
গুগল নিয়ে আসছে অ্যান্ড্রয়েডচালিত স্মার্টফোন, ট্যাবলেট কম্পিউটারসহ বিভিন্ন যন্ত্রের জন্য বেশ কিছু নতুন সুবিধা। এতে ব্যবহারকারীদের দরকারি অনেক কাজ সহজ হবে। এরই মধ্যে ‘নেয়ারবাই শেয়ার’ নামে সুবিধা হালনাগাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে গুগল। এতে ব্যবহারকারীরা তাদের একাধিক যন্ত্রের মধ্যে বিভিন্ন ফাইল সহজে দেওয়া-নেওয়া করতে পারবেন। নেয়ারবাই শেয়ার চালু রাখলে অ্যান্ড্রয়েড ফোন বা ট্যাবলেট কম্পিউটারে যেকোনো ফাইল স্বয়ংক্রিয় স্থানান্তর করা যাবে। ডিসপ্লে বন্ধ থাকলেও সমস্যা হবে না। গুগল বলছে, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এ সুবিধা সবার জন্য উন্মুক্ত হবে।
বিভিন্ন গুগলসেবা আরও সহজে ব্যবহারের জন্য বেশ কিছু পরিবর্তন আনছে গুগল। এর মধ্যে গুগল ড্রাইভ ও কিপ নতুন করে নকশা করা হচ্ছে। এতে বড় স্ক্রিন বিশেষ করে অ্যান্ড্রয়েড ট্যাব থেকে সহজে গুগলের সেবাগুলো ব্যবহার করা যাবে।
অ্যান্ড্রয়েড সাউন্ড নোটিফিকেশনও হালনাগাদ করা হচ্ছে। এতে ডিভাইসের অ্যাকসেসিবিলিটি সেটিংসে এটি সহজে পাওয়া যাবে। শুধু তাই নয়, যারা গুগল টিভি ব্যবহার করেন, তাদের জন্য বিশেষ কনটেন্ট লাইব্রেরি ব্যবহারের সুযোগ মিলবে। গুগল অ্যাসিস্ট্যান্টের সহযোগিতায় সহজেই এ ফিচার ব্যবহার করা যাবে।
গুগল মিটেও যুক্ত হচ্ছে লাইভ শেয়ারের অভিজ্ঞতা। ফলে অ্যান্ড্রয়েডে চলা স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট কম্পিউটার থেকে গেমসহ অন্যান্য বিষয় সহজে শেয়ার করা যাবে। এতে একসঙ্গে গেম খেলা, একসঙ্গে ১০০ জনের বেশি ইউটিউব কনটেন্ট দেখার মতো সুবিধা থাকবে।
অ্যালার্জি স্বাস্থ্যের একটি সাধারণ সমস্যা। অ্যালার্জির সমস্যায় ভুগে থাকেন অনেকেই। আমরা জানি কিছু কিছু খাবার খেলে অনেকের অ্যালার্জির সমস্যা হয়। কিন্তু এটা কি জানি, এমন কিছু খাবারও আছে যা খেলে উল্টো অ্যালার্জি কমে। আসুন জেনে নিই কোন খাবারগুলো আপনার অ্যালার্জির সমস্যা কমাতে সাহায্য করে আপনাকে এনে দেবে স্বস্তি।
কলা : অ্যালার্জির কারণে শরীরে লাল রঙের ছোট র্যাশ দেখা দিলে অথবা পেটের সমস্যা দেখা দিলে বা অতিরিক্ত অ্যালার্জি হওয়া থেকে বাধা দেয় তাৎক্ষণিক কলা খাওয়া।
লেবু : লেবু হলো অন্যতম সাইট্রাস-জাতীয় ফল, যা অ্যালার্জির ক্ষেত্রে দারুণ কাজ করে থাকে।
শসা ও গাজরের রস : কোনো খাবার খাওয়ার পরে যদি হুট করেই শরীরে অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দেয়, তবে শসা ও গাজরের রস একসঙ্গে মিশিয়ে খেয়ে ফেললে খুব দ্রুত কাজে দেবে।
আদা ও আদা চা : আদা গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল ও অ্যালার্জির সমস্যার ক্ষেত্রে খুব ভালো কাজে দেয়। প্রদাহবিরোধী ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টমূলক উপাদান আদাতে থাকায় বমিভাব, মাথা ঘোরানো, হজমের সমস্যার এমনকি ডায়রিয়ার ক্ষেত্রেও খুব কাজে দেয় আদা।
ক্যাস্টর অয়েল : অ্যালার্জির সমস্যা থেকে দূরে থাকতে চাইলে প্রতিদিন সকালে এক কাপ পরিমাণ পানিতে ৫-১০ ফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে খেয়ে ফেলুন।
গ্রিন-টি : গ্রিন-টি শুধু ওজন কমাতেই নয় অ্যালার্জির সমস্যা কমাতেও সাহায্য করে থাকে।
ভারতের দক্ষিণের রাজ্য কর্ণাটকের পশ্চিম পর্বতমালার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বনভূমি। এই বনভূমি রক্ষার জন্য মাইলের পর মাইল হেঁটে পাড়ি দিয়েছেন তিনি। গাছ লাগানো ও প্রতিপালনে কেটেছে তার ৭ দশকেরও বেশি সময়। বিরল জাতের বীজ নিয়ে কথা বললে জ¦লে ওঠে তার চোখ। মৃত্যুর পর একটি বড় গাছ হয়ে পুনর্জন্ম পেতে চান যিনি, তিনি ‘গাছের দেবী’ তুলসী গোবিন্দ গৌড়া। লিখেছেন নাসরিন শওকত
তুলসী গোবিন্দ গৌড়া ভারতের একজন পরিবেশবিদ। কর্ণাটক রাজ্যের উত্তরা কন্নড় জেলার আনকোলা তালুকের হোনালি গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয় আদিবাসী হালাক্কি সম্প্রদায়ের সদস্য তিনি। বন-সংরক্ষণের কাজে জীবন উৎসর্গ করেছেন। গাছ লাগিয়ে ও তার প্রতিপালন করে ৮০ বছরের জীবনের বেশির ভাগ সময় কাটিয়েছেন এই প্রকৃতিপ্রেমী। নিজের হাতে ৩০ হাজারেরও বেশি গাছ লাগিয়েছেন। তিনি পরিবেশের উন্নয়নে অবদান রাখায় ভারত সরকার ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পেয়েছেন সম্মাননা। তুলসী গৌড়াকে ২০২১ সালে ভারত সরকার চতুর্থ সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মাননা পদ্মশ্রী প্রদান করে। বিশ্বের প্রতিটি প্রজাতির ‘মা’ গাছ সম্পর্কে অগাধ জ্ঞান রয়েছে তার। তাই তাকে ‘বনের এনসাইক্লোপিডিয়া’ বলা হয়ে থাকে। ৮০ বছর পেরিয়ে এসেও তরুণ সম্প্রদায়কে বন-সংরক্ষণের কাজে উদ্বুদ্ধ করে চলেছেন এই ‘গাছের দেবী’।
হালাক্কি ভোক্কালিগা সম্প্রদায়
ভারতের দক্ষিণের রাজ্য কর্ণাটক। এই রাজ্যেই আদিবাসী হালাক্কি ভোক্কালিগা সম্প্রদায়ের বাস। ১ লাখ ৮০ হাজার হালাক্কি আদিবাসী রয়েছে রাজ্যটিতে। যাদের নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠী হিসেবে নির্ধারিত কোনো মর্যাদা দেওয়া হয়নি। ৮০ বছর বয়সী তুলসী গৌড়া হালাক্কি সম্প্রদায়ের সদস্য। কয়েক শতক ধরে কর্ণাটকের পশ্চিম পর্বতমালার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বনভূমির বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে রেখেছে এই সম্প্রদায়। ২০০৬ সাল থেকে এই বনভূমির অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন করে আসছে তারা। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, ভারতে ৭০০ বা তারও বেশি নৃ-তাত্ত্বিক বা আদিবাসী জনগোষ্ঠী রয়েছে। যার জনসংখ্যা ১ কোটি ৪০ লাখ (১০৪ মিলিয়ন)। এই গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ৬০০টিরও বেশি সম্প্রদায় তফসিলি জাতিভুক্ত। অর্থাৎ তারা সরকারি কিছু সুবিধা পেয়ে থাকে। যেমন : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করার পাশাপাশি সরকারি চাকরিও পেয়ে থাকেন।
কর্ণাটক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শ্রীধর গৌড়া। যিনি কয়েক দশক ধরে হালাক্কি সম্প্রদায়ের ওপর পড়াশোনা করেছেন। এই অঞ্চলে সম্প্রদায়টির প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে জানিয়ে শ্রীধর গৌড়া বলেন, হালাক্কি-ভোক্কালিগা সম্প্রদায়ের মধ্যে দারিদ্র্যের হার প্রায় ৯৫ শতাংশ। যার মধ্যে মাত্র ১৫ শতাংশ যেকোনো ধরনের শিক্ষা শেষ করতে পেরেছে। রাজ্য হিসেবেও কর্ণাটক তেমন উন্নত নয়। এই রাজ্যের দাভানাগেরে জেলার হোনালি গ্রামে বাস করেন তুলসী গৌড়া। কর্ণাটকের বৃহত্তম জেলাগুলোর একটি দাভানাগেরে। তার পরও এর রাস্তাগুলো কাঁচা, স্কুলগুলোও থাকে প্রায়ই বন্ধ। এমনকি সেখানে জরুরি কোনো হাসপাতালও নেই। হাসপাতালে পৌঁছানোর চেষ্টা করতে গিয়ে অনেকে রাস্তায়ই মারা যান।
ভারত তখন ব্রিটিশ শাসনের অধীনে ছিল। সে সময় জাহাজ তৈরি ও রেলপথ স্থাপনের জন্য পাহাড়ি একটি বিশাল বন উজাড় করতে অভিযান পরিচালনা করেছিল উপনিবেশকারীরা। তখন উত্তরা কন্নড় জেলার বনভূমির বেশির ভাগ অংশ নিশ্চিহ্ন করেছিল তারা। এই বনভূমি অঞ্চলেই বাস করেন তুলসী । ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে ভারত। এরপর থেকেই দেশটির নেতারা বড় আকারের শিল্পায়ন ও নগরায়ণের জন্য বনাঞ্চলকে শোষণ করতে থাকে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, ১৯৫১ থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যে প্রায় ৪ দশমিক ২ মিলিয়ন হেক্টর জমি বা প্রায় ১০ দশমিক ৪ মিলিয়ন একর উন্নয়নমূলক প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়।
তুলসী গৌড়া
১৯৪৪ সাল। হোনালি গ্রামের আদিবাসী হালাক্কি সম্প্রদায়ের দরিদ্র এক পরিবারে জন্ম নেন তুলসী গৌড়া। কর্ণাটকে এর উত্তরা কন্নড় জেলার গ্রাম ও শহরের মাঝামাঝি হোনালি গ্রাম অবস্থিত।
তুলসীর যখন ২ বছর বয়স, তখন তার বাবা মারা যান। এ কারণেই ওই শিশু বয়সেই তাকে তার মায়ের সঙ্গে কাজ করতে হয়েছিল। তখন থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত স্থানীয় একটি নার্সারিতে দিনমজুরের ভিত্তিতে কাজ করতে হতো তাকে। তাই প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া করার কোনো সুযোগ পাননি তিনি। এমনকি পড়তেও পারেন না তুলসী। যখন তুলসীর কিশোরী বয়স, তখন গোভিন্দ গৌড়া নামে এক বয়স্ক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে হয় তার। বিয়ের ওই সময়ে নিজের বয়সও জানতেন না তিনি। তবে ধারণা করেছিলেন, তখন সম্ভবত ১০ থেকে ১২ বছর বয়স হবে তার। তুলসী ৫০ বছর বয়সে তার স্বামীকে হারান।
কর্ণাটকের বন বিভাগের নার্সারিতে কাজ করতেন তুলসী। শুরুতে তার দায়িত্ব ছিল যে বিষয়গুলোকে চারা হিসেবে রোপণ করা হবে সেগুলোর যত্ন নেওয়া, চারা রোপণ করা ও সেগুলো বড় হয়ে বেড়ে ওঠা পর্যন্ত দেখভাল করা। তখন তিনি আগাসুর বীজতলার নার্সারিতে কাজ করতেন। সেখানেই মায়ের সঙ্গে দৈনিক মজুরি কর্মী হিসেবে ৩৫ বছর ধরে কাজ করে গেছেন। তিনি ততক্ষণ পর্যন্ত তার কাজ চালিয়ে গেছেন যতক্ষণ পর্যন্ত না তাকে বন বিভাগে একটি স্থায়ী পদ দেওয়া হয়। বন সংরক্ষণ ও উদ্ভিদবিদ্যা সম্পর্কে তার অগাধ জ্ঞানের স্বীকৃতি হিসেবে তাকে ওই স্থায়ী পদে চাকরি দেওয়া হয়। তার যখন ৭০ বছর বয়স তখন বন বিভাগের চাকরি থেকে অবসর নেন তুলসী। এর আগে ১৫ বছর ধরে নার্সারির স্থায়ী পদে কাজ করেন তিনি। নার্সারিতে কাজ করার ওই সময় জমির ঐতিহ্যগত জ্ঞান ব্যবহার করে বন বিভাগের বনায়নে সরাসরি অবদান রেখেছেন। তুলসী তখন চারাও রোপণ করেছেন। পাশাপাশি শিকারি ও বনের আগুন থেকে বন্যপ্রাণীদের সুরক্ষায়ও কাজ করেছেন তিনি। এখনো বন বিভাগের নার্সারিগুলোর তত্ত্বাবধান করেন।
যেভাবে হলেন গাছের দেবী
মাত্র ১২ বছর বয়স থেকেই গাছ লাগানো শুরু করেছিলেন তুলসী। পরে বন বিভাগে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ শুরু করেন। তখন বন সংরক্ষণের প্রতি তার ঝোঁক ও মমতা মুগ্ধ করেছিল বন বিভাগের কর্মকর্তাদের। সে কারণেই পরে ওই বিভাগেই স্থায়ী চাকরি পেয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি তার মায়ের নার্সারিতেও কাজ করতেন তিনি। কর্ণাটকে তুলসী নিজের হাতে ৩০ হাজারেরও বেশি গাছ লাগিয়েছেন বলা হয়ে থাকে। তবে ধারণা করা হয়ে থাকে, রাজ্যটিতে তিনি আনুমানিক ১ লাখের মতো গাছ লাগিয়েছেন। সেগুলোকে পরম যত্নে লালন করেছেন দীর্ঘদিন।
তুলসী গৌড়া কর্নাটক বন বিভাগে সরকারি নার্সারিতে ৪৮ বছর কাজ করেছেন। পরে ১৯৯৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর নিয়েছেন। তার পরের ১৫ বছর তিনি পূর্ণকালীন উপদেষ্টা হিসেবে বন বিভাগের হয়ে কাজ করে চলেছেন। এ সময়ে স্থানীয় গাছ ও বন সম্পর্কে তার অগাধ জ্ঞান সবার সঙ্গে ভাগ করে চলেছেন তিনি। ভারতের সরকারি সংরক্ষণ নীতি পরিবর্তিত হয়েছিল ১৯৮৩ সালে। ওই বছর ভারতীয় শীর্ষ বন কর্মকর্তা আদুগোদি নানজাপ্পা ইয়েল্লাপ্পা রেড্ডি কর্নাটকের সরকারি নার্সারিতে দায়িত্ব নিয়ে আসেন। ওই অঞ্চলের বিশাল বনভূমি এলাকা পুনরুদ্ধারের দুঃসাধ্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাকে। প্রথম কাজের দিনে নার্সারিতে তুলসী গৌড়ার সঙ্গে দেখা হয় তার। তখন তুলসী মাটি থেকে ছোট ছোট পাথর আলাদা করছিলেন এবং যতœ সহকারে বীজ ও চারা লাগাচ্ছিলেন। ৮৬ বছর বয়সী নানজাপ্পা রেড্ডি বর্তমানে অবসরে গেছেন। বন ও গাছ নিয়ে তুলসীর অনন্য জ্ঞান ও পান্ডিত্য সম্পর্কে রেড্ডি বলেন, ‘তার হাতে কিছু জাদু ছিল। দেশীয় প্রজাতির গাছ শনাক্ত করা ও যত্ন সহকারে সেগুলো সংগ্রহ করা এবং লালন-পালনের বিষয়ে তার জ্ঞান কোনো বইয়ে পাওয়া যাবে না। তুলসী তার দলের গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টাও হয়েছিলেন। তার সঙ্গে কাজ করা স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে ‘গাছের দেবী’ বলে ডাকতে শুরু করেছিল।’
গাছ ও বন সম্পর্কে জ্ঞান
পরিবেশবিদদের কাছে ‘বনের এনসাইক্লোপিডিয়া’ নামে পরিচিত তুলসী গৌড়া। আর নিজের হালাক্কি সম্প্রদায়ের কাছে তিনি ‘গাছের দেবী’। কারণ বন ও গাছের গুণাগুণ থেকে শুরু করে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পর্যন্ত সবকিছুই নখদর্পণে তার। বিশ্বের যে প্রান্তেরই বন বা গাছ হোক না কেন, ওই প্রজাতির মূল বা ‘মা’ গাছকে শনাক্ত করতে পারেন তিনি। ‘মা’ গাছেরা মূলত তার বয়স ও উচ্চতার কারণে অনন্য হয়। দীর্ঘ প্রায় ৮০ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে এ ধরনের গাছের আদি অবস্থা সম্পর্কে বলে দিতে পারেন তুলসী। ‘মা’ গাছদের শিকড় মাটির অনেক গভীরে থাকে বলে বনের সঙ্গে দীর্ঘ সম্পর্কে জুড়ে থাকে তারা। প্রাকৃতিকভাবে বীজ ছড়িয়ে ও চারা বুনে ‘মা’ গাছ নাইট্রোজেন ও পুষ্টির আদান-প্রদান করে থাকে। বীজ সংগ্রহের ক্ষেত্রেও বিশেষজ্ঞ তুলসী। ‘মা’ গাছ থেকে বীজকে আহরণ করে বিভিন্ন প্রজাতির চারাকে নতুন করে তৈরি ও বড় করে তোলার ক্ষেত্রে তার বিশেষ দক্ষতা রয়েছে। এটি একটি কঠিন প্রক্রিয়া। কারণ চারাগুলোর বেঁচে থাকা নিশ্চিত করে ‘মা’ গাছ থেকে অঙ্কুরোদগমের শীর্ষ সময়ে বীজ সংগ্রহ করতে হয়। তবে তুলসী কীভাবে বনের গাছ ও চারা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করেছেন তা ব্যাখ্যা করতে পারেন না তিনি। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘তিনি বনের ভাষা বলতে পারেন।’ তার সম্প্রদায় হালাক্কি ভোক্কালিগার ঐতিহ্য অনুসারে, মাটির যতœ নেওয়া ও মাতৃতন্ত্র প্রকৃতির সঙ্গে যুক্ত।
চাকরি ও সম্মাননা
কর্ণাটক বন বিভাগে ৬০ বছরেরও বেশি সময় কাজ করে কাটিয়েছেন তুলসী। এর মধ্যে বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে একটি কমিউনিটি সংরক্ষণাগার, পাঁচটি বাঘ সংরক্ষণাগার, পনেরোটি সংরক্ষিত বন ও ত্রিশটি বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য গড়ে উঠেছিল। এই সংরক্ষণ কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে প্রকৃতির সঙ্গে স্থানীয় সম্প্রদায় ও গ্রামগুলোর পুনঃসংযোগ স্থাপন করা হয়। যার লক্ষ্যে ছিল রাজ্যটির এক-তৃতীয়াংশ এলাকা বন বা গাছ দিয়ে ছেয়ে ফেলা।
তুলসী জাতীয় সেলিব্রিটি হয়ে ওঠার আগে বন সংরক্ষণে অনন্য অবদান রাখার জন্য এক ডজনেরও বেশি পুরস্কার পান।
১৯৮৬ সালে তুলসী গৌড়া ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী বৃক্ষমিত্র পুরস্কার পান, যা আইপিভিএম পুরস্কার নামে পরিচিত। বনায়ন ও বর্জ্যভূমি উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে স্বীকৃতি দিতে আইপিভিএম এই পুরস্কার দিয়ে থাকে। এর ১৩ বছর পর ১৯৯৯ সালে ‘বনের এই দেবী’ ‘কর্ণাটক রাজ্যোৎসব’ পুরস্কার’ পান। কর্ণাটকের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এই বেসামরিক সম্মাননা রাজ্যের ষাটোর্ধ্ব বয়সী বিশিষ্ট নাগরিকদের দেওয়া হয়।
পরে ২০২১ সালের ৮ নভেম্বর ভারত সরকার তুলসী গৌড়াকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করে। সামাজিক উন্নয়নে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই সম্মাননা পান তিনি। দেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক নাগরিক সম্মাননা পদ্মশ্রী পাওয়ার পর ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের ব্যাপক মনোযোগ কাড়েন তুলসী। পদ্মশ্রী মঞ্চে সেদিন তিনি ঐতিহ্যবাহী আদিবাসী পোশাক ও খালি পায়ে উঠে যান। পরনে ছিল তার হাতে বোনা ঐতিহ্যবাহী পিঠখোলা শাড়ি ও গলায় সাত পরতের পুঁতির মালা। পরিবেশ সুরক্ষার কাজ করা মহান এই পরিবেশবিদের হাতে সেদিন পুরস্কার তুলে দেন সাবেক রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
আজকাল গ্রামবাসী যখনই তাকে দেখেন, তখন তার সামনে মাথা নত করেন তারা। শিশুরা প্রায়ই তার সঙ্গে সেলফি তোলে। স্কুলের বাসভর্তি শিক্ষার্থীরাও তুলসীর সঙ্গে দেখা করতে তার বাড়িতে চলে আসে। জাতীয় পুরস্কার পদ্মশ্রী পাওয়ার পর সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তুলসী বলেছিলেন, তিনি পদ্মশ্রী পেয়ে আনন্দিত হলেও ‘বন ও গাছকে বেশি মূল্য দেন’।
উত্তরাধিকার
বন সংরক্ষণে তুলসীর অতুলনীয় অবদান নিজ সম্প্রদায়ের সদস্যদের মধ্যে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। শৈশবেই বনের কাটা গাছের অংশে নতুন গাছ লাগানোর কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে সেই শিশু বয়স থেকেই স্থানীয় বন উজাড় রোধ করায় অবদান রাখতে থাকেন। তখন পরিবারের জন্য কাঠ সংগ্রহ করতে দিনভর বনে বনে ঘুরে বেড়াতেন। তার মা তাকে শিখিয়েছিলেন বড় ও স্বাস্থ্যকর গাছের বীজ দিয়ে কীভাবে ভালো গাছের পুনর্জন্ম হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা ও বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, তুলসীর যখন কিশোর বয়স, তখন তিনি তার বাড়ির পেছনের ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি অংশে গাছ লাগিয়ে গভীর বনে রূপ দিয়েছিলেন। তুলসীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা রুকমানি বলেন, ‘শৈশবকাল থেকেই তিনি গাছের সঙ্গে এমনভাবে কথা বলতেন, দেখে মনে হতো যেন একজন মা তার শিশুসন্তানদের সঙ্গে কথা বলছেন।’
উত্তর কন্নড় জেলার হালাক্কি উপজাতির কল্যাণে কাজ করেন নাগরাজা গৌড়া। নিজের সম্প্রদায়ের তুলসী গৌড়া জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখায় গর্ব করে তিনি বলেন, ‘বন ও ঔষধি গাছ সম্পর্কে অসামান্য জ্ঞান রয়েছে তার। যা এখনো পর্যন্ত কেউ নথিভুক্ত করেনি। তিনি একজন অন্তর্মুখী মানুষ। নিজের মতো থাকতেই ভালোবাসেন। তাই তার কাজ না দেখলে কারও পক্ষেই তার অবদান বোঝা সহজ নয়।’ এদিকে হালাক্কি সম্প্রদায়ের জন্য তুলসীর দীর্ঘদিনের প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়েল্লাপ্পা রেড্ডি বলেন, তুলসী গৌড়া ৩০০টিরও বেশি ঔষধি গাছ লাগিয়েছেন ও চিহ্নিত করেছেন। যেগুলো তাদের গ্রামে অসুস্থতার চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।
হোনালি গ্রামে প্রায় দেড়শ’ বাসিন্দার বাস। নিজের গ্রামের নারীদের অধিকার রক্ষায়ও কাজ করছেন তিনি। তার পরিবারে ছেলে ও নাতি-নাতনি মিলিয়ে ১০ সদস্য রয়েছে। ছেলে ও নাতিরা ছোট্ট একখন্ড- জমি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে। তারা জ্বালানির জন্য বনের কাঠ ও ঔষধি গাছের জন্য বনের ওপর নির্ভরশীল। তার হালাক্কি সম্প্রদায় ঔষধি গাছের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। পরিবেশের রক্ষণাবেক্ষণে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করা নিভৃতচারী এই পরিবেশবিদ মৃত্যুর সময় অনেক ডালপালাওয়ালা একটি বড় গাছের নিচে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার ইচ্ছে রাখেন। বর্তমানে বন বিভাগের নার্সারিগুলোর তত্ত্বাবধান করে সময় কাটছে তার ।
নতুন একটি সাবান বাজারের জনপ্রিয় সব ব্র্যান্ডকে পেছনে ফেলে দিয়েছিল। সব ব্র্যান্ডের সাবানের বিক্রি নেমে গিয়েছিল প্রায় শূন্যের কোঠায়। নতুন সেই সাবান এক নম্বরে উঠে এলো শুধু একটি ট্যাগলাইন বা স্লোগানের বদৌলতে। সেই স্লোগানটি ছিল ‘শতভাগ হালাল সাবান’। গোসলে সাবান লাগে, তাতে খাওয়ার বিষয় নেই, কিন্তু বাঙালিকে হালাল সাবানে গোসল করার কথা মাথায় ঢুকিয়ে সাবানের বাজার দখল করে ফেলার এ অভিনব মার্কেটিং আইডিয়া এসেছিল যারা মাথা থেকে, তিনি সৈয়দ আলমগীর। সেই আলোচিত বিপণন-ঘটনা এখন পড়ানো হয় বিপণন শিক্ষার্থীদের, বিখ্যাত বিপণন লেখক ফিলিপ কটলার তার বইয়ে ব্যবহার করেছেন সৈয়দ আলমগীরের এই ‘হালাল-সাবান কেইস’।
বাংলাদেশের বিপণন জগতের এই সুপারস্টার সৈয়দ আলমগীর তার বিপণন জীবনে শুরু করেছেন এক নতুন যাত্রা। দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের (এমজিআই) ভোগ্যপণ্য (এফএমসিজি) বিভাগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে যোগ দিয়েছেন তিনি। এর আগে তিনি আকিজ ভেঞ্চার্সের গ্রুপ ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৯ সালে চ্যানেল আই এবং বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম তাকে ‘মার্কেটিং সুপারস্টার’ খেতাব দেয়। দেশ-বিদেশের বহু পুরস্কার পাওয়া এই বিপণন ব্যক্তিত্ব ইউনিসেফের প্রাইভেট সেক্টর অ্যাডভাইজরি বোর্ডেরও সদস্য।
সৈয়দ আলমগীরকে নিয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ মার্কেটিং অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক মিজানুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দীর্ঘসময় ধরে বিপণন অঙ্গনে অসামান্য সব আইডিয়া নির্ভর কাজ করে যাচ্ছেন আলমগীর। পরবর্তী প্রজন্মের হাজার হাজার বিপণনকর্মী তৈরি করেছেন তিনি, যারা দেশের বিপণন অঙ্গনের চেহারাই বদলে দিচ্ছে। সৈয়দ আলমগীর একই সঙ্গে নানা জায়গায় মার্কেটিং বিষয়ে শিক্ষকতাও করেছেন। ফলে একই সঙ্গে একাডেমিক এবং প্রায়োগিক দুই জায়গায় তিনি দক্ষতার সঙ্গে অসামান্য অবদান রাখছেন।’
নবযাত্রায় দেশ রূপান্তরের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে বিপণন গুরুর সঙ্গে আলাপ হয় এই প্রতিবেদকের। আগে থেকে ঠিক করে রাখা সময়ে মেঘনা গ্রুপের ফ্রেশ ভবনে গিয়ে দেখা গেল, শুভেচ্ছার ফুলে ভরা ঘরে একটি কলি হয়ে বসে আছেন সৈয়দ আলমগীর।
চা খেতে খেতে জানালেন, খুবই সচেতনভাবে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ) থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর (এমবিএ) শেষ করে বিপণন পেশায় এসেছিলেন তিনি। বলছিলেন, সব সময় শিখতে উন্মুখ তিনি, এমনকি এখনো সহকর্মীদের থেকে শেখেন।
সফল এই বিপণন ব্যবস্থাপক বলছিলেন, ‘বিপণনে সফল হতে হলে সব সময় শিখতে হবে, চিঠি কীভাবে ভাঁজ করবেন, সেটারও একটা রীতি আমাকে শিখিয়েছে “মে অ্যান্ড বেকার”। বছরের কোন সময় টাই পরতে হবে, সেটাও শেখার ব্যাপার আছে। সবচেয়ে বেশি শিখতে হবে শৃঙ্খলা আর সময়ানুবর্তিতা। আর তার সঙ্গে সঙ্গে লাগবে নতুন ধারণা, নিউ আইডিয়া।’
সৈয়দ আলমগীরের আইডিয়ার বিশ্বজয়েরই উদাহরণ হালাল সাবানের ঘটনা। এর প্রভাব এখন কীভাবে দেখেন জানতে চাইলে বলছিলেন, ‘হালাল সাবানের ক্যাম্পেইন শুরু করার কিছুদিনের মধ্যেই আমরা খেয়াল করেছি দেশে ইউনিলিভারের লাক্সসহ প্রায় সব সাবানের বিক্রি অদ্ভুতভাবে কমে গেছে। সাবানের মার্কেট শেয়ারের অধিকাংশটাই দখল করে ফেলেছে অ্যারোমেটিক হালাল সাবান। ইউনিলিভারের শেয়ার প্রায় ধসে গিয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, মার্কেট ডিজাস্টারের জন্য ইউনিলিভারের উচ্চ ও মধ্যপর্যায়ের অধিকাংশ কর্মকর্তার চাকরি চলে যায়। পরে ভারত থেকে উচ্চপর্যায়ের ম্যানেজমেন্ট কমিটি আসে পরস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য। তাদেরও বেশ কয়েক বছর লেগে যায় এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে।’
এই সাফল্যের পাশাপাশি সৈয়দ আলমগীর বলছিলেন, ‘আমি যেসব প্রতিষ্ঠানেই কাজ করেছি তাদের আধুনিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি। যমুনায় না গেলে পেগাসাস কেডস ও শতভাগ হালাল সাবান আমি করতে পারতাম না। এসিআইয়ে আসা খুব ভালো সিদ্ধান্ত ছিল। এর কনজ্যুমার ব্র্যান্ডস বিভাগ খুব ছোট ছিল। এখন অনেক বড় হয়েছে। এখানে এসে আমি লবণের দেশসেরা ব্র্যান্ডটি তৈরি করেছি। জার্মানিতে একটি বাসায় গিয়ে দেখলাম, লবণ ধবধবে সাদা ও ঝরঝরা। সেখান থেকে মাথায় এলো, বাংলাদেশের লবণ কেন ঝরঝরা নয়। দেশে এসে বিষয়টি নিয়ে এসিআইয়ের চেয়ারম্যান এম আনিস উদ দৌলার সঙ্গে আলাপ করলাম। এরপর এসিআই আনল ধবধবে সাদা ও মিহিদানার ঝরঝরে লবণ। প্রক্রিয়াজাত করতে খরচ বেশি বলে দাম একটু বেশি ধরতে হলো। তাই বাজার পাওয়া কঠিন হলো। লবণের স্লোগান দিলাম, “মেধা বিকাশে সহায়তা করে”। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘কেডসের একটি তুমুল জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ছিল পেগাসাস। বাংলাদেশে কেডসের ব্র্যান্ড আমার হাতেই তৈরি।’
নতুন যাত্রায় লক্ষ্য কী জানতে চাইলে সৈয়দ আলমগীর বললেন, মেঘনার তো প্রচুর পণ্য। আমি চাইব এ দেশের মানুষ ঘরে ঘরে মেঘনার পণ্য ব্যবহার করুক। সেটাই আপাতত লক্ষ্য।’
সফল বিপণন কর্মী হতে হলে কী করতে হবে, আগ্রহীরা জানতে চাইলে কী বলবেন? জবাবে সৈয়দ আলমগীর বলেন, ‘তরুণরা যখন যে কাজটি করবে, সেটি মনোযোগ দিয়ে করতে হবে। পড়াশোনার সময় পড়াশোনা। চাকরিতে যোগ দিয়ে নিজের কাজটি। নো শর্টকাটস। আর আরেকটি বিষয় হলো, মানুষকে জানতে হবে। ক্রেতার সম্পর্কে না জানলে ভালো ব্যবস্থাপক হওয়া যায় না। আকাক্সক্ষাটাও একটু কমিয়ে রাখতে হবে। নিজের কাজ দক্ষতার সঙ্গে করলে সাফল্য আসবেই। মানুষ পারে না এমন কিছুই নেই। শুধু চেষ্টা আর সঠিক স্ট্র্যাটেজি (কৌশল) দরকার।’
প্রচণ্ড নিয়মানুবর্তী সৈয়দ আলমগীর এরপর দেখালেন অপেক্ষা করে আছে অনেকে দরজার বাইরে, দীর্ঘসময় নিয়ে আলাপ করবেন কথা দিলেন, ঈদসংখ্যার বিশেষ সাক্ষাৎকারের জন্য।
ধন্যবাদ দিয়ে চলে আসতে আসতেও মাথায় ঘুরছিল সৈয়দ আলমগীর আর তার কথা- মানুষ পারে না এমন কিছু নেই। নো শর্টকাটস টু সাকসেস।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের এক নেতাকে রড দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটানোর অভিযোগে পাঁচ নেতাকর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
বহিষ্কৃতরা হলেন আইন ও বিচার বিভাগের ইমরুল হাসান অমি, বাংলা বিভাগের আহমেদ গালিব, দর্শন বিভাগের কাইয়ূম হাসান ও আরিফুল ইসলাম এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের তানভিরুল ইসলাম। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং মীর মশাররফ হোসেন হলে থাকেন।
এদের মধ্যে অমি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের উপ-আইনবিষয়ক সম্পাদক, গালিব ও কাইয়ূম সহসম্পাদক, আরিফুল ইসলাম কার্যকরী সদস্য এবং তানভিরুল কর্মী বলে পরিচিত। বহিষ্কৃতরা হলে অবস্থান করতে পারবে না বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা সভা শেষে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলামকে রড দিয়ে পেটানো হয়। আহত সাইফুলকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
সাইফুলের মাথায় তিনটি সেলাই দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডিউটি ম্যানেজার পলাশ চন্দ্র দাশ।
ভুক্তভোগী সাইফুল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি এবং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, এ মারধরের ঘটনার পাশাপাশি গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন, প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের সঙ্গে অসদাচরণ এবং সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ কমিটি গত রোববার (১৯ মার্চ) সাভারের একটি রেস্টুরেন্টে বসাকে কেন্দ্র করে মীর মশাররফ হোসেন হল ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের ছাত্রলীগের মধ্যে পাল্টাপাল্টি দুটি মারধরের ঘটনারও তদন্ত করবে।
তদন্ত কমিটির প্রধান হলেন ১৯ নম্বর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শফি মুহাম্মদ তারেক। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন আলবেরুনী হলের প্রাধ্যক্ষ সিকদার মোহাম্মদ জুলকারনাইন, শহীদ রফিক-জব্বার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শাহেদ রানা, জাহানারা ইমাম হলের প্রাধ্যক্ষ মোরশেদা বেগম এবং সদস্যসচিব ডেপুটি রেজিস্ট্রার মাহতাব উজ জাহিদ।
শৃঙ্খলা কমিটির সভা শেষে রাত ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান সাংবাদিকদের বলেন, মারধর এবং সাম্প্রতিক ঘটনা বিবেচনায় চিহ্নিত পাঁচজনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলি প্রসঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ‘সততার বুলি’ আওড়ান। অনলাইন প্রক্রিয়ার বাইরে কোনো বদলি হয় না এ কথাই জোর দিয়ে বলেন তারা।
দেশ রূপান্তরের অনুসন্ধানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বদলির বিষয়ে জানা গেছে ভয়ংকর তথ্য। ২০২০ সালের মার্চ মাসের পর অনলাইন-বদলির সুযোগ না থাকলেও, টাকা হলেই বদলি হওয়া যায়। আগের কোনো তারিখে বদলির অনুমোদন দেখিয়ে জারি করা হচ্ছে আদেশ। এসব আদেশ অবশ্য ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত হয় না। নিয়মিত রাজধানীসহ সারা দেশে শিক্ষক বদলি করা হচ্ছে। তারা যোগদানও করেছেন। অনলাইন প্রক্রিয়ার বাইরেই এসব হচ্ছে।
গত তিন মাসে অনলাইন-ছাড়াই শতাধিক শিক্ষক বদলি হয়েছেন। এমন আটটি বদলির আদেশের কপি দেশ রূপান্তরের হাতে রয়েছে। কয়েকজনের যোগদানপত্রও দেশ রূপান্তরের কাছে আছে। বদলির এসব আদেশের বেশিরভাগ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি অ্যান্ড অপারেশন) মনীষ চাকমা স্বাক্ষরিত। কোনো কারণে তার ছুটিতে থাকার সময় দায়িত্বে থাকা পরিচালক মো. হামিদুল হক স্বাক্ষরিত কিছু আদেশও রয়েছে।
যেহেতু অনলাইন ছাড়া শিক্ষক বদলি বন্ধ, তাই আগের কোনো তারিখে বদলির অনুমোদন দেখিয়ে এখন শুধু আদেশ জারি করা হচ্ছে। বদলির আদেশ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে দেওয়ার নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। গত তিন মাসের কোনো বদলির আদেশ ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়নি। যারা বদলি হচ্ছেন তারা সশরীরে অধিদপ্তরে এসে আদেশপত্র নিয়ে যাচ্ছেন। সরাসরি বদলির আদেশ জারির বিষয়টি এখনো প্রক্রিয়াধীন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমার কাছেও কিছু আদেশের কপি এসেছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আমাকে জানিয়েছেন, এসব বদলির আদেশ গত বছর ২২ ডিসেম্বর সংশোধিত বদলির নির্দেশিকা জারির আগেই অনুমোদন করানো ছিল। পরে বদলির আদেশ জারি হয়েছে। আমাকে বলা হয়েছে, আদেশের সংখ্যা বেশি নয়। ১০-২০টি হতে পারে। সংশোধিত নির্দেশিকা জারির পর সরাসরি নতুন কোনো বদলির ফাইল অনুমোদনের সুযোগ নেই। এখন বদলি করতে হলে অনলাইন আদেশের মাধ্যমেই করতে হবে।’
সচিব বলেন, ‘অনলাইনে গত ১৫ সেপ্টেম্বর বদলি শুরু হলেও তাতে কিছু সমস্যা ছিল। সমস্যা কাটিয়ে গত ২২ ডিসেম্বর সংশোধিত বদলির নির্দেশিকা জারি হয়েছে। এরপর আর অনলাইনের বাইরে বদলির সুযোগ নেই।’
গাজীপুরের কাপাসিয়ার ঝাউয়াদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ লুৎফর রহমান ফরহাদের বদলির আদেশ জারি হয় গত ২৭ ফেব্রুয়ারি। তিনি একই উপজেলার উত্তর পেলাইদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি হয়েছেন। তার বদলির আদেশটি মনীষ চাকমা স্বাক্ষরিত। ২৮ ফেব্রুয়ারি যোগদানও করেছেন তিনি। আগে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মূলাইদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংযুক্ত ছিলেন। গত ৮ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক আদেশে সব সংযুক্তির আদেশ বাতিল হয়। তিনি অনলাইন-ছাড়াই বদলির আদেশ করিয়ে নিয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, মোহাম্মদ লুৎফর রহমান ফরহাদ গাজীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অন্যতম সহযোগী। স্কুলে তেমন ক্লাস নেন না। সারাক্ষণ ডিপিইওর অফিসে থাকেন। শিক্ষক নেতার পরিচয়ে তদবিরবাণিজ্য করেন। জেলার আট-নয় হাজার শিক্ষকের কাছ থেকে নানা অজুহাতে প্রায়ই চাঁদা আদায় করেন। সহকারী শিক্ষক হয়েও মাসে তার আয় কয়েক লাখ টাকা। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর চাচাতো ভাই পরিচয়দানকারী হাসান আলীর মাধ্যমে তার বদলির আদেশ করিয়েছেন বলে গল্প করেন। এ কাজে তিন-চার লাখ টাকার লেনদেনের কথাও বলেন। হাসান আলীকে প্রায়ই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দেখা যায়। তিনি মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দপ্তরের আশপাশেই থাকেন।
গত ১৩ মার্চ চাঁদপুরের কচুয়ার নোয়ার্দ্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে রাজধানীর সূত্রাপুরের শহীদ নবী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি হয়ে এসেছেন সহকারী শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌসী। তার সরাসরি বদলির আদেশে স্বাক্ষর করেছেন মনীষ চাকমা। সম্প্রতি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের দিগচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফাতেমা বেগমও রাজধানীর মিরপুরের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি হয়ে এসেছেন।
গত ১৭ জানুয়ারি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার বোররচর বনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে একই উপজেলার সানকিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি হন সহকারী শিক্ষক খাদিজা আক্তার। তার বদলির আদেশে স্বাক্ষর রয়েছে মো. হামিদুল হকের।
সানকিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘খাদিজা আক্তার আমার স্কুলে ১৯ মার্চ যোগ দিয়েছেন। তিনি আমাকে বলেছেন, অনলাইনে আগে আবেদন করা ছিল। পরে অধিদপ্তর থেকে সরাসরি বদলির আদেশ করিয়ে নিয়ে এসেছেন।’
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার তিলকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোসাফিকুর রহমান গত ১০ মার্চ বদলি হয়ে যান একই জেলার সদর উপজেলার সেনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তার আদেশটিও মনীষ চাকমা স্বাক্ষরিত।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ধানীখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ময়মনসিংহ সদরের আজমতপুর পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি হন সহকারী শিক্ষক তাসমিনা নার্গিস। একই তারিখে স্বাক্ষরিত আরেকটি আদেশে সহকারী শিক্ষক জেসমিন আক্তার ময়মনসিংহের নান্দাইলের গলগ-া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চকনজু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি হন। এসব বদলির আদেশ মো. হামিদুল হক স্বাক্ষরিত।
গত ১ জানুয়ারি ময়মনসিংহ সদরের কুঠুরাকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে একই উপজেলার গাঙ্গিনার পাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি হয়ে আসেন সহকারী শিক্ষক আবিদা সুলতানা। আদেশটিতে স্বাক্ষর করেছেন মনীষ চাকমা।
গাঙ্গিনার পাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাকলী গোস্বামী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘কীভাবে বদলি হয়েছে বলতে পারব না। তবে আবিদা সুলতানা বলেছে, অনলাইনে হয়েছে। আমার স্কুলে তিনি ২ জানুয়ারি যোগ দিয়েছেন।’
ময়মনসিংহের সদর উপজেলার রাজাগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে গত ২৮ ডিসেম্বর সহকারী শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন একই উপজেলার বড় বিলারপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি হন। আদেশটিতে স্বাক্ষর করেন মনীষ চাকমা। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কুমার ঘোষ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘কীভাবে বদলি হয়েছে, তা বলতে পারব না। তবে সাবিনা ইয়াসমিন যোগ দিয়েছেন।’
দেশের কোনো জায়গা থেকে রাজধানীতে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি খুবই কঠিন। রাজধানীতে বদলির জন্য শিক্ষকরা ছয়-সাত লাখ টাকা খরচ করতেও দ্বিধা করেন না। আর অনলাইন প্রক্রিয়া চালু হওয়ার পর দেশের অন্য জায়গায়ও বদলির রেট বেড়ে গেছে। এ জন্য তিন-চার লাখ টাকার লেনদেন হয় বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হলে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে সারা দেশে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ রাখা হয় সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলিও। এরপর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রথমবারের মতো গত বছর ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত একই জেলার মধ্যে বদলির জন্য অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু করে। ঘোষণা দেওয়া হয়, অনলাইনের বাইরে কোনো ধরনের বদলি কার্যক্রম চলবে না। ওই সময়ে অনলাইনের মাধ্যমে বদলি হওয়া শিক্ষকদের সবাই অক্টোবরের মধ্যে বদলিকৃত স্কুলে যোগদান শেষ করেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রথম দফায় বদলি হওয়া শিক্ষকদের সবাই যেহেতু অক্টোবরের মধ্যে যোগদান শেষ করেছেন, অতঃপর গত ফেব্রুয়ারির আগে আর কোনো বদলির আবেদনের সুযোগ ছিল না। দ্বিতীয় দফায় ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত একই জেলার মধ্যে বদলির আবেদন নেওয়া হয়। কারা বদলি হলেন তা প্রকাশ করা হয় ৯ মার্চ। গত ১৪ ও ১৫ মার্চ একই বিভাগের মধ্যে বদলির জন্য অনলাইন আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। আর এক বিভাগ থেকে আরেক বিভাগে অনলাইনে বদলির আবেদন গ্রহণ এখনো শুরু হয়নি। মন্ত্রণালয় বলেছে, শিগগির তা শুরু হবে। ফলে এসবের বাইরে যে বদলি হয়েছে সেসব কোনোভাবেই অনলাইন বদলির মধ্যে পড়ে না।
অনলাইন বদলির আদেশের একাধিক কপিও দেশ রূপান্তরের কাছে রয়েছে। একই উপজেলার মধ্যে বদলির আদেশ উপজেলা শিক্ষা অফিসার স্বাক্ষরিত। আর একই জেলার মধ্যে বদলির আদেশ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বাক্ষরিত। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে যেসব বদলির আদেশ জারি হয়েছে সেসব ‘অনলাইন বদলি’ নয়। মন্ত্রণালয় নির্দেশিকা জারি করে অনলাইনের বাইরে বদলি বন্ধ করেছে।
এ ব্যাপারে জানার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত ও পরিচালক (পলিসি অ্যান্ড অপারেশন) মনীষ চাকমাকে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার একাধিকবার ফোন দিয়ে এবং এসএমএস করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলির কাজ হবে পুরোপুরি অনলাইনে। বদলিপ্রত্যাশী শিক্ষক অনলাইনে আবেদন করার পর সেটি প্রাথমিকভাবে যাচাই করবেন সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে যাচাই করে আবেদনটি পাঠাবেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে। তিনি যাচাই করে পাঠাবেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে। এরপর সফটওয়্যারের মাধ্যমে বদলি নির্ধারণ করা হবে। এরপর আবার ডিপিইও সেটি মঞ্জুর করে পাঠাবেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে। তিনি তখন বদলির আদেশ জারি করবেন এবং শিক্ষক সেটি অনলাইনেই জেনে যাবেন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ হয় উপজেলাভিত্তিক। তাই সাধারণ নিয়মে উপজেলার মধ্যেই শিক্ষকদের বদলি হতে হবে। বিশেষ কারণে উপজেলা বা জেলা পরিবর্তনেরও সুযোগ আছে।
প্রফেসর মুহাম্মাদ হামীদুর রহমান। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সহকারী অধ্যাপক। হাফেজ্জী হুজুরের সান্নিধ্যে এসে পরিচিত হন প্রফেসর হজরত হিসেবে। প্রফেসর মানে অধ্যাপক। একজন অধ্যাপক কেমন করে হজরত (নামের আগে সম্মানার্থে ব্যবহৃত শব্দবিশেষ, সম্মানসূচক সম্বোধন) হয়ে ওঠেন- এ এক অবিশ্বাস্য গল্প। লিখেছেন মুহাম্মাদ আদম আলী
একজন মানুষের দুনিয়াবিমুখতা, ইসলামের প্রচার ও প্রসারে ঐকান্তিক পরিশ্রম, আলেমদের প্রতি সম্মানবোধ ও ভালোবাসা, শরিয়ত ও সুন্নতের ওপর সার্বক্ষণিক আমলের আপ্রাণ চেষ্টা কতটা নিবিড় ও আন্তরিক হতে পারে তা প্রফেসর মুহাম্মাদ হামীদুর রহমানকে না দেখলে, তার সম্পর্কে না জানলে, তার সান্নিধ্যে না গেলে বলে কিংবা লিখে বোঝানো যাবে না। তার উদাহরণ বর্তমান সমাজে এক ব্যতিক্রম দৃষ্টান্ত। আলেমদের সোহবত তাকে এমন উচ্চতায় আসীন করেছে, অনেক আলেমদের জন্যও তিনি পরিণত হয়েছেন এক বাস্তব আদর্শে। অসংখ্য আলেম তাকে আধ্যাত্মিক রাহবার (পথপ্রদর্শক ও পীর) হিসেবে মানেন, তার হাতে বায়াত গ্রহণ করেছেন। তাকে দেখে অনেক বুজুর্গ এমনও মন্তব্য করেছেন, তার সান্নিধ্যে সাহাবিদের ঘ্রাণ পাওয়া যায়।
প্রফেসর হজরত ৯ জানুয়ারি ১৯৩৮ সালে মুন্সীগঞ্জের নয়াগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পরে প্রাইমারি স্কুলে পড়েছেন। এ সময় মক্তবে গিয়েছেন। গ্রামের বাড়ির কাছেই ছিল মক্তব। মক্তবের উস্তাদ মরহুম মাওলানা মাকবুল হুসাইন (রহ.)-এর কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। শৈশব থেকেই তার পিতা ইয়াসিন (রহ.) তাকে মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও মক্তবের উস্তাদদের খেদমতে নিয়োজিত করেছিলেন। তাদের সান্নিধ্যেই হজরতের মনে দ্বীনি অনুভূতি সঞ্চার হতে থাকে। এমনিতে তার বাবা ম্যাট্রিক পাস করে সরকারি চাকরি করতেন রেলওয়ে বিভাগে। কিন্তু কোরআন মাজিদের আশেক ছিলেন। সকালে অফিসে যাওয়ার আগে কোরআন তেলাওয়াত করতেন। বাসায় ফিরে বিকেলেও কোরআন পড়তেন। কোরআনের প্রতি পিতার এই ভালোবাসা সন্তানের মনেও আসন গেড়ে বসে।
ইসলামিয়া হাইস্কুল থেকে ১৯৫৫ সালে ম্যাট্রিক পাস করে ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হতেই বাবাকে হারান। তারপর হজরতের জীবন কঠিন হয়ে ওঠে। সংসারে বাবাই ছিলেন একমাত্র আয়ের উৎস। তার ইন্তেকালে সংসারে নেমে আসে অভাব-অনটনের বোঝা। ঢাকার নিমতলীতে যে বাসায় মা এবং তার আরও দুই ভাইকে নিয়ে থাকতেন, সেখানেও বেশিদিন থাকতে পারেননি। গ্রামে চলে যেতে হয়।
১৯৫৭ সালে কলেজ পাস করে ভর্তি হন আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (বর্তমানে বুয়েট)। এ সময় হজরতের সংসার চলত বাবার পেনশনের টাকায়। অনেক কষ্টে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন। তারপর শুরু করেন কর্মজীবন। প্রথমে সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন এবং পরে ইংলিশ ইলেক্ট্রিক কোম্পানিতে চাকরি করেন। এ সময় বাসা ভাড়া নেন আজিমপুরে। আর তখনই পরিচয় হয় হজরত মাওলানা আবদুল্লাহ (রহ.)-এর সঙ্গে। তিনি অনেক বড় আলেম ছিলেন। তার কাছে নানা বিষয়ের জ্ঞান লাভ করেন। বিশেষ করে কোরআন মাজিদের ক্ষেত্রে হজরতের পারদর্শিতা মাওলানা আবদুল্লাহ হুজুরের সঙ্গে থাকার বরকতে অর্জিত হয়েছে।
১৯৬৫ সালে হজরত কোম্পানি থেকে ট্রেনিংয়ের জন্য ইংল্যান্ড যান। প্রায় ৯ মাস সেখানে ছিলেন। ইংল্যান্ড থেকে ফিরে হজরতের দ্বীনি অনুভূতি অনেক বেড়ে যায়, তিনি দাড়ি রেখে দেন। হজরতের মা খুব পরহেজগার নারী ছিলেন। কোরআন তেলাওয়াত নিয়ে দিন-রাত পড়ে থাকতেন, তাহাজ্জুদ পড়তেন। ১৯৬৭ সালে তিনি বিয়ে করেন। তিনি ৫ ছেলে ও ২ মেয়ের জনক। ছেলেরা সবাই হাফেজ ও আলেম।
ইংলিশ ইলেক্ট্রিক কোম্পানিতে হজরতের ব্যাপক পরিচিতি ছিল, সুনাম ছিল। বছর না ঘুরতেই তিনি কোম্পানির জন্য একটা সম্পদ হয়ে ওঠেন। ১৯৬৯ সালের শুরুর দিকে কোম্পানির প্রোডাক্ট সেলের জন্য ঘুষের প্রচলন শুরু হলে তিনি এর বিরোধিতা করেন। এক পর্যায়ে লোভনীয় চাকরিটি ছেড়ে দেন।
পরে অনেক কম বেতনে ১৯৬৯ সালে তিনি বুয়েটে যোগ দেন। পদবি সহকারী অধ্যাপক। তিনি মাস্টার্স ও পিএইচডি করেননি। সুতরাং তার প্রমোশন হয়নি। এ সময় তিনি তাবলিগে প্রচুর সময় ব্যয় করেন। ইতিমধ্যে বড় ছেলেকে মাওলানা আবদুল্লাহ হুজুরের মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু কোথাও যেন একটা অপূর্ণতা ছিল। কারণ, আল্লাহ তাকে যে কাজের জন্য দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন, সেটি যেন এখনো হাতের নাগালের বাইরে রয়ে গেছে। শিগগিরই সেটিও পূর্ণ হয়ে যায়। তিনি হাফেজ্জী হুজুর (রহ.)-এর সোহবত লাভে ধন্য হন।
প্রফেসর হজরত হাফেজ্জী হুজুর (রহ.)-এর কাছে বায়াত হন ১৯৭৪ সালে। বায়াতের পর হজরত হাফেজ্জী হুজুর (রহ.) অপূর্ব একটি নসিহত করেন। তাহলো- ‘চোখের গোনাহ থেকে বাঁচেন।’ এই এক কথায় হজরতের আমল শুরু হয়ে যায়। এর আগে তাবলিগে সময় লাগানোর কারণে কথাটি বহুবার শুনেছেন। কিন্তু আমলের সুযোগ হয়নি। হাফেজ্জী হুজুরের নসিহতের পর এ আমল শুরু করেন। বায়াত হওয়ার পাঁচ বছর পর তিনি হাফেজ্জী হুজুর (রহ.)-এর খেলাফত লাভ করেন।
১৯৮০ সালে তিনি হাফেজ্জী হুজুর (রহ.)-এর সঙ্গে হজের সফর করেন। মদিনায় একদিন ভোররাতে তাহাজ্জুদের নামাজের সময় হয়েছে। যথারীতি হাফেজ্জী হুজুর অজু করে প্রস্তুতি নিয়েছেন মসজিদে যাওয়ার। হাফেজ্জী হুজুরের একটা লাঠি ছিল, ওই সময় লাঠিটা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এদিকে তাহাজ্জুদের সময় প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছে, তাড়াতাড়ি যেতে হবে। একটু খোঁজ করেই হাফেজ্জী হুজুর হজরতকে বললেন- ‘থাক, লাগব না লাঠি। আপনিই আমার জিন্দা লাঠি।’ দেশে ফিরেও এই কথা বলেছেন, ‘হামীদুর রহমান আমার জিন্দা লাঠি।’ তখন থেকেই হজরতের নাম হয়ে যায়- ‘জিন্দা লাঠি।’
প্রফেসর হজরত ১৯৮৫ সালে হাফেজ্জী হুজুরের সঙ্গে ইংল্যান্ড সফর করেন। এ সফরে যাওয়ার আগে তিনি ছুটি পাননি। অনেক অনুরোধের পরও বুয়েট কর্র্তৃপক্ষ তাকে ছুটি দেয়নি। এ জন্য তিনি চাকরি ছেড়ে দেন। ইংল্যান্ড সফরের শেষ দিকে হাফেজ্জী হুজুর (রহ.) হজরতকে বললেন, ‘আপনি আমার জন্য চাকরি ছেড়ে দিলেন? দেশে গিয়ে কী করবেন?’ হজরত বললেন, ‘হুজুর! আমি আল্লাহর খুশির জন্য চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। আমার তো কোনো ভয় লাগে না।’ কথার জবাব দেওয়া হয়ে গেল। এখন একটুখানি থেমে হাফেজ্জী হুজুর বললেন, ‘এবার দরসিয়াতের (কওমি নেসাবে) কিতাবগুলো পড়ে ফেলেন। নিজে আলেম হন। নিজে মাদ্রাসা করে পড়ান।’ চিন্তা করলে অবাক হতে হয়, আল্লাহর অলি কী জিজ্ঞেস করলেন, আর কী সমাধান দিলেন?
প্রফেসর হজরত আপন পীর ও শায়খের এই নসিহত পুরোপুরি আদায় করতে পারেননি বলে আফসোস করেন। মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন ঠিকই, কিন্তু দরসিয়াতের কিতাবগুলো পড়তে পারেননি। এজন্য এখনো এই বৃদ্ধ বয়সে সময়-সুযোগ হলে কারও কাছে দরসিয়াতের কিতাব পড়ার চেষ্টা করেন।
প্রফেসর হজরত প্রফেশনালি খুব খ্যাতি অর্জন করেছেন। সরকারি পর্যায়ে গঠিত বিভিন্ন কমিটিতে বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছেন। তবে বৈষয়িকভাবে আর ব্যস্ত হতে চাননি। তিনি দুনিয়ার যশ-খ্যাতির তুলনায় আখেরাতকে প্রাধান্য দিয়েছেন, তিনি সফলও হয়েছেন। দুনিয়াতে এর নমুনাও প্রকাশ পেয়েছে। হাফেজ্জী হুজুর (রহ.)-এর ইন্তেকালের পর তিনি হাকিমুল উম্মত আশরাফ আলী থানভি (রহ.)-এর সর্বশেষ খলিফা মুহিউস সুন্নাহ মাওলানা আবরারুল হক (রহ.)-এর কাছে বায়াত হন এবং খেলাফত লাভ করেন।
২০১২ সালে তিনি আমেরিকায় দীর্ঘ সফর করেন। এ সময় নিউইয়র্ক, বাফেলো, নায়াগ্রা, মিশিগান, আটলান্টা, ফ্লোরিডা, লস এঞ্জেলেস, সান ফ্রান্সিসকো, ডালাস, হিউস্টন এবং অস্টিনে হজরতের প্রোগ্রাম হয়। এসব প্রোগ্রামে তিনি ইংরেজিতে বয়ান করেন। তার ইংরেজি বলার দক্ষতা অসাধারণ। পরে ২০১৪ সালে নিউজিল্যান্ড এবং ২০১৫ সালে কানাডা সফর করেন। কিন্তু অসুস্থতার জন্য এরপরে আর বিদেশ সফর করতে পারেননি। তার বিদেশ সফর নিয়ে মাকতাবাতুল ফুরকান থেকে তিনটি সফরনামা বের করা হয়েছে। এ ছাড়া একই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান থেকে তার অপূর্ব জীবনী, বয়ান, মালফুযাত ও অন্যান্য বিষয়ে আরও ১৬টি বই প্রকাশিত হয়েছে।
হজরত হাফেজ্জী হুজুর (রহ.) ছিলেন কোরআনের মানুষ। তার জিহ্বা সর্বদা নড়ত, জিকির না হলে কোরআন তেলাওয়াত। গ্রামে-গঞ্জে মক্তব প্রতিষ্ঠার মিশন নিয়ে ছুটে বেড়িয়েছেন। প্রফেসর হজরত এটা উত্তরাধিকার সূত্রে লাভ করেছেন। তিনিও মক্তব প্রতিষ্ঠার জন্য দেশের আনাচে-কানাচে ছুটে বেড়াচ্ছেন। এখন যখন দুই জনের কাঁধে ভর দিয়ে তাকে দাঁড়াতে হয়, তখনো তিনি ছুটে চলছেন। গাড়িতে শুয়ে শুয়ে সফর করেন। মুখে কথা বলতে কষ্ট হয়। শারীরিক সক্ষমতা হারিয়েছেন। কিন্তু হাফেজ্জী হুজুরের সান্নিধ্য তার অন্তরে কোরআনের যে মহব্বত আসন গেড়েছে, তাতে বিন্দুমাত্র দুর্বলতা আসেনি। এক অপার্থিব রুহানি শক্তিতে তিনি পথ চলেন। এ পথ তিনি আমৃত্যু চলবেন, তার ছায়া আমাদের ওপর আরও দীর্ঘ হোক- দয়াময় আল্লাহর কাছে এই প্রাথর্না করি।
রংপুরের জেলা প্রশাসককে 'স্যার ডাকতে বাধ্য করার' অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ওমর ফারুক।
বুধবার (২২ মার্চ) রাত ৮টা থেকে তিনি প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে অবস্থান শুরু করেন বলে জানা গেছে।