
হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ ফরওয়ার্ড করেন প্রায় সবাই। সকাল-বিকেল শুভেচ্ছা পাঠানো থেকে অন্য যেকোনো ছবি, ভিডিও অথবা টেক্সট, হোয়াটসঅ্যাপে প্রায় প্রতিদিনই মেসেজ ফরওয়ার্ড করেন সবাই। এক চ্যাটের মেসেজ অন্য কাউকে পাঠানোর জন্য এই ফিচারের জনপ্রিয়তা আকাশছোঁয়া। এবার মেসেজ ফরওয়ার্ড করার জন্য নতুন ফিচার যুক্ত হলো এই জনপ্রিয় অ্যাপে। ধরুন আপনাকে কেউ একটা ছবি অথবা ভিডিও পাঠিয়েছেন, যেখানে মিডিয়া ফাইলের সঙ্গে রয়েছে ক্যাপশন। কিন্তু আপনি ক্যাপশন ছাড়া শুধু ছবি অথবা ভিডিওটি ফরওয়ার্ড করতে চান। এত দিন হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ ফরওয়ার্ড করার সময় ক্যাপশন লেখা অথবা ডিলিট করার অপশন পাওয়া যেত না। তবে নতুন ফিচারে এ সমস্যার সমাধান রয়েছে। অ্যান্ড্রয়েড গ্রাহকরা যেকোনো ছবি অথবা ভিডিও ফরওয়ার্ড করার সময় ক্যাপশন ডিলিট করার সুযোগ পাবেন। চাইলে ছবি অথবা ভিডিওর সঙ্গে যে ক্যাপশন লেখা রয়েছে তা ডিলিট করেও মেসেজ ফরওয়ার্ড করতে পারবেন। ছবি, ভিডিও ছাড়াও ডকুমেন্ট ও এওঋ ফরওয়ার্ড করার সময় নতুন এই ফিচার ব্যবহার করা যাবে। গত মাসে রচযড়হব গ্রাহকদের ফোনে মেসেজ ফরওয়ার্ড ক্যাপশন ফিচার এনেছিল হোয়াটসঅ্যাপ। এবার অ্যান্ড্রয়েড গ্রাহকদের ফোনে এই ফিচার পাঠাল মার্কিন সংস্থাটি। মেসেজ ফরওয়ার্ড করার সময় ক্যাপশন ডিলিট করার সুযোগ পেলে সুবিধা হবে ব্যবহারকারীদের।
কীভাবে ব্যবহার করবেন এই ফিচার
হোয়াটসঅ্যাপ ওপেন করুন।
এবার যেকোনো চ্যাট ওপেন করুন।
যে ছবি অথবা ভিডিও ফরওয়ার্ড করবেন সেটা সিলেক্ট করুন।
এবার ফরওয়ার্ড বাটনে ট্যাপ করুন।
এবার ছবির ক্যাপশন ডিলিট করার অপশন সিলেক্ট করুন।
অথবা ক্যাপশন ছাড়াও পাঠাতে পারবেন ছবি।
পারস্যে আঠারো শতকের শেষ দিকে কাজার রাজবংশের উত্থান যেমন আকস্মিক, তেমনি তার পতনও। এই শাসকদের স্বৈরাচারী মনোভাব ও বিদেশিদের সঙ্গে অতিমাত্রার সখ্য শেষ পর্যন্ত এই বংশের পতনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। লিখেছেন নাসরিন শওকত
কাজার বংশ ও সাম্রাজ্য
পারস্যের রাজতন্ত্রের ইতিহাস আড়াই হাজার বছরের পুরনো। ইতিহাসে কাজার বংশের উত্থান একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এই রাজবংশ ১৭৮৫ থেকে ১৯২৫ সাল পর্যন্ত পারস্য (বর্তমানের ইরান) শাসন করেছিল। কাজাররা ছিল ইরানীয় রাজপরিবার। যারা মূলত ওঘুজ তুর্কি বংশোদ্ভূত একটি যাযাবর উপজাতি। এই পরিবারের প্রথম শাসক ছিলেন কাজার গোত্রের নেতা মোহাম্মদ আগা খান। যিনি পারস্যে কাজার রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করে ইরানকে আবার একতাবদ্ধ করতে চেয়েছিলেন।
কাজাররা ছিল পারস্যের সাফাভিদ বংশের মিত্র কিজিল বংশের একটি গোত্র। ইরানে মুঘল শাসন চলাকালে কাজাররা ইরানে চলে আসেন। আর্মেনিয়া এলাকায় বসবাস করতে শুরু করেন । শাহ ইসমাইল সাফাভিদ ইরানে সাফাভি রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। তখন যে যাযাবর গোত্রগুলো তাকে সহায়তা করেছিল, কাজাররা ছিলেন তাদের অন্যতম। পরে কাজাররা কিজিল বাকাদের গোত্রে যোগ দেন। পাহলভী রাজবংশ শাসন করার আগে ইরান শাসন করেছে যথাক্রমে সাফাভিদ রাজবংশ ও কাজার রাজবংশ। ইরানের রাজনীতিতে এই দুই রাজবংশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সাফাভিদ বংশের প্রথম রাজা ইসমাইল ইরানের রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে শিয়া ইসলামের নাম ঘোষণা করেন। পরে কাজার রাজবংশ ক্ষমতায় এসে আলেম সম্প্রদায়কে রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রদান করে। বংশ পরম্পরায় কাজার রাজবংশের সাতজন শাহ ইরানের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হয়ে রাজত্ব করেন।
কাজার রাজবংশ দীর্ঘ প্রায় দেড়শ (১৪০) বছর পারস্য শাসন করেছিল। দীর্ঘ এ সময়ের মধ্যে তারা যেমন নতুন ভূখন্ড জয় করেছিল, তেমনি আবার অনেক ভূখন্ডের ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণও হারিয়েছিল।১৯ শতকে এসে রাশিয়ার কাছে তাদের নিয়ন্ত্রণ হারানো ভূখন্ডের মধ্যে ছিল ককেশাস ও মধ্য এশিয়ার বিশাল এলাকা। যে এলাকাজুড়ে রাশিয়ার সাম্রাজ্যের ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটে। কাজার রাজত্বের সে সময়েই গ্রেট ব্রিটেনের সঙ্গে রাশিয়ার দীর্ঘদিনের সংঘাত চলছিল। নিজেদের বিশাল দুটি অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হারানো সত্ত্বেও কাজার রাজবংশ রাশিয়া ও ব্রিটেনের মধ্যকার উত্তেজনাকে নিজেদের সুবিধামতো কাজে লাগাতে সক্ষম হয়। যার মধ্য দিয়ে এই রাজবংশের শেষ দিকে এসে কাজার রাজত্বের ব্যাপক আধুনিকায়ন ঘটে। ফলে কাজার সাম্রাজ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক সংস্কার হয়। সেই সঙ্গে পাশ্চাত্যের সঙ্গে বাড়তে থাকে সুসম্পর্ক, যা কাজার ভূখন্ডের চিত্রকে চিরতরে পাল্টে দেয়। আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯২৫ সালে কাজার রাজবংশের পতন ঘটে, যা গুপ্তহত্যা, যুদ্ধ এবং সবশেষ একটি অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সংঘটিত হয়। কাজার রাজবংশের এই পতন মধ্যপ্রাচ্যের মানচিত্রকে পুরোপুরি পাল্টে দেয়।
ইরানকে একত্র করা
ইরানের দক্ষিণাঞ্চল শাসন করত জান্দ রাজবংশ। এই রাজবংশের শেষ শাসক ছিলেন মোহাম্মদ করিম খান জান্দ। ১৭৭৯ সালে করিম খান জান্দের মৃত্যু হয়। এরপর তুর্কমেন কাজার গোত্রের নেতা আগা খান মোহাম্মদ সামনের দিকে অগ্রসর হন। তার লক্ষ্য ছিল শত্রুদের উৎখাত করা ও ইরানকে আবার একত্র করা। ১৭৮৫ সালে আগা খান জান্দ রাজবংশকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করে ময়ূর সিংহাসন দখল করেন। এর তিন বছর পর ১৭৮৯ সালে আগা খান ইরানের রাজা হিসেবে সিংহাসনে বসেন। এর মধ্য দিয়েই ইরানে কাজার রাজবংশের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু আগা খান সিংহাসনে আরোহণ করলেও আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে শাহ বা সম্রাট হিসেবে মুকুট পরানো হয়নি তখনো।
আগা খানের শাসনামল নির্মম ছিল। ১৭৯৪ সালে প্রায় ক্ষমতাচ্যুত জান্দ বংশের সাবেক শাসক লুৎফ আলি খানকে কারমান শহরে আশ্রয় দেওয়া হয়। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর আগা খান কারমান শহর দখল করেন। এরপরই তার শত্রুকে শহরটিতে আশ্রয় দেওয়ার জন্য এর বাসিন্দাদের নির্মম শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়। এই শাস্তির অংশ হিসেবে কারমান শহরের সব পুরুষের দুই চোখ ওপরে ফেলা হয়।
জানা যায়, সে সময় কারমান শহরের ২০ হাজার উপড়ে ফেলা চোখ আগা খানের সামনে এনে জড়ো করা হয়েছিল। এদিকে নারী ও শিশুদের দাস বানিয়ে কারমান শহরকে একেবারে ধ্বংস করে ফেলা হয়। ওই বছরই আগা খান তার সব প্রতিদ্বন্দ্বীকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলেন। সেই সঙ্গে ইরানের সাবেক অঞ্চল জর্জিয়া ও ককেশাসে নির্মম হাতে ইরানের সার্বভৌমত্বও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি। এদিকে শহরের রাজধানী স্থাপন করেন তেহরানে। এর মধ্য দিয়েই পুরো ইরানের ওপর নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয় কাজার রাজবংশ। দুই বছর পর ১৭৯৬ সালে মোহাম্মদ আগা খানকে আনুষ্ঠানিকভাবে পারস্য সাম্রাজ্যের সম্রাট হিসেবে শাহ উপাধিতে মুকুট পরানো হয়। কিন্তু এরপরের বছরই ঘটে যায় সেই নির্মম ঘটনা। ১৭৯৭ সালে কাজার রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা শাসক আগা খান নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হন।
রাশিয়ার আগ্রাসন
মোহাম্মদ আগা খানের যখন মাত্র ছয় বছর বয়স, তখন তাকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছিল। তার কোনো পুত্রসন্তান ছিল না। তাই আগা খানের মৃত্যুর পর সিংহাসনে ‘শাহেনশাহ’ (রাজাদের রাজা) হিসেবে তার স্থলাভিষিক্ত হন তার ভাগনে ফতেহ আলি শাহ। সিংহাসনে বসেই তিনি ইরানের সাম্রাজ্যকে বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দেন এবং নতুন অঞ্চলকে সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন। ফতেহ আলিকে কাজার বংশের শ্রেষ্ঠ শাসক বলা হয়ে থাকে। এ সময় ককেশাস অঞ্চলে রাশিয়ার অনুপ্রবেশ ঠেকাতে পরপর দুটি যুদ্ধ পরিচালনা করেন ফতেহ আলি। রুশ-পার্সিয়ান নামের প্রথম দফার ওই দুটি যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়েছিল যথাক্রমে ১৮০৪ ও ১৮১৩ সালে। তখন ঐতিহ্যগতভাবে ককেশাস অঞ্চলটি ইরানের নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু যুদ্ধ দুটি কাজারদের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনে। ১৮১৩ সালের যুদ্ধের ফলে রুশ বাহিনীর সঙ্গে কাজার বাহিনীর গুলিস্তান নামের এক চুক্তি সম্পাদিত হয়। যে চুক্তির শর্তানুযায়ী কাজার শাসকদের আজারবাইজান, দাগেস্তান ও জর্জিয়া রাশিয়ার রোমান জারের হাতে তুলে দিতে হয়েছিল। পরে দ্বিতীয় দফায় রুশ-পার্সিয়ান আরও একটি যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ১৮২৬ ও ১৮২৮ সালের ওই দুই যুদ্ধও ভয়াবহ পরাজয়ের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। যার পরিণতিতে দক্ষিণ ককেশাসের বাকি অংশও রাশিয়ার হাতে তুলে দিতে হয় ইরানকে।
পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্ক
ফতেহ আলির শাসনামলের ঠিক ওই সময়েই ইরানের সঙ্গে পশ্চিমাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের শুরু। যার ফলে ইরানের ভূখন্ড নিয়ে ইউরোপীয়দের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা দেয়। এরই মধ্যে কেটে যায় পাঁচ বছর। ১৮৩৪ সালে ফতেহ আলির স্থলাভিষিক্ত হন তার নাতি মোহাম্মেদ শাহ। তিনি রুশ নিয়ন্ত্রণে থাকা হেরাত দখলের দুটি চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন। এর দেড় যুগ পর ১৮৪৮ সালে মোহাম্মেদ শাহের মৃত্যু হয়। বাবার মৃত্যুর পর এবার কাজার সিংহাসনে বসেন শাহের ছেলে নাসের আল-দীন।
আধুনিকায়নের শুরু
কাজার শাহ নাসের আল-দীনের শাসনামল মূলত উল্লেখযোগ্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং আধুনিক বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও শিক্ষা পদ্ধতি চালু করার জন্য সুপরিচিত হয়ে ওঠে। বিশাল এই উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন সম্ভবপর হয়েছিল নাসের দীনের অত্যন্ত দক্ষ উপদেষ্টা ও কনস্টেবল মির্জা তাঘী খান আমির কবিরের জন্য। ১৯ শতকের মধ্যবর্তী ওই সময় থেকেই ইরান আধুনিক যুগে প্রবেশ করে ও পরে যার ধারা অব্যাহত থাকে। কাজার রাজবংশের এই শাসনামলেই ইরানে টেলিগ্রাফ লাইন, একটি আধুনিক ডাক পরিষেবা, পশ্চিমা ধাঁচের স্কুল ও প্রথম সংবাদপত্র চালু হয়েছিল। নাসের দীন তার রাজত্বেই ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় রাখতে মোটামুটি কঠোর হাতে শিয়া মুসলিম আলেমদের ক্ষমতা সীমিত করেন। বলা হয়, কাজার শাসকদের মধ্যে তিনিই প্রথম বিলাসিতায় গা ভাসান। ইউরোপে ব্যয়বহুল ব্যক্তিগত ভ্রমণে যাওয়ার জন্য বিশাল অঙ্কের বিদেশি ঋণ নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তিনিই প্রথমবারের মতো ইরানে রেলপথ ও সেচ খাল নির্মাণ এবং তামাক প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিক্রির জন্য বিদেশি হিসেবে ব্রিটিশদের ছাড় দেন। তার এসব পদক্ষেপ ইরানজুড়ে এক নব জাতীয়তাবাদের জন্ম দেয়। শেষ পর্যন্ত ফতোয়ার মাধ্যমে নতুন নিয়ম জারি হলে দেশব্যাপী তামাকজাত দ্রব্য বয়কট হয়, যা নাসের দীনকে তার নীতি থেকে পিছু হটতে বাধ্য করে।
যদিও নাসের দীন ইরানের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য ব্রিটেন ও রাশিয়ার মধ্যকার পারস্পরিক অবিশ্বাসকে পুঁজি করতে চান, কিন্তু তার এই কূটকৌশলই বাস্তবে হীতে বিপরীত ফল বয়ে আনে তার জন্য। কারণ তার শাসনামলেই ইরানে বিদেশি হস্তক্ষেপ ও আঞ্চলিক দখল উভয়ই বৃদ্ধি পায়। যার পরিণতিতে ১৮৮১ সালের মধ্যে রাশিয়া বর্তমানের তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তানকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ নেয়। এদিকে ব্রিটেনও একইভাবে আফগানিস্তান সৃষ্টির পক্ষে সমর্থন জানিয়ে অনুপ্রবেশ করে এশিয়ায়। ১৯ শতকের শেষ দিকে এসে অনেক ইরানিই বিশ্বাস করতে শুরু করেন যে, তাদের দেশ ও শাসকদের একটি বড় অংশ বিদেশিদের স্বার্থে অন্ধ।
উল্লেøখযোগ্য সংস্কার
১৮৯৬ সালে নাসের আল-দীনকে হত্যা করা হয়। এবার উত্তরাধিকার সূত্রে কাজার শাসনক্ষমতায় বসেন তার ছেলে মোজাফ্ফর আদ-দীন। বাবার মতো তারও ভোগবিলাসের প্রতি দুর্বলতা ছিল। অযৌক্তিক খরচ ও বিলাসী জীবনযাপনের জন্য তিনি দ্রুতই অজনপ্রিয় ও অযোগ্য শাসক হয়ে ওঠেন। ইরানের রাজকীয় ক্ষমতার ওপর নিয়ন্ত্রণ ও আইনের প্রকৃত শাসন প্রতিষ্ঠার দাবিতে ১৯০৬ সালে ইরানি জনগণ কাজার রাজবংশের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিপ্লব শুরু করে। যার ফলে মোজাফ্ফর শাহ সংবিধান প্রণয়ন করে আইনসভা প্রতিষ্ঠা করতে বাধ্য হন। ফলে কার্যকরভাবে রাজা হিসেবে তার ক্ষমতা হ্রাস পায়। ইরানের রাজনীতিতে এই গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার আসার পরের বছরই ইরানের সঙ্গে অ্যাংলো-রাশিয়ান চুক্তি সম্পাদিত হয়, যা ছিল ইরানের ওপর শেষ ধাক্কা। এই চুক্তির মধ্য দিয়ে ইরানের ওপর রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ পাকাপোক্ত হয়।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও কাজারদের পতন
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কাজার রাজবংশকে উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল করে দিয়েছিল। তখন ইরানের শাসনক্ষমতায় ছিলেন নাসের দীনের আরেক ছেলে মোহাম্মদ আলি শাহ। যিনি রাশিয়ার সমর্থন নিয়ে সংসদীয় সরকার পদ্ধতির সংবিধানকে বাতিল করার চেষ্টা করেন। এর ফলে তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়েন এবং শেষ পর্যন্ত ১৯০৯ সালে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন আলি শাহ। এ সময় তার ১১ বছর বয়সী ছেলে আহমাদ শাহ তার স্থলাভিষিক্ত হন। কিন্তু বিলাসী ও উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনের জন্য বাবার মতো তিনিও অজনপ্রিয় শাসক হয়ে ওঠেন।
এদিকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের এ সময়েই ব্রিটেন, রাশিয়া ও অটোমান সাম্রাজ্য ইরান দখল করা শুরু করে, যা পারস্যের রাজতন্ত্রের জন্য একটি বড় ধাক্কা ছিল। এই দখলদারিত্ব থেকে ইরান আর কখনোই বেরিয়ে আসতে পারেনি। এই যুদ্ধের পর মধ্যপ্রাচ্যে তেল আবিষ্কৃত হয়। ফলে ইরানকে নিয়ে ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে নতুন করে প্রতিযোগিতা বেড়ে যায়। এবার তেলের বাজার দখল করতে মরিয়া হয়ে ওঠে ব্রিটিশরা। তারা প্রতিষ্ঠা করে ‘অ্যাংলো ইরানিয়ান অয়েল কোম্পানি’। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, এই তেল কোম্পানিকে সুসংহত করতেই গোয়েন্দা বাহিনীর মাধ্যমে তারা ১৯২১ সালে ইরানে একটি সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়েছিল। এবার তাদের সহায়তায় পারস্যের সামরিক বাহিনী কোসাক ব্রিগেডের কমান্ডার রেজা খান পাহলভী ইরানের শাসনক্ষমতায় বসেন। পরে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠা এই রেজা শাহ পাহলভীই ইরানে পাহলভী রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন। সাবেক এই সামরিক শাসক ক্ষমতায় বসেই রেজা খান থেকে রেজা শাহ নামে নিজেকে পরিচিত করে তোলেন।
তখনো পশ্চিম এশিয়ায় অবস্থিত মধ্যপ্রাচ্যের এই ভূখন্ডটি ‘পারস্য’ নামে পরিচিত ছিল। রেজা শাহ পাহলভী একে ইরান নামে নামকরণ করেন। এরপর পশ্চিমাদের অনুকরণে তিনি ইরানকে ধর্মনিরপেক্ষ ও আধুনিক এক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে মনোযোগ দেন। এরই মধ্যে আসে ১৯২৫ সাল। ইউরোপে আহমাদ শাহের অনুপস্থিতিতে ইরানের সংসদীয় পরিষদ কাজার রাজবংশের অবসানের ঘোষণা দেয়। এভাবেই ইরানের প্রায় দেড়শ বছরের প্রভাবশালী কাজার রাজবংশের পতন ঘটে। তবে আজও কাজার রাজ পরিবারের অস্তিত্ব থাকলেও নির্বাসিত জীবন কাটায় তারা।
কর্মক্ষেত্রে বা ব্যক্তিগত জীবনে মানসিক অবসাদ ও উদ্বেগের মুখোমুখি হয়েছেন, এমন মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। সাধারণ কিছু লক্ষণ যা দেখে প্রাথমিকভাবে ক্লান্তি মনে হলেও পরে সেখান থেকে গভীর সমস্যার সূত্রপাত হতে পারে।
মনোবিদদের মতে, ক্লান্তি বাহ্যিক বিষয় হলেও উদ্বেগ পুরোপুরি মনের জটিল সমস্যা। দুটি ক্ষেত্রেই লক্ষণগুলো অনেকটা এক রকম। তাই চটজলদি বুঝে ওঠা সম্ভব নয়। বাহ্যিক কিছু সমস্যা ছাড়াও শরীরে পুষ্টির অভাব থাকলে উদ্বেগ বাড়তে পারে। শরীরে কোন কোন পুষ্টির অভাবে বাড়তে পারে উদ্বেগ?
ভিটামিন-ডি এবং কে : ভিটামিন-ডি এবং ভিটামিন-কে-এর অভাবে বাড়তে পারে মানসিক চাপ। প্রাকৃতিকভাবে এই দুই ভিটামিন তৈরির উৎস হলো সূর্যের আলো। পর্যাপ্ত রোদ গায়ে না লাগলে এই দুই ভিটামিন স্বাভাবিকভাবে শরীরে তৈরি হতে পারে না।
জিংক এবং তামা : জিংক এবং তামার মতো দুটি যৌগ মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণভাবে প্রয়োজনীয়। উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে এই দুটি যৌগের ভূমিকাও কম নয়। শরীরে এই দুটি যৌগের মাত্রা ঠিক আছে কি না, তা জানার জন্য নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
ম্যাগনেশিয়াম : মানসিক অবসাদের আরও একটি কারণ হতে পারে শরীরে ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি। কুমড়োর বীজ, সূর্যমুখী ফুলের বীজ, তিসির বীজ ছাড়াও প্রতিদিন বিভিন্ন রকমের বাদাম খেলেও পর্যাপ্ত ম্যাগনেশিয়াম পাওয়া যায়।
ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড
মনোবিদদের মতে, শরীরে এই যৌগের অভাব থাকলে আত্মহত্যা করার প্রবণতা বাড়তে পারে। তাই প্রতিদিন খাবারের তালিকায় সামুদ্রিক মাছ, বিভিন্ন রকমের বাদাম রাখতেই হবে।
শীতকালে এমনিতেই বাতাসের আর্দ্রতা কমে যায়। ফলে বায়ুমন্ডল ত্বক থেকে পানি শুষে নেয়। এই শুষে নেওয়ার কারণে ত্বক, ঠোঁট ও পায়ের তালু ফাটতে থাকে। আমাদের ত্বকে থাকে ঘর্মগ্রন্থি, থাকে তেলগ্রন্থি, যেখান থেকে অনবরত তেল আর ঘাম বের হয়। এ ঘাম আর তেল মিলে দেহের ওপর তেল ও পানির মিশ্রণ বা আবরণী তৈরি করে, যা দেহ শীতল করে রাখে এবং ত্বক শুষ্কতা থেকে রক্ষা করে, ত্বকের ফাটা ভাব প্রতিরোধ করে।
ইকথায়োসিস : শীতকালে এই রোগটি দেখা যায়। বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে এই রোগটি দেখা যায়। এ রোগে আক্রান্তদের হাত ও পায়ের ত্বক ফাটা ফাটা এবং ছোট ছোট গুঁড়ি গুঁড়ি মরা চামড়া বা আঁশ পায়ের সামনের অংশে বা হাতের চামড়ায় ফুটে ওঠে। অথচ হাত ও পায়ের ভাঁজযুক্ত স্থানে থাকবে স্বাভাবিক। শীত এলেই প্রতি বছর এর ব্যাপকতা বাড়ে। আক্রান্তদের হাতের রেখাগুলো খুব স্পষ্ট ও মোটা হয়, যা সাধারণ লোকের দেখা যায় না। একই সঙ্গে অ্যালাজিও দেখা দেয়। এ ধরনের রোগীর কারও কারও নাক দিয়ে পানিঝরা অর্থাৎ সর্দি-সর্দি ভাব থাকে। পরিবারে যাদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে তাদের বেশি হয়। এ রোগ কখনো ভালো হয় না। তবে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। শীত এলে বেশি বেশি তৈলাক্ত পদার্থ মাখলে ত্বক ভালো থাকে এবং ফাটা ভাব থাকে না। তবে যাদের ফাটা অবস্থা বেশি, তাদের ক্ষেত্রে আলফা হাইড্রোক্সি অ্যাসিড মাখলে খুবই ভালো ফল পাওয়া যায়। এটি পেতে অসুবিধা হলে গ্লিসারিনের সঙ্গে সমপরিমাণ পানি মিশিয়ে ত্বকে মাখলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
অ্যালার্জি : হাঁপানির সঙ্গে অ্যালার্জির গভীর সংযোগ রয়েছে। ফুলের পরাগ, দূষিত বাতাস, ধোঁয়া, কাঁচা রঙের গন্ধ, চুনকাম, ঘরের ধুলা, পুরনো ফাইলের ধুলা দেহে অ্যালার্জিক বিক্রিয়া করে হাঁপানি রোগের সৃষ্টি করে। যারা হাঁপানিতে ভুগছেন, তাদের এগুলোর সংস্পর্শ ত্যাগ করতে হবে। ছত্রাক দেহে অ্যালার্জি তথা হাঁপানি সৃষ্টি করে। পনির ছত্রাক মিশিয়ে তৈরি হয়। কোনো কোনো পাউরুটি এবং কেক তৈরি করতেও ইস্টজাতীয় ছত্রাক ব্যবহার করা হয়। আলু, পেঁয়াজও ছত্রাক দ্বারা দূষিত হয়। এ ছত্রাকও অ্যালার্জি তথা হাঁপানি সৃষ্টির অন্যতম কারণ। ঘরের ধুলা হাঁপানিজনিত অ্যালার্জির অন্যতম কারণ। ঘরের ধুলায় একটি ক্ষুদ্র জীবাণু থাকে, যা ‘মাইট’ নামে পরিচিত। প্রায় ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে অ্যালার্জি সৃষ্টির জন্য এ ‘মাইট’ দায়ী। এজন্য ঘরের আসবাবপত্র, কম্বল, পর্দা, তোশক, বালিশে যে ধুলা জমে থাকে, তা পরিষ্কার করার সময় দূরে সরে থাকতে হবে। খাদ্যে অ্যালার্জির আশঙ্কা থাকে। যেমন : দুধে অ্যালার্জি থাকে। গম, ডিম ও মাছে অ্যালার্জি হতে দেখা যায়। আরও অনেক খাবার, পশুপ্রাণী ও কামড় থেকে অ্যালার্জি হতে পারে। ওষুধও হতে পারে অ্যালার্জির কারণ। যেসব অ্যালার্জির কারণ হবে, তা থেকে দূরে থাকলে আক্রান্ত হওয়ার আর আশঙ্কা থাকে না। প্রচুর পরিমাণ পানিজাতীয় খাবার খেতে হবে। প্রয়োজনে ত্বকের যত্ন নিতে ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
রাজধানীর সরকারি কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এম ওয়াসিম রানার (৩০) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন তার বন্ধুরা। শুক্রবার (০২ জুন) রাত সাড়ে ১২টার দিকে চানখারপুলের একটি বাসায় তার বন্ধুরা তাকে দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে।
অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রানার বন্ধু ইমরান হোসেন বাবু জানান, 'রানা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলায়। কয়েক দিন যাবৎ রানার খু্ব মন খারাপ ছিল। একাকী থাকতে চাইত। চুপচাপ থাকত। তবে কী চিন্তা করত সে ব্যাপারে কিছু বলত না। তাই আমি তাকে বলেছিলাম- বন্ধু, তুমি কিছুদিনের জন্য কক্সবাজার ঘুরে আস।'
ঘটনার পরপরই রানার স্ত্রী পরিচয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে রাত দেড়টার সময় সানজিদা নামে এক মেয়েকে আহাজারি করতে দেখা যায়। সানজিদা আক্তার (জান্নাতি) কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
সানজিদা আক্তারের প্রতিবেশী মাইদুল ইসলাম জানান, 'সানজিদা আপুকে আমরা জান্নাতি আপু বলে ডাকি। রানা ভাইয়ের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে অনেকদিন আগে। রাজনৈতিক কারণে বিষয়টি জানাজানি হয়নি। জান্নাতি আপু ডেমরা রূপগঞ্জের তারাবো এলাকায় একটি বাসায় থাকতেন।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক এক সহসভাপতি বলেন, 'আমরা জানতাম, সানজিদার সঙ্গে প্রেম ছিল। বিয়ে হয়েছিল কি-না তা সঠিক জানি না।' মৃত্যুর কারণ যা-ই হোক, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসল রহস্য উন্মোচন করে বিচারের দাবি জানান তিনি।
রানার মৃত্যুর খবরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন এবং তারা শোক জানান। আজ (০৩ জুন) শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় কবি নজরুল সরকারি কলেজ মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
টেস্ট ক্রিকেটে সিলেটের পথচলা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। অভিজাত সংস্করণে যা ছিল দেশের অষ্টম ভেন্যু। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পা রাখে দেশের সবচেয়ে সুন্দর এই স্টেডিয়ামটি। তবে মাঠের অভিষেক ম্যাচেই হেরে যায় বাংলাদেশ। তারপর আর কোনো পাঁচ দিনের খেলা গড়ায়নি এই মাঠে। এ নিয়ে স্থানীয়দের আক্ষেপের শেষ নেই।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ফুরাচ্ছে। পাঁচ বছর পর আবারও টেস্ট ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট আয়োজন করতে পারব বলে আশা করছি। এটি আমাদের জন্য খুব একটি উপলক্ষ হবে। কারণ পাঁচ বছর পর সিলেটের মাঠে টেস্ট ক্রিকেট ফিরবে।’
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল সিলেট সফর করেছে। তারা সেখানকার মাঠসহ সব সুযোগ সুবিধা পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সবকিছু দেখে তারা এখানে আরও বেশি ম্যাচ আয়োজনের জন্য উন্মুখ বলে জানিয়েছেন বিসিবির নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান নাদেল।
তিনি যোগ করেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল আমাদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেশ মুগ্ধ। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে আমরা তাদের সব প্রত্যাশা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারব।’
এফটিপি সূচি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজে খেলার কথা নিউজিল্যান্ডের। তবে সিরিজটি হবে দুই ভাগে। প্রথম ভাগে সেপ্টেম্বরের শেষভাগে বাংলাদেশের সঙ্গে ওয়ানডে খেলবে কিউইরা। এই সিরিজ খেলেই বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে দুই দল।
বিশ্বকাপের পর হবে দুই দলের টেস্ট সিরিজ। নভেম্বরের শেষ দিকে আবারও বাংলাদেশে আসবে কিউইরা। বিসিবি প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী ২১ নভেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা সফরকারীদের। এরপর একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে দলটি। ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের প্রথম টেস্ট।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ৩০০ আসনের সীমানা নির্ধারণ করে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রকাশিত গেজেটে কয়েকটি আসনে পরিবর্তন এসেছে।
গত বৃহস্পতিবার ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত গেজেট শনিবার (৩ জুন)বিজি প্রেসের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০২১-এর ধারা ৬-এর উপধারা (৩)-এর অধীনে সংসদের পুনর্নির্ধারিত নির্বাচনী এলাকার প্রাথমিক তালিকা গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রকাশিত হয় এবং ওই বিজ্ঞপ্তির অনুচ্ছেদ ৩-এর অধীন পুনর্নির্ধারিত নির্বাচনী এলাকার বিষয়ে দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত আহ্বান করা হয়।
আরও বলা হয়, পরে নির্ধারিত সময়সূচি মোতাবেক প্রাপ্ত দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামতের ওপর কমিশন কর্তৃক প্রকাশ্য শুনানি গ্রহণ করা হয়। নির্বাচন কমিশন উক্ত আইনের ধারা ৬-এর উপধারা (৪) অনুযায়ী দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত পর্যালোচনা করে প্রাথমিক তালিকায় প্রকাশিত নির্বাচনী এলাকার প্রয়োজনীয় সংশোধন করে সংযুক্ত তপশিল মোতাবেক জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের পুনর্নির্ধারিত সীমানার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করল।
চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে চাপ চাপ রক্ত, ছেঁড়া জামাকাপড়, খাবার, ব্যাগপত্র, রক্তমাখা দেহ। এসবের মাঝেই ভাঙা লাইনের উপর পাওয়া গেলো ছোপ ছোপ রক্তমাখা একটি কবিতার খাতা।
খাতায় লেখা বিভিন্ন রকমের ভালোবাসার কবিতা, মাঝে মাঝে আবার নকশাও আঁকা। হাতে নিয়ে পাতা উল্টাতেই চোখে পড়ল,
‘‘অল্প অল্প মেঘ থেকে হালকা হালকা বৃষ্টি হয়, ছোট্ট ছোট্ট গল্প থেকে ভালোবাসা সৃষ্টি হয়....’’
পাতা উল্টাতেই চোখে পড়ল আরও একটি কবিতা। তার শুরুতে লেখা,
‘ভালোবাসা এই মন তোকে চায় সারাক্ষণ,
আছিস তুই মনের মাঝে
পাশে থাকিস সকাল সাঁঝে।
কী করে তোকে ভুলবে এই মন,
তুই যে আমার জীবন...’
কবিতাটি লেখক কে, কার জন্য এই কবিতা লিখা, তা জানার উপায় নেই। সম্ভবত, কবিতার খাতার মালিক দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনটিতেই ছিলেন। দুর্ঘটনার ভয়াবহতা এতটাই বেশি ছিল যে, সেই কবিতার খাতা ছিটকে এসে পড়েছে ভাঙা লাইনে।
কবিতার খাতার মালিক সুস্থ, আহত না মৃত, তাও জানা সম্ভব হয়নি। যিনি লিখেছেন, তিনি পুরুষ না মহিলা তা-ও জানা সম্ভব হয়নি। তবে লেখা পড়ে বোঝা যায়, কবিতাটি প্রিয় কারও উদ্দেশে লেখা। যাঁর উদ্দেশে এই কবিতা লেখা, এই কবিতার খাতা কি তাঁর কাছেও কোনও দিন পৌঁছাবে! তাও জানার উপায় নেই।
ভারতের ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনাস্থলে এই কবিতার খাতা হাতে পায় আনন্দবাজারের প্রতিনিধি। এভাবেই এক প্রতিবেদনে বর্ণনা তুলে ধরে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির তথ্যমতে, শনিবার ভোর পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৩৩। আহত ৯০০ জনের বেশি। ভেতরে এখনও আটকে আছে অনেক মানুষ।
প্রথম দুই সেটই গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। প্রথমটি নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫ মিনিটে। দ্বিতীয়টিও টাইব্রেকারে। সেটির নিষ্পত্তি ঘণ্টার ওপরে। দুটোতেই জয় নোভাক জকোভিচের। তারপরেরটিও জিতে যান এই সার্বিয়ান। ১৪তম ফ্রেঞ্চ ওপেনের খেলায় স্পেনের আলেজান্দ্রো ফোকিনার সঙ্গে ৩-০ সেটে জয়লাভ করেন তিনি। যে জয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছেন তিনি।
৩৬ বছর বয়সী এই নাম্বার ওয়ান টেনিস তারকা প্রথম সেটে কিছুটা ছন্দহীন ছিলেন। তবে চ্যাম্পিয়নদের ঘুরে দাঁড়াতে তো সময় বেশি লাগে না। জকোভিচও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তারপর ফোকিনাকে কোনো সেট জিততে না দিয়েই ম্যাচ শেষ করেন তিনি।
প্রায় ৪ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই ম্যাচটিতে এক পেশে জয় হলেও প্রতিটি সেটেই উত্তেজনার পারদ ছড়িয়েছেন দুজন। সমর্থকেরাও বারবার হয়েছেন রোমাঞ্চিত। তবে শেষ পর্যন্ত নোভাক জকোভিচের সমর্থকেরাই হাসি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আগামী সোমবার জকোভিচ শেষ ষোলোর ম্যাচ খেলতে নামবেন। সেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে কার্লোস আলকারাজকে পেতে পারেন তিনি।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১৩ ধরনের জ্বালানি তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্যের ওপর থেকে বিদ্যমান ৫ শতাংশ আগাম কর প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করেছে সরকার। অন্যদিকে উৎপাদন পর্যায়ে তরল করা পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেল আমদানিতে প্রতি লিটারে ১৩ দশমিক ৭৫ টাকা করে শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ ছাড়া অন্যান্য জ্বালানি জেট ফুয়েল, ফার্নেস অয়েল, লুব বেইজ অয়েল, কেরোসিনের ক্ষেত্রে প্রতি টনে ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এত দিন এসব জ্বালানি তেল আমদানির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ ছিল।
আমদানি করা পণ্যের যথাযথ মূল্য নির্ধারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্যের ট্যারিফ মূল্য ও ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাত দুটি হেডিংয়ের আওতায় ১২টি এইচএস কোডের বিপরীতে ট্যারিফ মূল্য এবং একটি হেডিংয়ের আওতায় একটি এইচএস কোডের বিপরীতে ন্যূনতম মূল্য বহাল আছে।
পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাতগুলোর মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিনিয়ত ওঠানামা করার কারণে অতি প্রয়োজনীয় এই পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে এ সুপারিশ করা হয়েছে।
এলপিজি সিলিন্ডারের বিষয়ে বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, এলপিজি সিলিন্ডার তৈরির কাঁচামাল ইস্পাতের পাত (স্টিল শিট) ও ওয়েল্ডিংয়ের তার আমদানির করছাড় সুবিধা তুলে নেওয়া হয়েছে। এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনকারীরা কাঁচামালে শুল্ককর ছাড় ১২ বছর ধরে ভোগ করে আসছে। তাই রাজস্ব আহরণের স্বার্থে শুধু দুটি উপকরণে ছাড় তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে অন্যান্য করছাড়ের মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে।
পেট্রোলিয়াম তেল এবং বিটুমিনাস খনিজ থেকে প্রাপ্ত তেলের ওপর বিদ্যমান শুল্ক ৫ শতাংশ। নতুন বাজেট অনুযায়ী এসবের প্রতি ব্যারেলের দাম ১ হাজার ১১৭ টাকা (লিটার প্রতি ৭.০২ টাকা) হতে পারে। প্রতি টন ফার্নেস অয়েলের সুনির্দিষ্ট শুল্ক ৯ হাজার ১০৮ টাকা (লিটার প্রতি ৯.১০ টাকা) করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।