
শীতে হাঁপানি বা অ্যাজমার রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। হাঁপানি দীর্ঘমেয়াদি রোগ, যার লক্ষণ কাশি, শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপবোধ হওয়া এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় গলা-বুকে শোঁ শোঁ শব্দ হওয়া। কিছু ক্ষেত্রে কাশি ছাড়া অন্য লক্ষণগুলো তখন থাকে না, বিশেষ করে কাফ ভেরিয়েন্ট অ্যাজমা থাকলে। হাঁপানির সুনির্দিষ্ট কারণ নেই। বংশগত ও পরিবেশের কারণে হাঁপানি বাড়ে।
অ্যাজমা রোগীর শ্বাসনালিতে দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ হয়ে থাকে। একই পরিবেশে একজনের অ্যাজমা অ্যাটাক হচ্ছে কিন্তু অন্য জনের হচ্ছে না। এর কারণ ওই আবহাওয়ায় এমন কিছু জিনিস আছে, যার অ্যাজমা অ্যাটাক হলো তার শ্বাসনালি ওই জিনিসের প্রতি সংবেদনশীল। একে বলা হয় এজমা ট্রিগার বা অ্যালার্জেন। অ্যালার্জেন ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয়। কারও একটা-দুটো, কারও পাঁচ-সাতটাও থাকতে পারে। অ্যাজমা অ্যাটাক থেকে বাঁচার জন্য অবশ্যই ধরন অনুযায়ী এগুলো থেকে দূরে থাকতে হবে। ভাইরাসের সংক্রমণ, ঠা-া আবহাওয়া, বিভিন্ন প্রাকৃতিক পরিবেশগত কারণ, মানসিক চাপ, মাত্রাতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম ও কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ হাঁপানির সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। নির্দিষ্ট কোনো অ্যালার্জি-জাতীয় খাবারের কারণেও অ্যাজমা বাড়ে। রোগীর অসুস্থতার ইতিহাস ও ফুসফুসের পরীক্ষা-পালমোনারি ফাংশন টেস্ট/স্পাইরোমেট্রির সাহায্যে হাঁপানি রোগ নির্ণয় করা সম্ভব। অ্যাজমা চিকিৎসা করা হয় এই রোগের তীব্র আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া এবং দীর্ঘ সময় এই রোগের স্থায়িত্ব রোধ করতে।
ক. দ্রুত ত্রাণ বা উদ্ধারকারী ওষুধ : বিটা-অ্যাগোনিস্ট যেমনসালবিউটামল বা লেভো সালবিউটামলএগুলো শ্বাসনালিকে দ্রুত শিথিল করে এবং নিঃশ্বাস স্বাভাবিক করে।
খ. দীর্ঘমেয়াদি নিয়ন্ত্রণ বা প্রতিরোধকারী : ইনহেলড কর্টিকোস্টেরয়েডস : যেমনফ্লুটিকাসন, বুডিসোনাইড, বিক্লোমিথাসোন ইত্যাদি। মিথাইলজ্যান্থিন : যেমনডক্সোফাইলিন, এমাইনোফাইলিন বাথিয়োফাইলিন। ইমিউনোথেরাপি : যেমনওমালিজুমাব, রেসলিজুমাব ইত্যাদি। দীর্ঘকাল-কার্যকর এন্টিকোলিনারজিকস : যেমনটিওট্রোপিয়াম ও ইপ্রাট্রোপিয়াম। লিউকোট্রাইন রিসেপ্টর এন্টাগনিস্ট বা লিউকোট্রাইন মডিফায়ার্স : যেমনমন্টেলুকাস্ট, জাফিরলুকাস্ট ইত্যাদি। মাস্ট-সেল স্থিতিশীলকারক : যেমনক্রোমোলিন সোডিয়াম।
গ. ব্রঙ্কিয়াল থার্মোপ্লাস্টি : যাদের অ্যাজমা সমস্যা গুরুতর এবং এই থেরাপি নেওয়ার মতো শারীরিক অবস্থা রয়েছে এফডিএ দ্বারা তাদের চিকিৎসা করা হয়।
আধুনিক চিকিৎসায় মুখে খাবার ওষুধের চেয়ে ইনহেলারের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। কারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, কম পরিমাণ ওষুধ লাগে। ইনহেলার অ্যাজমা রোগীর এমন চিকিৎসা পদ্ধতি, যা রোগী শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে টেনে নেওয়াও ওষুধ শ্বাসনালিতে পৌঁছায়। হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের প্রথম ও দ্রুত চিকিৎসা হচ্ছে ইনহেলার। ইনহেলার শ্বাসকষ্ট লাঘবে খুব দ্রুত কাজ করে, যেখানে সেবনযোগ্য ওষুধ খেলে পরিত্রাণে বেশি সময় লাগে, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও বেশি। অ্যাজমা রোগীর বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা ও ফলোআপ একান্ত জরুরি।
পথনাটকের প্রসঙ্গ উঠলে যে নাম সবার প্রথমে আসবে সেটি সফদার হাশমি। সত্তর-আশির দশকে তার নির্দেশিত পথনাটক ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এই নাট্যকারকে নিয়ে লিখেছেন তৃষা বড়ুয়া
পথনাটকের অগ্রদূত
মৃত্যু কখনো কখনো জীবনের চেয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ভগৎ সিং, চে গুয়েভারা বা গৌরি লঙ্কেশের মতো মানুষ কী করেছিলেন, তার বিস্তারিত অনেকে হয়তো জানেন না। তবে এটা অন্তত সবাই জানেন, এই ব্যক্তিরা এমন কিছুর জন্য জীবন দিয়েছিলেন যা তারা বিশ্বাস করতেন, অন্তরে ধারণ করতেন। মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তারা এমন এক উচ্চতায় পৌঁছেছিলেন যা তাদের অর্জনকে ছাড়িয়ে যায়। চে গুয়েভারা বা ভগৎ সিংকে যেমন তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শের জন্য জীবন দিতে হয়, আশির দশকে ভারতের এক নাট্যশিল্পীকেও তার মতাদর্শিক অবস্থানের জন্য মাত্র ৩৪ বছর বয়সে পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হয়। তার নাম সফদার হাশমি। ১৯৮৯ সালের ১ জানুয়ারি দিল্লির উপকণ্ঠে হাল্লা বোল নামে পথনাটকে অভিনয়ের সময় তার ওপর হামলা হয়। পরের দিন হাসপাতালে ওই নাট্যকারের মৃত্যু হয়। ৩ জানুয়ারি সফদারের শেষকৃত্যের মিছিলে অংশ নেন ১৫ হাজার শিল্পী, বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক কর্মী, শ্রমিকসহ অনেকে। কোনো নাট্যশিল্পীর শেষযাত্রায় এত বিপুলসংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণ দিল্লির ইতিহাসে সম্ভবত ওই প্রথম এবং ওই শেষ। ৪ জানুয়ারি সফদারের মৃত্যুর ৪৮ ঘণ্টা পার হয়নি, তার স্ত্রী, সহ-অভিনেতা ও কমরেড মলয়াশ্রী হাশমি তার দল নিয়ে ঠিক হামলার জায়গাতেই অসমাপ্ত হাল্লা বোল নাটকটি শেষ করেন। ওই বছরের ১২ এপ্রিল সফদারের জন্মদিন ভারতজুড়ে উদযাপন করা হয়। দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে সফদারের স্মরণে সেদিন প্রায় ৩০ হাজার পথনাটক মঞ্চস্থ হয়। তার মৃত্যুর আগে যেসব পথনাটক দল ঝিমিয়ে পড়েছিল, তারাও সেদিন ঘরে বসে থাকেনি। শত শত নতুন দলের আবির্ভাব ঘটে ওই সময়ে। সফদারের মৃত্যু সত্যিকার অর্থে ভারতের স্ট্রিট থিয়েটারকে উজ্জীবিত করেছিল। এই সফদার হাশমি কে, যার শেষযাত্রায় হাজার হাজার মানুষ শামিল হয়? পথনাটকে তার ভূমিকা কী? তিনি কি কেবলই একজন রোমান্টিক তরুণ ছিলেন যিনি অল্প বয়সে জনগণের নায়ক হয়ে উঠেছিলেন? ভারতের নাট্যশিল্পী সুধনভো দেশপান্ডে বলেন, ‘সফদার হাশমি ততটুকুই রোমান্টিক ছিলেন যতটা একজন বিপ্লবীকে হতে হয়। আর্জেন্টিনার মার্ক্সবাদী বিপ্লবী চে গুয়েভারা বলেছিলেন, অসীম ভালোবাসার অনুভূতি সত্যিকারের বিপ্লবীর পথপ্রদর্শক। ভালোবাসার ক্ষমতা ব্যতীত কারও পক্ষে প্রকৃত বিপ্লবী হওয়া সম্ভব নয়। সফদার রাজনৈতিক কর্মী ছিলেন, কমিউনিস্ট ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, শিল্পীদের সমাজের প্রতি দায়-দায়িত্ব আছে। তার এই দায়িত্ববোধই তাকে মার্ক্সবাদের প্রতি আকৃষ্ট করে।’
শৈশব ও রাজনীতি
১৯৫৪ সালের ১২ এপ্রিল দিল্লিতে এক বামপন্থি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন সফদার। দিল্লির সেন্ট স্টিফেনস কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক করেন তিনি। এরপর দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে মাস্টার্স করেন সফদার। ছাত্রাবস্থাতেই কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার (মার্ক্সবাদী) ছাত্র সংগঠন স্টুডেন্টস ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার (এসএফআই) সাংস্কৃতিক ফ্রন্টের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। পরে সফদার ভারতের নাট্যকর্মীদের সংগঠন ইন্ডিয়ান পিপলস থিয়েটার অ্যাসোসিয়েশনে (আইপিটিএ) যোগ দেন। স্নাতক পাসের আগে ও পরে কিমলেশ, দেখতে লেনাসহ আইপিটিএর বেশ কয়েকটি প্রযোজনায় কাজ করেন তিনি। ১৯৭৩ সালে জন নাট্য মঞ্চ নামে নয়াদিল্লিতে একটি নাটকের দল প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯ বছর বয়সী সফদার ছিলেন ওই দলের আহ্বায়ক। জন নাট্য মঞ্চের বেশির ভাগ সদস্য ছিলেন অপেশাদার থিয়েটারকর্মী। সত্তরের দশকে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ উঠলে কুরসি, কুরসি, কুরসি (চেয়ার, চেয়ার, চেয়ার) নামে নাটক জনসম্মুখে নিয়ে আসেন সফদার। নাটকটিতে এক রাজার গল্প বলা হয় যিনি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে তার সিংহাসনে বসানোর চেষ্টা করলেও সিংহাসনটি তার পিছু ছাড়ে না। এই নাটক সে সময়ে নয়াদিল্লির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রস্থল বোট ক্লাবে টানা সাত দিন প্রচুর দর্শক উপভোগ করেন। কুরসি, কুরসি, কুরসির সাফল্য জন নাট্য মঞ্চের জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট ছিল। ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত নাটকটি উন্মুক্তই পরিবেশন করে সফদারের দল। ওই বছরের ২৫ জুন ইন্দিরা গান্ধী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলে জন নাট্য মঞ্চের পক্ষে নাটক প্রদর্শন কঠিন হয়ে পড়ে। জরুরি অবস্থার সময় নাট্যদলে কাজ করতে না পারায় দিল্লি, কাশ্মীর ও উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন সফদার।
১৯৭৭ সালে জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়া হলে ফের সক্রিয় হয়ে ওঠে জন নাট্য মঞ্চ। ১৯৭৮ সালের ২০ নভেম্বর ভারতের এক শ্রমিক সংগঠনের সমাবেশে দুই লাখ মানুষের সামনে মেশিন নামে নাটক নিয়ে হাজির হয় জন নাট্য মঞ্চ। বাইসাইকেল রাখার জায়গা ও খাবার গরম দেওয়ার জন্য ছোট চুলার দাবিতে আন্দোলন করছিলেন উত্তর প্রদেশ রাজ্যের গাজিয়াবাদ শহরের এক কারখানার শ্রমিকরা। তাদের আন্দোলনে গুলি চালানো হলে ছয় শ্রমিকের মৃত্যু হয়। ওই শ্রমিক আন্দোলনের ওপর ভিত্তি করে নাট্যদলটি মেশিন মঞ্চস্থ করে। মাত্র ১৩ মিনিটের ওই নাটক শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। এরপর ক্ষুদ্র কৃষকদের বঞ্চনা নিয়ে গাও সে শাহার তাক, বেকারত্ব নিয়ে তিন ক্রোর, নারীর প্রতি সহিংসতা নিয়ে অওরাত ও মূল্যস্ফীতি নিয়ে ডিটিসি কি ধুন্ধলি পরিবেশন করে জন নাট্য মঞ্চ। সে সময় এসব নাটকের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার পাশাপাশি দূরদর্শনের জন্য বেশ কয়েকটি প্রামাণ্য চিত্র ও টিভি সিরিয়ালও প্রযোজনা করেন সফদার। লেখেন শিশুদের জন্য বই। ভারতীয় মঞ্চনাটকের সমালোচনাও সে সময় তাকে করতে দেখা যায়। জন নাট্য মঞ্চের কার্যত নির্দেশক ছিলেন সফদার। তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দলটির ২৪টি নাটকের প্রায় চার হাজার প্রদর্শনী হয়। এসব নাটক মূলত শ্রমিক শ্রেণির এলাকা ও কারখানায় দেখানো হতো। ১৯৭৯ সালে মঞ্চ অভিনেত্রী ও বাম রাজনৈতিক কর্মী মলয়াশ্রীর সঙ্গে সফদারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (পিটিআই) ও দ্য ইকোনমিক টাইমসে সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেন সফদার। তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রেস ইনফরমেশন অফিসারও ছিলেন। ১৯৮৪ সালে চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে নাট্যচর্চায় পুরোপুরি মনোনিবেশ করেন সফদার।
পথনাটকের যাত্রা
জরুরি অবস্থা জারির আগে জন নাট্য মঞ্চের নাটক আয়োজন করত ভারতের কিষান সভা ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার পর দলটির সদস্যরা বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হন। তারা বুঝতে পারেন, তাদের নাটক ধারাবাহিক আয়োজন করার মতো অর্থ এসব সংগঠনের নেই। উন্মুক্ত স্থানে মঞ্চ তৈরি, লাইট ও সাউন্ড টেকনিশিয়ান ভাড়া করতে ওই আমলে কমপক্ষে পাঁচ হাজার রুপি খরচ হতো। প্রতিবার এত টাকা জোগাড় করা শ্রমিক সংগঠনগুলোর জন্য কঠিন ছিল। একটা উপায় হতে পারত, অন্যসব নাট্যদলের মতো দিল্লির প্রতিষ্ঠিত অডিটোরিয়ামে জন নাট্য মঞ্চ তাদের নাটক পরিবেশন করে যাবে, শ্রমিক-কৃষকরা সেখানে গিয়ে নাটক উপভোগ করবে। সফদার হাশমির এই বিকল্প মনঃপূত ছিল না। তার বক্তব্য ছিল পরিষ্কার। শ্রমিক সংগঠনগুলোর কাছে যদি দেড়/দুই ঘণ্টার নাটক আয়োজন করার মতো অর্থ না থাকে, তাহলে এত দীর্ঘ সময়ের নাটক বানানোর দরকার নেই, স্বল্প দৈর্ঘ্যরে নাটক তাদের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে মঞ্চেরও দরকার পড়বে না। তার এই চিন্তা ও আবেগ থেকেই জন নাট্য মঞ্চের পথনাটকের যাত্রা শুরু হয়। ভারতজুড়ে এখন অনেক পথনাটক পরিবেশন করা হয় কিন্তু সত্তরের দশকে জন নাট্য মঞ্চের তরুণ অপেশাদার নাট্যকর্মীদের ধারণা ছিল না, তারা কীসের সূত্রপাত ঘটাতে যাচ্ছেন। ওই সময় তাদের চারপাশে পথনাটকের কোনো প্রতিষ্ঠিত মডেল ছিল না, যেখান থেকে তারা কিছু শিখতে পারবেন। প্রথম দিকে জন নাট্য মঞ্চের কর্মীরা বিভিন্ন লেখকের ছোট নাটক পড়া শুরু করেন কিন্তু খুব দ্রুতই তারা বুঝতে পারেন, নাটকের মাধ্যমে জনগণকে যে বার্তা তারা দিতে চাইছেন, তা ওইসব নাটকের মাধ্যমে সম্ভব নয়। তখন কর্মীরা নিজেরাই নাটক লেখা শুরু করেন। জরুরি অবস্থার আগে সফদার হাশমি কখনো নাটক লেখেননি। শুধু তিনি নন, জন নাট্য মঞ্চের কারোরই নাটক লেখার অভিজ্ঞতা ছিল না। ১৯৭৮ সালে উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদ শহরে আন্দোলন চলাকালে ছয় শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনা প্রবলভাবে নাড়া দেয় জন নাট্য মঞ্চের কর্মীদের। সফদারসহ অন্যরা বুঝতে পারেন, নাটকের বিষয়বস্তু তারা পেয়ে গেছেন। সফদার দলের সদস্য রাকেশ সাক্সেনাকে নিয়ে মেশিনের চিত্রনাট্য লিখে ফেলেন। দলের অন্য সদস্যরাও নাটকটি দাঁড় করাতে তাদের মতামত দিয়েছিলেন। মেশিন বিপুলসংখ্যক দর্শককে মুগ্ধ করে। তারা এর আগে এ ধরনের নাটক দেখেনি। মেশিনের সাফল্য নিয়ে পরে সফদার বলেছিলেন, ‘নাটকটির শেষ গান গাওয়ার পর শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা আমাদের তাদের কাঁধে তুলে নেন। আমরা এক দিনেই নায়ক হয়ে গিয়েছিলাম। পরের দিন ২১ নভেম্বর নয়াদিল্লির বোট ক্লাবে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার শ্রমিকের সামনে আমরা নাটকটি ফের পরিবেশন করি। অনেক মানুষ সেদিন মেশিনের প্রশংসা করেছিলেন। অনেকে নাটকটি রেকর্ডও করেন। মাসখানেক পর আমরা জানতে পারি, ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ তাদের ভাষায় মেশিন পরিবেশন করছেন।’ মেশিনের এক হাজার প্রদর্শনীর পর সফদার বলেছিলেন, ‘নাটকটির প্রতি শ্রমিকদের এত ভালোবাসা দেখে শুরুতে অবাক হয়ে যেতাম। এটি এত জনপ্রিয় হওয়ার কারণ বুঝে উঠতে পারতাম না। পরে বুঝতে পারি, মেশিন সফল হওয়ার কারণ প্রথমত এটির সংলাপ, যা গীতিধর্মী, গদ্য কবিতার কাছাকাছি। দ্বিতীয়ত, বিমূর্ততার মধ্যেই মেশিন প্রকৃত সত্য তুলে ধরে এবং এর ফলে বিমূর্ততা ও বাস্তবতার মধ্যে দর্শক স্বচ্ছন্দে সংযোগ ঘটাতে পারেন।
তৃতীয়ত, অল্প সময়ের ভেতরে সংলাপে সঠিক শব্দের প্রয়োগ নাটকটির বক্তব্য সহজ করে তোলে, যা বুঝতে দর্শকদের সমস্যা হয় না।’
অমরত্বের পথে
১৯৮৯ সালে নতুন বছরের প্রথম দিন উত্তর প্রদেশের ঝান্দাপুর গ্রামের শাহিবাবাদ এলাকায় হাল্লা বোল নামে পথনাটক পরিবেশন করছিলেন জন নাট্য মঞ্চের কর্মীরা। হঠাৎ একদল ব্যক্তি তাদের ওপর রড-লাঠিসোঁটা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সফদারের মাথায় লোহার রড দিয়ে তারা ২০ বারের বেশি আঘাত করে। সফদারের ওপর হামলার ঘটনা পরের দিন ভারতের অনেক পত্রিকা প্রথম পাতায় ছাপে। অভিযোগের আঙুল ওঠে তৎকালীন ক্ষমতাসীন কংগ্রেস সরকারের দিকে। রাজীব গান্ধী সে সময় ছিলেন প্রধানমন্ত্রী আর স্থানীয় নেতা সবাই ছিলেন কংগ্রেসের। সফদারকে দেখতে ভারতের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা বুটা সিং হাসপাতালে গেলে তাকে আইসিইউতে ঢুকতে দেয়নি ক্ষুব্ধ জনতা। সফদারের পথচলা সেদিন শাসকশ্রেণি থামিয়ে দিলেও তার কীর্তি মুছে ফেলতে পারেনি। এ কারণে তার গান ও কবিতার লাইন আজও ভারতের আন্দোলন-সংগ্রামে শোনা যায়। ২০২০ সালে শাহীনবাগ আন্দোলনেও সফদারের ছবি হাতে দাঁড়াতে দেখা যায় লোকজনকে। সফদার মানুষের লড়াইয়ে বেঁচে আছেন, বেঁচে থাকবেন ঠিক যেমনটা আছেন চে গুয়েভারা, ভগৎ সিংরা।
মোবাইল ফোনে আজকাল হাত বাড়ালেই ডেটা। প্রায় সব টেলিকম সংস্থাই দিচ্ছে আনলিমিটেড ডেটা অফার/প্ল্যান। তবে শুনতে আনলিমিটেড হলেও তার ভেতরেই লুকানো থাকে ছোট্ট কিন্তু। অর্থাৎ শুনতে আপডেট হলেও মাসিক বা দৈনিক হিসেবে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ডেটা। আর সেই ডেটা লিমিট শেষ করে ফেললে নেট কানেকশন বন্ধ হয় না বটে, তবে তা এত কম স্পিডে নেমে আসে যে ব্যবহার করা কঠিন হয়ে পড়ে।
শুধু কাজকর্মই নয়, বিনোদনের জন্যও ব্যবহার হয় এই ডেটা। একটা সিনেমা বা সিরিজ দেখলেন তাতেই নিঃশেষ হয়ে গেল অর্ধেক ডেটা। আর গেম খেলার অভ্যাস থাকলে তো কথাই নেই। বিনোদন বজায় রাখতে হলে গুনতে হবে প্ল্যানের বাইরে মাশুল। যদি প্রিপেড প্ল্যান ব্যবহার করেন তাহলে রিচার্জ করে পেতে হবে অতিরিক্ত ডেটা। পোস্টপেড হলে তো আরও সমস্যা। অতিরিক্ত ডেটার জন্য গুনতে হতে পারে অতিরিক্ত মাশুল। সিরিজ দেখা বা গেম খেলার বাইরেও কিন্তু মোবাইলে ডেটা পুড়তে থাকে। তবে মোবাইল থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা যায় ডেটা খরচার পরিমাণ।
আসুন, জেনে নিই কীভাবে Android ফোনে ডেটা খরচ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে সহজেই
প্রথমেই চলে যান Settings-এ। সেখানে গিয়ে Network/ SIM/ Internet অপশনে গিয়ে বেছে নিন Data or Data Saver অপশন। সার্চ বারে সার্চও করতে পারেন এই নামে।
এবার Internet অপশনের মধ্যেই পাবেন Data warning & limit.
সেখানে গিয়ে Mobile data usage cycle-এ গেলেই আপনি ডেটা সাইকেলের ডিউরেশন সেট করতে পারবেন।
এবার Set data limit-এ গিয়ে পছন্দসই ডেটা লিমিট লিখে দিন। তবে সেই লিমিটের বাইরে ডেটা খরচ করতে গেলেই মোবাইলের পক্ষ থেকে আপনি পাবেন সতর্কবার্তা।
এ ছাড়া প্রচুর অ্যাপই অনেক বেশি পরিমাণ ডেটা খেতে থাকে ভেতরে ভেতরে। সেই অ্যাপগুলোকে শনাক্ত করে আনইনস্টল করে দিতে পারলেই বাঁচবে আপনার ডেটাও। পাশাপাশি বাঁচবে মোবাইলের চার্জও।
দূষণের কারণে শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা সারা বছরই ত্বকের সমস্যা থাকে। তবে শীতকালে সমস্যা যেন একটু বেশিই হয়। ত্বকের বহিঃস্তর বা এপিডারমিসে এ সময়ে জলীয় ভাব কমে যাওয়ায় শুষ্কতা বাড়ে। পাশাপাশি শীতকালে পানি খাওয়ার পরিমাণ কমে যায়। ফলে ত্বকের শুষ্কতা বাড়ে। সব মিলিয়ে হাত-পা-ঠোঁট ফেটে যাওয়া বা চামড়া ওঠা খুব সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়ায়।
কী করবেন : ঠোঁট শুকোতে শুরু করলে গ্লিসারিন, নারকেল তেল ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে। দুপুরে খাওয়ার পরে এবং রাতে শোয়ার আগে ঠোঁটে নারকেল তেল বা পেট্রোলিয়াম জেলি লাগালে উপকার পাওয়া যাবে। এ ছাড়া গরম পানিতে একটু লবণ ফেলে পাঁচ-সাত মিনিট হাত বা পা ডুবিয়ে রেখে তারপর শুকনো করে মুছে ক্রিম বা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজন হলে ত্বকবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে ইউরিয়া ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে।
একজিমা ও তার চিকিৎসা : শীতকালে ত্বকের এপিডারমিসের কেরাটিন স্তর থেকে জলকণা বেশি পরিমাণে বেরিয়ে গেলে স্তরটি শুষ্ক হয়ে ফেটে যায়। জায়গায় জায়গায় লাল হয়ে ফুলে ওঠে। শুরু হয় চুলকানি, রসও গড়াতে পারে। একপর্যায়ে জায়গাটি শক্ত হয়ে যায়। একে প্রাথমিকভাবে একজিমা বলা হয়। একজিমা হলে বেশ কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। ডিটারজেন্ট, সাবান, আনাজের রস ইত্যাদি আক্রান্ত স্থানে লাগানো যায় না। একজিমার চিকিৎসায় খাওয়ার জন্য হিস্টামিন-জাতীয় ওষুধ ও মাখার জন্য স্টেরয়েড ক্রিম ব্যবহার করা হয়। মারাত্মক একজিমা দেখা দিলে অ্যান্টিবায়োটিকও খেতে হতে পারে।
রাজধানীর সরকারি কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এম ওয়াসিম রানার (৩০) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন তার বন্ধুরা। শুক্রবার (০২ জুন) রাত সাড়ে ১২টার দিকে চানখারপুলের একটি বাসায় তার বন্ধুরা তাকে দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে।
অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রানার বন্ধু ইমরান হোসেন বাবু জানান, 'রানা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলায়। কয়েক দিন যাবৎ রানার খু্ব মন খারাপ ছিল। একাকী থাকতে চাইত। চুপচাপ থাকত। তবে কী চিন্তা করত সে ব্যাপারে কিছু বলত না। তাই আমি তাকে বলেছিলাম- বন্ধু, তুমি কিছুদিনের জন্য কক্সবাজার ঘুরে আস।'
ঘটনার পরপরই রানার স্ত্রী পরিচয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে রাত দেড়টার সময় সানজিদা নামে এক মেয়েকে আহাজারি করতে দেখা যায়। সানজিদা আক্তার (জান্নাতি) কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
সানজিদা আক্তারের প্রতিবেশী মাইদুল ইসলাম জানান, 'সানজিদা আপুকে আমরা জান্নাতি আপু বলে ডাকি। রানা ভাইয়ের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে অনেকদিন আগে। রাজনৈতিক কারণে বিষয়টি জানাজানি হয়নি। জান্নাতি আপু ডেমরা রূপগঞ্জের তারাবো এলাকায় একটি বাসায় থাকতেন।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক এক সহসভাপতি বলেন, 'আমরা জানতাম, সানজিদার সঙ্গে প্রেম ছিল। বিয়ে হয়েছিল কি-না তা সঠিক জানি না।' মৃত্যুর কারণ যা-ই হোক, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসল রহস্য উন্মোচন করে বিচারের দাবি জানান তিনি।
রানার মৃত্যুর খবরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন এবং তারা শোক জানান। আজ (০৩ জুন) শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় কবি নজরুল সরকারি কলেজ মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
টেস্ট ক্রিকেটে সিলেটের পথচলা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। অভিজাত সংস্করণে যা ছিল দেশের অষ্টম ভেন্যু। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পা রাখে দেশের সবচেয়ে সুন্দর এই স্টেডিয়ামটি। তবে মাঠের অভিষেক ম্যাচেই হেরে যায় বাংলাদেশ। তারপর আর কোনো পাঁচ দিনের খেলা গড়ায়নি এই মাঠে। এ নিয়ে স্থানীয়দের আক্ষেপের শেষ নেই।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ফুরাচ্ছে। পাঁচ বছর পর আবারও টেস্ট ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট আয়োজন করতে পারব বলে আশা করছি। এটি আমাদের জন্য খুব একটি উপলক্ষ হবে। কারণ পাঁচ বছর পর সিলেটের মাঠে টেস্ট ক্রিকেট ফিরবে।’
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল সিলেট সফর করেছে। তারা সেখানকার মাঠসহ সব সুযোগ সুবিধা পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সবকিছু দেখে তারা এখানে আরও বেশি ম্যাচ আয়োজনের জন্য উন্মুখ বলে জানিয়েছেন বিসিবির নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান নাদেল।
তিনি যোগ করেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল আমাদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেশ মুগ্ধ। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে আমরা তাদের সব প্রত্যাশা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারব।’
এফটিপি সূচি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজে খেলার কথা নিউজিল্যান্ডের। তবে সিরিজটি হবে দুই ভাগে। প্রথম ভাগে সেপ্টেম্বরের শেষভাগে বাংলাদেশের সঙ্গে ওয়ানডে খেলবে কিউইরা। এই সিরিজ খেলেই বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে দুই দল।
বিশ্বকাপের পর হবে দুই দলের টেস্ট সিরিজ। নভেম্বরের শেষ দিকে আবারও বাংলাদেশে আসবে কিউইরা। বিসিবি প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী ২১ নভেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা সফরকারীদের। এরপর একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে দলটি। ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের প্রথম টেস্ট।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ৩০০ আসনের সীমানা নির্ধারণ করে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রকাশিত গেজেটে কয়েকটি আসনে পরিবর্তন এসেছে।
গত বৃহস্পতিবার ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত গেজেট শনিবার (৩ জুন)বিজি প্রেসের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০২১-এর ধারা ৬-এর উপধারা (৩)-এর অধীনে সংসদের পুনর্নির্ধারিত নির্বাচনী এলাকার প্রাথমিক তালিকা গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রকাশিত হয় এবং ওই বিজ্ঞপ্তির অনুচ্ছেদ ৩-এর অধীন পুনর্নির্ধারিত নির্বাচনী এলাকার বিষয়ে দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত আহ্বান করা হয়।
আরও বলা হয়, পরে নির্ধারিত সময়সূচি মোতাবেক প্রাপ্ত দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামতের ওপর কমিশন কর্তৃক প্রকাশ্য শুনানি গ্রহণ করা হয়। নির্বাচন কমিশন উক্ত আইনের ধারা ৬-এর উপধারা (৪) অনুযায়ী দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত পর্যালোচনা করে প্রাথমিক তালিকায় প্রকাশিত নির্বাচনী এলাকার প্রয়োজনীয় সংশোধন করে সংযুক্ত তপশিল মোতাবেক জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের পুনর্নির্ধারিত সীমানার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করল।
চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে চাপ চাপ রক্ত, ছেঁড়া জামাকাপড়, খাবার, ব্যাগপত্র, রক্তমাখা দেহ। এসবের মাঝেই ভাঙা লাইনের উপর পাওয়া গেলো ছোপ ছোপ রক্তমাখা একটি কবিতার খাতা।
খাতায় লেখা বিভিন্ন রকমের ভালোবাসার কবিতা, মাঝে মাঝে আবার নকশাও আঁকা। হাতে নিয়ে পাতা উল্টাতেই চোখে পড়ল,
‘‘অল্প অল্প মেঘ থেকে হালকা হালকা বৃষ্টি হয়, ছোট্ট ছোট্ট গল্প থেকে ভালোবাসা সৃষ্টি হয়....’’
পাতা উল্টাতেই চোখে পড়ল আরও একটি কবিতা। তার শুরুতে লেখা,
‘ভালোবাসা এই মন তোকে চায় সারাক্ষণ,
আছিস তুই মনের মাঝে
পাশে থাকিস সকাল সাঁঝে।
কী করে তোকে ভুলবে এই মন,
তুই যে আমার জীবন...’
কবিতাটি লেখক কে, কার জন্য এই কবিতা লিখা, তা জানার উপায় নেই। সম্ভবত, কবিতার খাতার মালিক দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনটিতেই ছিলেন। দুর্ঘটনার ভয়াবহতা এতটাই বেশি ছিল যে, সেই কবিতার খাতা ছিটকে এসে পড়েছে ভাঙা লাইনে।
কবিতার খাতার মালিক সুস্থ, আহত না মৃত, তাও জানা সম্ভব হয়নি। যিনি লিখেছেন, তিনি পুরুষ না মহিলা তা-ও জানা সম্ভব হয়নি। তবে লেখা পড়ে বোঝা যায়, কবিতাটি প্রিয় কারও উদ্দেশে লেখা। যাঁর উদ্দেশে এই কবিতা লেখা, এই কবিতার খাতা কি তাঁর কাছেও কোনও দিন পৌঁছাবে! তাও জানার উপায় নেই।
ভারতের ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনাস্থলে এই কবিতার খাতা হাতে পায় আনন্দবাজারের প্রতিনিধি। এভাবেই এক প্রতিবেদনে বর্ণনা তুলে ধরে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির তথ্যমতে, শনিবার ভোর পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৩৩। আহত ৯০০ জনের বেশি। ভেতরে এখনও আটকে আছে অনেক মানুষ।
প্রথম দুই সেটই গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। প্রথমটি নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫ মিনিটে। দ্বিতীয়টিও টাইব্রেকারে। সেটির নিষ্পত্তি ঘণ্টার ওপরে। দুটোতেই জয় নোভাক জকোভিচের। তারপরেরটিও জিতে যান এই সার্বিয়ান। ১৪তম ফ্রেঞ্চ ওপেনের খেলায় স্পেনের আলেজান্দ্রো ফোকিনার সঙ্গে ৩-০ সেটে জয়লাভ করেন তিনি। যে জয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছেন তিনি।
৩৬ বছর বয়সী এই নাম্বার ওয়ান টেনিস তারকা প্রথম সেটে কিছুটা ছন্দহীন ছিলেন। তবে চ্যাম্পিয়নদের ঘুরে দাঁড়াতে তো সময় বেশি লাগে না। জকোভিচও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তারপর ফোকিনাকে কোনো সেট জিততে না দিয়েই ম্যাচ শেষ করেন তিনি।
প্রায় ৪ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই ম্যাচটিতে এক পেশে জয় হলেও প্রতিটি সেটেই উত্তেজনার পারদ ছড়িয়েছেন দুজন। সমর্থকেরাও বারবার হয়েছেন রোমাঞ্চিত। তবে শেষ পর্যন্ত নোভাক জকোভিচের সমর্থকেরাই হাসি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আগামী সোমবার জকোভিচ শেষ ষোলোর ম্যাচ খেলতে নামবেন। সেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে কার্লোস আলকারাজকে পেতে পারেন তিনি।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১৩ ধরনের জ্বালানি তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্যের ওপর থেকে বিদ্যমান ৫ শতাংশ আগাম কর প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করেছে সরকার। অন্যদিকে উৎপাদন পর্যায়ে তরল করা পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেল আমদানিতে প্রতি লিটারে ১৩ দশমিক ৭৫ টাকা করে শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ ছাড়া অন্যান্য জ্বালানি জেট ফুয়েল, ফার্নেস অয়েল, লুব বেইজ অয়েল, কেরোসিনের ক্ষেত্রে প্রতি টনে ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এত দিন এসব জ্বালানি তেল আমদানির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ ছিল।
আমদানি করা পণ্যের যথাযথ মূল্য নির্ধারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্যের ট্যারিফ মূল্য ও ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাত দুটি হেডিংয়ের আওতায় ১২টি এইচএস কোডের বিপরীতে ট্যারিফ মূল্য এবং একটি হেডিংয়ের আওতায় একটি এইচএস কোডের বিপরীতে ন্যূনতম মূল্য বহাল আছে।
পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাতগুলোর মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিনিয়ত ওঠানামা করার কারণে অতি প্রয়োজনীয় এই পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে এ সুপারিশ করা হয়েছে।
এলপিজি সিলিন্ডারের বিষয়ে বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, এলপিজি সিলিন্ডার তৈরির কাঁচামাল ইস্পাতের পাত (স্টিল শিট) ও ওয়েল্ডিংয়ের তার আমদানির করছাড় সুবিধা তুলে নেওয়া হয়েছে। এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনকারীরা কাঁচামালে শুল্ককর ছাড় ১২ বছর ধরে ভোগ করে আসছে। তাই রাজস্ব আহরণের স্বার্থে শুধু দুটি উপকরণে ছাড় তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে অন্যান্য করছাড়ের মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে।
পেট্রোলিয়াম তেল এবং বিটুমিনাস খনিজ থেকে প্রাপ্ত তেলের ওপর বিদ্যমান শুল্ক ৫ শতাংশ। নতুন বাজেট অনুযায়ী এসবের প্রতি ব্যারেলের দাম ১ হাজার ১১৭ টাকা (লিটার প্রতি ৭.০২ টাকা) হতে পারে। প্রতি টন ফার্নেস অয়েলের সুনির্দিষ্ট শুল্ক ৯ হাজার ১০৮ টাকা (লিটার প্রতি ৯.১০ টাকা) করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।