে বা আঘাত পেলে দ্রুত সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এবং অ্যালকোহল বা আয়োডিনযুক্ত কিছু না লাগিয়ে বরং অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম ব্যবহার করুন। বছরে অন্তত দুবার চিকিৎসকের কাছে পা পরীক্ষা করিয়ে নিন। ডায়াবেটিস রোগীদের উপযোগী মোজা-জুতা-স্যান্ডেল ব্যবহার করুন, প্রতিদিন পায়ের যত্ন নিন। নিজে ফুসকুড়ি বা ফোড়া ফাটানোর চেষ্টা করবেন না। ত্বক ভেজা বা আর্দ্র রাখা যাবে না। শীত ভেবে গোসল বা ত্বক ধোয়ার জন্য অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। মৃদু ক্ষারযুক্ত সাবান এবং গোসলের পর আর্দ্রতা রক্ষাকারী লোশন ব্যবহার করুন। আঙুলের ফাঁকে লোশন ব্যবহার করবেন না।
ঘরোয়া যত্ন
ত্বকে কাটা-ছেঁড়া, প্রদাহ, ফুসকুড়ি বা ঘা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কাটলে বা আঘাত পেলে আক্রান্ত জায়গা সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম ব্যবহার জরুরি। পায়ের যত্নে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পা পরীক্ষা করাতে হবে। গোসলে বা ত্বক ধোয়ার জন্য অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার করতে পারবেন না।